মুক্তিযুদ্ধ- ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো by বেলাল চৌধুরী

ত্তরের দশক শুরু হওয়ার বছর। তখন থাকি আমি কলকাতায় পার্ক সার্কাসে। মিসেস মোদকের ফ্ল্যাটে পেয়িং গেস্ট হিসেবে। মিসেস মোদককে আরো অনেকের সঙ্গে আমিও নানী বলে ডাকি। ভাড়াটে আর বাড়িওয়ালি রঙ্গরসিকতা করেন। বছরের শুরুতেই একদিন তিনি আমাকে তার দেখা একটি স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। স্বপ্নটির মানে খুব একটা ভালো ছিল না।
মিসেস মোদক যার অর্থ করেছিলেন সামনে একটি দুর্যোগ ঘনায়মান এর আগে মিসেস মোদক সম্পর্কে অনেকে আমাকে বলেছিলেন, তার কথা নাকি অনেকাংশেই ফলে যায়; কিন্তু কিভাবে সেটা হয় সে ব্যাপারে কেউ আমাকে কিছু বলতে পারেনি। নানী ছিলেন বরিশালের মেয়ে। এককালের খ্যাতনামা নর্তক ও লেখক চট্টগ্রামের সন্তান বুলবুল চৌধুরীর শাশুড়ি। অর্থাৎ আফরোজা বুলবুলের মা। যখনকার কথা বলছি তখন তার বয়স ষাটের কোঠায় পড়েনি। কর্পোরেশনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। নানীর কথা যে এরকম অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাবে তখন কে ভেবেছিল।
তখন গোটা পশ্চিমবঙ্গ উত্তাল ছিল নকশাল আন্দোলনে। চতুর্দিকে শ্রেণীশত্রু খতম আর জোতদার নিধনের হাঁকডাক। প্রায় প্রতিদিনই একটা না একটা পিলে চমকে দেবার মত খবর। শুধু পশ্চিমবঙ্গ কেন গোটা ভারত সরকারেরই কম্পমান অবস্থা। দিনকে দিন আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে এখানে ওখানে। মেদিনীপুর বিহার ছাড়িয়ে উড়িষ্যা অবধি। শ্রেণী সংগ্রামের সে লড়াইয়ে রীতিমতো পর্যুদস্ত অবস্থা তৎকালীন শাসকশ্রেণী কংগ্রেস তথা লৌহমানবী বলে খ্যাত পণ্ডিত মতিলাল নেহরুর দৌহিত্রি আর স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কাশ্মিরী পণ্ডিত পদবী ছাড়াও সত্যিকারের জ্ঞানবান, বিদগ্ধ জওয়াহের লাল নেহরুর একমাত্র কন্যা ইন্দিরা গান্ধী। পশ্চিমবঙ্গের কর্ণধার তখন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের দৌহিত্র দৌর্দণ্ডপ্রতাপশালী ব্যারিস্টার সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়। আগে থেকেই অাঁচ করা যাচ্ছিল, এ আগুন সহজে থামবার নয়। গোটা পশ্চিমবঙ্গ ব্যাপী তখন তীব্র খাদ্য সঙ্কট। সপ্তাহে একদিন ভাতহীন দিবস এমনকি হোটেলেও ভাত মেলে না। অন্য আর একবেলা ভাত মেলে। মাছে-ভাতে বাঙালির ভাত না হলে চলে না। সে যে কি দুরবস্থা, বলার মতো নয়। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক চেহারা ছিল মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। গুলি, বোমা বিস্ফোরণ, অতর্কিতে হামলা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াল যেন। উগ্রপন্থা হঠাৎ এভাবে নিরীহ ভেতো বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বা উঠতে পারে- সমাজবিদরা চিন্তা করে উঠতে পারেননি। এই যখন অবস্থা তখনই একেবারে হঠাৎ না হলেও কদিন থেকেই শোনা যাচ্ছিল তৎকালীন বাংলাদেশের অবস্থা খুবই সঙ্গীন হয়ে উঠছে। নির্বাচন পরবতর্ী