অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন
যমুনার ভাঙনে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কামারপাড়া গ্রাম বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো |
যমুনা
নদীর ভাঙনে দুই সপ্তাহে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের
ঈদগাহ মাঠসহ অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, অসংখ্য গাছ ও আবাদি জমি বিলীন হয়েছে।
ইতিমধ্যে ওই গ্রামের দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।
এদিকে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি দুই দিন ধরে আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলায় ভাঙন শুরু হয়। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের কামারপাড়া ঈদগাহ মাঠ, অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, অসংখ্য গাছ ও আবাদি জমি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। কামারপাড়া গ্রামে ভাঙনের কারণে ফুলছড়ি-বরমতাইর সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে ভাঙনের ভয়ে অনেকেই তাঁদের ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, গৃহহীনেরা সরকারি জায়গা ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। নলকূপ বিলীন হওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কারণে ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজ, ফুলছড়ি সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা, একটি মন্দিরসহ শতাধিক ঘরবাড়ি হুমকির সম্মুখীন।
কামারপাড়া গ্রামের কৃষক মতি ঘোষ (৪৫) বলেন, ‘দুই সপ্তাহে যমুনার ভাঙনে আমার তিনটি ঘর ও বসতভিটা বিলীন হয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’ একই গ্রামের কৃষক জহুরুল মিয়া (৫০) বলেন, ‘সাত দিন আগোত হামরা গেরেসতো আচিনো। হামারঘরে জমাজমি, বাড়িভিটা সউগ আচিলো। নদী ভাঙ্গি সাত দিন পরে হামারঘরে কিচুই নাই। কামলার কাম না করলে পেটোত ভাত যাবার নোওয়ায়।’ তিনি বলেন, ‘বাড়িঘর ভাঙি যাওয়ায় হামরা সোরকারি জাগাত আচি।’ একই গ্রামের সম্ভনাথ কর্মকার (৪২) বলেন, ‘হামরা কিচু চাইনে, ভাঙার হাত থাকি হামারঘরোক বাঁচান।’
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনোতোষ রায় বলেন, প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ ফুট এলাকা বিলীন হচ্ছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে অল্প দিনের মধ্যেই গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। বিষয়টি পাউবোকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
এদিকে ১৮ জুন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এবং গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সাংসদ ফজলে রাব্বি মিয়া কামারপাড়া গ্রামের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, ওই গ্রামে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাউবোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আউয়াল মিয়া বলেন, কামারপাড়া এলাকার ভাঙন ঠেকাতে দুই দফায় ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে নদীর তীরে বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ স্থাপনের কাজ চলছে।
এদিকে কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী আংশিক) আসনের সাংসদ রুহুল আমিন গতকাল শনিবার রৌমারীর যাদুচর ও চিলমারীর অষ্টমীর চরে ভাঙন ও বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
রুহুল আমিন বলেন, পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমার বড় ভাই সাবেক সাংসদ মরহুম গোলাম হোসেনের বাড়ি ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে। তাঁর কবরস্থান বিলীন হওয়ার পথে। এ ছাড়া রাজীবপুর, অষ্টমীর চরে অনেক এলাকা ভাঙছে।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর, নাগেশ্বরীর নুনখাওয়া, চিলমারীর কাচকোল, জোড়গাছ ও উলিপুরের বজরায় ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। এ ছাড়া বঙ্গসোনাহাট ব্রিজের পশ্চিম অংশ ও কুড়িগ্রাম-ফুলবাড়ী সড়ক ভাঙনের মুখে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম পাউবো সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার বিকেল ছয়টার আগের ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রে ৬ সেন্টিমিটার, দুধকুমারে ৮ সেন্টিমিটার, তিস্তায় ১৫ ও ধরলায় ২০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বাড়ার ফলে এসব নদ-নদীর অববাহিকা এবং চর-দ্বীপচরের মানুষ আবার ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে। অপরদিকে জিঞ্জিরাম, কালো ও ধরণী নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনো রৌমারী উপজেলার ৬২টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। পানিতে ডুবে আছে কয়েকটি গ্রামীণ সড়ক। পানিবন্দী রয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
