ফিলিপিন্সে খাবার নেই অর্থ মূল্যহীন!
ফিলিপিন্সে এযাবতকালে সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার টাইফুন হাইয়ানের তাণ্ডবে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ও বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ার আটদিন পর অবশেষে দুর্গতদের কাছে খাবার ও ওষুধসহ অন্যান্য চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছল। দুর্গম এলাকার দুর্গতদের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছে মানবিক সহায়তা দানকারী সংগঠনগুলো। দানবীয় টাইফুন হাইয়ান ৮ নভেম্বর দ্বীপরাষ্ট্রটিতে নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়ে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
ঝড়টির ভয়াবহতায় কর্তৃপক্ষ হতবুদ্ধি হয়ে পড়ায় প্রাথমিকভাবে যথাযথ ত্রাণ তৎপরতা চালানো যায়নি। কেন্দ্রীয় দ্বীপ লেইতি ও সামামের লাখ লাখ ক্ষুধার্ত ও ছিন্নমূল মানুষকে বিদ্যুৎ ও পানি ছাড়াই দিনাতিপাত করতে হয়। ঝড় আঘাত হানার ৮ দিন পর অবশেষ লেইতির ত্যাকলোবান শহরের দুর্গতদের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছল। মার্কিন রণতরী ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন থেকে ত্রাণবাহী হেলিকপ্টার দুর্গত এলাকায় পৌঁছে। শনিবার সর্বপ্রথম একটি মার্কিন সি-হক হেলিকপ্টার ত্রাণসামগ্রী নিয়ে সামারের পূর্বাঞ্চলীয় ছোট শহর গিপোরলসে পৌঁছায়। হাইয়ান ১২ হাজার জনসংখ্যার শহরটিতে সর্বপ্রথম আঘাত হানে। হেলিকপ্টারটি একটি স্কুলের খেলার মাঠে অবতরণ করে। ঝড়ে স্কুলটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মারিয়া এলভি ডেপেলকো বলেন, ‘এই ত্রাণ আমাদের জন্য পর্যাপ্ত না হলেও আমরা খুব খুশি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সামান্যই ত্রাণ পেয়েছি। এতে আমরা বেঁচে থাকতে পারব। কারণ এখানকার কোনো বাড়িতেই খাবার অবশিষ্ট নেই।’ কাছের শহর গুইউয়ানের একটি পুরনো সামরিক বিমানঘাঁটি থেকে কয়েক মিনিট পরপরই ত্রাণ সরবরাহকারী বিমান অবতরণ করছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলো জানিয়েছে, দুর্গত এলাকায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি ফ্যামিলি ফুড প্যাকেজ বিতরণ করা হয়েছে। রেডক্রস ও মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ার্স (ডকটরস্ উইদাউট বর্ডার) জানিয়েছে,
চলতি সপ্তাহান্তে ত্যাকলোবানে তারা ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করবে। ত্যাকলোবান থেকে রেডক্রসের এশিয়া প্যাসিফিকবিষয়ক মুখপাত্র প্যাট্রিক ফুলার বলেন, ‘দুর্গত এলাকায় প্রচুর ত্রাণসামগ্রী প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার মানুষের কাছে কোনো খাবার নেই। এখনও অর্থ একেবারেই মূল্যহীন।’ মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন রণতরী ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন ফিলিপিন্সে পৌঁছার পর থেকে ত্যাকলোবান ও অন্যান্য দুর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ১১৮ টন খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও অস্থায়ী আশ্রয় নির্মাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও হেলিকপ্টারে করে প্রায় ২ হাজার ৯০০ লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।
No comments