নেপালে ভারত : অতি চালাকিতে গলায় দড়ি by অরুন বড়াল
এক
সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নেপালের ওপর অঘোষিত অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে
রেখেছে ভারত। জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের জন্য ভারতের ওপর নেপাল ব্যাপকভাবে
নির্ভরশীল। অথচ কোনো পণ্য নেপালে ঢুকতে পারছে না। নেপালে নতুন সংবিধান
প্রণয়নকে ঘিরে নেপালের ভারতীয় বংশোদ্ভূত দু’টি গোষ্ঠী বিক্ষোভ করতে থাকার
প্রেক্ষাপটে এই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিক্ষোভের
কারণে তারা নেপালে পণ্য পাঠাতে পারছে না। কিন্তু যেসব সীমান্তে কোনো ধরনের
বিক্ষোভ নেই, সেখান দিয়েও কেন পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে না, সে প্রশ্নের জবাব
দেয়া হয়নি। নেপাল এই উপমহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ফলে নেপাল পরিস্থিতির
প্রভাব উপমহাদেশজুড়ে অনুভূত হতে পারে। অবরোধ চলতে থাকলে পরিস্থিতি কী হতে
পারে, তার একটি বিশ্লেষণ এখানে দেয়া হলো।
ভারত ১৯৮৯ সালের মতো নেপালের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করলে কী হবে? সাধারণ ধারণা হলো, নেপাল অনেক বেশি দুর্ভোগ পোহাবে। তবে আসলে সবশেষে তা ভারতের জন্যই বেশি ক্ষতিকর হবে। সীমান্ত বন্ধ করার পরিণাম ভারতের জন্যই যে হিতে বিপরীত হবে তার পাঁচটি কারণ এখানে তুলে ধরা হলো।
১. ভারতবিরোধী মনোভাব
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছর তার নেপাল সফরে গিয়ে নেপালে ভারতবিরোধী মনোভাব দূর করতে সফল হয়েছিলেন। আর এ কারণেই ‘বাইলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন (বিআইপিপিএ)’ এবং ‘আপার কারনালি পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট (পিডিএ)’ বলতে গেলে কোনো ধরনের বিরোধিতা ছাড়াই স্বাক্ষরিত হতে পেরেছিল।
এই অবরোধ নেপালিদের একটি প্রজন্মকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে। এর ফলে অবরোধ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পরও নেপালের সাথে ব্যবসা করতে ভারত নিজেকে কঠিন পরিস্থিতিতে দেখতে পারে।
২. ভারতীয় বাজার
ভারত থেকে প্রতি বছর নেপাল ৫০০ কোটি রুপি মূল্যের পণ্য আমদানি করে। আর রফতানি করে ১০০ কোটি রুপিরও কম। অবরোধ যত চলতে থাকবে, তত বেশি নেপাল বাণিজ্যের জন্য চীনের দিকে ঝুঁকবে। ভারতের মতো বিশাল অর্থনীতির জন্য ৫০০ কোটি রুপি বেশি কিছু নয়, তবে ভারত অন্তত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হবে।
৩. চীনা কার্ড
কাঠমান্ডুতে বেইজিংয়ের প্রভাব নিয়ে নয়া দিল্লি সব সময়ই উদ্বেগে থাকে। নেপালের সংবিধানকে স্বাগত না জানিয়ে এবং অবরোধের হুমকি দিয়ে ভারত চীনা প্রভাব ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে। নেপালে চীনের তেমন বড় ধরনের স্বার্থ নেই। তবে নয়া দিল্লির কাছ থেকে কাঠমান্ডুকে সরিয়ে নিতে পারাটা বেইজিংয়ের জন্য লাভজনক হবে।
৪. কম নির্ভরশীলতা
