এত বিভক্তি ভালো নয় : কে এ এস মুরশিদ by সোহরাব হাসান ও ফখরুল ইসলাম
বিআইডিএসের মহাপরিচালক খান আহমেদ সাঈদ
মুরশিদ (কে এ এস মুরশিদ)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর
ডিগ্রি নেওয়ার পর কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন। কে এ এস
মুরশিদ এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) কম্বোডিয়ায় কর্মরত ছিলেন।
খাদ্যনিরাপত্তা, দারিদ্র্য, ট্রানজিট, ট্রানশিপমেন্টসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর
গবেষণা রয়েছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান ও ফখরুল ইসলাম
প্রথম আলো : আগামী ২ জুন সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের যে বাজেট পেশ হতে যাচ্ছে, তা থেকে আপনি কী প্রত্যাশা করেন?
কে এ এস মুরশিদ : এক বছরের বাজেট নিয়ে খুব বেশি আশা করা যায় না। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই একে দেখতে হবে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা অর্থনীতিকে কোথায় নিয়ে যেতে চাই, প্রতিটি বাজেটে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের রাজস্ব আয়ের হার নিচের দিকে। এমনকি নেপালের তুলনায়ও কম। রাজস্ব কম হলে উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাও সীমিত থাকবে। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ বাজেট থেকে খুব উপকৃত হবে, এমনটি আশা করা যায় না।
প্রথম আলো : নিম্নতম রাজস্ব আয়ের কারণ কি সরকারের নীতিগত দুর্বলতা, না মানুষের মধ্যে কর ফাঁকির প্রবণতা?
কে এ এস মুরশিদ : প্রশ্ন হলো কর বাড়ানোর পদ্ধতিটি কী হবে। দেশে শিল্পকারখানা বেড়েছে, সেখান থেকে রাজস্বও আসছে। কিন্তু এখনো আমাদের অনানুষ্ঠানিক খাত অনেক বড়। সে জন্যই পরোক্ষ কর চাপাতে হয়। বাজেট প্রণয়নে আমাদের কাঠামোগত দুর্বলতা আছে; প্রথমত, যথেষ্ট তথ্য নেই, আবার যেটুকু তথ্য আছে তার ওপর ভিত্তি করে করও খুব বেশি বাড়ানো হচ্ছে না। যেখানে সুশাসনের ঘাটতি ও ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা থাকে, সেখানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা দুরূহ হয়ে পড়ে। আবারও এও সত্য যে গত ছয়-সাত বছরে রাজস্ব অনেক বেড়েছে।
প্রথম আলো : সম্প্রতি বিআইডিএস সেমিনারে আপনি অর্থনীতির যে পাঁচটি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন, তা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
কে এ এস মুরশিদ : প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি। আছে সুশাসনের ঘাটতি ও অবকাঠামোগত সমস্যা। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিশাপ ও নব্য সন্ত্রাসবাদের বিস্তার। গতানুগতিকভাবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যাবে না; করতে হবে প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়েই। যেমন শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসবাদ দমন করা যাবে না। কেউ পারেনি। সমতাভিত্তিক দেশ হিসেবে আমাদের যে শক্তি ছিল, তার সুফলটা আমরা নিতে পারিনি। এখন বিভেদই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথম আলো : এই সমস্যা তো রাজনৈতিক?
কে এ এস মুরশিদ : শতভাগ রাজনৈতিক। আমাদের অর্থনীতি কিন্তু মোটামুটি ভালো অবস্থানে। ১৫-২০ বছর আগেও কেউ ভাবতে পারেননি বাংলাদেশ এই অবস্থায় এসে পৌঁছাবে। এই অসাধ্যসাধন তো দেশের মানুষই করেছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে আমাদের চাওয়াটা কী? আপনারা অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়তা না করুন, অন্তত বাধাগ্রস্ত করবেন না।
প্রথম আলো : সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ইনক্লুসিভ বা সম্পৃক্তকরণ কি জরুরি নয়?
কে এ এস মুরশিদ : এত বিভক্তি ভালো নয়। যে ঐক্য নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, দেশ গঠনে কেন তা কাজে লাগাতে পারব না? আমাদের সমস্যাগুলো আমাদেরই সমাধান করতে হবে। বাইরে থেকে কেউ সেটি করে দেবে না।
প্রথম আলো : এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেবেন?
