চিরপথের সঙ্গী আমার by লায়লা হাসান
হাসান ইমাম মা অন্তঃপ্রাণ। বিয়ের বাসরে আমাদের প্রথম আলাপন মাকে কেন্দ্র করেই। চার বছরের আলী ইমাম আর দুই বছরের হাসান ইমামকে নিয়ে কুড়ি বছরের মা সৈয়দা সঈদা খাতুন বিধবা হন। মাত্র ছয় বছরের বিবাহিত জীবন ওর। বছর চারেক কলকাতায় চাকরিরত বাবা সৈয়দ সোলায়মান আলী সপ্তাহান্তের ছুটিতে বর্ধমানে শ্বশুরালয়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেন। শেষ দুই বছর কলকাতায় তাঁরা একত্রে সংসারজীবন যাপন করেন। মা স্নেহশীলা, মমতাময়ী, সন্তান অন্তঃপ্রাণ। প্রাণপণে আগলে রেখে মানুষ করেছেন ছেলেদের।
ছাত্রজীবনে ১৯৫২ সালে অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ ফেস্টিভালে উনি রবীন্দ্রসংগীতে প্রথম স্থান পেয়েছিলেন। মুস্তাফা মনোয়ার নির্দেশিত রক্তকরবী টেলিনাটকে বিশুর চরিত্রে অভিনয় করার সময় বিশুর গানগুলো হাসান ইমাম নিজেই গেয়েছিলেন। মোস্তফা কামাল সৈয়দ প্রযোজিত সংগীতপ্রধান নাটক স্বল্প বিলাস-এর মুখ্য চরিত্রে একাধারে গান ও অভিনয় দুই-ই করেন।
স্বামী হিসেবে হাসান ইমাম এক কথায় অতুলনীয়, যা প্রতিটি মেয়ের একান্ত কাম্য। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্বামী, বন্ধু, গাইড ও অভিভাবক। উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর তাঁর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। ওর ঐকান্তিক অনুপ্রেরণা ও ইচ্ছাই আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে বাধ্য করেছে। বিবাহিত জীবনে শিল্পী হিসেবে যে প্রতিষ্ঠা আমি পেয়েছি, তার মূলেও তিনিই।
পিতা হাসান ইমাম অতিমাত্রায় সন্তানবৎসল, উপদেষ্টা, কর্তব্যপরায়ণ, দায়িত্বশীল ও সন্তানের আদর্শ। যাঁকে অনুসরণ করে ওরা নিজেদের নীতিনিষ্ঠ, সৎ, আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট। শত ব্যস্ততার মধ্যেও সন্তান ও সংসারের প্রতি সব সময় সজাগ দৃষ্টি। ওদের পড়াশোনা, চিকিৎসা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতেই তাঁর কড়া নজর।
অকাল পিতৃবিয়োগের পর সৈয়দ হাসান ইমাম দাদাবাড়ি খুলনায় ফিরে না গিয়ে বাল্যকাল ও ছাত্রকাল তাঁর নানাবাড়িতেই কাটান। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় বর্ধমান টাউন স্কুলে এবং ক্রমান্বয়ে রাজ কলেজ ও টেকনিক্যাল কলেজে। তারপর ১৯৫৭ সালে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন। ছাত্রজীবনে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। রাজ কলেজের সাংস্কৃতিক সম্পাদক, কমনরুম সম্পাদক নিযুক্ত হন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে বর্ধমান জেলা গণনাট্য সংঘের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন হাসান ইমাম।
ছাত্রজীবনে বর্ধমানে হাসান ইমাম বিভিন্ন মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করে বিশেষ প্রশংসিত হন। ১৯৫৫ সালে কলেজের অনুষ্ঠানে তাঁর গান শুনে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় তাঁকে বিনা পারিশ্রমিকে গান শেখানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মাত্র এক বছর তিনি উচ্চাঙ্গসংগীতে তামিল নেন।
বেতার ও বাংলাদেশ টিভির জন্মলগ্ন থেকেই তিনি নাটকে নিয়মিত অংশ নেন। টিভির দুই শতাধিক নাটকের মধ্যে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক, মুস্তাফা মনোয়ার নির্দেশিত শেক্সপিয়ারের মুখরা রমণী বশীকরণ, রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী, মোস্তফা কামাল সৈয়দ প্রযোজিত স্বপ্ন বিলাস ইত্যাদি।
ক্রমে তিনি মঞ্চনাট্য নির্দেশনায় নিয়োজিত হন। গোর্কির মা, রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী, সোমেন চন্দর না, আবর্ত ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য নির্দেশনা। মনে পড়ে ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনের সময় সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত প্রায় ১০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে বাংলা একাডেমীর বটমূলে মঞ্চায়িত রক্তকরবী নাটকটি কী বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল!
একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নাট্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। সৈয়দ হাসান ইমাম মুজিবনগর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সালেহ আহমেদ নামে বাংলা সংবাদ পাঠ করতেন। পরে তিনি বহু টিভি সিরিয়াল, টিভি নাটক পরিচালনা ও অভিনয় করেন। এ ছাড়া সৈয়দ হাসান ইমাম দেশে-বিদেশে প্রচুর নাটকে নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেন। আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী বিরচিত পলাশী থেকে ধানমন্ডি তাঁর নির্দেশনায় সফলভাবে মঞ্চায়িত হয় ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ লন্ডনের লোগান হলে।
হাসান ইমাম বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আবৃত্তিকার। বেতার, দূরদর্শন ও মঞ্চের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আবৃত্তিকার হিসেবে তাঁর অবাধ বিচরণ।
চলচ্চিত্রের কথায় আসার আগে একটি মজার গল্প বলি। হাসান ইমাম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করার পর দেশে ফিরে এসে ন্যাশনাল ব্যাংকে চাকরিতে যোগ দেন। ওই সময় ব্যাংকে এক ভদ্রলোক প্রায়ই আসতেন টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার জন্য। ভদ্রলোক, অর্থাৎ আবদুল আওয়াল সাহেব ওকে সিনেমায় অভিনয় করার জন্য উৎসাহিত করতেন। বলতেন, ‘তোমার নাটক আমি নিয়মিত দেখি, তুমি এত সুদর্শন, ভালো অভিনয় করো, তুমি সিনেমায় অভিনয় করছ না কেন?’ এই আওয়াল সাহেবই (আমার আব্বা) পরবর্তীকালে হাসান ইমামের শ্বশুর হন।
হাসান ইমাম ১৯৬০ সালে প্রথম চলচ্চিত্রে যোগ দেন। তাঁর প্রথম দিককার ছবির মধ্যে রাজা এল শহরে, শীত বিকেল, জানাজানি, ধারাপাত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। রাজা এল শহরের শুটিং করতে গিয়ে চাদরে আগুন লেগে প্রায় পুড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অল্পের জন্য বেঁচে যান।
১৯৬৫ সালে সমগ্র পাকিস্তানের চলচ্চিত্র উৎসবে হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান লাভ করেন খান আতার অনেক দিনের চেনা ছবিতে অভিনয়ের জন্য।
সংগঠক হাসান ইমামের কৃতিত্ব আরও এক কাঠি ওপরে। একাত্তরের গণ-আন্দোলনে তিনি ছিলেন বিক্ষুব্ধ শিল্পীসমাজের আহ্বায়ক। একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনের সময় ৮ থেকে ২৫ মার্চ ওরা বেতার ও টেলিভিশন নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি টেলিভিশন নাট্যকার, নাট্যশিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন সুদীর্ঘ ৩৮ বছর।
শহীদজননী জাহানারা ইমামের প্রয়াণের পর তিনি বাংলাদেশের প্রধান মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’-এর আহ্বায়কের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন।
বাইরের জগতে হাসান ইমাম বেশ রাশভারী বলে পরিচিত, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে দারুণ কৌতুকপ্রিয়, রোমান্টিক, বাকপটু, হাসি-ঠাট্টায় মাতিয়ে রাখেন বাড়িটাকে। বহু সময়ের পথ অতিক্রম করে আজ আমরা প্রায় শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আজ তাঁর জন্মদিন। ‘কি পাইনি তার হিসাব মেলাতে মন মোর নহে রাজি’, তবু যখন পেছন ফিরে তাকাই, তখন দেখি তিনি মানুষের অফুরান শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, স্নেহ পেয়েছেন। সেটাই তাঁকে দিয়েছে চলার পথের প্রেরণা।