নেপাল ক্রমবর্ধমান হারে ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছিল। কিন্তু অবরোধের ফলে নেপালিরা বিকল্প খুঁজবে, আরো বেশি আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। এমনকি রাজনীতিবিদেরা পর্যন্ত এই চিন্তা করা বন্ধ করে দেবেন যে, নয়া দিল্লির আশীর্বাদ ছাড়া শীর্ষ পদগুলোতে যাওয়া যাবে না।
৫. ভারতীয় নিরাপত্তা
যদি ভারত নিজেকে নেপালের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়, তবে পাকিস্তানের প্রভাবও বাড়বে। আবার ভারতের সাথে নেপালের খোলা সীমান্ত রয়েছে। কাঠমান্ডুতে ভারতবিরোধী মনোভাব ভারতের জন্য সুখকর হবে না।
অনুবাদ : মোহাম্মদ হাসান শরীফ
ভারত ১৯৮৯ সালের মতো নেপালের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করলে কী হবে? সাধারণ ধারণা হলো, নেপাল অনেক বেশি দুর্ভোগ পোহাবে। তবে আসলে সবশেষে তা ভারতের জন্যই বেশি ক্ষতিকর হবে। সীমান্ত বন্ধ করার পরিণাম ভারতের জন্যই যে হিতে বিপরীত হবে তার পাঁচটি কারণ এখানে তুলে ধরা হলো।
১. ভারতবিরোধী মনোভাব
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছর তার নেপাল সফরে গিয়ে নেপালে ভারতবিরোধী মনোভাব দূর করতে সফল হয়েছিলেন। আর এ কারণেই ‘বাইলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যান্ড প্রটেকশন (বিআইপিপিএ)’ এবং ‘আপার কারনালি পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট (পিডিএ)’ বলতে গেলে কোনো ধরনের বিরোধিতা ছাড়াই স্বাক্ষরিত হতে পেরেছিল।
এই অবরোধ নেপালিদের একটি প্রজন্মকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে। এর ফলে অবরোধ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পরও নেপালের সাথে ব্যবসা করতে ভারত নিজেকে কঠিন পরিস্থিতিতে দেখতে পারে।
২. ভারতীয় বাজার
ভারত থেকে প্রতি বছর নেপাল ৫০০ কোটি রুপি মূল্যের পণ্য আমদানি করে। আর রফতানি করে ১০০ কোটি রুপিরও কম। অবরোধ যত চলতে থাকবে, তত বেশি নেপাল বাণিজ্যের জন্য চীনের দিকে ঝুঁকবে। ভারতের মতো বিশাল অর্থনীতির জন্য ৫০০ কোটি রুপি বেশি কিছু নয়, তবে ভারত অন্তত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হবে।
৩. চীনা কার্ড
কাঠমান্ডুতে বেইজিংয়ের প্রভাব নিয়ে নয়া দিল্লি সব সময়ই উদ্বেগে থাকে। নেপালের সংবিধানকে স্বাগত না জানিয়ে এবং অবরোধের হুমকি দিয়ে ভারত চীনা প্রভাব ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেবে। নেপালে চীনের তেমন বড় ধরনের স্বার্থ নেই। তবে নয়া দিল্লির কাছ থেকে কাঠমান্ডুকে সরিয়ে নিতে পারাটা বেইজিংয়ের জন্য লাভজনক হবে।
৪. কম নির্ভরশীলতা
নেপাল ক্রমবর্ধমান হারে ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছিল। কিন্তু অবরোধের ফলে নেপালিরা বিকল্প খুঁজবে, আরো বেশি আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। এমনকি রাজনীতিবিদেরা পর্যন্ত এই চিন্তা করা বন্ধ করে দেবেন যে, নয়া দিল্লির আশীর্বাদ ছাড়া শীর্ষ পদগুলোতে যাওয়া যাবে না।
৫. ভারতীয় নিরাপত্তা
যদি ভারত নিজেকে নেপালের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়, তবে পাকিস্তানের প্রভাবও বাড়বে। আবার ভারতের সাথে নেপালের খোলা সীমান্ত রয়েছে। কাঠমান্ডুতে ভারতবিরোধী মনোভাব ভারতের জন্য সুখকর হবে না।
অনুবাদ : মোহাম্মদ হাসান শরীফ
No comments