বিচরণ বেড়েছে মিলেছে কি মুক্তি by সালমা বেগম
দেশের
প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা, সংসদের স্পিকারসহ উচ্চ অনেক পদে নেতৃত্ব
দিচ্ছেন নারীরা। শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রকৌশল, বিমান চালনা, রাজনীতি সব
ক্ষেত্রেই পদচারণা বাড়ছে নারীদের। তবে সেই অংশগ্রহণের হার এখনো কাঙ্ক্ষিত
পর্যায়ে পৌঁছেনি বলে মনে করছেন বিভিন্ন অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত নারীরা। তারা
বলছেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ও তাদের বিকাশের ক্ষেত্রে এখন অনেক
বাধা রয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় বাধা হলো মানসিকতার। সমাজ ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের
আলাদা করে দেখার মানসিকতা এখন বড় দাগেই রয়ে গেছে। তবে সংখ্যা আর
পরিসংখ্যান যাই বলুক, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের নারীরা উন্নয়ন ও
অগ্রযাত্রায় যে সাফল্য দেখিয়েছেন তা নজর কেড়েছে বিশ্ববাসীর। তবে বিশ্লেষকরা
বলছেন, এখানেই থেকে থাকলে হবে না। সব ক্ষেত্রে নারীদের সমতা নিশ্চিত করার
পাশাপাশি দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাতে হবে। এটি নিশ্চিত হলে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতেও
গতি সমানভাবে।
প্রত্যাশা আর অর্জন এই দুইয়ের যোজন ফারাক অবস্থান নিয়েই আজ বাংলাদেশে পালিত হবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বের ন্যায় দেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হবে দিবসটি। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের অনুপাত ৪০ শতাংশের মতো। যেসব কারণে উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ কম তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো তাদের কম বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়া। বিয়ের পর মেয়েরা সাধারণত পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়ে। বর্তমানে ১৮ বছরের কম বয়সেই ব্যাপক সংখ্যক মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। ইউনিসেফ-এর ২০১২-১৩ সালের তথ্য অনুযায়ী ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী বিবাহিতা নারীদের ১৮ বছরের কম বয়সে ৫২ শতাংশ এবং ১৫ বছরের কম বয়সের মেয়েদের ১৮ শতাংশ বিয়ে হয়ে যাওয়ার তথ্য উঠে আসে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ। মেয়েশিশুদের (অর্থাৎ মেয়েদের ১৮ বছরের কম বয়সে) বিয়ে দেয়া তাদের মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এছাড়া সকল বিবাহিতা মেয়েশিশুর শুধু পড়াশোনাই যে বন্ধ হয় তা-ই নয়, বরং অল্প বয়সে সন্তান ধারণ করতে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্যহানি হয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকে। এছাড়াও অনেক সময় তারা অল্প বয়স ও বুদ্ধিমত্তায় অপরিপক্বতার কারণে নতুন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। ফলে তারা অশান্তিতে নিপতিত হয়, এমন কি অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজনীতিতে নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এগিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক্ষেত্রে সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ পুরুষদের সমান বা কিছু বেশি। সরকারি চাকুরেদের মধ্যে নারী ২৪ শতাংশ। আর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী ৩৩ শতাংশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী বলেন, সব মিলিয়ে নারীরা ভালো করছেন। তবে খুব বেশি অগ্রগতি হয়েছে এটা বলা যাবে না। এখনও নারী নির্যাতনের শিকার হয়। প্রতিনিয়ত তারা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত সুযোগ দেয়া হলে নারীরা অগ্রগতির ধারায় আরো বেশি অবদান রাখতে পারবেন।