ছাত্রজীবনে ১৯৫২ সালে অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ ফেস্টিভালে উনি রবীন্দ্রসংগীতে প্রথম স্থান পেয়েছিলেন। মুস্তাফা মনোয়ার নির্দেশিত রক্তকরবী টেলিনাটকে বিশুর চরিত্রে অভিনয় করার সময় বিশুর গানগুলো হাসান ইমাম নিজেই গেয়েছিলেন। মোস্তফা কামাল সৈয়দ প্রযোজিত সংগীতপ্রধান নাটক স্বল্প বিলাস-এর মুখ্য চরিত্রে একাধারে গান ও অভিনয় দুই-ই করেন।
স্বামী হিসেবে হাসান ইমাম এক কথায় অতুলনীয়, যা প্রতিটি মেয়ের একান্ত কাম্য। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্বামী, বন্ধু, গাইড ও অভিভাবক। উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর তাঁর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। ওর ঐকান্তিক অনুপ্রেরণা ও ইচ্ছাই আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে বাধ্য করেছে। বিবাহিত জীবনে শিল্পী হিসেবে যে প্রতিষ্ঠা আমি পেয়েছি, তার মূলেও তিনিই।
পিতা হাসান ইমাম অতিমাত্রায় সন্তানবৎসল, উপদেষ্টা, কর্তব্যপরায়ণ, দায়িত্বশীল ও সন্তানের আদর্শ। যাঁকে অনুসরণ করে ওরা নিজেদের নীতিনিষ্ঠ, সৎ, আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট। শত ব্যস্ততার মধ্যেও সন্তান ও সংসারের প্রতি সব সময় সজাগ দৃষ্টি। ওদের পড়াশোনা, চিকিৎসা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতেই তাঁর কড়া নজর।
অকাল পিতৃবিয়োগের পর সৈয়দ হাসান ইমাম দাদাবাড়ি খুলনায় ফিরে না গিয়ে বাল্যকাল ও ছাত্রকাল তাঁর নানাবাড়িতেই কাটান। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় বর্ধমান টাউন স্কুলে এবং ক্রমান্বয়ে রাজ কলেজ ও টেকনিক্যাল কলেজে। তারপর ১৯৫৭ সালে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন। ছাত্রজীবনে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। রাজ কলেজের সাংস্কৃতিক সম্পাদক, কমনরুম সম্পাদক নিযুক্ত হন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে বর্ধমান জেলা গণনাট্য সংঘের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন হাসান ইমাম।
ছাত্রজীবনে বর্ধমানে হাসান ইমাম বিভিন্ন মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করে বিশেষ প্রশংসিত হন। ১৯৫৫ সালে কলেজের অনুষ্ঠানে তাঁর গান শুনে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় তাঁকে বিনা পারিশ্রমিকে গান শেখানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মাত্র এক বছর তিনি উচ্চাঙ্গসংগীতে তামিল নেন।
বেতার ও বাংলাদেশ টিভির জন্মলগ্ন থেকেই তিনি নাটকে নিয়মিত অংশ নেন। টিভির দুই শতাধিক নাটকের মধ্যে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক, মুস্তাফা মনোয়ার নির্দেশিত শেক্সপিয়ারের মুখরা রমণী বশীকরণ, রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী, মোস্তফা কামাল সৈয়দ প্রযোজিত স্বপ্ন বিলাস ইত্যাদি।
ক্রমে তিনি মঞ্চনাট্য নির্দেশনায় নিয়োজিত হন। গোর্কির মা, রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী, সোমেন চন্দর না, আবর্ত ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য নির্দেশনা। মনে পড়ে ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলনের সময় সংস্কৃতি সংসদ আয়োজিত প্রায় ১০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে বাংলা একাডেমীর বটমূলে মঞ্চায়িত রক্তকরবী নাটকটি কী বিপুল সাড়া জাগিয়েছিল!
