পাট গবেষণা উপকেন্দ্রে গবেষণাগার নেই by জয়নাল আবেদীন জয়
রূপগঞ্জের
পাট গবেষণা উপকেন্দ্রটি স্থানীয় পাটচাষিদের কোন কাজে আসছে না। হাতেগোনা
কয়েকজন পাটচাষি শুনেছেন এখানে পাট গবেষণা কেন্দ্র আছে কিন্তু এখানে কি কাজ
হয় তা তাদের অজানা। নানা সমস্যার কারণে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে
তারাব পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট। গবেষণা প্রতিষ্ঠান হলেও এখানে নেই কোন
গবেষণা কার্যক্রম। প্রয়োজনীয় জনবল, অর্থ সংকট, গবেষণা মাঠ আর ল্যাবরেটরির
অভাবে ভেঙে পড়েছে এর কার্যক্রম। মাঠে চষে বেড়ায় গরু, ছাগল। অফিস কক্ষ
কুকুরের আবাসস্থল। উপজেলার ৮ হাজার হেক্টর এক ফসলি জমিতে কৃষকদের পাট চাষে
উৎসাহিত করতে এ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হলেও আজ পর্যন্ত পাটচাষে কোন
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেনি। নেই নিরাপত্তা বেষ্টনী। প্রতিষ্ঠানের
আর্থিক বরাদ্দও বন্ধ রয়েছে ৩ বছর যাবৎ। পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা
যায়, স্বাধীনতার আগে প্রায় ১৪ একর জমি অধিগ্রহণ এবং ৩৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা
ব্যয়ে এ গবেষণা কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। অনাবাদি জমিতে গবেষণার
মাধ্যমে পাটজাত উদ্ভাবন এবং স্থানীয় কৃষকদের মাঝে পাটচাষ জনপ্রিয় করার জন্য
প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হয়। কিন্তু অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে গেলেও এ
প্রতিষ্ঠানটি কোন নতুন জাতের পাট উদ্ভাবন তো দূরের কথা কোন চাষিকে পাটচাষে
উৎসাহিত করতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, পাটের জন্য গবেষণা
কেন্দ্র আছে এটাই তাদের জানা নেই। কোন ফিল্ড অফিসার ভুল করেও তাদের কাছে
যায়নি বলে তারা অভিযোগ করেন। কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, গবেষণার পরিবর্তে
প্রতিষ্ঠানটিতে চলছে বিজেআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত পাটচাষে উৎসাহিত করার নামে
কিছু কৃষককে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে বীজ, সারসহ উপকরণ
বিতরণ। কিন্তু সেসব চাষীর তদারকি না থাকায় তারা প্রশিক্ষণ নিলেও চাষ করছেন
না। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এসব কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে ৩ বছর যাবৎ।
তারাব পাট গবেষণা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান প্রতিষ্ঠানটিতে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ার কারণ হিসেবে প্রয়োজনীয় জনবল পদায়ন না করা, গবেষণার জন্য ল্যাবরেটরি, গবেষণা প্লট ও সেচ ব্যবস্থা না থাকাকে দায়ী করেন। এছাড়া, চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় তারা নতুন জাতের বীজ উদ্ভাবন করতে চেষ্টা করলে তা মুরগি এবং গরু-ছাগলে খেয়ে নেয় বলে তার অভিযোগ। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কাজ গবেষণা হলেও আজ পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি গবেষণাগার। পদায়ন করা হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল। গবেষণার জন্য অন্তত ১৫টি মাঠ প্রয়োজন হলেও রয়েছে ৭টি। একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, একজন ফিল্ড অফিসার, দু’জন জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্টান্ট, একজন পিয়ন ও একজন ঝাড়ুদার দিয়েই চলছে এ প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বুধবার সরজমিন গবেষণা উপকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, গবেষণা ইনস্টিটিউটের শেডে খড় শুকানো হচ্ছে। মাঠে চষে বেড়াচ্ছে গরু- ছাগল আর মুরগি। অন্যদিকে অফিসকক্ষের ভেতরে শুয়ে আছে কুকুর। স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহের ৪ দিনই অফিসটির প্রধান গেটে তালা ঝুলানো থাকে। কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা থাকলে একজন জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট ছাড়া কোন কর্মকর্তাই এখানে থাকেন না। আবাসিক কামরাগুলোতে খড়ের গাদা রাখা হয়েছে। তারাব পৌরসভার গন্ধর্ব্যপুর নামাপাড়া এলাকার কৃষক সোবাহান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এলাকার প্রভাবশালীদের শুধু প্রশিক্ষণ না দিয়ে যদি প্রকৃত কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো তবে কৃষকরা পাটচাষ করে লাভবান হতে পারতো। মুড়াপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গানগর গ্রামের পাটচাষি শাহআলম মিয়া জানেন না রূপগঞ্জে পাট গবেষণা বলে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। অন্যদিকে ভোলাব ইউনিয়নের বাসুন্দা গ্রামের চাষী মারফত আলী বলেন- প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্য গবেষণা কেন্দ্রে একাধিকবার গিয়েও কাউকে অফিসে পাইনি। এ ব্যাপারে পাট গবেষণা কেন্দ্রের জেএফএ জাহিদুল ইসলাম বলেন, রূপগঞ্জে তো পাটচাষ হয় না, তাই যেতে হয় না। গবেষণা কেন্দ্রের মাঠ কর্মকর্তা আইয়ূব আলী দেওয়ান বলেন, রূপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এখানকার চাষিরা পাট চাষ করেন না। অন্য ফসলে তাদের অধিক আয় হয়। আর তাদের মূলকাজ চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া ও গবেষণার মাধ্যমে পাটের আঁশ ও ফলস