এদিকে গত তিন দশকে দেশের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বিস্ময়করভাবে বেড়েছে। ১৯৮৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে মাত্র পাঁচজন নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে সংসদে ৭০ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের নেতা, স্পিকার হয়েছেন নারী। রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে বাড়লেও নীতিনির্ধারণী পর্যায় বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে নারী এখনো অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নারী নেত্রীদের মতে, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নারীকে রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে দেয়ার বঞ্চনার সূত্রপাত হয় মনোনয়নের মধ্য দিয়ে। যথেষ্ট শিক্ষা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া এখনো ব্যাপক সংখ্যক নারী জাতীয় নির্বাচনে সরাসরি মনোনয়ন পাচ্ছেন না। ফলে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখার জন্য সংরক্ষিত আসনই অন্যতম বিকল্প হিসেবে রয়ে গেছে। দলীয় স্বার্থে সংসদে কোরাম পূরণ ও হ্যাঁ-না ভোটে আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখা ছাড়া সংরক্ষিত সদস্যদের আর করার কিছুই নেই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অগ্রগতি সম্পর্কে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন সর্বত্রই কঠিন। রাজনীতিতে আরো বেশি কঠিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দলে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ থাকার কথা থাকলেও সেটা দেখা যায় না। আর দলের যে সদিচ্ছা নেই সেটাও বোঝা যায়। উচ্চপদে নারীদের দেখা যায়। কারণ, তারা বাবা কিংবা স্বামীর জায়গায় এসেছেন। মেয়েদের মেয়ে হিসেবে হেনস্থা করার ধরন সব রাজনৈতিক দলের মধ্যেই বিদ্যমান। রাজনীতিতে আসতে হলে প্রথমে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। তারপর পরিবার এবং সমাজ। আর বিরোধী দলে থাকলে তো কথাই নেই। পুলিশের হামলা আর মামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। যে কারণে রাজনীতিতে নতুন মুখ খুব কম দেখা যায়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীদের মূল্যায়ন করতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি কাজ করলেও আশানুরূপ অগ্রগতি দেখা যায় না। যে কারণে পুরুষের তুলনায় নারীর জন্য রাজনীতিতে আসা অনেক বেশি কঠিন। তবে তৃণমূল থেকে উঠে আসার সংখ্যাটা একেবারেই কম।
প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক ডা. নুজহাত চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, আমাদের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান নারী। আমরা স্পিকার পেয়েছি নারী। তবে এক্ষেত্রে পারিবারিক সংযুক্তি থেকে ক্ষমতায় আসার প্রবণতা বেশি। যদিও তারা ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্র পরিচালনায় যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন এটা বলতেই হবে। বাংলাদেশে রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়ন ওপর থেকে নিচে। নিচে থেকে উপরে নয়। নিচ থেকে উপরে গেলে স্থায়িত্বটা বেশি হতো। তৃণমূল থেকে রাজনীতিতে এসে ধাপে ধাপে উপরে ওঠার উদাহরণ নেই। তবে আমরা আশা করবো গণসংযোগের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসার প্রবণতা বাড়বে। যদিও সমাজের একটা মাইন্ডসেট আছে যে নারীরা পুরুষের সমান কাজ করতে পারে না। তাই নারীদের সবক্ষেত্রেই দ্বিগুণ কাজ করে, অর্জন করে প্রমাণ করতে হয় যে নারী পুরুষ সমকক্ষ। তিনি বলেন, নারীদের সামাজিক, মানসিক, শারীরিক এবং প্রথাগত দায়িত্ব অনেক বেশি। এগুলোর কারণে তারা সুযোগ কম পাচ্ছেন। তবুও নারীরা এগিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। নিজেদের সাহস প্রকাশ করার সাহসিকতা দেখাচ্ছেন।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের ‘নারী ব্যবসা ও আইন-২০১৬’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নারীরা এখনো কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। প্রতি দু’বছর অন্তর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের পেছনে নারীর অগ্রগতি ভূমিকা রাখলেও এখনো বৈষম্যের শিকার তারা। নারীদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে সহিংসতাকে মোকাবিলা করেই। যৌন নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, আত্মহত্যা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে। নারী নির্যাতন থেমে নেই। নারীর প্রতি সহিংসতা ও পারিবারিক নির্যাতন এবং নারী পাচার চলছেই। ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা, যৌতুকের বলি হওয়ার ঘটনা এখনো উদ্বেগের পর্যায়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথমবারের মতো করা নারী নির্যাতন নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের জরিপে উঠে এসেছে, নারী ঘরেই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছেন। এতে বলা হয়েছে, নারীরা বাইরে থেকে নিজ ঘরে অনেক বেশি নির্যাতিত হন। জরিপ অনুযায়ী, বিবাহিত মেয়েদের ৮৭ শতাংশ নির্যাতনের শিকার নিজ ঘরে স্বামীর দ্বারা। ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ স্বামীগৃহে মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৫ কোটি ৪১ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১ কোটি ৬২ লাখ নারী। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৬৯৭ জন। বিদেশে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ৭৬ লাখ প্রবাসীর মধ্যে ৮২ হাজার ৫৫৮ জন নারী। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের ৮০ ভাগ কর্মীই নারী। আর দেশের ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্রঋণ ব্যবহারকারীও নারী। বাংলাদেশে সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ১৩৩, অর্থাৎ শতকরা ৭.৬ ভাগ। উপসচিব পদ থেকে সচিব পদ পর্যন্ত নারীদের সংখ্যা মাত্র ১ শতাংশ বা তারও কম। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিচার বিভাগে বিচারক পদের ১০ শতাংশ হলেন নারী। জাতীয় শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে নারী শ্রমিকের সংখ্যা সাড়ে ৮ লাখ। তারা সবাই মজুরি বৈষম্যের শিকার। পুরুষের সমান কাজ করলেও মজুরি পান কম। গ্রামাঞ্চলে একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা গড়ে ১৮৪ টাকা পেলেও নারী শ্রমিকরা পান মাত্র ১৭০ টাকা।
এদিকে লিঙ্গ-অসমতা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সফল দেশ। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম তাদের লিঙ্গ-বৈষম্য প্রতিবেদন-২০১৬-এ এই তথ্য পরিবেশন করেছে। ১৪৪টি দেশে এই জরিপ চালানো হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭২, ভারতের ৮৭, শ্রীলঙ্কার ১০০, নেপালের ১১০, মালদ্বীপের ১১৫, ভুটানের ১২১ এবং পাকিস্তানের ১৪৩। ফোরামের জরিপে গত বছরও এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে ছিল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস (আদি নাম আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস) প্রতি বছর ৮ই মার্চ তারিখে পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এ দিবস উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বের একেক প্রান্তে নারী দিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য একেক প্রকার হয়। এ দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে নিউ ইয়র্কে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ এবং জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। পরবর্তীতে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয় ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ই মার্চ নারী দিবস হিসেবে পালিত হতে শুরু করে। ১৯৭৫ সালে ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবীজুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় উচ্চারণ করার মধ্য দিয়ে।
প্রত্যাশা আর অর্জন এই দুইয়ের যোজন ফারাক অবস্থান নিয়েই আজ বাংলাদেশে পালিত হবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সারা বিশ্বের ন্যায় দেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হবে দিবসটি। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের অনুপাত ৪০ শতাংশের মতো। যেসব কারণে উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ কম তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো তাদের কম বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়া। বিয়ের পর মেয়েরা সাধারণত পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়ে। বর্তমানে ১৮ বছরের কম বয়সেই ব্যাপক সংখ্যক মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। ইউনিসেফ-এর ২০১২-১৩ সালের তথ্য অনুযায়ী ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী বিবাহিতা নারীদের ১৮ বছরের কম বয়সে ৫২ শতাংশ এবং ১৫ বছরের কম বয়সের মেয়েদের ১৮ শতাংশ বিয়ে হয়ে যাওয়ার তথ্য উঠে আসে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ। মেয়েশিশুদের (অর্থাৎ মেয়েদের ১৮ বছরের কম বয়সে) বিয়ে দেয়া তাদের মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এছাড়া সকল বিবাহিতা মেয়েশিশুর শুধু পড়াশোনাই যে বন্ধ হয় তা-ই নয়, বরং অল্প বয়সে সন্তান ধারণ করতে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্যহানি হয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকে। এছাড়াও অনেক সময় তারা অল্প বয়স ও বুদ্ধিমত্তায় অপরিপক্বতার কারণে নতুন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। ফলে