ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালাতে প্রস্তুত পুতিন, সতর্ক ইউক্রেন
ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে প্রস্তুত রাশিয়ার
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ বিষয়ে পার্লামেন্ট তাকে অনুমোদন দিয়েছে।
ফলে যে কোন সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারেন তিনি।
এ
খবরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে যুদ্ধ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে
কেন্দ্র করে শীতল যুদ্ধের পর পশ্চিমা দুুনিয়ার সঙ্গে সরাসরি ভয়াবহ এক
সংঘাতময় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে আরও
বলা হয়েছে, ইউক্রেনের নতুন সরকার তার সেনাদের রেখেছে সর্বোচ্চ সতর্ক
অবস্থায়। সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে ন্যাটোর কাছে। এরই মধ্যে পুতিনের
নির্দেশে অনেক সেনা এরই মধ্যে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে নিয়েছে।
ওইসব সেনা সদস্যের গায়ের ইউনিফর্ম দেখে বোঝার উপায় নেই যে তারা কোন দেশের।
তবে এটুকু আন্দাজ করা যায় যে তারা রাশিয়ান। তাদের সঙ্গে যে সামরিক যান
রয়েছে তাতে রয়েছে রাশিয়ান নাম্বার প্লেট। কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে আগে থেকেই
রাশিয়ার রয়েছে বড় ধরণের সামরিক উপস্থিতি। তারা সামরিক হামলা করলে কিয়েভে যে
নতুন সরকার ক্ষমতায় আছে তাদের পক্ষে তা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এমন হামলা
করা হলে তা হবে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের লংঘন। এ কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র
বলেছে, রাশিয়া এরই মধ্যে পরিষ্কার ভাবে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে লংঘন
করেছে। পাশাপাশি রাশিয়ার সেনাদের প্রত্যাহার করে ক্রিমিয়াতে তাদের ঘাঁটিতে
ফেরত আনার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকও আহ্বান
করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক সপ্তাহ আগে বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা চেড়ে
পালিয়ে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। তিনি রাশিয়ার মিত্র
বলে পরিচিত। তার পরেই ক্ষমতায় এসেছেন নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী আরসেনি
ইয়াতসেনিউক। তিনি রাশিয়ার এমন সামরিক কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধ শুরু বলে মন্তব্য
করেছেন। বলেছেন, এতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হবে। ওদিকে
রাশিয়ার হুমকির প্রেক্ষিতে ইউক্রেনের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ওলেসান্দার
তুরচিনভ তার সেনাদের যুদ্ধকালীন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ
দিয়েছেন। এরই মধ্যে উ™ভুত পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় ও মার্কিন কর্মকর্তাদের
সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অঁদ্রি দেশচিতসিয়া। এ সময় তিনি
ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও দেশের অখণ্ডতাকে রক্ষার জন্য ন্যাটোর সহায়তা
চেয়েছেন। ওদিকে রাশিয়ার সোচি’তে আট জাতির শীর্ষ সম্মেলন জি-৮ অনুষ্ঠানে যোগ
দেয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মধ্যে
টেলিফোনে ৯০ মিনিট কথা হয়েছে। হোয়াইট হাউজ কড়া সতর্কতা উচ্চারণ করেছে।
বলেছে, এমন আগ্রাসন চালানো হলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে একপেশে করে রাখা
হবে রাশিয়াকে। টেলিফোনে পুতিনকে ওবামা বলেন, ইউক্রেনের ভিতরে রাশিয়ান
জাতিগোষ্ঠীকে নিয়ে যদি রাশিয়ার উদ্বেগ থাকে তাহলে তা শান্তিপূর্ণভাবে
সমাধান করা যায়। ওবামা সহ পশ্চিমা নেতারা ইউক্রেনে হস্তক্ষেপ না করতে
পুতিনকে বার বার অনুরোধ করছেন। কিন্তু তাদের কথা না শুনে পুতিন নিজের মতো
করে চলা শুরু করেছেন। ফোন কলে পুতিন ওবামাকে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ানদের ও
তাদের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব সংরক্ষণ করে রাশিয়া। এর ফলে বিষয়টি স্পষ্ট
হয়ে পড়েছে যে, পশ্চিমারা বা অন্যরা যে যা-ই বলুক না কেন পুতিন ইউক্রেনে
সামরিক হামলা চালাতে এখন মুক্ত। ইচ্ছে হলেই তিনি যে কোন সময় এমন হামলা
চালাতে পারেন। পার্লামেন্টের অনুমোদনের ফলে তার হাতে এখন একক কর্তৃত্ব।
বারাক ওবামার প্রস্তাবের জবাবে তার কথা তেমনই ইঙ্গিত দেয়।
No comments