জামায়াতের গন্তব্য কোথায়? রাজনীতি থেকে সরে যাওয়া নিয়ে আলোচনা by নূর মোহাম্মদ
ইতিহাসের তাড়া। বিতর্ক। শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড। মামলা, আদালত। অস্থিরতা। পদত্যাগ। বহিষ্কার। নতুন দল গঠনের উদ্যোগ।
কোন দিকে যাচ্ছে জামায়াত? কী করছে দলটি। নানা আলোচনা। জামায়াত কি প্রচলিত রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছে? দলটির ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বলছে, এ নিয়ে দলের ভেতরে আলোচনা চলছে। জামায়াতের পরামর্শকদের অনেকের মত হচ্ছে, প্রচলিত রাজনীতির কারণে দলটির নেতাকর্মীদের অনেক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু এতে বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে না। এ অবস্থায় সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম ত্যাগ করে সামাজিক সংগঠন হিসেবে কাজ করার বিষয়টি জামায়াতের ভেতরে আলোচিত হচ্ছে।
তবে দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগ এবং শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জুকে বহিষ্কারের পর এখন ঘোলাটে অবস্থা তৈরি হয়েছে। আপাত পরিস্থিতি সামাল দেয়া নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে দলটি। এরই মধ্যে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণী চিঠি দেয়া হয়েছে। নতুন সংগঠন গড়া নিয়ে দলের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের তথ্যও দেয়া হয়েছে মূলত পরিস্থিতিগত কারণে। এ কমিটিতে গোলাম পরওয়ার ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরও রয়েছেন।
এ কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার মানবজমিনকে বলেন, দল পরিচালনা করতে গিয়ে নানা ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কর্মীদের নানা নির্দেশনা দিতে হয়। এরকমই একটি নির্দেশনা। এটা কোনো চিঠি না। দলের ভেতরে কোনো সমস্যা নাই দাবি করেন তিনি বলেন, যা আছে, দলের বাইরে এবং মিডিয়াতে।
জানা গেছে, জামায়াতের গঠনতন্ত্রের ৬ নাম্বার ধারার ৪নং উপধারা ‘গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে- সৎ ও চরিত্রবান লোকের নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা’ ধারাটি নিয়েও দলের ভেতরে আলোচনা রয়েছে। এ ধারাটি আপাত কার্যকর না করার পক্ষে দলের ভেতরে অনেকের মত রয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও দেশের সামগ্রিক রাজনীতির প্রয়োজনে সরাসরি রাজনীতির পরিবর্তে অন্য কৌশলে যাওয়া জামায়াতের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির মতাদর্শের চিন্তাবিদ ও সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নান। জামায়াতের ভবিষৎ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মানবজমিনকে তিনি বলেন, নতুন করে একটি দল আসতে পারে যারা সরাসরি ইসলামের কথা বলবে না, কিন্তু ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। তার মতে, জামায়াত এখন রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাবে এবং তারা ইসলামী প্রচার কাজ ও সমাজসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করবে। অন্য একটি দল হয়তো তারা করবে, যে দলটির লক্ষ্য হবে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। তার মতে, আজকে যে জামায়াত তারা ইসলামের কথা সরাসরি খুব বেশি বলেছে। পরবর্তী যে জামায়াত আসবে তারা হয়তো সরাসরি এত ইসলামের কথা বলবে না। কিন্তু সব কাজ হবে ইসলামের পক্ষে।