কে এ এস মুরশিদ : রাজনৈতিক বিষয়ে আমার কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে বলব, আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে। বিশ্ববাজার আমাদের অনুকূলে। নিত্যপণ্যের দাম কমে আসছে। বিনিয়োগ না হওয়ায় ব্যাংকে প্রচুর অর্থ পড়ে আছে। কিন্তু আমার মনে হয় পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। রাজনীতিতেও একধরনের স্থিতিশীলতা এসেছে; যদিও তার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন আছে। অর্থনৈতিক সূচকগুলো এখন ভালো অবস্থায়। সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগ না হওয়ার কারণ দেখি না। আমার মনে হয় এর সুফল পেতে দু-এক বছর লাগবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থনীতি নিজস্ব গতিতেই এগোবে। তারপরও ওই পাঁচটি চ্যালেঞ্জ কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
প্রথম আলো : বিনিয়োগ না হওয়ার কারণেই কি বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে?
কে এ এস মুরশিদ : তারও কারণ অনিশ্চয়তা। এ ক্ষেত্রে সরকারের কাজ হলো এখানে যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনুকূল পরিবেশ আছে, সেটি প্রমাণ করা। বিনিয়োগের সুরক্ষাও দিতে হবে। ব্যবসায়ীরা সব ধরনের সুবিধা ও শতভাগ মুনাফার নিশ্চয়তা চান। কিন্তু পুঁজিবাদী-ব্যবস্থায় তো ঝুঁকি নিতে হবে।
প্রথম আলো : অবকাঠামোগত সমস্যার সুরাহা কতটা হয়েছে? জ্বালানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি।
কে এ এস মুরশিদ : এসব সমস্যা সত্ত্বেও শিল্পায়ন হয়েছে। বড় বিনিয়োগকারীরা সরকারের দিকে তাকিয়ে নেই। তাঁরা নিজস্ব বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট তৈরি করছেন। জ্বালানি সমস্যাও অনেকটা কাটিয়ে ওঠা গেছে। গ্যাস নেই। এলএনজি আনার ব্যবস্থা হচ্ছে। সমস্যা হয় ছোট বিনিয়োগকারীদের।
প্রথম আলো : আমাদের মুক্তবাজার কতটা মুক্ত? অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কথা শোনা যায়?
কে এ এস মুরশিদ : এটি হয়তো আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু দেশে উৎপাদিত পণ্যের ক্ষেত্রে হওয়ার কথা নয়। বড় ব্যবসায়ীদের সুবিধা বাড়াতে অনেক সময় আমদানি বন্ধের কথাও বলেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের এসব বাধা কাটিয়ে উঠতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
প্রথম আলো : কৃষিতে আমাদের ব্যাপক সাফল্য রয়েছে। কিন্তু ইদানীং উৎপাদন ব্যয় ও বিক্রয় পণ্যের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এটি কি সংকট বাড়াবে না?
কে এ এস মুরশিদ : আমরা বোধ হয় অতি বেশি চাল উৎপাদন করছি। এতটা প্রয়োজন আছে কি না ভাবা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, মুক্তবাজারে পণ্যের দাম বাড়ানো কঠিন; ওএমএস ইত্যাদির মাধ্যমে কমানো হয়তো যায়। কৃষিপণ্যের দাম অনেক বছর ধরেই কমছে। নতুন প্রযুক্তি, হাইব্রিডও আসছে। ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তার ব্যবহার।
প্রথম আলো : বাজেটে কারা লাভবান হয়?
কে এ এস মুরশিদ : বাজেট নিয়ে দুটি কথা আছে। একটি হলো প্রক্রিয়া। আমার মতে, বাজেট অতিমাত্রায় স্বার্থান্বেষী মহল দ্বারা প্রভাবিত। অর্থমন্ত্রী সবার কথা শুনে বাজেট তৈরি করার চেষ্টা করেন। তারপরও নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন তেমন হয় না। বাজেটে স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবই বেশি থেকে যায়।
প্রথম আলো : পূর্ববর্তী সরকারের বাজেটের সঙ্গে বর্তমান সরকারের বাজেট প্রক্রিয়ায় কোনো ফারাক আছে কি?