অবস্থায় পাকিস্তানের যুদ্ধবাজ সেনাপতিরা কোনো অবস্থাতেই শেখ মুজিবের নেতৃত্বে নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগকে যে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না সেটা নানা উছিলা তুলে তাদের গড়িমসি দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, উনসত্তরের গণঅভু্যত্থান, ঢাকার ছাত্রসমাজের অস্ত্রের বীরত্বপূর্ণ এবং আপোসহীন সংগ্রাম সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের সাধারণ লোকদের কোনো সম্যক ধারণা না থাকলেও ১৯৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধের সময়ই টের পাওয়া গিয়েছিল জিন্নাহ সাহেবের নেতৃত্বে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ দ্বি-খণ্ডিত হলেও ভাষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও নৈকট্যের কারণে দেশের প্রধান দুইটি সমপ্রদায়ের মধ্যে পুরনো ক্ষত, বিক্ষোভ ও হিংসা-বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ থাকলেও আপদে-বিপদে কিন্তু তারা পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং একাত্মতা বোধে আবদ্ধ। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের অন্তিমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মুখোশ খসে বেরিয়ে পড়লো তাদের রক্তলোলুপ চেহারা। স্বজন নিধনযজ্ঞে মেতে উঠে অতর্কিতে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ল নিরীহ বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর। শুধু ঝাঁপিয়ে পড়াই নয় নারী শিশু বৃদ্ধ নির্বিচারে সবার ওপর হিংস্র হায়েনার মতো নির্মম হত্যালীলায় প্রাণ হারালো তিরিশ লক্ষ মানুষ এবং সেই সঙ্গে সহায়ক মিত্রশক্তির আরো বেশ কিছু সাহসী সেনানী।
আমাদের প্রধান আড্ডা বই আর লেখাপড়ার পাড়া কলেজ স্ট্রীট। কফি হাউসে নতুন নতুন ছেলেমেয়েদের আনাগোনা দেখলেই বোঝা যেত নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরু হয়েছে। নতুন ছেলেমেয়েদের জন্য সকালের দিকের কফি হাউসের প্রধান আকর্ষণ ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শুটিং ফুটিং না থাকলেও প্রায় রোজই সকালের দিকে নিজেই গাড়ি চালিয়ে কফি হাউসে আসতো নিছক আড্ডা মারতে সেই সুদূর দক্ষিণ কলকাতা থেকে। সৌমিত্র তখন শুধু সিনেমার নটই নয় শিল্প, সংস্কৃতি ও সাহিত্য বিষয়ক মাসিক এক্ষণ পত্রিকার সম্পাদকদ্বয়ের একজনও। ছোটবেলার বন্ধু নির্মাল্য আচার্য যিনি অধ্যাপনার সঙ্গে এক্ষণের প্রতিষ্ঠাতা প্রাণপুরুষ হিসেবে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এছাড়া কিংবদন্তীপ্রতিম সত্যজিৎ রায়, কমলকুমার মজুমদার প্রমুখের ছিলেন ঘনিষ্ঠতম। বন্ধুমহলে সৌমিত্র সবার কাছে পুলু নামেই অধিকতর পরিচিত ছিল। ওই আড্ডায় আরো যারা আসতেন তাদের মধ্যে দুষপ্রাপ্য এবং প্রাচীন নিদর্শনাদির সংগ্রাহক এবং প্রকাশক স্বপ্নের ফেরিঅলা বাবু শ্রী শুভেন্দু, অবনী বসু, রণবীর রায় প্রমুখ। এরই মধ্যে হঠাৎ একদিন ঐ '৭' সালেরই মার্চের শেষদিকে দেখা গেল কফি হাউসে অন্য