পরিশ্রম করো, খেলে ঘাম ঝরাও
নবীন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পেছনে কঠোর পরিশ্রম আর খেলাধুলাসহ ঘাম ঝরানোর পরামর্শ দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জীবন গঠনের লক্ষ্যে দেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থীর উদ্দেশে গতকাল শুক্রবার আলোচিত এই দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছেন তিনি। খবর এনডিটিভির। ভারতে প্রতিবছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষাবিদ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন উপলক্ষে শিক্ষক দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে দেশের স্কুলশিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রাজধানী নয়াদিল্লির মানেকশ মিলনায়তনে ৭০০ স্কুলশিশুর উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে ওই ভাষণ দেন তিনি। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি প্রশ্ন করারও সুযোগ পায়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশজুড়ে ১৮ লাখ স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় এতে। অনুষ্ঠানে প্রেরণা নামের এক শিক্ষার্থী মোদিকে প্রশ্ন করে, ‘লোকে বলে, আপনি একজন প্রধান শিক্ষকের মতো। কিন্তু আপনাকে দেখে মনে হয়, আপনি যেন আমাদের বন্ধু। আসলে আপনি কেমন ধরনের মানুষ?’—এর জবাবে মোদি বলেন, ‘আমি অন্যদের নির্দেশনা দিয়ে কাজ করাই। কিন্তু তাই বলে নিজে কঠোর পরিশ্রম করি না তা নয়।’ ইমফল থেকে আরেক শিক্ষার্থীর প্রশ্ন ছিল, ‘আমি কীভাবে প্রধানমন্ত্রী হতে পারি?’
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সহাস্য জবাব ছিল, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করো।’ একটু থেমে তিনি বলেন, ‘এর অর্থ এটাও যে ওই সময় পর্যন্ত (প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে) আমার জন্য আর কোনো হুমকি থাকল না।’ এ রকম নানা প্রশ্ন আর মোদির শিশুসুলভ ভঙ্গিতে কৌতুক করে দেওয়া জবাবে অনুষ্ঠানস্থলে মাঝেমধ্যেই হাসির রোল ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে বলেন, জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে তারা যেন দিনে অন্তত চারবার কঠোর পরিশ্রম, শ্রমসাধ্য খেলাধুলা ও প্রচুর ঘাম ঝরানোর কাজ করে। শিক্ষার্থীদের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জীবনীগ্রন্থ পড়া এবং প্রযুক্তি বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন তিনি। নরেন্দ্র মোদি বলেন, সার্চ ইঞ্জিন ‘গুগল গুরু’ দিয়ে এখন সব কাজ করা যায়। এটা তথ্যের জোগান দিতে পারে, কিন্তু জ্ঞানের জোগান নয়। শিক্ষক দিবসে স্কুলপড়ুয়াদের উদ্দেশে ভাষণ ও তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার ব্যাপারে মোদির ইচ্ছা বাস্তবায়িত করতে রাজ্যগুলোতে আগেই নির্দেশনা পাঠায় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে দেশে ব্যাপক বিতর্ক হয়। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা এই বলে সমালোচনা করেন যে এটা মোদি-মাহাত্ম্য তুলে ধরারই এক নতুন ছক। স্কুলপড়ুয়াদের মনে তিনি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে চান। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ মন্তব্য করেছেন, এটা উত্তর কোরিয়ার নেতাদের কায়দায় স্বেচ্ছাচারী কাজ।
No comments