এদিকে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি দুই দিন ধরে আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, বন্যার পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলায় ভাঙন শুরু হয়। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের কামারপাড়া ঈদগাহ মাঠ, অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, অসংখ্য গাছ ও আবাদি জমি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। কামারপাড়া গ্রামে ভাঙনের কারণে ফুলছড়ি-বরমতাইর সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে ভাঙনের ভয়ে অনেকেই তাঁদের ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, গৃহহীনেরা সরকারি জায়গা ও বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। নলকূপ বিলীন হওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কারণে ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজ, ফুলছড়ি সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা, একটি মন্দিরসহ শতাধিক ঘরবাড়ি হুমকির সম্মুখীন।
কামারপাড়া গ্রামের কৃষক মতি ঘোষ (৪৫) বলেন, ‘দুই সপ্তাহে যমুনার ভাঙনে আমার তিনটি ঘর ও বসতভিটা বিলীন হয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’ একই গ্রামের কৃষক জহুরুল মিয়া (৫০) বলেন, ‘সাত দিন আগোত হামরা গেরেসতো আচিনো। হামারঘরে জমাজমি, বাড়িভিটা সউগ আচিলো। নদী ভাঙ্গি সাত দিন পরে হামারঘরে কিচুই নাই। কামলার কাম না করলে পেটোত ভাত যাবার নোওয়ায়।’ তিনি বলেন, ‘বাড়িঘর ভাঙি যাওয়ায় হামরা সোরকারি জাগাত আচি।’ একই গ্রামের সম্ভনাথ কর্মকার (৪২) বলেন, ‘হামরা কিচু চাইনে, ভাঙার হাত থাকি হামারঘরোক বাঁচান।’
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনোতোষ রায় বলেন, প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ ফুট এলাকা বিলীন হচ্ছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে অল্প দিনের মধ্যেই গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। বিষয়টি পাউবোকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
এদিকে ১৮ জুন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এবং গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সাংসদ ফজলে রাব্বি মিয়া কামারপাড়া গ্রামের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, ওই গ্রামে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাউবোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আউয়াল মিয়া বলেন, কামারপাড়া এলাকার ভাঙন ঠেকাতে দুই দফায় ২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে নদীর তীরে বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ স্থাপনের কাজ চলছে।
এদিকে কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী আংশিক) আসনের সাংসদ রুহুল আমিন গতকাল শনিবার রৌমারীর যাদুচর ও চিলমারীর অষ্টমীর চরে ভাঙন ও বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
রুহুল আমিন বলেন, পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমার বড় ভাই সাবেক সাংসদ মরহুম গোলাম হোসেনের বাড়ি ইতিমধ্যে ভেঙে গেছে। তাঁর কবরস্থান বিলীন হওয়ার পথে। এ ছাড়া রাজীবপুর, অষ্টমীর চরে অনেক এলাকা ভাঙছে।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর, নাগেশ্বরীর নুনখাওয়া, চিলমারীর কাচকোল, জোড়গাছ ও উলিপুরের বজরায় ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। এ ছাড়া বঙ্গসোনাহাট ব্রিজের পশ্চিম অংশ ও কুড়িগ্রাম-ফুলবাড়ী সড়ক ভাঙনের মুখে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম পাউবো সূত্র জানায়, গতকাল শনিবার বিকেল ছয়টার আগের ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রে ৬ সেন্টিমিটার, দুধকুমারে ৮ সেন্টিমিটার, তিস্তায় ১৫ ও ধরলায় ২০ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বাড়ার ফলে এসব নদ-নদীর অববাহিকা এবং চর-দ্বীপচরের মানুষ আবার ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে। অপরদিকে জিঞ্জিরাম, কালো ও ধরণী নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনো রৌমারী উপজেলার ৬২টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। পানিতে ডুবে আছে কয়েকটি গ্রামীণ সড়ক। পানিবন্দী রয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
No comments