জামায়াতের একটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে দলে সংস্কার দাবি করে আসছিল। বিশেষ করে দলের তরুণ অংশটি সব সময়ই সংস্কারের পক্ষে ছিল। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলী এবং সদ্য পদত্যাগ করা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক সবসময়ই দলে সংস্কার চেয়ে এসেছেন। তাদের সমর্থন দিয়ে আসছিলেন শিবির থেকে আসা একটি বড় অংশ। জামায়াতের একটি অংশ মনে করে, ১৯৭১ সালের মুুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য দলটির ক্ষমা চাওয়া উচিত। তবে ক্ষমা চাইলেই বির্তক মুক্ত হবে না দল। কারণে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি অনেকটা কঠিন অবস্থার মধ্যে আছে পুরো বিশ্বে। এ অবস্থায় দলকে সরাসরি রাজনীতি থেকে সরে সামাজিক কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে জনমত গড়ে তুলতে হবে। একপর্যায়ে সে সংগঠনকে রাজনৈতিক দলে পরিণত করতে হবে। তুরস্কের বর্তমান ক্ষমতাসীন একে পার্টি, মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড, তিউনিনেশিয়া এবং মালয়শিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীন আনোয়ার ইব্রাহিমের দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন বা ইউএমএনও একই প্রক্রিয়ার সামাজিক কার্যক্রম করে পরবর্তীতে রাজনীতিতে এসেছে।
দলের সংস্কারপন্থিদের অন্যতম ও দল থেকে সদ্য বহিষ্কৃত শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু ফেসবুকে এ ব্যাপারে একই কথা বলেছেন। ফেসবুকের তিনি লেখেছেন, আমার দৃষ্টিতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এবং বাস্তবায়নে আমরা যে তত্ত্বগত, দার্শনিক ও বাস্তবায়নগত কর্মপন্থা নিয়েছি তা আদর্শগত ভুল। ফলে জামায়াতে ইসলামী কী একটি ইসলামী আন্দোলন? না রাজনৈতিক দল? তা নিয়ে দোটানায় থাকতে হয়। ইসলামী আন্দোলন হিসেবে আমাদের কে মানতে পারেন না বৃহৎ অংশের আলেম ওলামারা। আবার সুশীল-মধ্যবিত্ত আর পাশ্চাত্যপন্থিদের সমালোচনা হলো জামায়াত গোঁড়া-মৌলবাদী। প্রচলিত ভোট এবং জোটের রাজনীতির সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত জায়েজ-নাজায়েজ, হালাল-হারাম ইত্যাদি বিতর্কে নাকাল হতে হয়। একটি রাজনৈতিক দল নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা হবে, সমলোচনা হবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জামায়াতে এটার সুযোগ কম। গঠনতন্ত্রে সদস্যদের প্রকাশ্য মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বেরিয়ার আছে। ফোরাম ছাড়া অন্য কোথাও ভিন্নমত নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ নেই। যদি এরকম তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়, তাহলে সেটা শৃঙ্খলা ভঙ্গ, গ্রুপিং হিসেবে চিহ্নিত হয়।
কোন দিকে যাচ্ছে জামায়াত? কী করছে দলটি। নানা আলোচনা। জামায়াত কি প্রচলিত রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছে? দলটির ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র বলছে, এ নিয়ে দলের ভেতরে আলোচনা চলছে। জামায়াতের পরামর্শকদের অনেকের মত হচ্ছে, প্রচলিত রাজনীতির কারণে দলটির নেতাকর্মীদের অনেক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু এতে বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে না। এ অবস্থায় সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম ত্যাগ করে সামাজিক সংগঠন হিসেবে কাজ করার বিষয়টি জামায়াতের ভেতরে আলোচিত হচ্ছে।
তবে দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগ এবং শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জুকে বহিষ্কারের পর এখন ঘোলাটে অবস্থা তৈরি হয়েছে। আপাত পরিস্থিতি সামাল দেয়া নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে দলটি। এরই মধ্যে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণী চিঠি দেয়া হয়েছে। নতুন সংগঠন গড়া নিয়ে দলের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের তথ্যও দেয়া হয়েছে মূলত পরিস্থিতিগত কারণে। এ কমিটিতে গোলাম পরওয়ার ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরও রয়েছেন।
এ কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার মানবজমিনকে বলেন, দল পরিচালনা করতে গিয়ে নানা ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কর্মীদের নানা নির্দেশনা দিতে হয়। এরকমই একটি নির্দেশনা। এটা কোনো চিঠি না। দলের ভেতরে কোনো সমস্যা নাই দাবি করেন তিনি বলেন, যা আছে, দলের বাইরে এবং মিডিয়াতে।
