নারকেলের ছোবড়ার বিদেশযাত্রা
বেশ
কিছুদিন ধরেই নারকেলের ছোবড়া আর ফেলনা নয়। সেই ছোবড়ার আঁশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে
যন্ত্রে তৈরি তোশকের (ম্যাট্রেস) ভেতরের অংশ, যা কয়ার ফেল্ট নামে পরিচিত।
এখন নারকেলের ছোবড়ার পাশাপাশি ছোবড়ার গুঁড়াও মূল্যবান হয়ে উঠেছে। এ গুঁড়াকে
প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। শুরুতেই এগুলোর বাজার
পাওয়া গেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া প্রক্রিয়াজাত করার
কাজটি করছে ন্যাচারাল ফাইবার নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বাগেরহাটের ক্ষুদ্র ও
কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে তাদের কারখানা। প্রতিষ্ঠানটি
২০০৫ সাল থেকে ‘কয়ার ফেল্ট’ (ম্যাট্রেস তৈরির কাঁচামাল) তৈরি করে আসছে।
সোয়ান, আখতার, পারটেক্স, টাইগারসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ম্যাট্রেস উৎপাদনে
ব্যবহার করা হচ্ছে এগুলো। এটি মূলত নারকেলের ফেলে দেওয়া ছোবড়ার আঁশ দিয়ে
তৈরি হয়। মানভেদে প্রতি ঘনফুট কয়ার ফেল্টের দাম ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
নারকেলের ছোবড়া থেকে আঁশ ছাড়াতে গেলে প্রচুর পরিমাণে গুঁড়া বের হয়। সেই
গুঁড়া রোদে শুকিয়ে বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে চাপ দিয়ে ব্লকের মতো প্রস্তুত
করা হয়। সেই ব্লক ‘কয়ার পিট’ নামে পরিচিত। দেশের বাজারে কয়ার ফেল্টের
চাহিদা মেটানোর পর এখন নতুন পণ্য কয়ার পিট প্লাস্টিকে মুড়ে রপ্তানি করা
হবে। বিভিন্ন দেশে গবাদি পশুপালন ফার্মে ও কৃষিকাজে মাটির বিকল্প হিসেবে
কয়ার পিটের ব্যাপক চাহিদা।
ছোবড়া থেকে তোশক
অপ্রচলিত এই পণ্য রপ্তানির পেছনে আছে লম্বা গল্প। নিজের কারখানায় বসে গত রোববার সেটি শোনালেন ন্যাচারাল ফাইবারের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজ আহমেদ। ১৯৮৪ সালে আইএসসি পাস করে ব্যবসায় নেমে পড়েন তিনি। প্রথম জীবনে নারকেল তেলের কারখানা ছিল তাঁর। তখন ছোবড়া জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তবে বর্ষায় ছোবড়া শুকাতে অসুবিধা হতো বলে তা ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। ফলে ফেলনা ছোবড়া কাজে লাগানোর কৌশল মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। এদিকে দাম পড়ে যাওয়ায় হঠাৎ করেই তেলের ব্যবসায় ভাটা পড়ে। কী করা যায়, ভাবতে ভাবতে মোস্তাফিজ মনস্থির করলেন, নারকেলের ছোবড়া দিয়ে ম্যাট্রেসের ভেতরের অংশ তৈরি করবেন। নারকেলের ছোবড়া দিয়ে পণ্য তৈরিতে ভারত বরাবরই সিদ্ধহস্ত। তাই ভারতের হরিয়ানা, দিল্লি, কেরালা, তামিলনাড়ু ও ওডিশা চষে বেড়ালেন মোস্তাফিজ আহমেদ। সেখানকার কারখানায় ছোবড়া দিয়ে কয়ার ফেল্ট তৈরির কৌশল দেখলেন। যন্ত্রপাতি কিনতে গিয়ে দেখেন দাম নাগালের বাইরে। শেষে পশ্চিমবঙ্গের এক কারখানার সঙ্গে চুক্তি হয়। সেই কারখানা থেকে কয়ার ফেল্ট তৈরি করে নিয়ে আসতে থাকলেন। পরে কয়েকজন শ্রমিককে নিয়ে যান এবং কাজ শিখিয়ে আনেন বাগেরহাটের এই উদ্যোক্তা। ২০০২ সালে দেশে ফিরে নিজের চেষ্টায় এবং স্থানীয় উপকরণ ও মিস্ত্রি দিয়ে কয়ার ফেল্টের যন্ত্রপাতি তৈরি করে ফেলেন মোস্তাফিজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘উৎপাদন শুরু করতে আমাদের প্রায় তিন বছর লেগে যায়। তবে এর আগেই কয়েকটি ম্যাট্রেসের কারখানা আমাদের ক্রয়াদেশ দিয়ে দেয়। পরে সেটি বাড়তেই থাকে। বর্তমানে চাহিদার চেয়ে আমাদের উৎপাদনক্ষমতা অনেক কম। তাই ক্রয়াদেশ ফিরিয়ে দিতে হয়।’