আরও বেগবান করা হলেও ২০১২ সালের পর প্রশিক্ষণখাতে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। আর গবেষণাগার না থাকায় তারা নমুনা সংগ্রহ করে হেড অফিসে পাঠিয়ে দেন। এখানে জনবল পদায়ন ও ল্যাবরেটরি স্থাপন করা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। তাদের কার্যক্রমের অভাবের কারণে রূপগঞ্জের প্রান্তিক চাষীরা পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে আরেক জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট মোজাম্মেল হক বলেন, তাদের কাজ মূলত গবেষণা করা ও চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া। পাটচাষে কৃষকদের আগ্রহ তৈরি করার দায়িত্ব উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বলে জানান তিনি। রূপগঞ্জের প্রান্তিক চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যদি পৃষ্ঠপোষকতা ও সঠিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় তাহলে অবশ্যই তারা পাটচাষ করে সোনালি আঁশের অতীতকে ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী হবে। রূপগঞ্জের কৃষকরা চায় অর্ধশত বছরের এ পুরনো এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের কাজে আসুক। আর উৎসাহিত হোক সোনালি আঁশের সোনা ফলনে।
তারাব পাট গবেষণা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান প্রতিষ্ঠানটিতে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত না হওয়ার কারণ হিসেবে প্রয়োজনীয় জনবল পদায়ন না করা, গবেষণার জন্য ল্যাবরেটরি, গবেষণা প্লট ও সেচ ব্যবস্থা না থাকাকে দায়ী করেন। এছাড়া, চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় তারা নতুন জাতের বীজ উদ্ভাবন করতে চেষ্টা করলে তা মুরগি এবং গরু-ছাগলে খেয়ে নেয় বলে তার অভিযোগ। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কাজ গবেষণা হলেও আজ পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি গবেষণাগার। পদায়ন করা হয়নি প্রয়োজনীয় জনবল। গবেষণার জন্য অন্তত ১৫টি মাঠ প্রয়োজন হলেও রয়েছে ৭টি। একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, একজন ফিল্ড অফিসার, দু’জন জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্টান্ট, একজন পিয়ন ও একজন ঝাড়ুদার দিয়েই চলছে এ প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বুধবার সরজমিন গবেষণা উপকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, গবেষণা ইনস্টিটিউটের শেডে খড় শুকানো হচ্ছে। মাঠে চষে বেড়াচ্ছে গরু- ছাগল আর মুরগি। অন্যদিকে অফিসকক্ষের ভেতরে শুয়ে আছে কুকুর। স্থানীয়রা জানান, সপ্তাহের ৪ দিনই অফিসটির প্রধান গেটে তালা ঝুলানো থাকে। কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা থাকলে একজন জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট ছাড়া কোন কর্মকর্তাই এখানে থাকেন না। আবাসিক কামরাগুলোতে খড়ের গাদা রাখা হয়েছে। তারাব পৌরসভার গন্ধর্ব্যপুর নামাপাড়া এলাকার কৃষক সোবাহান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এলাকার প্রভাবশালীদের শুধু প্রশিক্ষণ না দিয়ে যদি প্রকৃত কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো তবে কৃষকরা পাটচাষ করে লাভবান হতে পারতো। মুড়াপাড়া ইউনিয়নের গঙ্গানগর গ্রামের পাটচাষি শাহআলম মিয়া জানেন না রূপগঞ্জে পাট গবেষণা বলে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। অন্যদিকে ভোলাব ইউনিয়নের বাসুন্দা গ্রামের চাষী মারফত আলী বলেন- প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্য গবেষণা কেন্দ্রে একাধিকবার গিয়েও কাউকে অফিসে পাইনি। এ ব্যাপারে পাট গবেষণা কেন্দ্রের জেএফএ জাহিদুল ইসলাম বলেন, রূপগঞ্জে তো পাটচাষ হয় না, তাই যেতে হয় না। গবেষণা কেন্দ্রের মাঠ কর্মকর্তা আইয়ূব আলী দেওয়ান বলেন, রূপগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এখানকার চাষিরা পাট চাষ করেন না। অন্য ফসলে তাদের অধিক আয় হয়। আর তাদের মূলকাজ চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া ও গবেষণার মাধ্যমে পাটের আঁশ ও ফলস আরও বেগবান করা হলেও ২০১২ সালের পর প্রশিক্ষণখাতে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। আর গবেষণাগার না থাকায় তারা নমুনা সংগ্রহ করে হেড অফিসে পাঠিয়ে দেন। এখানে জনবল পদায়ন ও ল্যাবরেটরি স্থাপন করা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। তাদের কার্যক্রমের অভাবের কারণে রূপগঞ্জের প্রান্তিক চাষীরা পাটচাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে আরেক জুনিয়র ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট মোজাম্মেল হক বলেন, তাদের কাজ মূলত গবেষণা করা ও চাষীদের প্রশিক্ষণ দেয়া। পাটচাষে কৃষকদের আগ্রহ তৈরি করার দায়িত্ব উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বলে জানান তিনি। রূপগঞ্জের প্রান্তিক চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যদি পৃষ্ঠপোষকতা ও সঠিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় তাহলে অবশ্যই তারা পাটচাষ করে সোনালি আঁশের অতীতকে ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী হবে। রূপগঞ্জের কৃষকরা চায় অর্ধশত বছরের এ পুরনো এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের কাজে আসুক। আর উৎসাহিত হোক সোনালি আঁশের সোনা ফলনে।
No comments