জানা গেছে, জামায়াতের গঠনতন্ত্রের ৬ নাম্বার ধারার ৪নং উপধারা ‘গণতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে- সৎ ও চরিত্রবান লোকের নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা’ ধারাটি নিয়েও দলের ভেতরে আলোচনা রয়েছে। এ ধারাটি আপাত কার্যকর না করার পক্ষে দলের ভেতরে অনেকের মত রয়েছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও দেশের সামগ্রিক রাজনীতির প্রয়োজনে সরাসরি রাজনীতির পরিবর্তে অন্য কৌশলে যাওয়া জামায়াতের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির মতাদর্শের চিন্তাবিদ ও সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নান। জামায়াতের ভবিষৎ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মানবজমিনকে তিনি বলেন, নতুন করে একটি দল আসতে পারে যারা সরাসরি ইসলামের কথা বলবে না, কিন্তু ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে। তার মতে, জামায়াত এখন রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাবে এবং তারা ইসলামী প্রচার কাজ ও সমাজসেবায় নিজেদের নিয়োজিত করবে। অন্য একটি দল হয়তো তারা করবে, যে দলটির লক্ষ্য হবে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। তার মতে, আজকে যে জামায়াত তারা ইসলামের কথা সরাসরি খুব বেশি বলেছে। পরবর্তী যে জামায়াত আসবে তারা হয়তো সরাসরি এত ইসলামের কথা বলবে না। কিন্তু সব কাজ হবে ইসলামের পক্ষে।
জামায়াতের একটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে দলে সংস্কার দাবি করে আসছিল। বিশেষ করে দলের তরুণ অংশটি সব সময়ই সংস্কারের পক্ষে ছিল। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলী এবং সদ্য পদত্যাগ করা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক সবসময়ই দলে সংস্কার চেয়ে এসেছেন। তাদের সমর্থন দিয়ে আসছিলেন শিবির থেকে আসা একটি বড় অংশ। জামায়াতের একটি অংশ মনে করে, ১৯৭১ সালের মুুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য দলটির ক্ষমা চাওয়া উচিত। তবে ক্ষমা চাইলেই বির্তক মুক্ত হবে না দল। কারণে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি অনেকটা কঠিন অবস্থার মধ্যে আছে পুরো বিশ্বে। এ অবস্থায় দলকে সরাসরি রাজনীতি থেকে সরে সামাজিক কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে জনমত গড়ে তুলতে হবে। একপর্যায়ে সে সংগঠনকে রাজনৈতিক দলে পরিণত করতে হবে। তুরস্কের বর্তমান ক্ষমতাসীন একে পার্টি, মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড, তিউনিনেশিয়া এবং মালয়শিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীন আনোয়ার ইব্রাহিমের দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন বা ইউএমএনও একই প্রক্রিয়ার সামাজিক কার্যক্রম করে পরবর্তীতে রাজনীতিতে এসেছে।
দলের সংস্কারপন্থিদের অন্যতম ও দল থেকে সদ্য বহিষ্কৃত শিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু ফেসবুকে এ ব্যাপারে একই কথা বলেছেন। ফেসবুকের তিনি লেখেছেন, আমার দৃষ্টিতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এবং বাস্তবায়নে আমরা যে তত্ত্বগত, দার্শনিক ও বাস্তবায়নগত কর্মপন্থা নিয়েছি তা আদর্শগত ভুল। ফলে জামায়াতে ইসলামী কী একটি ইসলামী আন্দোলন? না রাজনৈতিক দল? তা নিয়ে দোটানায় থাকতে হয়। ইসলামী আন্দোলন হিসেবে আমাদের কে মানতে পারেন না বৃহৎ অংশের আলেম ওলামারা। আবার সুশীল-মধ্যবিত্ত আর পাশ্চাত্যপন্থিদের সমালোচনা হলো জামায়াত গোঁড়া-মৌলবাদী। প্রচলিত ভোট এবং জোটের রাজনীতির সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত জায়েজ-নাজায়েজ, হালাল-হারাম ইত্যাদি বিতর্কে নাকাল হতে হয়। একটি রাজনৈতিক দল নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা হবে, সমলোচনা হবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জামায়াতে এটার সুযোগ কম। গঠনতন্ত্রে সদস্যদের প্রকাশ্য মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বেরিয়ার আছে। ফোরাম ছাড়া অন্য কোথাও ভিন্নমত নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ নেই। যদি এরকম তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়, তাহলে সেটা শৃঙ্খলা ভঙ্গ, গ্রুপিং হিসেবে চিহ্নিত হয়।
No comments