এবার ট্রাম্পের জবাবের পালা
যৌন
হয়রানির অভিযোগে ইতিমধ্যে একজন ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান পদত্যাগে বাধ্য
হয়েছেন, আরেক ডেমোক্র্যাট সিনেটর নাকে খত দিয়ে বলেছেন, এমন ভুল আর হবে না।
টেলিভিশনের অত্যন্ত শক্তিশালী তিনজন ‘তারকা’ একই অভিযোগে চাকরি খুইয়েছেন।
হলিউডের ‘মোগল’ বলে পরিচিত একজন প্রযোজক যৌন হয়রানির অভিযোগে নিজের
কোম্পানি থেকে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। একমাত্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড
ট্রাম্পই এখন পর্যন্ত বড় ধরনের বিপদের মুখে পড়েননি। নির্বাচনী প্রচারণার
সময় প্রায় এক ডজন নারী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন।
ট্রাম্প সব অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তথাকথিত ‘এক্সেস হলিউড’ ভিডিও
টেপে নিজের মুখে যৌন আগ্রাসনের কথা স্বীকার করেও সহজেই নির্বাচনী বৈতরণি
পেরিয়ে গেছেন। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনের পর এসব নারীর বিরুদ্ধে মামলা
করবেন। ট্রাম্প তেমন কোনো ব্যবস্থা না নিলেও এখন নিউইয়র্কের একটি আদালতে
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এক নারীর অভিযোগ নিয়ে মামলা শুরু হয়েছে। বিচারক এই
মামলা চলতে দিতে সম্মত হলে ট্রাম্পকেও অভিযোগের জবাব দিতে হতে পারে। সামার
জেরভেস নামের এক নারী অভিযোগ করেছেন, ২০০৭ সালে ট্রাম্পের টিভি শো ‘দি
এপ্রেনটিসে’ অংশগ্রহণের সময় এই অনুষ্ঠানের পরিচালক ও মুখ্য তারকা ট্রাম্প
তাঁর অনুমতি ছাড়া চুমু খান এবং অশালীন ব্যবহার করেন। মঙ্গলবার নিউইয়র্কের
একটি আদালতে এই নিয়ে শুনানির সময় ট্রাম্পের আইনজীবী যুক্তি দেখান, দায়িত্ব
পালনরত অবস্থায় কোনো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণযোগ্য নয়। তা ছাড়া
এই মামলার শুনানিতে অংশ নেওয়ার মতো সময় তাঁর এই মুহূর্তে নেই। তাঁর অন্য
যুক্তি ছিল, প্রেসিডেন্টের ব্যাপারে কোনো মামলা গ্রহণের এখতিয়ার অঙ্গরাজ্য
পর্যায়ের কোনো আদালতের নেই। ট্রাম্প ইতিমধ্যে এই অভিযোগ মিথ্যা বলে
জানিয়েছেন, পুরো ব্যাপারটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জেরভেসের আইনজীবী
পাল্টা যুক্তি দেখান, কেউই এমনকি প্রেসিডেন্টও আইনের ঊর্ধ্বে নন।
প্রেসিডেন্টের যদি সময় না হয় তাহলে তাঁরা ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের অবসর নিবাসে
গিয়ে শুনানিতে অংশ নিতে প্রস্তুত। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক এই মামলা
গৃহীত হবে কি না এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো নির্দেশ জারি করেননি।
ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণে তিনি অস্বীকার করলে শুধু
জেরভেস নন, বাকি যে আট বা নয়জন নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
এনেছেন, তাঁদের পক্ষেও মামলা করা কঠিন হয়ে পড়বে। অন্যদিকে বিচারক যদি এই
মামলা গ্রহণ করেন, তাহলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ উত্থাপিত হতে পারে।
শুধু তা-ই নয়, সরাসরি সওয়াল-জবাবের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। অন্যান্য
নারীও একই অভিযোগ নিয়ে মামলা করতে পারেন। মামলার শুনানিতে ট্রাম্প পুনরায়
যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করতে পারেন, কিন্তু ‘শপথ’ নিয়ে বক্তব্য পেশের
সময় মিথ্যা বললে তা আইনত দণ্ডনীয়, সেই বিপদও তাঁকে মাথায় রাখতে হবে। ১৯৯১
সালে একই রকম অভিযোগে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি
পরিষদ কর্তৃক অভিশংসিত হয়েছিলেন। তবে ডেমোক্রেটিক পার্টি নিয়ন্ত্রিত সিনেট
তাঁকে এই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল।
No comments