চীনে এক সন্তান নীতি বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে by মিনঝিন পেই
এক সন্তান নীতি থেকে সরে আসল চীন |
চীনে
৩৫ বছর পর এক সন্তান নীতির অবসান হলো, আর সেই সঙ্গে দেশটির ইতিহাসের
অন্যতম অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে চীনের
কমিউনিস্ট পার্টি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাকা সচল করতে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিল,
জন্মনিয়ন্ত্রণের মধ্যেই এর উত্তর নিহিত রয়েছে। পরবর্তী সময়ে চীনে কোটি
কোটি গর্ভপাত, বন্ধ্যাকরণ ও ভ্রূণ হত্যা হয়েছে, সেই ভ্রূণের বাচ্চারা যেন
এখন বাড়িতে ঘুমাতে আসছে।
নির্জলা সংখ্যার হিসাবই যদি করি, তাহলে বলতে হয়, চীনের এই এক সন্তান নীতির মানবীয় ফলাফল মাও সেতুংয়ের লাফিয়ে চলা নীতির চেয়েও ভয়াবহ, মাওয়ের সেই নীতির কারণে চীনে ১৯৫৯-৬১ সাল পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। এমনকি সেটা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের চেয়েও ভয়াবহ ছিল। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কারণে চীনে যে বড় বড় রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে, তাতে ১৯৬৬-৭৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি মানুষ মারা গেছে।
চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালে যে তথ্য অবমুক্ত করেছে, তাতে দেখা যায়, ১৯৭১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত চীনে ৩৩ কোটি ৬০ লাখ গর্ভপাত হয়েছে, যেটা যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। এটা তো নিবন্ধিত কেন্দ্রগুলোতে যে গর্ভপাত হয়েছে, তার হিসাব (যদিও ১৯৭৯ সালের আগ পর্যন্ত এক সন্তান নীতি গৃহীত হয়নি, সে সময় পরিবার পরিকল্পনার ব্যবস্থা চালু ছিল)।
সরকারের যে সংস্থা এই এক সন্তান নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল, সেই ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি প্ল্যানিং কমিশনের তথ্য হচ্ছে, এই সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। সে সময় প্রতিবছর ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি সার্জিক্যাল গর্ভপাত হয়েছে, তবে এর মধ্যে কিন্তু অনিবন্ধিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধের মাধ্যমে হওয়া গর্ভপাতের হিসাব নেই।
এ কথা অবশ্যই বলতে হবে, এই গর্ভপাতের মধ্যে কী পরিমাণ এক সন্তান নীতির কারণে হয়েছে, তা নির্ণয় করা অসম্ভব। কিন্তু কথার কথা ধরুন, ভারতে তো গর্ভপাত বৈধ, সেখানে চীনের মতো পরিবার পরিকল্পনাপদ্ধতি ছিল না। কিন্তু সেখানকার পরিসংখ্যান তো অনেক কম, যদিও সেটা ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বার্ষিক ৬ লাখ ৩০ হাজারের মতো এত কম নয়। সম্ভবত, এই সংখ্যাটা বছরে ৬০ লাখের কাছাকাছি।
ভারত ও চীনের মধ্যে দৃশ্যত অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকলেও দেশ দুটির জনসংখ্যা প্রায় সমান। ফলে এটা ধারণা করা অযৌক্তিক নয় যে চীনে—৬৫ লাখ নিবন্ধিত সার্জিক্যাল গর্ভপাত ও বিপুল পরিমাণ অনিবন্ধিত গর্ভপাত—সংঘটিত গর্ভপাতের অর্ধেকের কারণ হচ্ছে এই এক সন্তান নীতি। এতে বোঝা যায়, যে ৩৫ বছর ওই নীতি চালু ছিল, সে সময় চীনে ২০ কোটির বেশি গর্ভপাত হয়েছে। কিন্তু জোর করে গর্ভপাত আসলে ছিল শুধু একটা শুরু। কথা হচ্ছে, এই পরিসংখ্যান মর্মান্তিক হলেও সেটা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি ও অর্থনৈতিক কুফল পরিমাপ করা যায় না।
