একটি স্থায়ী পর্যালোচনা পরিষদ গঠন করা উচিত -সংবিধান সংশোধন
কিছু দিন ধরে সরকারের তরফে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী শফিক আহমেদ এ নিয়ে মোটামুটি পরিষ্কারভাবে বললেন, সংবিধান সংশোধনের কাজে তাঁরা হাত দিতে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে প্রাথমিক কাজ করবে আইন কমিশন। তাদের তৈরি করা সংশোধনীর খসড়া নিয়ে জাতীয় সংসদের ভেতরে ও বাইরে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সংশোধনী আনা হবে।
৩৭ বছরে আমাদের সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়েছে ১৪ বার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংবিধান সংশোধন করা হয় তাকে আরও উন্নত ও গণমুখী করার লক্ষ্যে। কিন্তু আমাদের সংবিধানের সংশোধনীগুলো রাষ্ট্রের এই সর্বোচ্চ দলিলের অবনমন ঘটিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে এমন সংশোধনীও আনা হয়েছে, যার ফলে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, এর অন্তর্নিহিত চেতনা নেতিবাচক দিকে বদলে গিয়েছে। এসব অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিলে সংবিধান সংশোধনীর প্রসঙ্গ ওঠামাত্র উদ্বেগ জাগতে পারে, প্রশ্ন উঠতে পারে সংশোধনীর উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন তো বলেই ফেললেন, ‘আবারও ক্ষমতায় আসার পথ পরিষ্কার করতেই সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।’
সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিতেই পারে, বিরোধী দলের তাতে আপত্তি জানাতেই হবে এমন নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতসহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোয় সময়ে সময়ে অনেকবার সংবিধান সংশোধিত হয়েছে। আমাদের সাংবিধানিক যাত্রা অগ্রমুখী না হয়ে পশ্চাত্মুখী হয়েছে; গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা, আইনের শাসন, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও ভারসাম্য বাড়ানোর লক্ষ্যে অতীতের ভুলগুলো শোধরানোর লক্ষ্যে আমাদের সংবিধানে সংশোধনী আনা প্রয়োজন।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি, সংবিধানে কী কী বিষয়ে সংশোধনী আনার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এমন ধারণা আছে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা, সরকার ও স্থানীয় সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর করা ইত্যাদি বিষয়ে সংশোধনী আনা হবে। যে বিষয়ে যা-ই করা হোক না কেন, সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তা করা দরকার; স্রেফ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নয়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যথার্থই বলেছেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া সংবিধানে হাত দেওয়া সঠিক হবে না।’ এই দৃষ্টিভঙ্গি যেন পুরো সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হয়। অন্যদিকে বিরোধী দলের মনোভাবও শুধু বিরোধাত্মক হলে চলবে না। এটা স্বীকার না করে উপায় নেই যে সংবিধানকে যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে এর হালনাগাদের প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলেরও সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।
দলীয় বা মহলবিশেষের রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, আরও গণতন্ত্র, আরও শক্তিশালী আইনের শাসন, নাগরিকদের আরও অধিকার নিশ্চিত করতে, সংবিধানে বিদ্যমান অসংগতি বা অসম্পূর্ণতাগুলো দূর করতে সব পক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, সুবিবেচনাও প্রয়োজন। অভিজ্ঞ ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় আইনজ্ঞ, সংবিধান-বিশেষজ্ঞ এবং সাংসদের সমন্বয়ে এ বিষয়ে একটি স্থায়ী সংবিধান পর্যালোচনা পরিষদ গঠন করলে ভালো হয়; যাঁরা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনীর সুপারিশ করবেন।
৩৭ বছরে আমাদের সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়েছে ১৪ বার। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংবিধান সংশোধন করা হয় তাকে আরও উন্নত ও গণমুখী করার লক্ষ্যে। কিন্তু আমাদের সংবিধানের সংশোধনীগুলো রাষ্ট্রের এই সর্বোচ্চ দলিলের অবনমন ঘটিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে এমন সংশোধনীও আনা হয়েছে, যার ফলে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো, এর অন্তর্নিহিত চেতনা নেতিবাচক দিকে বদলে গিয়েছে। এসব অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিলে সংবিধান সংশোধনীর প্রসঙ্গ ওঠামাত্র উদ্বেগ জাগতে পারে, প্রশ্ন উঠতে পারে সংশোধনীর উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন তো বলেই ফেললেন, ‘আবারও ক্ষমতায় আসার পথ পরিষ্কার করতেই সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।’
সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিতেই পারে, বিরোধী দলের তাতে আপত্তি জানাতেই হবে এমন নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতসহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোয় সময়ে সময়ে অনেকবার সংবিধান সংশোধিত হয়েছে। আমাদের সাংবিধানিক যাত্রা অগ্রমুখী না হয়ে পশ্চাত্মুখী হয়েছে; গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা, আইনের শাসন, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও ভারসাম্য বাড়ানোর লক্ষ্যে অতীতের ভুলগুলো শোধরানোর লক্ষ্যে আমাদের সংবিধানে সংশোধনী আনা প্রয়োজন।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি, সংবিধানে কী কী বিষয়ে সংশোধনী আনার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এমন ধারণা আছে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা, সরকার ও স্থানীয় সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে চার বছর করা ইত্যাদি বিষয়ে সংশোধনী আনা হবে। যে বিষয়ে যা-ই করা হোক না কেন, সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তা করা দরকার; স্রেফ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নয়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যথার্থই বলেছেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া সংবিধানে হাত দেওয়া সঠিক হবে না।’ এই দৃষ্টিভঙ্গি যেন পুরো সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হয়। অন্যদিকে বিরোধী দলের মনোভাবও শুধু বিরোধাত্মক হলে চলবে না। এটা স্বীকার না করে উপায় নেই যে সংবিধানকে যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে এর হালনাগাদের প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলেরও সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।
দলীয় বা মহলবিশেষের রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, আরও গণতন্ত্র, আরও শক্তিশালী আইনের শাসন, নাগরিকদের আরও অধিকার নিশ্চিত করতে, সংবিধানে বিদ্যমান অসংগতি বা অসম্পূর্ণতাগুলো দূর করতে সব পক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, সুবিবেচনাও প্রয়োজন। অভিজ্ঞ ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় আইনজ্ঞ, সংবিধান-বিশেষজ্ঞ এবং সাংসদের সমন্বয়ে এ বিষয়ে একটি স্থায়ী সংবিধান পর্যালোচনা পরিষদ গঠন করলে ভালো হয়; যাঁরা প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনীর সুপারিশ করবেন।
No comments