এক ধরনের কলকাকলি, ভীত সন্ত্রস্ত নতুন নতুন মুখের ভিড়। মুখের ভাষা থেকে সব কিছুতেই একটা স্বাতন্ত্র্যের ছাপ। এমনিতেই ঘটিদের চলতি বুলিতে রয়েছে 'বাঙাল মনুষ্য নয়' জাতীয় একটা শব্দবন্ধ। তারমধ্যে আবার ১৯৪৭ সালের পর এ কি নতুন উৎপাত। বিকেলের মধ্যেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে এলো। পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। হানাদার সামরিক জান্তা কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না বলে ইংরেজি ক্র্যাক ডাউন ঢের বেশি লাগসই শোনায় বলেই ব্যবহার করছি। নবাগতদের মধ্যে বেশিরভাগই আনকোরা তরুণ। তাদের ভীতিবিহ্বল মুখ থেকে যেন কথা সরছিল না। আসলে ঘটনার ভয়াবহতা যে টগবগে এই তরুণদের কতটা হতচকিত করে ফেলেছে তা তাদের আচার-আচরণ এবং অসংযত কথাবার্তা থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। মূল ঘটনা ঘটেছে ঢাকায় কিন্তু তার ধাক্কা এসে লেগেছে বাংলাদেশের ৫২ হাজার বর্গমাইলের শেষ সীমানা অবধি। সেটা দেখে এই নৃশংসতার তীব্রতা এবং জের কত শক্তিশালী তা যেন ওই কফি হাউসে দাঁড়িয়েও টের পাচ্ছিলাম।
বিষাদ ভারাক্রান্ত মনে পার্ক সার্কাসে নানীর আস্তানায় ফিরে এলাম। আমাদের বাসস্থানটি ছিল ৪ নম্বর সোহরাওয়াদর্ী এভেনিউ আর ৩ নম্বরটি ছিল সোহরাওয়াদর্ী সাহেবের নিজেরই। আমার জানালার লাগালাগি ছিল ওই বাড়ির ছাদ আর কয়েকটি চিলেকোঠা। যাতে দেখা যেত বেশ কিছু পুরনো বইয়ের ডাঁই। পুরনো বই দেখলেই কেন জানি আমার মনটা সব সময়ই উসখুস করে উঠতো। না জানি এর মধ্যে কোন মনিমাণিক্য লুকিয়ে আছে। সে বাড়িটি তখন পাকিস্তানের উপ-হাইকমিশনারের বাসস্থান। শুধু ওপর তলার চিলেকোঠাটিতে নাকি থাকতেন সোহরাওয়াদর্ী সাহবেদেরই এক বষর্ীয়ান খালা। দেখলাম বাড়িটির ওপর বেশ সগৌরবেই চান-তারা মার্কা পতাকা উড়ছে। পাশেই কয়েকটা দেবদারু গাছ। তখন হুসেন আলী সাহেব ছিলেন কলকাতার পাকিস্তানের উপ-হাইকমিশনার। আজকের মতো তখন টেলিভিশনের চল একেবারেই হয়নি। বিশেষ করে ভারতে। কিন্তু শুনলাম পূর্ব পাকিস্তানে তখন টেলিভিশন চালু হয়ে গেছে। আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সাধক সমপ্রতি প্রয়াত কলিম শরাফী, বন্ধু কবি শহীদ কাদরী, ছোটবেলার আরেক বন্ধু অধুনা প্রয়াত সেলিমউদ্দিন ছিল আমার সম্বল। সেটার ক্ষীণ কণ্ঠস্বরই আমাকে জানান দিত কোথায় কী হচ্ছে। আকাশবাণী এবং অন্যান্য সংবাদ মাধ্যম মারফত খবরা-খবর যা পেতাম তাতে পাকিস্তানীদের বর্বরতা সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানা থাকতো না। আর তাছাড়া দুই বিপরীত মতাবলম্বীতে স্পষ্ট বিভাজন হয়ে যাওয়াতে দিনে দিনে স্পষ্ট হয়ে উঠতে লাগল ঘটনার নারকীয়তা। এর পরের ন'মাসের ইতিহাস তো আজ স্বীকৃতি সত্যেরই অংশ। তো এবার শুধু আমার ওই চারতলার জানালা দিয়ে প্রত্যক্ষ করা কয়েকটি দৃশ্যের অবতারণা নিশ্চয়ই অবান্তর হবে না। প্রথমেই তিন নম্বর ঐতিহাসিক বাড়িটির কথা দিয়েই শুরু করা যাক। একদিন দেখা গেল চাঁন-তারা মার্কা পতাকার বদলে উড়ছে লাল সূর্যখচিত সবুজ জমিনের পতাকা। যার বুকে বাংলাদেশের মানচিত্র। যেটা স্বাধীনতা পরবতর্ী সময়ে পাল্টে নেয়া হয়। সেদিন আওয়ামী লীগের মধ্যে একমাত্র শিক্ষিত মানুষ তাজউদ্দিন আহমদ মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ না হলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কী যে হালহকিকত হতো তা বলা খুবই কঠিন। তিনি শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন বলে রক্ষে।
তাজউদ্দিন আহমদ দেশবাসীর উদ্দেশে এক সংক্ষিপ্ত বেতার ভাষণে বলেন 'অচিরেই আমাদের মাতৃভূমি মুক্ত হয়ে যাবে। কেননা বাংলার প্রতিটি ঘর আজ প্রতিরোধের দুর্ভেদ্য দুর্গ এবং প্রতিটি ইঞ্চি জমি এখন রণাঙ্গন। যতই দিন যাচ্ছে আমাদের মুক্তিবাহিনী ততই শক্তিশালী হচ্ছে এবং তারা যে কোনও সময় যে কোনও স্থানে নরজলস্নাদ পাকবাহিনীতে চরম আঘাত হানতে সক্ষম। তিনি আরও কঠিন আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে বলেন, 'আমরা বঙ্গবন্ধুকে ইয়াহিয়ার দয়ার দান হিসেবে আমাদের কাছে েেত চাই না। আমরা শত্রুর কারাগার থেকেই তাঁকে ছিনিয়ে আনব।'
দেশের ভবিষ্যৎ সমাজ ব্যবস্থার কথা উলেস্নখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা যে দেশ গড়তে যাচ্ছি তা হবে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। এখানে শ্রমিক-কৃষকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, আমার এ সংগ্রাম সেদিন সার্থক হবে যেদিন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করতে পারব।
একদিন আকাশবাণীতেই ঢাকা থেকে কোন রকমে সস্ত্রীক ফিরে যাওয়া উপরাষ্ট্র দূত হোসেন আলীর আবেগাপস্নুত কণ্ঠে শোনা গেল। তার ভাষাতেই বলার চেষ্টা করছি- 'যখন দেখলাম দেশে বর্বরতা আর নৃশংসতা ছাড়া আর কিছুই নাই, আমার আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন আর কারুরই ঐ পাকিস্তানী নরদানবদের হাত থেকে রক্ষা নেই, তখনই আমি স্বাধীনতা ঘোষণা দিলাম। এছাড়া সেদিন আর কোনো গতান্তরই ছিল না।'
পরদিনই দেখলাম একে একে দেশপ্রেমী বাঙালি জাতীয়তাবাদের সমর্থক বাঙালি কূটনীতিকরা দেশ-বিদেশে স্বাধীন সাবভৌম বাংলাদেশের সপক্ষে আনুগত্য স্বীকার করে স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ করছেন তখনই বোঝা গেল পাকিস্তানের দিন শেষ হয়ে গেল বলে। এরপরেও বহু নাটকীয়তা করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে পাকিস্তান। কিন্তু ফলাফল যে অষ্টরম্ভা সে তো সবারই জানা।
একদিন দেখলাম আমার জানালার পাশ দিয়ে ছাদের ঐ চিলেকুঠুরিতে একটি পরিবার এসে হাজির হয়েছেন। দূর থেকে সেজদায় পড়ে থাকা মহিলাটিকে দেখে বোঝা গেল তিনি গৃহকত্রর্ী। এমনকি তাদের কাজের মেয়েটির মুখেও শুনলাম 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসিঃইই।'
পরে জেনেছিলামই নয় তার সঙ্গে বসে অসংখ্যবার মজার আড্ডাও মেরেছি। তিনি ছিলেন আমাদের মঞ্জু ভাই। টাঙ্গাইলের খন্দকার আসাদুজ্জামান। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অর্থসচিব। এক টাকার নোটের ওপর যার স্বাক্ষর এখনো অনেকে স্বাধীনতার স্মারক হিসেবে রেখে দিয়েছেন।