তারা অশান্তিতে নিপতিত হয়, এমন কি অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও রাজনীতিতে নারী-পুরুষ সমতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এগিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক্ষেত্রে সার্কভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ পুরুষদের সমান বা কিছু বেশি। সরকারি চাকুরেদের মধ্যে নারী ২৪ শতাংশ। আর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী ৩৩ শতাংশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী বলেন, সব মিলিয়ে নারীরা ভালো করছেন। তবে খুব বেশি অগ্রগতি হয়েছে এটা বলা যাবে না। এখনও নারী নির্যাতনের শিকার হয়। প্রতিনিয়ত তারা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত সুযোগ দেয়া হলে নারীরা অগ্রগতির ধারায় আরো বেশি অবদান রাখতে পারবেন।
এদিকে গত তিন দশকে দেশের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বিস্ময়করভাবে বেড়েছে। ১৯৮৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে মাত্র পাঁচজন নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে সংসদে ৭০ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের নেতা, স্পিকার হয়েছেন নারী। রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে বাড়লেও নীতিনির্ধারণী পর্যায় বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে নারী এখনো অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নারী নেত্রীদের মতে, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নারীকে রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে দেয়ার বঞ্চনার সূত্রপাত হয় মনোনয়নের মধ্য দিয়ে। যথেষ্ট শিক্ষা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া এখনো ব্যাপক সংখ্যক নারী জাতীয় নির্বাচনে সরাসরি মনোনয়ন পাচ্ছেন না। ফলে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখার জন্য সংরক্ষিত আসনই অন্যতম বিকল্প হিসেবে রয়ে গেছে। দলীয় স্বার্থে সংসদে কোরাম পূরণ ও হ্যাঁ-না ভোটে আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখা ছাড়া সংরক্ষিত সদস্যদের আর করার কিছুই নেই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অগ্রগতি সম্পর্কে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন সর্বত্রই কঠিন। রাজনীতিতে আরো বেশি কঠিন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দলে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ থাকার কথা থাকলেও সেটা দেখা যায় না। আর দলের যে সদিচ্ছা নেই সেটাও বোঝা যায়। উচ্চপদে নারীদের দেখা যায়। কারণ, তারা বাবা কিংবা স্বামীর জায়গায় এসেছেন। মেয়েদের মেয়ে হিসেবে হেনস্থা করার ধরন সব রাজনৈতিক দলের মধ্যেই বিদ্যমান। রাজনীতিতে আসতে হলে প্রথমে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। তারপর পরিবার এবং সমাজ। আর বিরোধী দলে থাকলে তো কথাই নেই। পুলিশের হামলা আর মামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। যে কারণে রাজনীতিতে নতুন মুখ খুব কম দেখা যায়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীদের মূল্যায়ন করতে চায় না। অনেক ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি কাজ করলেও আশানুরূপ অগ্রগতি দেখা যায় না। যে কারণে পুরুষের তুলনায় নারীর জন্য রাজনীতিতে আসা অনেক বেশি কঠিন। তবে তৃণমূল থেকে উঠে আসার সংখ্যাটা একেবারেই কম।
প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক ডা. নুজহাত চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, আমাদের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান নারী। আমরা স্পিকার পেয়েছি নারী। তবে এক্ষেত্রে পারিবারিক সংযুক্তি থেকে ক্ষমতায় আসার প্রবণতা বেশি। যদিও তারা ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্র পরিচালনায় যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন এটা বলতেই হবে। বাংলাদেশে রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়ন ওপর থেকে নিচে। নিচে থেকে উপরে নয়। নিচ থেকে উপরে গেলে স্থায়িত্বটা বেশি হতো। তৃণমূল থেকে রাজনীতিতে এসে ধাপে ধাপে উপরে ওঠার উদাহরণ নেই। তবে আমরা আশা করবো গণসংযোগের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসার প্রবণতা বাড়বে। যদিও সমাজের একটা মাইন্ডসেট আছে যে নারীরা পুরুষের সমান কাজ করতে পারে না। তাই নারীদের সবক্ষেত্রেই দ্বিগুণ কাজ করে, অর্জন করে প্রমাণ করতে হয় যে নারী পুরুষ সমকক্ষ। তিনি বলেন, নারীদের সামাজিক, মানসিক, শারীরিক এবং প্রথাগত দায়িত্ব অনেক বেশি। এগুলোর কারণে তারা সুযোগ কম পাচ্ছেন। তবুও নারীরা এগিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। নিজেদের সাহস প্রকাশ করার সাহসিকতা দেখাচ্ছেন।