কে এ এস মুরশিদ : আমার মনে হয় একই ধারায় চলছে। আরও দুশ্চিন্তার কারণ হলো একই গোষ্ঠী ক্ষমতার সঙ্গে আছে, আবার ক্ষমতার বাইরেও আছে। তারাই দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অবস্থায় বৃহত্তর জনগণের স্বার্থ সুরক্ষিত হওয়া কঠিন। সে ক্ষেত্রে বাজেট-প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষ গবেষণাভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত (ইনপুট) থাকা উচিত। বর্তমানে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরাও এ কাজটি করতে পারেন।
প্রথম আলো : বিআইডিএস তো কাজটি করতে পারে।
কে এ এস মুরশিদ : করতে পারে। তবে কেবল বিআইডিএস নয়। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান মিলে এই কাজটি করতে পারে, যাতে সরকার অর্থনীতির একটি সার্বিক চিত্র পেতে পারে।
প্রথম আলো : বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফও তো গবেষণা করে থাকে?
কে এ এস মুরশিদ : হ্যাঁ, করে থাকে। এদের বিক্ষিপ্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়েই একটি বিশ্লেষণ দাঁড় করানো হয়। কিন্তু বাজেটে অগ্রাধিকার নির্ধারণের জন্য পদ্ধতিগত বিশ্লেষণ দরকার। যাঁরা দেশের কর্ণধার, তাঁরাই সেটি ঠিক করেন।
প্রথম আলো : আমরা দেখছি কোনো বছরের বাজেটে কৃষি, কোনো বছর শিক্ষা, কোনো বছর অবকাঠামো বা জ্বালানি-বিদ্যুৎ অগ্রাধিকার পায়? কিসের ভিত্তিতে এসব করা হয়?
কে এ এস মুরশিদ : মনে হচ্ছে এসব অস্থায়ী বা অ্যাডহক ভিত্তিতে হচ্ছে। প্রক্রিয়াটি যথার্থ নয়। গতবার এত বরাদ্দ ছিল, এবার এই পরিমাণ বাড়ানো হোক। কিন্তু এই পদ্ধতিতে আমি সন্তুষ্ট নই। বাজেটের আকার সমস্যা নয়। আমাদের বাজেটে ঘাটতি খুব কম। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমার যদি বড় বাজেট করার বা বাস্তবায়নের সক্ষমতা না থাকে তাহলে কেন আমি সেটা করব? বাজেটের আকার কত হলো, তার চেয়ে জরুরি হলো কত বড় বাজেট আমি সামাল দিতে পারব, বাস্তবায়ন করতে পারব।
প্রথম আলো : এ ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
কে এ এস মুরশিদ : আমাদের পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে কিছু সমস্যা আছে। প্রথমত, সিদ্ধান্তটি সময়মতো নিতে পারছি কি না। দ্বিতীয়ত, বরাদ্দটি সময়মতো ছাড় করাতে পারছি কি না? অনেক সময় ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতনরা কীভাবে নেবেন। ফলে আমলাতন্ত্র দায় নিতে চায় না।
প্রথম আলো : চ্যালেঞ্জ হিসেবে শিক্ষিত বেকারের কথা বলেছিলেন। এর কারণ কি আমাদের শিক্ষা চাহিদা মেটাতে অক্ষম?
কে এ এস মুরশিদ : আমাদের অর্থনীতির গতিশীল খাতগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন। এসব খাতে প্রচুর দক্ষ জনবল প্রয়োজন। কিন্তু আমরা সেটি সরবরাহ দিতে পারছি না। যে কারণে বছরে পাঁচ কোটি ডলার চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প খাতেও দক্ষ জনবলের অভাবে আছে। প্রশ্ন হলো সেটি তৈরি করবে কে? বেসরকারি খাত মনে করে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়। এখানে প্রয়োজন একটি শিল্প খাতের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংযুক্তি তৈরি করা। সেখানে কার কী প্রয়োজন এবং কে কী দিতে পারবে, সেটি চিহ্নিত করা হবে। সেদিন আমাদের সেমিনারে একজন শিল্পপতি বললেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৫০০ জন হিসাবরক্ষণ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। দেশে পান না বলে বিদেশ থেকে আনতে হচ্ছে। এ রকম অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানই রয়েছে। আগে চাকরির সংস্থান ছিল না। এখানে চাকরির সংস্থান থাকলেও আমরা তার জোগান দিতে পারছি না। অথচ দেশে অনেক শিক্ষিত বেকার রয়েছেন। এটি যেমন পরিবারের, তেমনি দেশের বিশাল অপচয়।
প্রথম আলো : ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা সম্পর্কে কী বলবেন?
