ব্যাংকের আমানতে টান পুঁজি ভাঙছেন গ্রাহকরা by হামিদ বিশ্বাস
বেসরকারি
খাতে বিনিয়োগ মন্দায় ব্যাংকের আমানত কমছে। যদিও সরকারি খাত সক্রিয় রয়েছে।
তবে অর্থনীতির ৮০ ভাগই নিয়ন্ত্রণ করে বেসরকারি খাত। সে কারণে সার্বিক
মন্দার প্রভাব দৃশ্যমান হচ্ছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় গ্রাহক
পুঁজিতে হাত দিচ্ছে। ভেঙে ফেলছে বিভিন্ন মেয়াদে রাখা সঞ্চিত টাকা। বাংলাদেশ
ব্যাংক ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা অপারেশন ম্যানেজার বলেন, মানুষের হাতে টাকা
নেই। মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। পণ্যবাজারে
ঊর্ধ্বগতি। লাফিয়ে দাম বাড়ছে সব পণ্যের। কাঁচা বাজারে গেলে ১০০০ টাকার নিচে
বাজার হয় না। মানুষ দৈনন্দিন খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। সে কারণে নিম্ন ও
মধ্যম সারির গ্রাহকরা পুঁজিতে হাত দিচ্ছেন। ভেঙে ফেলছেন ৩, ৫ ও ১০ বছর
মেয়াদি ডিপিএস।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, জাতীয় সঞ্চয় প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। যা বিবিএসও উল্লেখ করেছে। অতীতের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধিও খুব ভাল নয়। দুই ঈদে কিছুটা প্রবৃদ্ধি হলেও সারা বছর নিম্নমুখী থাকে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ। এছাড়া, ব্যাংকের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার বেশি থাকায় সাধারণ মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকে পড়ে। যদিও বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও কমানো হয়েছে।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ মন্দার কারণে কমছে চলতি আমানত। অবকাঠামো পরিস্থিতি খুবই নাজুক। রাস্তাঘাট ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ। গ্যাস-বিদ্যুৎ নেই। রাজনৈতিক আবহাওয়াও ভাল নেই। সে কারণে কেউ নতুন বিনিয়োগ করছেন না। বেসরকারি খাত বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আর মেয়াদি আমানত কমছে অভাব-অনটন ও মূল্যস্ফীতির কারণে। তিনি বলেন, দেশে অভাবী লোকের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতি একটি মিশ্র সময় অতিক্রম করছে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিকভিত্তিতে তৈরি করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আর্থিক খাতে মোট আমানত সংগ্রহ করা হয়েছিল ৮৭ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। সমাপ্ত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) তা কমে হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা। এক বছরে আমানত কমেছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বা সাড়ে ১৩ শতাংশ। ব্যাংকারদের মতে, আমানত কমে গেলে বিনিয়োগের জন্য টাকার উৎস কমে যায়। এতে ব্যাংক আগের মতো বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারে না। কমে যায় ব্যাংকের বিনিয়োগসক্ষমতা। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা ও সর্বোপরি সুদহার কমে যাওয়ায় মানুষ ব্যাংকের আমানত ভেঙে ফেলছে। যার প্রভাব পড়ছে আমানতে। এটা অব্যাহত থাকলে ব্যাংকিং খাতসহ পুরো অর্থনীতির জন্য খারাপ সংকেত বয়ে আনবে। প্রচলিত নিয়মানুযায়ী, সাধারণত দুই ধরনের আমানত রাখা হয়। প্রথমত, স্বল্প সময়ে মুনাফা লাভের জন্য মানুষ চলতি আমানত রাখে। তিন মাস সময় থেকে এক বছর মেয়াদি এ আমানত রাখার সুযোগ রয়েছে। অপরদিকে দীর্ঘমেয়াদি মুনাফার জন্য মানুষ মেয়াদি আমানত রাখে ২ বছর, ৩ বছর, ৫ বছর, ১০ বছর ও তার ঊর্ধ্বে। তাদের মতে, মানুষ যখন তার প্রয়োজনীয় ব্যয় মিটিয়ে হাতে উদ্বৃত্ত থাকে তখন সে সঞ্চয় করে। আবার আয়ের তুলনায় যখন ব্যয় বেড়ে যায় তখন সঞ্চয় ভেঙে খায়। তখন চলতি আমানতসহ সামগ্রিক আমানত কমে যায়। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে যখন স্থবিরতা নেমে আসে তখন তলবি আমানত নেতিবাচক হয়ে পড়ে। কারণ এ সময় ব্যবসায়ীরা আগের মতো লেনদেন করতে পারেন না। তাদের হাতে টাকা থাকে না। সব সময় ব্যবসায়ীরা টানাটানির মধ্যে থাকেন। আর মেয়াদি আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হলো সাধারণ মানুষ আর আমানত রাখতে পারছেন না। মূল্যস্ফীতিই তাদের সঞ্চয় খেয়ে ফেলছে। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি দীর্ঘ দিন ধরে দুই অঙ্কের ঘরে অবস্থান করছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয় সংকুলান করতে পারছে না নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নির্ধারিত আয়ের মানুষ। এ কারণে এখন ভবিষ্যতের জন্য জমানো অর্থে হাত দিয়েছেন। মেয়াদপূর্তির আগেই ব্যাংকে জমানো স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি ডিপিএস ভেঙে ফেলছে। সঞ্চয় ভেঙে খাওয়ায় কমে যাচ্ছে ব্যাংকগুলোর আমানত। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সমাপ্ত অর্থবছরে মেয়াদি ও তলবি আমানত দু’টিই আগের বছরের চেয়ে কমে গেছে। পাশাপাশি মেয়াদি আমানতও কম রাখছেন গ্রাহকরা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগের বছরে মেয়াদি আমানত এসেছিল ৭৯ হাজার ৭৬ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৯০ শতাংশ। গত বছর মেয়াদি আমানত কমে হয়েছে ৬৭ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৮৯ শতাংশ। আর আগের বছরের চেয়ে গত বছর মেয়াদি আমানত কমেছে ১৪ দশমিক ২৩ ভাগ। এদিকে মেয়াদি আমানতের পাশাপাশি চলতি আমানতও আগের বছরের চেয়ে কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগের অর্থবছরের চলতি আমানত এসেছিল ৮ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা, সমাপ্ত অর্থবছরে তা সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা কমে নেমেছে ৮ হাজার ১৩৬ কোটি টাকায়। আগের বছরের চেয়ে চলতি আমানত কমেছে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ব্যাংক বিশ্লেষকদের মতে, মূলত দুই কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যায়। প্রথমত, অর্থনৈতিক কার্যক্রম কমে যাওয়ায় ব্যাংকে লেনদেন কমে গেছে। আর ব্যাংক লেনদেন কমে যাওয়ায় তলবি আমানত কমে যাচ্ছে। অপরদিকে মূল্যস্ফীতির কারণে আমানত কমে যায়। জিনিসপত্রের দাম যখন বেড়ে যায়, তখন মানুষ ব্যাংক থেকে বেশি পরিমাণ আমানত তুলে নিজের কাছে নগদ টাকা বেশি রাখে। এছাড়া, সামপ্রতিক সময়ের পরিস্থিতির কারণে ব্যাংকের পরিবর্তে নিজের কাছেই অর্থ ধরে রাখছে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, ব্যাংকিং খাতের চেয়ে ব্যাংকবহির্ভূত খাতে অধিক মুনাফা পেলে তখন ব্যাংকে আর কেউ টাকা রাখে না। অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। এ কারণেও তলবি আমানত কমতে পারে বলে তিনি মনে করেন। মেয়াদি আমানত কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, মূল্যস্ফীতির কারণে যখন জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায় তখন সাধারণ মানুষ সঞ্চয় করতে পারেন না। বরং সংসারের ঘাটতি মেটাতে ভবিষ্যতের জন্য জমানো সঞ্চয়ে হাত দেন। ওই ব্যাংকারের মতে, ব্যাংক থেকে বেশি মাত্রায় আমানত উত্তোলন হলে ব্যাংকিং খাতে নগদ অর্থের সংকট দেখা দেবে। এটা সমন্বয় করতে না পারলে ভবিষ্যতে ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের সংকট পড়বে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, জাতীয় সঞ্চয় প্রবৃদ্ধির হার কমেছে। যা বিবিএসও উল্লেখ করেছে। অতীতের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধিও খুব ভাল নয়। দুই ঈদে কিছুটা প্রবৃদ্ধি হলেও সারা বছর নিম্নমুখী থাকে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ। এছাড়া, ব্যাংকের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার বেশি থাকায় সাধারণ মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকে পড়ে। যদিও বর্তমানে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও কমানো হয়েছে।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ মন্দার কারণে কমছে চলতি আমানত। অবকাঠামো পরিস্থিতি খুবই নাজুক। রাস্তাঘাট ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ। গ্যাস-বিদ্যুৎ নেই। রাজনৈতিক আবহাওয়াও ভাল নেই। সে কারণে কেউ নতুন বিনিয়োগ করছেন না। বেসরকারি খাত বিনিয়োগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আর মেয়াদি আমানত কমছে অভাব-অনটন ও মূল্যস্ফীতির কারণে। তিনি বলেন, দেশে অভাবী লোকের সংখ্যা দিনের পর দিন বাড়ছে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতি একটি মিশ্র সময় অতিক্রম করছে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিকভিত্তিতে তৈরি করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আর্থিক খাতে মোট আমানত সংগ্রহ করা হয়েছিল ৮৭ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। সমাপ্ত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) তা কমে হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা। এক বছরে আমানত কমেছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বা সাড়ে ১৩ শতাংশ। ব্যাংকারদের মতে, আমানত কমে গেলে বিনিয়োগের জন্য টাকার উৎস কমে যায়। এতে ব্যাংক আগের মতো বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারে না। কমে যায় ব্যাংকের বিনিয়োগসক্ষমতা। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা ও সর্বোপরি সুদহার কমে যাওয়ায় মানুষ ব্যাংকের আমানত ভেঙে ফেলছে। যার প্রভাব পড়ছে আমানতে। এটা অব্যাহত থাকলে ব্যাংকিং খাতসহ পুরো অর্থনীতির জন্য খারাপ সংকেত বয়ে আনবে। প্রচলিত নিয়মানুযায়ী, সাধারণত দুই ধরনের আমানত রাখা হয়। প্রথমত, স্বল্প সময়ে মুনাফা লাভের জন্য মানুষ চলতি আমানত রাখে। তিন মাস সময় থেকে এক বছর মেয়াদি এ আমানত রাখার সুযোগ রয়েছে। অপরদিকে দীর্ঘমেয়াদি মুনাফার জন্য মানুষ মেয়াদি আমানত রাখে ২ বছর, ৩ বছর, ৫ বছর, ১০ বছর ও তার ঊর্ধ্বে। তাদের মতে, মানুষ যখন তার প্রয়োজনীয় ব্যয় মিটিয়ে হাতে উদ্বৃত্ত থাকে তখন সে সঞ্চয় করে। আবার আয়ের তুলনায় যখন ব্যয় বেড়ে যায় তখন সঞ্চয় ভেঙে খায়। তখন চলতি আমানতসহ সামগ্রিক আমানত কমে যায়। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে যখন স্থবিরতা নেমে আসে তখন তলবি আমানত নেতিবাচক হয়ে পড়ে। কারণ এ সময় ব্যবসায়ীরা আগের মতো লেনদেন করতে পারেন না। তাদের হাতে টাকা থাকে না। সব সময় ব্যবসায়ীরা টানাটানির মধ্যে থাকেন। আর মেয়াদি আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হলো সাধারণ মানুষ আর আমানত রাখতে পারছেন না। মূল্যস্ফীতিই তাদের সঞ্চয় খেয়ে ফেলছে। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি দীর্ঘ দিন ধরে দুই অঙ্কের ঘরে অবস্থান করছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয় সংকুলান করতে পারছে না নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নির্ধারিত আয়ের মানুষ। এ কারণে এখন ভবিষ্যতের জন্য জমানো অর্থে হাত দিয়েছেন। মেয়াদপূর্তির আগেই ব্যাংকে জমানো স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি ডিপিএস ভেঙে ফেলছে। সঞ্চয় ভেঙে খাওয়ায় কমে যাচ্ছে ব্যাংকগুলোর আমানত। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সমাপ্ত অর্থবছরে মেয়াদি ও তলবি আমানত দু’টিই আগের বছরের চেয়ে কমে গেছে। পাশাপাশি মেয়াদি আমানতও কম রাখছেন গ্রাহকরা। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগের বছরে মেয়াদি আমানত এসেছিল ৭৯ হাজার ৭৬ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৯০ শতাংশ। গত বছর মেয়াদি আমানত কমে হয়েছে ৬৭ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের ৮৯ শতাংশ। আর আগের বছরের চেয়ে গত বছর মেয়াদি আমানত কমেছে ১৪ দশমিক ২৩ ভাগ। এদিকে মেয়াদি আমানতের পাশাপাশি চলতি আমানতও আগের বছরের চেয়ে কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগের অর্থবছরের চলতি আমানত এসেছিল ৮ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা, সমাপ্ত অর্থবছরে তা সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা কমে নেমেছে ৮ হাজার ১৩৬ কোটি টাকায়। আগের বছরের চেয়ে চলতি আমানত কমেছে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ব্যাংক বিশ্লেষকদের মতে, মূলত দুই কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যায়। প্রথমত, অর্থনৈতিক কার্যক্রম কমে যাওয়ায় ব্যাংকে লেনদেন কমে গেছে। আর ব্যাংক লেনদেন কমে যাওয়ায় তলবি আমানত কমে যাচ্ছে। অপরদিকে মূল্যস্ফীতির কারণে আমানত কমে যায়। জিনিসপত্রের দাম যখন বেড়ে যায়, তখন মানুষ ব্যাংক থেকে বেশি পরিমাণ আমানত তুলে নিজের কাছে নগদ টাকা বেশি রাখে। এছাড়া, সামপ্রতিক সময়ের পরিস্থিতির কারণে ব্যাংকের পরিবর্তে নিজের কাছেই অর্থ ধরে রাখছে। একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, ব্যাংকিং খাতের চেয়ে ব্যাংকবহির্ভূত খাতে অধিক মুনাফা পেলে তখন ব্যাংকে আর কেউ টাকা রাখে না। অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। এ কারণেও তলবি আমানত কমতে পারে বলে তিনি মনে করেন। মেয়াদি আমানত কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, মূল্যস্ফীতির কারণে যখন জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায় তখন সাধারণ মানুষ সঞ্চয় করতে পারেন না। বরং সংসারের ঘাটতি মেটাতে ভবিষ্যতের জন্য জমানো সঞ্চয়ে হাত দেন। ওই ব্যাংকারের মতে, ব্যাংক থেকে বেশি মাত্রায় আমানত উত্তোলন হলে ব্যাংকিং খাতে নগদ অর্থের সংকট দেখা দেবে। এটা সমন্বয় করতে না পারলে ভবিষ্যতে ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের সংকট পড়বে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
No comments