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের ‘নারী ব্যবসা ও আইন-২০১৬’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নারীরা এখনো কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। প্রতি দু’বছর অন্তর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের পেছনে নারীর অগ্রগতি ভূমিকা রাখলেও এখনো বৈষম্যের শিকার তারা। নারীদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে সহিংসতাকে মোকাবিলা করেই। যৌন নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, আত্মহত্যা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে। নারী নির্যাতন থেমে নেই। নারীর প্রতি সহিংসতা ও পারিবারিক নির্যাতন এবং নারী পাচার চলছেই। ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা, যৌতুকের বলি হওয়ার ঘটনা এখনো উদ্বেগের পর্যায়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথমবারের মতো করা নারী নির্যাতন নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের জরিপে উঠে এসেছে, নারী ঘরেই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছেন। এতে বলা হয়েছে, নারীরা বাইরে থেকে নিজ ঘরে অনেক বেশি নির্যাতিত হন। জরিপ অনুযায়ী, বিবাহিত মেয়েদের ৮৭ শতাংশ নির্যাতনের শিকার নিজ ঘরে স্বামীর দ্বারা। ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ স্বামীগৃহে মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, দেশের ৫ কোটি ৪১ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১ কোটি ৬২ লাখ নারী। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৬৯৭ জন। বিদেশে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ৭৬ লাখ প্রবাসীর মধ্যে ৮২ হাজার ৫৫৮ জন নারী। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের ৮০ ভাগ কর্মীই নারী। আর দেশের ৯০ শতাংশ ক্ষুদ্রঋণ ব্যবহারকারীও নারী। বাংলাদেশে সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৪টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ১৩৩, অর্থাৎ শতকরা ৭.৬ ভাগ। উপসচিব পদ থেকে সচিব পদ পর্যন্ত নারীদের সংখ্যা মাত্র ১ শতাংশ বা তারও কম। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিচার বিভাগে বিচারক পদের ১০ শতাংশ হলেন নারী। জাতীয় শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন অনুসারে, দেশে নারী শ্রমিকের সংখ্যা সাড়ে ৮ লাখ। তারা সবাই মজুরি বৈষম্যের শিকার। পুরুষের সমান কাজ করলেও মজুরি পান কম। গ্রামাঞ্চলে একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা গড়ে ১৮৪ টাকা পেলেও নারী শ্রমিকরা পান মাত্র ১৭০ টাকা।
এদিকে লিঙ্গ-অসমতা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সফল দেশ। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম তাদের লিঙ্গ-বৈষম্য প্রতিবেদন-২০১৬-এ এই তথ্য পরিবেশন করেছে। ১৪৪টি দেশে এই জরিপ চালানো হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭২, ভারতের ৮৭, শ্রীলঙ্কার ১০০, নেপালের ১১০, মালদ্বীপের ১১৫, ভুটানের ১২১ এবং পাকিস্তানের ১৪৩। ফোরামের জরিপে গত বছরও এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে ছিল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস (আদি নাম আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস) প্রতি বছর ৮ই মার্চ তারিখে পালিত হয়। সারা বিশ্বব্যাপী নারীরা একটি প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এ দিবস উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বের একেক প্রান্তে নারী দিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য একেক প্রকার হয়। এ দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে নিউ ইয়র্কে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ এবং জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। পরবর্তীতে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয় ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ই মার্চ নারী দিবস হিসেবে পালিত হতে শুরু করে। ১৯৭৫ সালে ৮ই মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবীজুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় উচ্চারণ করার মধ্য দিয়ে।
No comments