কে এ এস মুরশিদ : একধরনের আস্থার সংকট আছে। কিন্তু আমার ধারণা এটি কেটে যাবে। আর ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা শুধু রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে নয়, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও অনিয়ম রয়েছে।
প্রথম আলো : এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকির কাজটি কি ঠিকমতো করতে পারছে?
কে এ এস মুরশিদ : তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতাও সীমিত। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ তেমন নেই। আমার মনে হয় ইচ্ছে করেই এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এটিই হয়তো আমাদের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির অঙ্গ। অর্থনীতির প্রাথমিক স্তরে সব দেশেই এটি কমবেশি হয়ে থাকে।
প্রথম আলো : তার মানে আমরা এখনো প্রাথমিক স্তরে রয়ে গেছি?
কে এ এস মুরশিদ : আমরা প্রাথমিক স্তর অতিক্রম করে গিয়েছি। কিন্তু এখেনা অনেক কিছু করার আছে।
প্রথম আলো : প্রতিবছর বাজেটের আগে প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিতর্ক হয়। সরকার একটা বলে, দাতারা আরেকটা বলে।
কে এ এস মুরশিদ : বিতর্ক হওয়া তো ভালো। বিতর্ক হলে সব পক্ষ সতর্ক থাকে। আমাকে প্রশ্ন করতেই হবে। এবং সরকারকে তা শুনতেও হবে।
প্রথম আলো : সরকার সব সময় প্রশ্ন শুনতে চায় কি?
কে এ এস মুরশিদ : সব সময় চায় না। কিন্তু শোনে। বিআইডিএসের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সব সময় আমরা সত্য কথাটি বলার চেষ্টা করেছি। কোনো সময় সরকার খুশি হয়েছে, কোনো সময় হয়নি। কিন্তু এই বলে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেনি। এ নিয়ে বিপত্তি ঘটেনি। অর্থনৈতিক আলোচনায় এই সহনশীলতাটা আছে।
প্রথম আলো : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
কে এ এস মুরশিদ : আপনাকেও ধন্যবাদ।
প্রথম আলো : আগামী ২ জুন সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের যে বাজেট পেশ হতে যাচ্ছে, তা থেকে আপনি কী প্রত্যাশা করেন?
কে এ এস মুরশিদ : এক বছরের বাজেট নিয়ে খুব বেশি আশা করা যায় না। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই একে দেখতে হবে। আগামী পাঁচ বছরে আমরা অর্থনীতিকে কোথায় নিয়ে যেতে চাই, প্রতিটি বাজেটে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের রাজস্ব আয়ের হার নিচের দিকে। এমনকি নেপালের তুলনায়ও কম। রাজস্ব কম হলে উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাও সীমিত থাকবে। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ বাজেট থেকে খুব উপকৃত হবে, এমনটি আশা করা যায় না।
প্রথম আলো : নিম্নতম রাজস্ব আয়ের কারণ কি সরকারের নীতিগত দুর্বলতা, না মানুষের মধ্যে কর ফাঁকির প্রবণতা?
কে এ এস মুরশিদ : প্রশ্ন হলো কর বাড়ানোর পদ্ধতিটি কী হবে। দেশে শিল্পকারখানা বেড়েছে, সেখান থেকে রাজস্বও আসছে। কিন্তু এখনো আমাদের অনানুষ্ঠানিক খাত অনেক বড়। সে জন্যই পরোক্ষ কর চাপাতে হয়। বাজেট প্রণয়নে আমাদের কাঠামোগত দুর্বলতা আছে; প্রথমত, যথেষ্ট তথ্য নেই, আবার যেটুকু তথ্য আছে তার ওপর ভিত্তি করে করও খুব বেশি বাড়ানো হচ্ছে না। যেখানে সুশাসনের ঘাটতি ও ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা থাকে, সেখানে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা দুরূহ হয়ে পড়ে। আবারও এও সত্য যে গত ছয়-সাত বছরে রাজস্ব অনেক বেড়েছে।
প্রথম আলো : সম্প্রতি বিআইডিএস সেমিনারে আপনি অর্থনীতির যে পাঁচটি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন, তা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
কে এ এস মুরশিদ : প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি। আছে সুশাসনের ঘাটতি ও অবকাঠামোগত সমস্যা। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিশাপ ও নব্য সন্ত্রাসবাদের বিস্তার। গতানুগতিকভাবে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যাবে না; করতে হবে প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়েই। যেমন শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসবাদ দমন করা যাবে না। কেউ পারেনি। সমতাভিত্তিক দেশ হিসেবে আমাদের যে শক্তি ছিল, তার সুফলটা আমরা নিতে পারিনি। এখন বিভেদই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথম আলো : এই সমস্যা তো রাজনৈতিক?