একাত্তরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নাট্য বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। সৈয়দ হাসান ইমাম মুজিবনগর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সালেহ আহমেদ নামে বাংলা সংবাদ পাঠ করতেন। পরে তিনি বহু টিভি সিরিয়াল, টিভি নাটক পরিচালনা ও অভিনয় করেন। এ ছাড়া সৈয়দ হাসান ইমাম দেশে-বিদেশে প্রচুর নাটকে নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেন। আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী বিরচিত পলাশী থেকে ধানমন্ডি তাঁর নির্দেশনায় সফলভাবে মঞ্চায়িত হয় ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ লন্ডনের লোগান হলে।
হাসান ইমাম বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আবৃত্তিকার। বেতার, দূরদর্শন ও মঞ্চের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আবৃত্তিকার হিসেবে তাঁর অবাধ বিচরণ।
চলচ্চিত্রের কথায় আসার আগে একটি মজার গল্প বলি। হাসান ইমাম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করার পর দেশে ফিরে এসে ন্যাশনাল ব্যাংকে চাকরিতে যোগ দেন। ওই সময় ব্যাংকে এক ভদ্রলোক প্রায়ই আসতেন টাকা তোলা বা জমা দেওয়ার জন্য। ভদ্রলোক, অর্থাৎ আবদুল আওয়াল সাহেব ওকে সিনেমায় অভিনয় করার জন্য উৎসাহিত করতেন। বলতেন, ‘তোমার নাটক আমি নিয়মিত দেখি, তুমি এত সুদর্শন, ভালো অভিনয় করো, তুমি সিনেমায় অভিনয় করছ না কেন?’ এই আওয়াল সাহেবই (আমার আব্বা) পরবর্তীকালে হাসান ইমামের শ্বশুর হন।
হাসান ইমাম ১৯৬০ সালে প্রথম চলচ্চিত্রে যোগ দেন। তাঁর প্রথম দিককার ছবির মধ্যে রাজা এল শহরে, শীত বিকেল, জানাজানি, ধারাপাত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। রাজা এল শহরের শুটিং করতে গিয়ে চাদরে আগুন লেগে প্রায় পুড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অল্পের জন্য বেঁচে যান।
১৯৬৫ সালে সমগ্র পাকিস্তানের চলচ্চিত্র উৎসবে হাসান ইমাম শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান লাভ করেন খান আতার অনেক দিনের চেনা ছবিতে অভিনয়ের জন্য।
সংগঠক হাসান ইমামের কৃতিত্ব আরও এক কাঠি ওপরে। একাত্তরের গণ-আন্দোলনে তিনি ছিলেন বিক্ষুব্ধ শিল্পীসমাজের আহ্বায়ক। একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলনের সময় ৮ থেকে ২৫ মার্চ ওরা বেতার ও টেলিভিশন নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি টেলিভিশন নাট্যকার, নাট্যশিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন সুদীর্ঘ ৩৮ বছর।
শহীদজননী জাহানারা ইমামের প্রয়াণের পর তিনি বাংলাদেশের প্রধান মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’-এর আহ্বায়কের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন।
বাইরের জগতে হাসান ইমাম বেশ রাশভারী বলে পরিচিত, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে দারুণ কৌতুকপ্রিয়, রোমান্টিক, বাকপটু, হাসি-ঠাট্টায় মাতিয়ে রাখেন বাড়িটাকে। বহু সময়ের পথ অতিক্রম করে আজ আমরা প্রায় শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আজ তাঁর জন্মদিন। ‘কি পাইনি তার হিসাব মেলাতে মন মোর নহে রাজি’, তবু যখন পেছন ফিরে তাকাই, তখন দেখি তিনি মানুষের অফুরান শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, স্নেহ পেয়েছেন। সেটাই তাঁকে দিয়েছে চলার পথের প্রেরণা।
No comments