এই নীতি ভঙ্গকারী অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাঁদের পরিবারের ওপর স্থানীয় কর্মকর্তারা যে জুলুম চালিয়েছেন, তার খবর গণমাধ্যমে বেরিয়েছে। এই বর্বরতা ছিল অদৃষ্টপূর্ব, মা জিয়ানের উপন্যাস দ্য ডার্ক রোড-এ তার বিবরণ রয়েছে। ২০১২ সালে একটি ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়, সে সময় শানচি প্রদেশের স্থানীয় কর্মকর্তারা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে জোর করে গর্ভপাত করিয়েছিলেন।
আবার যাঁরা এক সন্তান নীতি লঙ্ঘন করতেন, তাঁদের তো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হতোই, তার পাশাপাশি তাঁদের বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানা দিতে হতো। এসব মানুষের বেশির ভাগই দেশটির দরিদ্রতম। সাময়িক হিসাব থেকে দেখা যায়, চীনা সরকার প্রতিবছর এই জরিমানা বাবদ ৩০০ কোটি ডলার আদায় করে। আর স্থানীয় কর্মকর্তারা খোলাখুলিভাবে লঙ্ঘনকারীদের কঠোর শাস্তির হুমকি দেন, এর মধ্যে রয়েছে ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া, খামারের প্রাণী আত্মসাৎ করা প্রভৃতি।
এই এক সন্তান নীতির জনসংখ্যাগত ফলাফলও বিপর্যয়কর হয়েছে। সরকারি তথ্যানুযায়ী, চীনের বৃদ্ধদের নির্ভরশীলতার বর্তমান অনুপাত হচ্ছে ১৩ শতাংশ। এক সন্তান নীতির যুগের মানুষেরা বুড়ো হলে এই অনুপাত আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে, এই নীতির কারণে বছরে ১ কোটি মানুষ অবসরে যাবে। চীনে একসময় অনেক শ্রমিক থাকায় তাদের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছিল, কিন্তু শ্রমিকের সংখ্যা কমে গেলে প্রবৃদ্ধির চাকাও শ্লথ হয়ে যাবে।
একইভাবে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, চীনের লৈঙ্গিক ভারসাম্যহীনতা। এক সন্তান নীতিতে পরিবারগুলো চায়, সন্তানটি যেন ছেলে হয়। ফলে চীনারা সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ হওয়ার পর বেছে বেছে গর্ভপাত করেছে, নারী ভ্রূণ নষ্ট করেছে। ২০১৩ সালের হিসাব অনুসারে, চীনে শূন্য থেকে ২৪ বছর বয়সী ছেলেদের সংখ্যা একই বয়সী মেয়েদের চেয়ে ২ কোটি ৩০ লাখ বেশি। তার মানে হলো, আগামী দিনে ২ কোটি তরুণ বিয়ে করার মতো মেয়ে পাবে না।
চীনের এক সন্তান নীতির সবচেয়ে গুরুতর শিক্ষা হচ্ছে এই সাধারণ সত্য যে তারা এই নীতিটি দীর্ঘদিন ধরে চালাতে পেরেছে। বস্তুত চীনই পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে সরকার মানুষের সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত জোর করে দাবিয়ে রাখতে পেরেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে, একদলীয় শাসন এবং বিশাল ও শক্তিশালী এক আমলাতন্ত্র।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কাজ করার সক্ষমতা দেখে বাইরের পর্যবেক্ষকদের তাক লেগে যেত। অন্তত তাদের অতি আধুনিক শহর ও দ্রুতগতির রেল নেটওয়ার্ক নির্মাণের সক্ষমতা দেখে তারা বিস্মিত না হয়ে পারে না। কিন্তু এই পার্টি নৃশংস ও ধ্বংসাত্মক লক্ষ্য অর্জনে যে বল প্রয়োগ করত ও তার কারণে বিপর্যয় সৃষ্টি হতো, সেটা তারা খেয়াল করত কদাচিৎ।
সময় এসেছে, এই পরিণতির কথা স্বীকার করতে হবে। স্বীকার করতে হবে বিশেষ করে এই কারণে যে, চীনা কর্তৃপক্ষ জনগণের পুনর্জননের অধিকার সীমিত করার নীতি থেকে সরে আসেনি। তারা এক সন্তানের নীতির জায়গায় দুই সন্তানের নীতি গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে যে বোধ–বুদ্ধিহীনভাবে বল প্রয়োগ করতে হয়, চীনা সরকার ও বাইরের পর্যবেক্ষকদের সে বিষয়টিতে জোর দিতে হবে, যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, চীনে বা অন্য কোথাও।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
মিনঝিন পেই: ক্লেয়ারমন্ট ম্যাককেনা কলেজের সরকার বিভাগের অধ্যাপক।
নির্জলা সংখ্যার হিসাবই যদি করি, তাহলে বলতে হয়, চীনের এই এক সন্তান নীতির মানবীয় ফলাফল মাও সেতুংয়ের লাফিয়ে চলা নীতির চেয়েও ভয়াবহ, মাওয়ের সেই নীতির কারণে চীনে ১৯৫৯-৬১ সাল পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। এমনকি সেটা সাংস্কৃতিক বিপ্লবের চেয়েও ভয়াবহ ছিল। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের কারণে চীনে যে বড় বড় রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে, তাতে ১৯৬৬-৭৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি মানুষ মারা গেছে।
চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালে যে তথ্য অবমুক্ত করেছে, তাতে দেখা যায়, ১৯৭১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত চীনে ৩৩ কোটি ৬০ লাখ গর্ভপাত হয়েছে, যেটা যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। এটা তো নিবন্ধিত কেন্দ্রগুলোতে যে গর্ভপাত হয়েছে, তার হিসাব (যদিও ১৯৭৯ সালের আগ পর্যন্ত এক সন্তান নীতি গৃহীত হয়নি, সে সময় পরিবার পরিকল্পনার ব্যবস্থা চালু ছিল)।
সরকারের যে সংস্থা এই এক সন্তান নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল, সেই ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড ফ্যামিলি প্ল্যানিং কমিশনের তথ্য হচ্ছে, এই সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। সে সময় প্রতিবছর ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি সার্জিক্যাল গর্ভপাত হয়েছে, তবে এর মধ্যে কিন্তু অনিবন্ধিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধের মাধ্যমে হওয়া গর্ভপাতের হিসাব নেই।
এ কথা অবশ্যই বলতে হবে, এই গর্ভপাতের মধ্যে কী পরিমাণ এক সন্তান নীতির কারণে হয়েছে, তা নির্ণয় করা অসম্ভব। কিন্তু কথার কথা ধরুন, ভারতে তো গর্ভপাত বৈধ, সেখানে চীনের মতো পরিবার পরিকল্পনাপদ্ধতি ছিল না। কিন্তু সেখানকার পরিসংখ্যান তো অনেক কম, যদিও সেটা ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বার্ষিক ৬ লাখ ৩০ হাজারের মতো এত কম নয়। সম্ভবত, এই সংখ্যাটা বছরে ৬০ লাখের কাছাকাছি।
ভারত ও চীনের মধ্যে দৃশ্যত অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকলেও দেশ দুটির জনসংখ্যা প্রায় সমান। ফলে এটা ধারণা করা অযৌক্তিক নয় যে চীনে—৬৫ লাখ নিবন্ধিত সার্জিক্যাল গর্ভপাত ও বিপুল পরিমাণ অনিবন্ধিত গর্ভপাত—সংঘটিত গর্ভপাতের অর্ধেকের কারণ হচ্ছে এই এক সন্তান নীতি। এতে বোঝা যায়, যে ৩৫ বছর ওই নীতি চালু ছিল, সে সময় চীনে ২০ কোটির বেশি গর্ভপাত হয়েছে। কিন্তু জোর করে গর্ভপাত আসলে ছিল শুধু একটা শুরু। কথা হচ্ছে, এই পরিসংখ্যান মর্মান্তিক হলেও সেটা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি ও অর্থনৈতিক কুফল পরিমাপ করা যায় না।
এই নীতি ভঙ্গকারী অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাঁদের পরিবারের ওপর স্থানীয় কর্মকর্তারা যে জুলুম চালিয়েছেন, তার খবর গণমাধ্যমে বেরিয়েছে। এই বর্বরতা ছিল অদৃষ্টপূর্ব, মা জিয়ানের উপন্যাস দ্য ডার্ক রোড-এ তার বিবরণ রয়েছে। ২০১২ সালে একটি ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়, সে সময় শানচি প্রদেশের স্থানীয় কর্মকর্তারা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে জোর করে গর্ভপাত করিয়েছিলেন।