কে এ এস মুরশিদ : শতভাগ রাজনৈতিক। আমাদের অর্থনীতি কিন্তু মোটামুটি ভালো অবস্থানে। ১৫-২০ বছর আগেও কেউ ভাবতে পারেননি বাংলাদেশ এই অবস্থায় এসে পৌঁছাবে। এই অসাধ্যসাধন তো দেশের মানুষই করেছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে আমাদের চাওয়াটা কী? আপনারা অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়তা না করুন, অন্তত বাধাগ্রস্ত করবেন না।
প্রথম আলো : সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ইনক্লুসিভ বা সম্পৃক্তকরণ কি জরুরি নয়?
কে এ এস মুরশিদ : এত বিভক্তি ভালো নয়। যে ঐক্য নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, দেশ গঠনে কেন তা কাজে লাগাতে পারব না? আমাদের সমস্যাগুলো আমাদেরই সমাধান করতে হবে। বাইরে থেকে কেউ সেটি করে দেবে না।
প্রথম আলো : এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেবেন?
কে এ এস মুরশিদ : রাজনৈতিক বিষয়ে আমার কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে বলব, আমাদের অনেক সম্ভাবনা আছে। বিশ্ববাজার আমাদের অনুকূলে। নিত্যপণ্যের দাম কমে আসছে। বিনিয়োগ না হওয়ায় ব্যাংকে প্রচুর অর্থ পড়ে আছে। কিন্তু আমার মনে হয় পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। রাজনীতিতেও একধরনের স্থিতিশীলতা এসেছে; যদিও তার স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন আছে। অর্থনৈতিক সূচকগুলো এখন ভালো অবস্থায়। সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগ না হওয়ার কারণ দেখি না। আমার মনে হয় এর সুফল পেতে দু-এক বছর লাগবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে অর্থনীতি নিজস্ব গতিতেই এগোবে। তারপরও ওই পাঁচটি চ্যালেঞ্জ কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
প্রথম আলো : বিনিয়োগ না হওয়ার কারণেই কি বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে?
কে এ এস মুরশিদ : তারও কারণ অনিশ্চয়তা। এ ক্ষেত্রে সরকারের কাজ হলো এখানে যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনুকূল পরিবেশ আছে, সেটি প্রমাণ করা। বিনিয়োগের সুরক্ষাও দিতে হবে। ব্যবসায়ীরা সব ধরনের সুবিধা ও শতভাগ মুনাফার নিশ্চয়তা চান। কিন্তু পুঁজিবাদী-ব্যবস্থায় তো ঝুঁকি নিতে হবে।
প্রথম আলো : অবকাঠামোগত সমস্যার সুরাহা কতটা হয়েছে? জ্বালানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি।
কে এ এস মুরশিদ : এসব সমস্যা সত্ত্বেও শিল্পায়ন হয়েছে। বড় বিনিয়োগকারীরা সরকারের দিকে তাকিয়ে নেই। তাঁরা নিজস্ব বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট তৈরি করছেন। জ্বালানি সমস্যাও অনেকটা কাটিয়ে ওঠা গেছে। গ্যাস নেই। এলএনজি আনার ব্যবস্থা হচ্ছে। সমস্যা হয় ছোট বিনিয়োগকারীদের।
প্রথম আলো : আমাদের মুক্তবাজার কতটা মুক্ত? অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কথা শোনা যায়?