,ছোবড়ার আঁশের সঙ্গে রেজিন বা তরল রাবার মিশিয়ে প্রথমে পাতলা শিট তৈরি করা হয়। পরে ম্যাট্রেস কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী কয়েকটি শিটকে তাপ ও চাপ দিয়ে এক ইঞ্চি থেকে সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি পুরুত্বের কয়ার ফেল্ট প্রস্তুত করা হয়। বিভিন্ন আকারের হলেও দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে যথাক্রমে সর্বোচ্চ ৭২ ও ৮০ ইঞ্চি কয়ার ফেল্ট করে থাকে তারা। বিসিকের কারখানাটিতে কাজ করেন ৩৫ জন শ্রমিক। দেশে বর্তমানে কয়ার ফেল্টের চাহিদা মাসে প্রায় ৩০ হাজার ঘণফুট। ৫ থেকে ৬ হাজার ঘণফুট উৎপাদন হয় ন্যাচারাল ফাইবার ফ্যাক্টরিতে।
ছোবড়ার পর ছোবড়ার গুঁড়া
ন্যাচারাল ফাইবার প্রতিষ্ঠানটিকে নারকেলের ছোবড়ার আঁশ সরবরাহ দিতে আশপাশে ছোট ছোট কিছু কারখানা গড়ে ওঠে। কিন্তু পণ্যটির চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় এ ছোট কারখানাগুলোর সরবরাহে চাহিদা মিটছিল না। এ কারণে গত বছর বাগেরহাটের সদর উপজেলার কররী গ্রামে ছোবড়া থেকে আঁশ তৈরির কারখানা স্থাপন করে ন্যাচারাল ফাইবার। এই কারখানা করতে গিয়ে নতুন পরিকল্পনা পেয়ে বসে মোস্তাফিজ আহমেদকে। এক হাজার নারকেলের ছোবড়ায় ৮০ কেজি আঁশ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে ফেলনা উপজাত হিসেবে বের হয় ১৬০ কেজির মতো গুঁড়া। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউএসএআইডির এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইন (এভিসি) প্রজেক্টের আওতায় জার্মানের ফ্রাঙ্কফুর্ট ফেয়ারে অংশ নেন মোস্তাফিজ। সেখানে তিনি গিয়েছিলাম মূলত কয়ার ফেল্টের ক্রেতা খুঁজতে। সেখানেই প্রথম বিশ্ববাজারে কয়ার পিটের চাহিদার বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। মোস্তাফিজ আহমেদ বললেন, ‘ছোবড়ার গুঁড়া দিয়ে আমরা কয়ার পিট তৈরির চিন্তাভাবনা করলাম। কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কয়ার পিটের ব্যাপক চাহিদা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারত থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করেছি। উৎপাদন হচ্ছে। শিগগিরই দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬০ হাজার ডলারের কয়ার পিট রপ্তানি হবে। কার্যাদেশ চলে এসেছে।’ গত রোববার দুপুরে কররী গ্রামে ন্যাচারাল ফাইবারের কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল কারখানা চত্বরে ধান শুকানোর মতো করে নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া শুকানোর কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। এর চারপাশে কয়েক হাজার মণ গুঁড়া স্তূপ আকারে রয়েছে। মূল কারখানা ভবনে কম্প্রেসর যন্ত্রে চাপ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কয়ার পিট। এর আগে ছোট ও বড় দানার শুকনো গুঁড়া যন্ত্রে আলাদা করা হয়। কারখানাটির দেখাশোনা করছিলেন মোস্তাফিজের ছোট ভাই মোজাহিদ আহমেদ। তিনি বললেন, ‘কয়ার পিট আমরা উৎপাদন শুরু করলাম। তবে ইন্টারনেট ঘেঁটেও ক্রেতা পাচ্ছিলাম না। পরে ১৪-১৫টি দেশের বাংলাদেশি দূতাবাসে ই-মেইল করলাম। দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের সহযোগিতায় গত অক্টোবরে একজন ক্রেতার সন্ধান পাওয়া গেছে।
