মন্ত্রী বড় না দল বড় -তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় মন্ত্রী ও সাংসদদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির যে অভিযোগ উঠেছে, তা নতুন নয়। তবে এ কারণে প্রশ্নটি তাত্পর্যহীন বলেও উপেক্ষা করা যাবে না। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাই সারা বছর জনগণের সঙ্গে থেকে কাজ করেন। এভাবে এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে থেকে এক একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে স্থানীয় জনগণের সেতুবন্ধ গড়ে ওঠে। নির্বাচনের সময় দলের কার্যক্রম ও তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের সঙ্গে যোগসূত্র জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মন্ত্রী ও সাংসদেরা এলাকার কর্মীদের কাছ থেকে দূরে সরে যান। এর ফলে একধরনের জনবিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হয়। কোনো রাজনৈতিক সরকারের জন্য এটা বিপর্যয় সৃষ্টির মূল কারণ হয়ে উঠতে পারে।
মানুষ ভোট দিয়ে কোনো দলকে সরকারে পাঠায় মূলত তাদের কর্মসূচি, নির্বাচনী ইশতেহারে বর্ণিত প্রতিশ্রুতি ও এলাকায় সেই দলের কাজের সামগ্রিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে। সুতরাং সরকারের প্রাণ হলো সেই দল, যা জনগণকে ভোটদানে অনুপ্রাণিত করেছে। সে জন্যই বলা হয়, দল সরকার পরিচালনা করবে, সরকার দলকে নয়। আমাদের দেশে সাধারণত এর ঠিক উল্টো ব্যাপারটিই ঘটতে দেখা যায়। সাংসদ বা মন্ত্রীরা মনে করেন তাঁরাই সর্বেসর্বা, দল তুচ্ছ। এভাবে সরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার থেকে বিচ্যুত হয়। সরকার ও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
মন্ত্রী বা সাংসদ যখন নিজেকে দলের ঊর্ধ্বে স্থাপন করেন, তখন নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা রকম অনৈতিক প্রবণতা উত্সাহিত হয়। দেখা যায়, প্রতিদিন মিন্টো রোড-হেয়ার রোডের মন্ত্রিপাড়ায় এবং সাংসদদের আবাসিক ভবনগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকার নানা স্তরের নেতা-কর্মীদের ভিড়। মন্ত্রীদের সঙ্গে একবার দেখা করতে পারলে অনেক সময় বিরাট কোনো সুবিধা আদায় করা সম্ভব হয় বলেই এই সংস্কৃতি চালু হয়েছে। মন্ত্রী-সাংসদেরাও এ প্রবণতাকে উত্সাহিত করেন। কারণ, দল তাঁদের কাছে প্রাধান্য পায় না। একদল চাটুকার পরিবেষ্টিত হয়ে মন্ত্রীরা কার্যত একটি ছোট্ট জগতে বন্দী হয়ে পড়েন। এভাবে অনৈতিক লেনদেনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বর্ধিত সভায় একটি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য ছিল অসাধারণ। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘দল ও সরকারকে আলাদা করতে হবে।’ এ মন্তব্যের আসল তাত্পর্য হলো, মন্ত্রীর কথায় দল চলবে না, বরং দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রীকে কাজ করতে হবে। এই নীতি কার্যকর করা না হলে সরকারের ওপর দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির বাধ্যবাধকতা কার্যকর করা যাবে না।
সবচেয়ে ভালো হয়, যদি দলের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রিত্বে না থাকেন। ১৯৫৭ সালে শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দল গোছানোর কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকেই দাবি ওঠে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যেন প্রধানমন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে দলের সভাপতি হন। তখন সেটা কার্যকর না হলেও বাকশাল গঠনের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দলের সভাপতির দায়িত্ব দেন এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে।
সরকার ও দলকে আলাদা রাখার অর্থ এই নয় যে দুটি স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে তারা কাজ করবে। বরং দল ও সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের জন্যই এটা দরকার।
মানুষ ভোট দিয়ে কোনো দলকে সরকারে পাঠায় মূলত তাদের কর্মসূচি, নির্বাচনী ইশতেহারে বর্ণিত প্রতিশ্রুতি ও এলাকায় সেই দলের কাজের সামগ্রিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে। সুতরাং সরকারের প্রাণ হলো সেই দল, যা জনগণকে ভোটদানে অনুপ্রাণিত করেছে। সে জন্যই বলা হয়, দল সরকার পরিচালনা করবে, সরকার দলকে নয়। আমাদের দেশে সাধারণত এর ঠিক উল্টো ব্যাপারটিই ঘটতে দেখা যায়। সাংসদ বা মন্ত্রীরা মনে করেন তাঁরাই সর্বেসর্বা, দল তুচ্ছ। এভাবে সরকার রাজনৈতিক অঙ্গীকার থেকে বিচ্যুত হয়। সরকার ও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
মন্ত্রী বা সাংসদ যখন নিজেকে দলের ঊর্ধ্বে স্থাপন করেন, তখন নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা রকম অনৈতিক প্রবণতা উত্সাহিত হয়। দেখা যায়, প্রতিদিন মিন্টো রোড-হেয়ার রোডের মন্ত্রিপাড়ায় এবং সাংসদদের আবাসিক ভবনগুলোতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকার নানা স্তরের নেতা-কর্মীদের ভিড়। মন্ত্রীদের সঙ্গে একবার দেখা করতে পারলে অনেক সময় বিরাট কোনো সুবিধা আদায় করা সম্ভব হয় বলেই এই সংস্কৃতি চালু হয়েছে। মন্ত্রী-সাংসদেরাও এ প্রবণতাকে উত্সাহিত করেন। কারণ, দল তাঁদের কাছে প্রাধান্য পায় না। একদল চাটুকার পরিবেষ্টিত হয়ে মন্ত্রীরা কার্যত একটি ছোট্ট জগতে বন্দী হয়ে পড়েন। এভাবে অনৈতিক লেনদেনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
বর্ধিত সভায় একটি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য ছিল অসাধারণ। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘দল ও সরকারকে আলাদা করতে হবে।’ এ মন্তব্যের আসল তাত্পর্য হলো, মন্ত্রীর কথায় দল চলবে না, বরং দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রীকে কাজ করতে হবে। এই নীতি কার্যকর করা না হলে সরকারের ওপর দলের রাজনৈতিক কর্মসূচির বাধ্যবাধকতা কার্যকর করা যাবে না।
সবচেয়ে ভালো হয়, যদি দলের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রিত্বে না থাকেন। ১৯৫৭ সালে শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দল গোছানোর কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকেই দাবি ওঠে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যেন প্রধানমন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে দলের সভাপতি হন। তখন সেটা কার্যকর না হলেও বাকশাল গঠনের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দলের সভাপতির দায়িত্ব দেন এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে।
সরকার ও দলকে আলাদা রাখার অর্থ এই নয় যে দুটি স্বতন্ত্র সত্তা হিসেবে তারা কাজ করবে। বরং দল ও সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের জন্যই এটা দরকার।
No comments