ঐ ছাদের ওপরই এক ঈদের দিনে আমি দেখেছি বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামালকে। রাফিয়া আখতার ডলি আর তার স্বামীকে। সম্ভবত তখন তারা সদ্য বিবাহিত। এভাবেই একদিন জয়বাংলা ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে এল আমাদের প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য মাত্র চার দশকও আমরা আমাদের অর্জিত স্বাধীনতাকে ধরে রাখতে পারিনি আমাদের পর্বতপ্রমাণ ব্যর্থতা ছাড়াও অবিমৃষ্যকারিতার দরুন।
মুক্তিযুদ্ধ কথাটা মুখে আনতেও দু'বার ভাবতে হয়। আজ আমাদের প্রাজ্ঞজনদের মুখেও শুনতে হচ্ছে আজ এত বছর পরে এই যদি অবস্থা হবে জানা যেতো তাহলে তো পাকিস্তানই ভালো ছিল। অন্তত এক ধরনের সুখ-শান্তি তো ছিল। আর সেদিনও যেমন মিলিটারির বুটের তলায় ছিলাম আজো না হয় সে রকমই থাকতাম। প্রভেদটা কি ছিল।' দুঃসহ উপলব্ধি নিঃসন্দেহে।
=============================
বধ্যভূমিতে গেয়ে গেল যাঁরা জীবনের জয়গান  ভিক্ষাবৃত্তির মুখোশ  লন্ডন ভ্রমণ এবং সুখ-দুঃখের দু'টি কথা  শিক্ষার মানোন্নয়নে চাই যথার্থ মনিটরিং  পান্থজনঃ কী পাই নি তারি হিসাব মিলাতে মন মোর নহে রাজী  বাঙালির বৌদ্ধিক ঐতিহ্য  ৭২-এর সংবিধানের আলোকে কি রূপকল্প বদল করা উচিত নয়?  জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ :নতুন যুগের বার্তাবাহক  প্রশাসনে জনগণের আস্থা অর্জন জরুরি  পরিবেশ সুরক্ষায় তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা  রাত যায় দিন আসে  শিক্ষা ছাড়া অর্থনৈতিক মুক্তি অসম্ভব  ভালবাসা নিভিয়ে দেয় হিংসার আগুন  মহান মুক্তিযুদ্ধঃ প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি  রহস্যের পর্দা সরিয়ে দ্যুতিময় এমিলি ডিকিনসন  বেগম রোকেয়াঃ নারী জাগরণের বিস্ময়কর প্রতিভা  শিক্ষারমান ও সমকালীন প্রেক্ষাপট  বিজয় দিবসঃ অর্জন ও সম্ভাবনা  একটি ট্রেন জার্নির ছবি ও মাইকেলের জীবন দর্শন  ডক্টর ইউনূসকে নিয়ে বিতর্ক  উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনা  বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন  ক্ষুদ্রঋণ ও বাংলাদেশের দারিদ্র্য  শেয়ারবাজারে লঙ্কাকাণ্ড  মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার  শক্ত ভিত ছাড়া উঁচু ভবন হয় না  ট্রেন টু বেনাপোল  বনের নাম দুধপুকুরিয়া  নথি প্রকাশ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার অ্যাসাঞ্জের  ছিটমহলবাসীর নাগরিক অধিকার  শিক্ষা আসলে কোনটা  জীবন ব্যাকরণঃ হিরালি  ন্যাটো ও রাশিয়ার সমঝোতা ইরানের ওপর কি প্রভাব ফেলবে  জার্নি বাই ট্রেন  পারিষদদলে বলেঃ  চরাঞ্চলের ভূমি ব্যবস্থাপনা  সচেতন হলে শিশু প্রতিবন্ধী হয় না  স্মৃতির জানালায় বিজয়ের মাস  বিচারপতিদের সামনে যখন ‘ঘুষ’  কয়লানীতিঃ প্রথম থেকে দশম খসড়ার পূর্বাপর  শ্বাপদসংকুল পথ


দৈনিক ইত্তেফাক এর সৌজন্যে
লেখকঃ বেলাল চৌধুরী


এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.