ছোবড়া থেকে তোশক
অপ্রচলিত এই পণ্য রপ্তানির পেছনে আছে লম্বা গল্প। নিজের কারখানায় বসে গত রোববার সেটি শোনালেন ন্যাচারাল ফাইবারের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজ আহমেদ। ১৯৮৪ সালে আইএসসি পাস করে ব্যবসায় নেমে পড়েন তিনি। প্রথম জীবনে নারকেল তেলের কারখানা ছিল তাঁর। তখন ছোবড়া জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তবে বর্ষায় ছোবড়া শুকাতে অসুবিধা হতো বলে তা ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। ফলে ফেলনা ছোবড়া কাজে লাগানোর কৌশল মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। এদিকে দাম পড়ে যাওয়ায় হঠাৎ করেই তেলের ব্যবসায় ভাটা পড়ে। কী করা যায়, ভাবতে ভাবতে মোস্তাফিজ মনস্থির করলেন, নারকেলের ছোবড়া দিয়ে ম্যাট্রেসের ভেতরের অংশ তৈরি করবেন। নারকেলের ছোবড়া দিয়ে পণ্য তৈরিতে ভারত বরাবরই সিদ্ধহস্ত। তাই ভারতের হরিয়ানা, দিল্লি, কেরালা, তামিলনাড়ু ও ওডিশা চষে বেড়ালেন মোস্তাফিজ আহমেদ। সেখানকার কারখানায় ছোবড়া দিয়ে কয়ার ফেল্ট তৈরির কৌশল দেখলেন। যন্ত্রপাতি কিনতে গিয়ে দেখেন দাম নাগালের বাইরে। শেষে পশ্চিমবঙ্গের এক কারখানার সঙ্গে চুক্তি হয়। সেই কারখানা থেকে কয়ার ফেল্ট তৈরি করে নিয়ে আসতে থাকলেন। পরে কয়েকজন শ্রমিককে নিয়ে যান এবং কাজ শিখিয়ে আনেন বাগেরহাটের এই উদ্যোক্তা। ২০০২ সালে দেশে ফিরে নিজের চেষ্টায় এবং স্থানীয় উপকরণ ও মিস্ত্রি দিয়ে কয়ার ফেল্টের যন্ত্রপাতি তৈরি করে ফেলেন মোস্তাফিজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘উৎপাদন শুরু করতে আমাদের প্রায় তিন বছর লেগে যায়। তবে এর আগেই কয়েকটি ম্যাট্রেসের কারখানা আমাদের ক্রয়াদেশ দিয়ে দেয়। পরে সেটি বাড়তেই থাকে। বর্তমানে চাহিদার চেয়ে আমাদের উৎপাদনক্ষমতা অনেক কম। তাই ক্রয়াদেশ ফিরিয়ে দিতে হয়।’,ছোবড়ার আঁশের সঙ্গে রেজিন বা তরল রাবার মিশিয়ে প্রথমে পাতলা শিট তৈরি করা হয়। পরে ম্যাট্রেস কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী কয়েকটি শিটকে তাপ ও চাপ দিয়ে এক ইঞ্চি থেকে সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি পুরুত্বের কয়ার ফেল্ট প্রস্তুত করা হয়। বিভিন্ন আকারের হলেও দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে যথাক্রমে সর্বোচ্চ ৭২ ও ৮০ ইঞ্চি কয়ার ফেল্ট করে থাকে তারা। বিসিকের কারখানাটিতে কাজ করেন ৩৫ জন শ্রমিক। দেশে বর্তমানে কয়ার ফেল্টের চাহিদা মাসে প্রায় ৩০ হাজার ঘণফুট। ৫ থেকে ৬ হাজার ঘণফুট উৎপাদন হয় ন্যাচারাল ফাইবার ফ্যাক্টরিতে।
ছোবড়ার পর ছোবড়ার গুঁড়া
ন্যাচারাল ফাইবার প্রতিষ্ঠানটিকে নারকেলের ছোবড়ার আঁশ সরবরাহ দিতে আশপাশে ছোট ছোট কিছু কারখানা গড়ে ওঠে। কিন্তু পণ্যটির চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় এ ছোট কারখানাগুলোর সরবরাহে চাহিদা মিটছিল না। এ কারণে গত বছর বাগেরহাটের সদর উপজেলার কররী গ্রামে ছোবড়া থেকে আঁশ তৈরির কারখানা স্থাপন করে ন্যাচারাল ফাইবার। এই কারখানা করতে গিয়ে নতুন পরিকল্পনা পেয়ে বসে মোস্তাফিজ আহমেদকে। এক হাজার নারকেলের ছোবড়ায় ৮০ কেজি আঁশ পাওয়া যায়। একই সঙ্গে ফেলনা উপজাত হিসেবে বের হয় ১৬০ কেজির মতো গুঁড়া। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউএসএআইডির এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইন (এভিসি) প্রজেক্টের আওতায় জার্মানের ফ্রাঙ্কফুর্ট ফেয়ারে অংশ নেন মোস্তাফিজ। সেখানে তিনি গিয়েছিলাম মূলত কয়ার ফেল্টের ক্রেতা খুঁজতে। সেখানেই প্রথম বিশ্ববাজারে কয়ার পিটের চাহিদার বিষয়ে জানতে পারেন তিনি। মোস্তাফিজ আহমেদ বললেন, ‘ছোবড়ার গুঁড়া দিয়ে আমরা কয়ার পিট তৈরির চিন্তাভাবনা করলাম। কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই কয়ার পিটের ব্যাপক চাহিদা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারত থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করেছি। উৎপাদন হচ্ছে। শিগগিরই দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬০ হাজার ডলারের কয়ার পিট রপ্তানি হবে। কার্যাদেশ চলে এসেছে।’ গত রোববার দুপুরে কররী গ্রামে ন্যাচারাল ফাইবারের কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল কারখানা চত্বরে ধান শুকানোর মতো করে নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়া শুকানোর কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। এর চারপাশে কয়েক হাজার মণ গুঁড়া স্তূপ আকারে রয়েছে। মূল কারখানা ভবনে কম্প্রেসর যন্ত্রে চাপ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কয়ার পিট। এর আগে ছোট ও বড় দানার শুকনো গুঁড়া যন্ত্রে আলাদা করা হয়। কারখানাটির দেখাশোনা করছিলেন মোস্তাফিজের ছোট ভাই মোজাহিদ আহমেদ। তিনি বললেন, ‘কয়ার পিট আমরা উৎপাদন শুরু করলাম। তবে ইন্টারনেট ঘেঁটেও ক্রেতা পাচ্ছিলাম না। পরে ১৪-১৫টি দেশের বাংলাদেশি দূতাবাসে ই-মেইল করলাম। দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের সহযোগিতায় গত অক্টোবরে একজন ক্রেতার সন্ধান পাওয়া গেছে।
তিনি আমাদের কারখানা পরিদর্শন করেছেন। পণ্য পছন্দ হওয়ায় ক্রয়াদেশ দিয়েছেন।
একই সঙ্গে পণ্যের মান উন্নত করতে সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছেন।’ সেই
ক্রেতার নাম মিন সুক কিম। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ডায়াপিট নামের প্রতিষ্ঠানের
কর্মকর্তা। গত রোববার তিনি বাগেরহাটের কারখানাতেই ছিলেন। শ্রমিকদের সঙ্গে
কাজও করছিলেন কিম। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কয়ার পিটের চাহিদা প্রচুর।
পণ্যটির পানি শোষণক্ষমতা ব্যাপক, তাই শূকর ও গরু পালনের খামারের মেঝেতে
ব্যবহৃত হয়, যাতে মলমূত্র শুষে নিতে পারে। পরে ব্যবহৃত কয়ার পিট জৈব সার
হিসেবে কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া ফসলের চারা উৎপাদনেও এটি ব্যবহার
করা হয়।’ ভারতের জাতীয় কয়ার বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, সারা বিশ্বে নারকেলের
আঁশের উৎপাদন বছরে সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন। এর ৯০ ভাগই জোগান দেয় ভারত ও
শ্রীলঙ্কা। ভারত বছরে নারকেলের ছোবড়া দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে
১৪ কোটি ডলারের। আর শ্রীলঙ্কার বার্ষিক রপ্তানি আয় ৬-৭ কোটি ডলার। প্রচলিত
পদ্ধতিতে গুঁড়া শুকাতে গিয়ে পিছিয়ে পড়ছে ন্যাচারাল ফাইবার। তাই নিজেরাই
ড্রায়ার তৈরি করছে। শিগগিরই কারখানায় যন্ত্রটি সংযোজিত হবে। মোস্তাফিজ
আহমেদ বললেন, কয়ার পিট নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ
নারকেলের ছোবড়া হয়, তাতে ৫০টির মতো কারখানা করা সম্ভব। নারকেলের ছোবড়ার আরও
কিছু পণ্য তৈরির পরিকল্পনা করছেন মোস্তাফিজ আহমেদ। তবে এখনই সেসব পণ্যের
তথ্য জানাতে রাজি নন তিনি।
No comments