রমনা বটমূলে বোমা হামলা- ১২ বছরেও শেষ হয়নি বিচার by নূরুজ্জামান
এক যুগেও শেষ হয়নি রমনা বটমূলে বোমা হামলা
মামলার বিচার। নাশকতাকারীরা শনাক্ত হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে অনেকেই।
বিচার কার্যক্রমের এমন ধীরগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজন ও
সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের
সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, প্রায় এক যুগ আগে রমনা বটমূলে নারকীয়
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও এখনও আসামিরা সাজা পায়নি। সান্ত্বনার ভাষা খুঁজে
পাননি নিহতের স্বজনরা। শিগগিরই ওই হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি
জানিয়েছেন তিনি। আদালত সূত্রমতে, ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হলেও
এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত ৪ আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। পলাতক আসামিদের ধরিয়ে দিতে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে
রয়েছে তারা। ইতিমধ্যে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ মামলায় ৮৪ জন
সাক্ষী ছিলেন। সূত্র জানায়, এ বছরের শেষ নাগাদ বিচার প্রক্রিয়া শেষ হতে
পারে। এর আগে বোমা হামলার ৭ বছর ৭ মাস ১৬ দিন পর ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর
হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ ব্যক্তি জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে
অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে হরকাতুল
জিহাদের দু’টি আস্তানায় এ হামলার পরিকল্পনা হয়। হামলায় ২২ জন জঙ্গি অংশ
নিয়েছিল বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে ১৪ জনের পরিচয়
পাওয়া গেছে। পুরো নাম ঠিকানা না পাওয়ায় ৮ জনের নাম চার্জশিট থেকে বাদ
দেয়া হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- মুফতি আবদুল হান্নান, আরিফ হাসান
সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, বিগত
চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা
তাজউদ্দিন আহমেদ, শাহাদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের,
মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ,
হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, মুফতি শফিকুর রহমান, হাফেজ
মাওলানা ইয়াহিয়া ও মুফতি আবদুল হাই। আসামিদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতরা হলো
মুফতি আবদুল হান্নান, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন, শাহাদাত
উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আবদুর রউফ ও শেখ
ফরিদ।
সমপ্রতি আরও তিন আসামি মাওলানা শফিকুল ইসলাম ও মাওলানা সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক। চার্জশিট থেকে বাদ আসামি ওমর ফারুক, জনি, ড্রাইভার আবদুল হালিম, সুজন, আবদুল জব্বার, আবদুল্লাহ, জাকারিয়া, মাওলানা নূরউদ্দিন ওরফে নূর উল্লাহ’র ঠিকানা এখনও উদ্ধার করেত পারেনি তদন্ত সংস্থা। তবে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে সিআইডি সূত্র জানিয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে সিআইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। মঞ্চের কাছে ঘটানো হয় বোমা বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থলে নিহত হয় আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অসীম চন্দ্র সরকার, মামুন হোসেন তার চাচাতো ভাই রিয়াজুল ইসলাম ও বোন জান্নাতুল ফেরদৌস শিল্পী, ইসমাইল হোসেন স্বপন ও আনসার আলীসহ ৯ জন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যায়। নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় এখনও অজ্ঞাত ব্যক্তি। আহতদের মধ্যে রয়েছেন রেজাউল করিম, আফজাল হোসেন, আমানুল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বপন কুমার দাস, মাহমুদুল কবির, ইব্রাহিম খলিল, রফিকুল ইসলাম, পীযূষ কান্তি সরকার ও ওমর ফারুক। এদের মধ্যে রেজাউল করিম, আমানুল্লাহ, ইব্রাহিম খলিল ও রফিকুল ইসলামকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের দেয়া তথ্যমতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ডেমরার মাদানীনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আকবর হোসেন ওরফে আলী আকবরকে। ২০০১ সালের ১৪ জুন আলী আকবর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময় আলী আকবর আদালতে দেয়া তার জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নেয়। ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে বেরিয়ে আত্মগোপন করেন।