আবার যাঁরা এক সন্তান নীতি লঙ্ঘন করতেন, তাঁদের তো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হতোই, তার পাশাপাশি তাঁদের বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানা দিতে হতো। এসব মানুষের বেশির ভাগই দেশটির দরিদ্রতম। সাময়িক হিসাব থেকে দেখা যায়, চীনা সরকার প্রতিবছর এই জরিমানা বাবদ ৩০০ কোটি ডলার আদায় করে। আর স্থানীয় কর্মকর্তারা খোলাখুলিভাবে লঙ্ঘনকারীদের কঠোর শাস্তির হুমকি দেন, এর মধ্যে রয়েছে ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেওয়া, খামারের প্রাণী আত্মসাৎ করা প্রভৃতি।
এই এক সন্তান নীতির জনসংখ্যাগত ফলাফলও বিপর্যয়কর হয়েছে। সরকারি তথ্যানুযায়ী, চীনের বৃদ্ধদের নির্ভরশীলতার বর্তমান অনুপাত হচ্ছে ১৩ শতাংশ। এক সন্তান নীতির যুগের মানুষেরা বুড়ো হলে এই অনুপাত আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে, এই নীতির কারণে বছরে ১ কোটি মানুষ অবসরে যাবে। চীনে একসময় অনেক শ্রমিক থাকায় তাদের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছিল, কিন্তু শ্রমিকের সংখ্যা কমে গেলে প্রবৃদ্ধির চাকাও শ্লথ হয়ে যাবে।
একইভাবে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, চীনের লৈঙ্গিক ভারসাম্যহীনতা। এক সন্তান নীতিতে পরিবারগুলো চায়, সন্তানটি যেন ছেলে হয়। ফলে চীনারা সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ হওয়ার পর বেছে বেছে গর্ভপাত করেছে, নারী ভ্রূণ নষ্ট করেছে। ২০১৩ সালের হিসাব অনুসারে, চীনে শূন্য থেকে ২৪ বছর বয়সী ছেলেদের সংখ্যা একই বয়সী মেয়েদের চেয়ে ২ কোটি ৩০ লাখ বেশি। তার মানে হলো, আগামী দিনে ২ কোটি তরুণ বিয়ে করার মতো মেয়ে পাবে না।
চীনের এক সন্তান নীতির সবচেয়ে গুরুতর শিক্ষা হচ্ছে এই সাধারণ সত্য যে তারা এই নীতিটি দীর্ঘদিন ধরে চালাতে পেরেছে। বস্তুত চীনই পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে সরকার মানুষের সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত জোর করে দাবিয়ে রাখতে পেরেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে, একদলীয় শাসন এবং বিশাল ও শক্তিশালী এক আমলাতন্ত্র।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কাজ করার সক্ষমতা দেখে বাইরের পর্যবেক্ষকদের তাক লেগে যেত। অন্তত তাদের অতি আধুনিক শহর ও দ্রুতগতির রেল নেটওয়ার্ক নির্মাণের সক্ষমতা দেখে তারা বিস্মিত না হয়ে পারে না। কিন্তু এই পার্টি নৃশংস ও ধ্বংসাত্মক লক্ষ্য অর্জনে যে বল প্রয়োগ করত ও তার কারণে বিপর্যয় সৃষ্টি হতো, সেটা তারা খেয়াল করত কদাচিৎ।
সময় এসেছে, এই পরিণতির কথা স্বীকার করতে হবে। স্বীকার করতে হবে বিশেষ করে এই কারণে যে, চীনা কর্তৃপক্ষ জনগণের পুনর্জননের অধিকার সীমিত করার নীতি থেকে সরে আসেনি। তারা এক সন্তানের নীতির জায়গায় দুই সন্তানের নীতি গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে যে বোধ–বুদ্ধিহীনভাবে বল প্রয়োগ করতে হয়, চীনা সরকার ও বাইরের পর্যবেক্ষকদের সে বিষয়টিতে জোর দিতে হবে, যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, চীনে বা অন্য কোথাও।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
মিনঝিন পেই: ক্লেয়ারমন্ট ম্যাককেনা কলেজের সরকার বিভাগের অধ্যাপক।
No comments