কে এ এস মুরশিদ : এটি হয়তো আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু দেশে উৎপাদিত পণ্যের ক্ষেত্রে হওয়ার কথা নয়। বড় ব্যবসায়ীদের সুবিধা বাড়াতে অনেক সময় আমদানি বন্ধের কথাও বলেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের এসব বাধা কাটিয়ে উঠতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
প্রথম আলো : কৃষিতে আমাদের ব্যাপক সাফল্য রয়েছে। কিন্তু ইদানীং উৎপাদন ব্যয় ও বিক্রয় পণ্যের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এটি কি সংকট বাড়াবে না?
কে এ এস মুরশিদ : আমরা বোধ হয় অতি বেশি চাল উৎপাদন করছি। এতটা প্রয়োজন আছে কি না ভাবা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, মুক্তবাজারে পণ্যের দাম বাড়ানো কঠিন; ওএমএস ইত্যাদির মাধ্যমে কমানো হয়তো যায়। কৃষিপণ্যের দাম অনেক বছর ধরেই কমছে। নতুন প্রযুক্তি, হাইব্রিডও আসছে। ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তার ব্যবহার।
প্রথম আলো : বাজেটে কারা লাভবান হয়?
কে এ এস মুরশিদ : বাজেট নিয়ে দুটি কথা আছে। একটি হলো প্রক্রিয়া। আমার মতে, বাজেট অতিমাত্রায় স্বার্থান্বেষী মহল দ্বারা প্রভাবিত। অর্থমন্ত্রী সবার কথা শুনে বাজেট তৈরি করার চেষ্টা করেন। তারপরও নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন তেমন হয় না। বাজেটে স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবই বেশি থেকে যায়।
প্রথম আলো : পূর্ববর্তী সরকারের বাজেটের সঙ্গে বর্তমান সরকারের বাজেট প্রক্রিয়ায় কোনো ফারাক আছে কি?
কে এ এস মুরশিদ : আমার মনে হয় একই ধারায় চলছে। আরও দুশ্চিন্তার কারণ হলো একই গোষ্ঠী ক্ষমতার সঙ্গে আছে, আবার ক্ষমতার বাইরেও আছে। তারাই দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এ অবস্থায় বৃহত্তর জনগণের স্বার্থ সুরক্ষিত হওয়া কঠিন। সে ক্ষেত্রে বাজেট-প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষ গবেষণাভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত (ইনপুট) থাকা উচিত। বর্তমানে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরাও এ কাজটি করতে পারেন।
প্রথম আলো : বিআইডিএস তো কাজটি করতে পারে।
কে এ এস মুরশিদ : করতে পারে। তবে কেবল বিআইডিএস নয়। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান মিলে এই কাজটি করতে পারে, যাতে সরকার অর্থনীতির একটি সার্বিক চিত্র পেতে পারে।
প্রথম আলো : বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফও তো গবেষণা করে থাকে?
কে এ এস মুরশিদ : হ্যাঁ, করে থাকে। এদের বিক্ষিপ্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়েই একটি বিশ্লেষণ দাঁড় করানো হয়। কিন্তু বাজেটে অগ্রাধিকার নির্ধারণের জন্য পদ্ধতিগত বিশ্লেষণ দরকার। যাঁরা দেশের কর্ণধার, তাঁরাই সেটি ঠিক করেন।
প্রথম আলো : আমরা দেখছি কোনো বছরের বাজেটে কৃষি, কোনো বছর শিক্ষা, কোনো বছর অবকাঠামো বা জ্বালানি-বিদ্যুৎ অগ্রাধিকার পায়? কিসের ভিত্তিতে এসব করা হয়?
কে এ এস মুরশিদ : মনে হচ্ছে এসব অস্থায়ী বা অ্যাডহক ভিত্তিতে হচ্ছে। প্রক্রিয়াটি যথার্থ নয়। গতবার এত বরাদ্দ ছিল, এবার এই পরিমাণ বাড়ানো হোক। কিন্তু এই পদ্ধতিতে আমি সন্তুষ্ট নই। বাজেটের আকার সমস্যা নয়। আমাদের বাজেটে ঘাটতি খুব কম। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমার যদি বড় বাজেট করার বা বাস্তবায়নের সক্ষমতা না থাকে তাহলে কেন আমি সেটা করব? বাজেটের আকার কত হলো, তার চেয়ে জরুরি হলো কত বড় বাজেট আমি সামাল দিতে পারব, বাস্তবায়ন করতে পারব।
প্রথম আলো : এ ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
কে এ এস মুরশিদ : আমাদের পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে কিছু সমস্যা আছে। প্রথমত, সিদ্ধান্তটি সময়মতো নিতে পারছি কি না। দ্বিতীয়ত, বরাদ্দটি সময়মতো ছাড় করাতে পারছি কি না? অনেক সময় ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতনরা কীভাবে নেবেন। ফলে আমলাতন্ত্র দায় নিতে চায় না।
প্রথম আলো : চ্যালেঞ্জ হিসেবে শিক্ষিত বেকারের কথা বলেছিলেন। এর কারণ কি আমাদের শিক্ষা চাহিদা মেটাতে অক্ষম?
