দুদকের দাঁত ও নখ -দুর্বল করা নয়, প্রয়োজন শক্তি বাড়ানো
রাষ্ট্র-সরকারসহ সমাজের সর্বস্তরে ব্যাপক দুর্নীতির এই দেশে দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের নিয়ে প্রচুর কথা হয়। সবচেয়ে বেশি কথা হয় নির্বাচনের আগে, যখন রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের ভোট আকর্ষণের প্রয়াসে ভালো ভালো অনেক প্রতিশ্রুতি বারবার উচ্চারণ করে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও দুটি প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দলেরই প্রথম সারির প্রতিশ্রুতি ছিল দুর্নীতি দমন করা। যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে, তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে লেখা হয়েছিল: ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে শক্তিশালী করা হবে।’
কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, দুদককে শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়ে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ক্ষমতা বাড়বে না; বরং কমে যাবে। দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান গত বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রতীকী ভাষায় সে রকম আভাসই দিয়েছেন। দুদকের চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠানটির অবস্থাকে তুলনা করেছেন দন্তহীন বাঘের সঙ্গে, যে বাঘ শিকার ধরার চেষ্টা করে আসছিল তার থাবা দিয়ে। কিন্তু বাঘের থাবায় যেসব নখ থাকে, দুদকের চেয়ারম্যানের ভাষায়, এখন সেই নখগুলোও কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত মার্চে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধনের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি আইনটিতে সংশোধনী আনার কিছু সুপারিশ পেশ করেছে। প্রকাশিত খবরে জানা যায়, কমিটির উপস্থাপিত সুপারিশগুলোর মধ্যে এমন একটি সুপারিশও আছে যে, সরকারের কোনো কর্মকর্তা সরল বিশ্বাসে কোনো অনৈতিক কাজ করে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। এ ছাড়া বর্তমান আইনবলে দুদক সরকারের জনগুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্যাবলি পেতে পারে। সরকারের কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে সংশোধিত আইনে দুদকের এ ক্ষমতা থাকবে না। এটা খুবই স্পষ্ট যে, এ ধরনের সুপারিশের আলোকে আইন সংশোধন করা হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা, অন্তত সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি রোধের ক্ষেত্রে ভীষণভাবে কমে যাবে। অথচ দুর্নীতির সিংহ ভাগ ঘটে সরকারি পর্যায়েই।
দুদকের কমিশনাররাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সংগত কারণেই এই সুপারিশের বিরোধিতা করছেন। কমিশনের সদস্যরা সম্প্রতি এ নিয়ে একটি সভায় বলেছিলেন যে, আইন সংশোধন করে সরকার যদি দুদকের ক্ষমতা হ্রাসের ব্যবস্থা করে, তাহলে এই প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে চলবে। দুদকের চেয়ারম্যানের ইঙ্গিতে সরকারের গঠিত কমিটির সুপারিশমালা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকেই ‘থাবার নখগুলো’ কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়া বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বুধবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী শফিক আহমেদ বাংলাদেশ সফররত তিন ইউরোপীয় মানবাধিকার রাষ্ট্রদূতকে জানান, দুদককে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনে আইন সংস্কার বা নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে। অর্থাত্ দুদক আইন নিয়ে সরকারের সক্রিয় বিবেচনা চলছে। তাহলে সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে স্বয়ং দুদকের মতামত; কারণ দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কী কী বাধাবিপত্তি আসছে, তা দুদকই প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করছে এবং সেসব বাধাবিপত্তি কীভাবে দূর করা যায়, সে সম্পর্কে তারাই ভালো মত দিতে পারবে।
সরকারের গঠিত কমিটির উপস্থাপিত সুপারিশমালার বিষয়ে দুদক নিজের মতামত শিগগিরই জানাবে বলে খবরে প্রকাশ। আমরা আশা করব, সরকার দুদকের সেই মতামত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং দুদক আইনে এমন সংশোধনী আনা থেকে বিরত থাকবে, এতে প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যমান ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অঙ্গীকার যে আন্তরিক, তা প্রমাণের জন্য বিদ্যমান আইনের ঘাটতিগুলো পূরণ করে দুদকের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়া উচিত।
কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, দুদককে শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়ে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ক্ষমতা বাড়বে না; বরং কমে যাবে। দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান গত বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রতীকী ভাষায় সে রকম আভাসই দিয়েছেন। দুদকের চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠানটির অবস্থাকে তুলনা করেছেন দন্তহীন বাঘের সঙ্গে, যে বাঘ শিকার ধরার চেষ্টা করে আসছিল তার থাবা দিয়ে। কিন্তু বাঘের থাবায় যেসব নখ থাকে, দুদকের চেয়ারম্যানের ভাষায়, এখন সেই নখগুলোও কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত মার্চে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধনের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি আইনটিতে সংশোধনী আনার কিছু সুপারিশ পেশ করেছে। প্রকাশিত খবরে জানা যায়, কমিটির উপস্থাপিত সুপারিশগুলোর মধ্যে এমন একটি সুপারিশও আছে যে, সরকারের কোনো কর্মকর্তা সরল বিশ্বাসে কোনো অনৈতিক কাজ করে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। এ ছাড়া বর্তমান আইনবলে দুদক সরকারের জনগুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্যাবলি পেতে পারে। সরকারের কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে সংশোধিত আইনে দুদকের এ ক্ষমতা থাকবে না। এটা খুবই স্পষ্ট যে, এ ধরনের সুপারিশের আলোকে আইন সংশোধন করা হলে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা, অন্তত সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি রোধের ক্ষেত্রে ভীষণভাবে কমে যাবে। অথচ দুর্নীতির সিংহ ভাগ ঘটে সরকারি পর্যায়েই।
দুদকের কমিশনাররাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সংগত কারণেই এই সুপারিশের বিরোধিতা করছেন। কমিশনের সদস্যরা সম্প্রতি এ নিয়ে একটি সভায় বলেছিলেন যে, আইন সংশোধন করে সরকার যদি দুদকের ক্ষমতা হ্রাসের ব্যবস্থা করে, তাহলে এই প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে চলবে। দুদকের চেয়ারম্যানের ইঙ্গিতে সরকারের গঠিত কমিটির সুপারিশমালা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকেই ‘থাবার নখগুলো’ কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়া বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বুধবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী শফিক আহমেদ বাংলাদেশ সফররত তিন ইউরোপীয় মানবাধিকার রাষ্ট্রদূতকে জানান, দুদককে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনে আইন সংস্কার বা নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে। অর্থাত্ দুদক আইন নিয়ে সরকারের সক্রিয় বিবেচনা চলছে। তাহলে সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে স্বয়ং দুদকের মতামত; কারণ দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কী কী বাধাবিপত্তি আসছে, তা দুদকই প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করছে এবং সেসব বাধাবিপত্তি কীভাবে দূর করা যায়, সে সম্পর্কে তারাই ভালো মত দিতে পারবে।
সরকারের গঠিত কমিটির উপস্থাপিত সুপারিশমালার বিষয়ে দুদক নিজের মতামত শিগগিরই জানাবে বলে খবরে প্রকাশ। আমরা আশা করব, সরকার দুদকের সেই মতামত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং দুদক আইনে এমন সংশোধনী আনা থেকে বিরত থাকবে, এতে প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যমান ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অঙ্গীকার যে আন্তরিক, তা প্রমাণের জন্য বিদ্যমান আইনের ঘাটতিগুলো পূরণ করে দুদকের হাতে আরও ক্ষমতা দেওয়া উচিত।
No comments