টালমাটাল শেয়ারবাজার
দেশের শেয়ারবাজার কিছুদিন ধরে বেশ টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কয়েক দিনই মূল্যসূচকে বড় ধরনের পতন ঘটছে। অর্থাৎ বাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে। এই ধারাবাহিকতায় গত রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ মূল্যসূচকের স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন ঘটেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ এমনই বেসামাল আচরণ করেছে, যা আবার মনে করিয়ে দিয়েছে যে আমাদের পুঁজিবাজারটি বড় ও স্ফীত হলেও ঠিক পরিপক্বতা অর্জন করতে পারেনি। একশ্রেণীর বিনিয়োগকারী রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করে ফেলেছে। মনে হচ্ছে, শেয়ারবাজারে শুধু দাম বাড়বেই, কখনো কমতে পারবে না—এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিতে তারা আচ্ছন্ন, যা বাস্তবতাবর্জিত এবং পুঁজিবাজারকে সত্যিকারভাবে শক্তিশালী করার বড় অন্তরায়।
বস্তুত বেশ অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশের শেয়ারবাজার যেভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠছিল, তা ছিল বহুলাংশে কৃত্রিম ও যৌক্তিকতাহীন। ফাটকাবাজির বাজারে ক্রমাগত অর্থের জোগান নির্বিচারে বিভিন্ন শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছিল। আর এতে প্রলুব্ধ হয়ে স্বল্প পুঁজি নিয়ে ছুটে আসছিল বিভিন্ন মানুষ। বাজারের ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় না নিয়ে এভাবে অনেকেই সহজে টাকা বানানোর দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম ভেঙে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছিল। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আরও দাম বাড়ার ও নিরন্তর মুনাফা করার অনেকটা কল্পিত প্রত্যাশায় প্রায় সবাই যেন বুঁদ হয়ে বসে ছিল। অদক্ষ এসইসিও ঘন ঘন নীতি-নির্দেশনা পরিবর্তন করে বাজারের অস্থিরতাকে উসকে দিচ্ছিল। সর্বোপরি পুঁজিবাজারের বড় বড় ক্রীড়নক সরকারসহ নীতিনির্ধারকদের বিভিন্নভাবে চাপের মুখে রাখার কৌশল নিয়েছিল যেন বাজারের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে রাশ টানতে না পারে। এসবের অনিবার্য পরিণতি যে একপর্যায়ে বাজারের বড় পতন—তা বুঝেও কেউ বুঝতে চায়নি।
এই বাস্তবতায় শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন বিনিয়োগকারীদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও অস্বাভাবিক ছিল না। যাঁরা কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছেন, দাম বাড়ার একটা পর্যায়ে তাঁরা শেয়ার বেচে মুনাফা তুলে নেবেন—এটাই স্বাভাবিক, যা দরপতনকে ত্বরান্বিত করেছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতিজনিত চাপ প্রশমনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাবাজারে তারল্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের দিকে জোর দিয়েছে। শিল্পঋণের টাকা শেয়ারবাজারে খাটানোর প্রবণতা রোধেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নজরদারি কঠোর করতে হয়েছে। এসবের কিছুটা প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। কিন্তু সার্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার স্বার্থে, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার স্বার্থে এ ধরনের কঠোরতার কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের বড় দরপতন হওয়াটাও বাজার সংশোধনের প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখতে হবে। বিনিয়োগকারীদেরও বুঝতে হবে, যতটা লাভের প্রত্যাশা তাঁরা করেন, ততটা লোকসানের ঝুঁকিও রয়েছে। এটাই কঠিন সত্য। কারণ, পুঁজিবাজারে ফাটকাবাজি থাকবেই। সর্বোপরি এসইসিকে সুপরিকল্পিতভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করতে হবে, যা হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি। বাজার বাড়া-কমার সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো এসইসির কাজ নয়।
বস্তুত বেশ অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশের শেয়ারবাজার যেভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠছিল, তা ছিল বহুলাংশে কৃত্রিম ও যৌক্তিকতাহীন। ফাটকাবাজির বাজারে ক্রমাগত অর্থের জোগান নির্বিচারে বিভিন্ন শেয়ারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছিল। আর এতে প্রলুব্ধ হয়ে স্বল্প পুঁজি নিয়ে ছুটে আসছিল বিভিন্ন মানুষ। বাজারের ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় না নিয়ে এভাবে অনেকেই সহজে টাকা বানানোর দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম ভেঙে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছিল। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আরও দাম বাড়ার ও নিরন্তর মুনাফা করার অনেকটা কল্পিত প্রত্যাশায় প্রায় সবাই যেন বুঁদ হয়ে বসে ছিল। অদক্ষ এসইসিও ঘন ঘন নীতি-নির্দেশনা পরিবর্তন করে বাজারের অস্থিরতাকে উসকে দিচ্ছিল। সর্বোপরি পুঁজিবাজারের বড় বড় ক্রীড়নক সরকারসহ নীতিনির্ধারকদের বিভিন্নভাবে চাপের মুখে রাখার কৌশল নিয়েছিল যেন বাজারের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে রাশ টানতে না পারে। এসবের অনিবার্য পরিণতি যে একপর্যায়ে বাজারের বড় পতন—তা বুঝেও কেউ বুঝতে চায়নি।
এই বাস্তবতায় শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন বিনিয়োগকারীদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও অস্বাভাবিক ছিল না। যাঁরা কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছেন, দাম বাড়ার একটা পর্যায়ে তাঁরা শেয়ার বেচে মুনাফা তুলে নেবেন—এটাই স্বাভাবিক, যা দরপতনকে ত্বরান্বিত করেছে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতিজনিত চাপ প্রশমনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাবাজারে তারল্যপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের দিকে জোর দিয়েছে। শিল্পঋণের টাকা শেয়ারবাজারে খাটানোর প্রবণতা রোধেও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নজরদারি কঠোর করতে হয়েছে। এসবের কিছুটা প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে। কিন্তু সার্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার স্বার্থে, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলার স্বার্থে এ ধরনের কঠোরতার কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের বড় দরপতন হওয়াটাও বাজার সংশোধনের প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখতে হবে। বিনিয়োগকারীদেরও বুঝতে হবে, যতটা লাভের প্রত্যাশা তাঁরা করেন, ততটা লোকসানের ঝুঁকিও রয়েছে। এটাই কঠিন সত্য। কারণ, পুঁজিবাজারে ফাটকাবাজি থাকবেই। সর্বোপরি এসইসিকে সুপরিকল্পিতভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করতে হবে, যা হতে হবে দীর্ঘমেয়াদি। বাজার বাড়া-কমার সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো এসইসির কাজ নয়।
No comments