গার্ল সামিটের এক বছর by সারাহ কুক ও এডওয়ার্ড বিগবেদার
‘আমি
স্কুলে যেতে ভালোবাসি। সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে লুকোচুরি এবং অন্য সব মজার
খেলা করি। আমি আবার স্কুলে যেতে চাই এবং শিক্ষকতা করতে চাই,’ ১৫ বছর বয়সের
এক বাল্যবধূ এ কথা বলছিল। আসুন, একসঙ্গে কাজ করি, যাতে কোনো শিশু তার
স্বপ্নপূরণে ব্যর্থ না হয়।
এক প্রজন্মের মধ্যে, নারীর খতনা, বাল্যবিবাহ এবং জোরপূর্বক বিয়ে বন্ধে বৈশ্বিক কার্যক্রমকে সহায়তা দিতে যুক্তরাজ্য সরকার এবং ইউনিসেফ যৌথভাবে গত বছরের ২২ জুলাই আয়োজন করেছিল গার্ল সামিট। ৫০টির বেশি দেশ থেকে সাত শতাধিক প্রতিনিধি সেখানে অংশ নেন। সিভিল সোসাইটি, ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধি, সরকারের মন্ত্রী, বেসরকারি খাত, ভুক্তভোগী এবং যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ নানা স্তরের অংশগ্রহণকারী যোগ দেন এ আয়োজনে। সামিটের পর গেল এক বছরে অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং লক্ষ্য অর্জনে ১৮০টির ওপর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
এই জুলাইতে, আমরা গার্ল সামিটের প্রথম বার্ষিকী উদ্যাপন করছি। এই বার্ষিকীর প্রাক্কালে বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানাই নারী ও কন্যাশিশুর জীবনমান উন্নয়নে অবদানের জন্য। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ভেদাভেদ কমিয়ে আনা এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসেই কেবল সরকারের সাফল্য সীমাবদ্ধ নয়, অগ্রগতি এর চেয়ে বেশি। এশিয়ার একটি বর্ধনশীল জাতি হিসেবে জেন্ডার, বৈচিত্র্য ও উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ এবং সব ধরনের জাতিগত বৈষম্য বিলোপ সনদে অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ বাংলাদেশ।
নারী–পুরুষের বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো হচ্ছে গত এক দশকে প্রতি এক লাখ শিশুজন্মে মাতৃমৃত্যু ৪০০ থেকে ২৪০-এ নেমে এসেছে, ২০০২ সালের জানুয়ারি থেকে মেট্রোপলিটন শহরের বাইরে এইচএসসি পর্যন্ত নারীশিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে, ঝরে পড়া হ্রাস পেয়েছে এবং শিশুবিষয়ক আইন ২০১৩, শিশুনীতি ২০১১, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা ও পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনসহ ২০১০ নানা আইনি কাঠামো তৈরির মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এসব অর্জনের পাশাপাশি অনেক চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষত নারী–পুরুষের সমতার ব্যাপক ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে। বাল্যবিবাহের হার এখনো অনেক বেশি। দেশের অর্ধেকের বেশি নারী, যাঁদের বয়স ২০ থেকে ২৪-এর মাঝামাঝি, তাঁরা ১৮তম জন্মদিন পালনের আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। প্রায় প্রতি পাঁচজনে একজন নারীর বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায় (ইউনিসেফের গবেষণা তথ্য)। শিশুর স্বার্থ সুরক্ষায় প্রতিটি জাতিকেই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে দেশের উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিত থেকে এটি একধরনের উন্নয়নবিমুখতা। শৈশবে বিয়ে হওয়া মানে বর ও কনে দুজনেই মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করা বা সমাজের কাছ থেকে দরকারি সুবিধাগুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয় বাল্যবিবাহের শিকার শিশু।
সবকিছুর পরও ভালো সংবাদ আছে। গবেষণা তথ্য বলছে, বাল্যবিবাহ বাংলাদেশে নিম্নগামী। ২০১৪ সালের বাংলাদেশ জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য জরিপে জানা গেছে, ইতিপূর্বে ২০-২৪ বয়স গ্রুপের নারীদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়সের আগে বাল্যবিবাহ শতকরা ৬৮ ভাগ ছিল। গত এক দশকে এটি ১৬ পয়েন্ট কমেছে। এই নিম্নগামিতা প্রমাণ করে বাল্যবিবাহ রোধে বাংলাদেশ বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। শক্তিশালী আইনি কাঠামো গড়ে তোলা, বাস্তবায়ন, তদনুযায়ী নীতিমালা বাস্তবায়ন, বাল্যবিবাহ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিগুলোকে সচেতন করা ও সংঘবদ্ধ করার মাধ্যমে এই অগ্রগতিকে বেগবান করার এটিই উপযুক্ত সময়। বাংলাদেশ সরকার দেশের সব মানুষের কাছে উন্নয়ন সুবিধা পৌঁছে দিতে ও মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে চলছে। এ অবস্থায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা অসম্ভব কোনো কাজ নয়। উৎপাদনশীল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে, শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনে অনুপ্রাণিত হয়ে মেয়েদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে এবং পরিবর্তিত হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ।