বোমা হামলার ঘটনায় বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল কুমার বাদী হয়ে রমনা থানায় দু’টি মামলা দায়ের করেন। প্রথম মামলার তদন্ত করেন তৎকালীন রমনা থানার এসআই মোহাম্মদ কবির। পরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলাটি তদন্ত করে। ২০০১ চারদলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে তদন্ত থমকে যায়। ২০০৩ সালে মামলাটি স্থানান্তরিত হয় সিআইডিতে। তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন হলেও মামলায় আশানুরূপ গতি আসেনি। ২০০৭ সালে মামলার অষ্টম তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন সিআইডি’র ইন্সপেক্টর আবুহেনা মো. ইউসুফ। ঘটনার সাত বছর পর চার্জশিট দাখিল করা হয় আদালতে। চার্জশিটে নিহতের স্বজন, প্রত্যক্ষদর্শী, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যসহ মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। আলামত হিসেবে রক্ত মাখা জামাকাপড়, বোমার আলামত,পাসপোর্টসহ ২৬ ধরনের আলামত আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র ইন্সপেক্টর আবু হেনা বলেন, আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এখন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে আমাকে জেরা করছেন আইনজীবীরা। সর্বশেষ গত ২৪শে মার্চ তিনি আসামীপক্ষের আইনজীবীদের জেরার মুখে পড়েন। তিনি বলেন, বিচার-কাজ প্রায় শেষের দিকে। রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা সম্পন্ন হওয়ার পরই আদালত রায় ঘোষণা করবে।
সমপ্রতি আরও তিন আসামি মাওলানা শফিকুল ইসলাম ও মাওলানা সাব্বিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক। চার্জশিট থেকে বাদ আসামি ওমর ফারুক, জনি, ড্রাইভার আবদুল হালিম, সুজন, আবদুল জব্বার, আবদুল্লাহ, জাকারিয়া, মাওলানা নূরউদ্দিন ওরফে নূর উল্লাহ’র ঠিকানা এখনও উদ্ধার করেত পারেনি তদন্ত সংস্থা। তবে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে সিআইডি সূত্র জানিয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে সিআইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। মঞ্চের কাছে ঘটানো হয় বোমা বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থলে নিহত হয় আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মোহাম্মদ এমরান হোসেন, অসীম চন্দ্র সরকার, মামুন হোসেন তার চাচাতো ভাই রিয়াজুল ইসলাম ও বোন জান্নাতুল ফেরদৌস শিল্পী, ইসমাইল হোসেন স্বপন ও আনসার আলীসহ ৯ জন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যায়। নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় এখনও অজ্ঞাত ব্যক্তি। আহতদের মধ্যে রয়েছেন রেজাউল করিম, আফজাল হোসেন, আমানুল্লাহ, জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বপন কুমার দাস, মাহমুদুল কবির, ইব্রাহিম খলিল, রফিকুল ইসলাম, পীযূষ কান্তি সরকার ও ওমর ফারুক। এদের মধ্যে রেজাউল করিম, আমানুল্লাহ, ইব্রাহিম খলিল ও রফিকুল ইসলামকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের দেয়া তথ্যমতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ডেমরার মাদানীনগর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আকবর হোসেন ওরফে আলী আকবরকে। ২০০১ সালের ১৪ জুন আলী আকবর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময় আলী আকবর আদালতে দেয়া তার জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নেয়। ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে বেরিয়ে আত্মগোপন করেন।
বোমা হামলার ঘটনায় বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল কুমার বাদী হয়ে রমনা থানায় দু’টি মামলা দায়ের করেন। প্রথম মামলার তদন্ত করেন তৎকালীন রমনা থানার এসআই মোহাম্মদ কবির। পরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলাটি তদন্ত করে। ২০০১ চারদলীয় জোট ক্ষমতায় গেলে তদন্ত থমকে যায়। ২০০৩ সালে মামলাটি স্থানান্তরিত হয় সিআইডিতে। তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন হলেও মামলায় আশানুরূপ গতি আসেনি। ২০০৭ সালে মামলার অষ্টম তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন সিআইডি’র ইন্সপেক্টর আবুহেনা মো. ইউসুফ। ঘটনার সাত বছর পর চার্জশিট দাখিল করা হয় আদালতে। চার্জশিটে নিহতের স্বজন, প্রত্যক্ষদর্শী, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যসহ মোট ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। আলামত হিসেবে রক্ত মাখা জামাকাপড়, বোমার আলামত,পাসপোর্টসহ ২৬ ধরনের আলামত আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র ইন্সপেক্টর আবু হেনা বলেন, আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এখন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে আমাকে জেরা করছেন আইনজীবীরা। সর্বশেষ গত ২৪শে মার্চ তিনি আসামীপক্ষের আইনজীবীদের জেরার মুখে পড়েন। তিনি বলেন, বিচার-কাজ প্রায় শেষের দিকে। রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা সম্পন্ন হওয়ার পরই আদালত রায় ঘোষণা করবে।
No comments