কে এ এস মুরশিদ : আমাদের অর্থনীতির গতিশীল খাতগুলো ব্যক্তিমালিকানাধীন। এসব খাতে প্রচুর দক্ষ জনবল প্রয়োজন। কিন্তু আমরা সেটি সরবরাহ দিতে পারছি না। যে কারণে বছরে পাঁচ কোটি ডলার চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প খাতেও দক্ষ জনবলের অভাবে আছে। প্রশ্ন হলো সেটি তৈরি করবে কে? বেসরকারি খাত মনে করে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়। এখানে প্রয়োজন একটি শিল্প খাতের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংযুক্তি তৈরি করা। সেখানে কার কী প্রয়োজন এবং কে কী দিতে পারবে, সেটি চিহ্নিত করা হবে। সেদিন আমাদের সেমিনারে একজন শিল্পপতি বললেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৫০০ জন হিসাবরক্ষণ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। দেশে পান না বলে বিদেশ থেকে আনতে হচ্ছে। এ রকম অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানই রয়েছে। আগে চাকরির সংস্থান ছিল না। এখানে চাকরির সংস্থান থাকলেও আমরা তার জোগান দিতে পারছি না। অথচ দেশে অনেক শিক্ষিত বেকার রয়েছেন। এটি যেমন পরিবারের, তেমনি দেশের বিশাল অপচয়।
প্রথম আলো : ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা সম্পর্কে কী বলবেন?
কে এ এস মুরশিদ : একধরনের আস্থার সংকট আছে। কিন্তু আমার ধারণা এটি কেটে যাবে। আর ব্যাংকিং খাতে দুর্বলতা শুধু রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে নয়, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও অনিয়ম রয়েছে।
প্রথম আলো : এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকির কাজটি কি ঠিকমতো করতে পারছে?
কে এ এস মুরশিদ : তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতাও সীমিত। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ তেমন নেই। আমার মনে হয় ইচ্ছে করেই এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এটিই হয়তো আমাদের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির অঙ্গ। অর্থনীতির প্রাথমিক স্তরে সব দেশেই এটি কমবেশি হয়ে থাকে।
প্রথম আলো : তার মানে আমরা এখনো প্রাথমিক স্তরে রয়ে গেছি?
কে এ এস মুরশিদ : আমরা প্রাথমিক স্তর অতিক্রম করে গিয়েছি। কিন্তু এখেনা অনেক কিছু করার আছে।
প্রথম আলো : প্রতিবছর বাজেটের আগে প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিতর্ক হয়। সরকার একটা বলে, দাতারা আরেকটা বলে।
কে এ এস মুরশিদ : বিতর্ক হওয়া তো ভালো। বিতর্ক হলে সব পক্ষ সতর্ক থাকে। আমাকে প্রশ্ন করতেই হবে। এবং সরকারকে তা শুনতেও হবে।
প্রথম আলো : সরকার সব সময় প্রশ্ন শুনতে চায় কি?
কে এ এস মুরশিদ : সব সময় চায় না। কিন্তু শোনে। বিআইডিএসের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সব সময় আমরা সত্য কথাটি বলার চেষ্টা করেছি। কোনো সময় সরকার খুশি হয়েছে, কোনো সময় হয়নি। কিন্তু এই বলে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেনি। এ নিয়ে বিপত্তি ঘটেনি। অর্থনৈতিক আলোচনায় এই সহনশীলতাটা আছে।
প্রথম আলো : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
কে এ এস মুরশিদ : আপনাকেও ধন্যবাদ।
No comments