এটি আশাব্যঞ্জক যে বাংলাদেশ বাল্যবিবাহ রোধে বর্তমানে অনেক কিছু করছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে গার্ল সামিটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহ বন্ধের ব্যবস্থা করবেন। ২০২১ সালের মধ্যে তিনি ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে বাল্যবিবাহ এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনবেন বলেও কথা দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ আয়োজন করে নিজস্ব গার্ল সামিট। এই নিবিড় সম্পৃক্ততা ও সদিচ্ছা, উন্নয়ন সহযোগীদের বাল্যবিবাহ বন্ধে একযোগে কাজ করায় অনুপ্রাণিত করে।
সরকারের বর্তমানে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন ১৯২৯ সংশোধনের উদ্যোগ এবং বিয়ের বয়স ১৮ বছর করা বড় ধরনের অর্জন। একইভাবে বাল্যবিবাহ বন্ধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার খসড়া প্রস্তুতের মাধ্যমে বাংলাদেশ একই ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের প্রতিবেশী দেশ যেমন ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কার মতো শিশু অধিকার ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করার পথ বেছে নিয়েছে। অনূর্ধ্ব–১৮ বছরের শতকরা ৩৯ ভাগ জনগোষ্ঠী নিয়ে বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। এই শক্তি কাজে লাগাতে দরকার সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, শিক্ষিত এবং সবল জনগোষ্ঠী। এক হিসাবে জানা গেছে, বাংলাদেশে শতকরা ৫০ ভাগ জনবল নারী—যা দেশের জন্য সম্পদবিশেষ। নিজের ভাগ্য গড়তে এবং দেশের উন্নয়নে এই নারী জনগোষ্ঠীকে জীবনমুখী শিক্ষা, দাতা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্য সুবিধা দিতে হবে। এই সম্ভাবনাময় তরুণ জনগোষ্ঠী যদি বাল্যবিবাহ এবং অপরিপক্ব বয়সে মাতৃত্বের শিকার হয়, তবে দেশ হারাবে সেই জনবল, যারা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারত।
বাংলাদেশের সহযোগী হিসেবে প্রথম গার্ল সামিট বার্ষিকীতে আমরা কিশোর-কিশোরীদের জন্য বরাদ্দ রাখার গুরুত্ব তুলে ধরছি। বিশেষ করে বাল্যবিবাহের মতো শিশু অধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের মাধ্যমে শিশুর সুন্দর আগামী গড়ে তোলার উপযুক্ত বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে অনুরোধ করছি।
সারাহ কুক: যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ডিএফআইডির বাংলাদেশের প্রধান। এডওয়ার্ড বিগবেদার: বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি।
এক প্রজন্মের মধ্যে, নারীর খতনা, বাল্যবিবাহ এবং জোরপূর্বক বিয়ে বন্ধে বৈশ্বিক কার্যক্রমকে সহায়তা দিতে যুক্তরাজ্য সরকার এবং ইউনিসেফ যৌথভাবে গত বছরের ২২ জুলাই আয়োজন করেছিল গার্ল সামিট। ৫০টির বেশি দেশ থেকে সাত শতাধিক প্রতিনিধি সেখানে অংশ নেন। সিভিল সোসাইটি, ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধি, সরকারের মন্ত্রী, বেসরকারি খাত, ভুক্তভোগী এবং যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ নানা স্তরের অংশগ্রহণকারী যোগ দেন এ আয়োজনে। সামিটের পর গেল এক বছরে অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং লক্ষ্য অর্জনে ১৮০টির ওপর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
এই জুলাইতে, আমরা গার্ল সামিটের প্রথম বার্ষিকী উদ্যাপন করছি। এই বার্ষিকীর প্রাক্কালে বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানাই নারী ও কন্যাশিশুর জীবনমান উন্নয়নে অবদানের জন্য। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ভেদাভেদ কমিয়ে আনা এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসেই কেবল সরকারের সাফল্য সীমাবদ্ধ নয়, অগ্রগতি এর চেয়ে বেশি। এশিয়ার একটি বর্ধনশীল জাতি হিসেবে জেন্ডার, বৈচিত্র্য ও উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ এবং সব ধরনের জাতিগত বৈষম্য বিলোপ সনদে অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ বাংলাদেশ।
নারী–পুরুষের বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলো হচ্ছে গত এক দশকে প্রতি এক লাখ শিশুজন্মে মাতৃমৃত্যু ৪০০ থেকে ২৪০-এ নেমে এসেছে, ২০০২ সালের জানুয়ারি থেকে মেট্রোপলিটন শহরের বাইরে এইচএসসি পর্যন্ত নারীশিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে, ঝরে পড়া হ্রাস পেয়েছে এবং শিশুবিষয়ক আইন ২০১৩, শিশুনীতি ২০১১, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা ও পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনসহ ২০১০ নানা আইনি কাঠামো তৈরির মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এসব অর্জনের পাশাপাশি অনেক চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষত নারী–পুরুষের সমতার ব্যাপক ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে। বাল্যবিবাহের হার এখনো অনেক বেশি। দেশের অর্ধেকের বেশি নারী, যাঁদের বয়স ২০ থেকে ২৪-এর মাঝামাঝি, তাঁরা ১৮তম জন্মদিন পালনের আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। প্রায় প্রতি পাঁচজনে একজন নারীর বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায় (ইউনিসেফের গবেষণা তথ্য)। শিশুর স্বার্থ সুরক্ষায় প্রতিটি জাতিকেই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে দেশের উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিত থেকে এটি একধরনের উন্নয়নবিমুখতা। শৈশবে বিয়ে হওয়া মানে বর ও কনে দুজনেই মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করা বা সমাজের কাছ থেকে দরকারি সুবিধাগুলো নেওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয় বাল্যবিবাহের শিকার শিশু।
সবকিছুর পরও ভালো সংবাদ আছে। গবেষণা তথ্য বলছে, বাল্যবিবাহ বাংলাদেশে নিম্নগামী। ২০১৪ সালের বাংলাদেশ জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য জরিপে জানা গেছে, ইতিপূর্বে ২০-২৪ বয়স গ্রুপের নারীদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর বয়সের আগে বাল্যবিবাহ শতকরা ৬৮ ভাগ ছিল। গত এক দশকে এটি ১৬ পয়েন্ট কমেছে। এই নিম্নগামিতা প্রমাণ করে বাল্যবিবাহ রোধে বাংলাদেশ বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। শক্তিশালী আইনি কাঠামো গড়ে তোলা, বাস্তবায়ন, তদনুযায়ী নীতিমালা বাস্তবায়ন, বাল্যবিবাহ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিগুলোকে সচেতন করা ও সংঘবদ্ধ করার মাধ্যমে এই অগ্রগতিকে বেগবান করার এটিই উপযুক্ত সময়। বাংলাদেশ সরকার দেশের সব মানুষের কাছে উন্নয়ন সুবিধা পৌঁছে দিতে ও মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে চলছে। এ অবস্থায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা অসম্ভব কোনো কাজ নয়। উৎপাদনশীল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে, শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনে অনুপ্রাণিত হয়ে মেয়েদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে এবং পরিবর্তিত হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ।
এটি আশাব্যঞ্জক যে বাংলাদেশ বাল্যবিবাহ রোধে বর্তমানে অনেক কিছু করছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে গার্ল সামিটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহ বন্ধের ব্যবস্থা করবেন। ২০২১ সালের মধ্যে তিনি ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে বাল্যবিবাহ এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনবেন বলেও কথা দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ আয়োজন করে নিজস্ব গার্ল সামিট। এই নিবিড় সম্পৃক্ততা ও সদিচ্ছা, উন্নয়ন সহযোগীদের বাল্যবিবাহ বন্ধে একযোগে কাজ করায় অনুপ্রাণিত করে।
সরকারের বর্তমানে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন ১৯২৯ সংশোধনের উদ্যোগ এবং বিয়ের বয়স ১৮ বছর করা বড় ধরনের অর্জন। একইভাবে বাল্যবিবাহ বন্ধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার খসড়া প্রস্তুতের মাধ্যমে বাংলাদেশ একই ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের প্রতিবেশী দেশ যেমন ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কার মতো শিশু অধিকার ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করার পথ বেছে নিয়েছে। অনূর্ধ্ব–১৮ বছরের শতকরা ৩৯ ভাগ জনগোষ্ঠী নিয়ে বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। এই শক্তি কাজে লাগাতে দরকার সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, শিক্ষিত এবং সবল জনগোষ্ঠী। এক হিসাবে জানা গেছে, বাংলাদেশে শতকরা ৫০ ভাগ জনবল নারী—যা দেশের জন্য সম্পদবিশেষ। নিজের ভাগ্য গড়তে এবং দেশের উন্নয়নে এই নারী জনগোষ্ঠীকে জীবনমুখী শিক্ষা, দাতা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্য সুবিধা দিতে হবে। এই সম্ভাবনাময় তরুণ জনগোষ্ঠী যদি বাল্যবিবাহ এবং অপরিপক্ব বয়সে মাতৃত্বের শিকার হয়, তবে দেশ হারাবে সেই জনবল, যারা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারত।
বাংলাদেশের সহযোগী হিসেবে প্রথম গার্ল সামিট বার্ষিকীতে আমরা কিশোর-কিশোরীদের জন্য বরাদ্দ রাখার গুরুত্ব তুলে ধরছি। বিশেষ করে বাল্যবিবাহের মতো শিশু অধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধের মাধ্যমে শিশুর সুন্দর আগামী গড়ে তোলার উপযুক্ত বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে অনুরোধ করছি।
সারাহ কুক: যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ডিএফআইডির বাংলাদেশের প্রধান। এডওয়ার্ড বিগবেদার: বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি।
No comments