ভিডিও কনফারেন্সে বিচারকাজের নজির নেই by উৎপল রায়
বিএনপির
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায়
নতুন একটি বিষয় আলোচনার জন্ম দিয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত
হয়ে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া যেহেতু অসুস্থ এবং আদালতে হাজির করা যাচ্ছে
না- তাই বিচারকাজ ভিডিও করফারেন্সের মাধ্যমে পরিচালনার জন্য আদালতে আবেদন
করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। তবে, খালেদা
জিয়ার আইনজীবীরা এমন প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলছেন, দেশে প্রচলিত আইনে এ
ধরনের কোনো সুযোগ নেই। এমনটা করতে হলে ফৌজদারি ও অপরাধ আইন সংশোধন করতে
হবে। ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রচলিত আইনে ভিডিও কনফারেন্সের
মাধ্যমে বিচার পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই। দেশে এখন পর্যন্ত ভিডিও
কনফারেন্সের মাধ্যমে কোনো ফৌজদারি মামলার বিচারকাজের নজির নেই। সুপ্রিম
কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারকাজ
পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কিছু পরামর্শ ও নির্দেশনা রয়েছে। তবে তা
আনুষ্ঠানিক কিংবা বাধ্যতামূলক নয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ রাজধানীর বকশিবাজারের কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে চলছে। বর্তমানে মামলাটি যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের পর্যায়ে রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এক আদেশে এ মামলার অসমাপ্ত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ২২শে এপ্রিল দিন ধার্য করেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। একই সঙ্গে ওই দিন পর্যন্ত এ মামলার আসামি খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিতকরণের আদেশ দেয়া হয়। অসুস্থতার কারণে এই মামলায় একাধিক ধার্য তারিখে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা যায়নি বলে কারা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে দুদকের আইনজীবীরা জানান। গত ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে ৫ বছর ও অন্য আসমিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন একই আদালত। রায়ের পর থেকে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। ৫ই এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন। অসুস্থতার কারণে তাকে আদালতে আনা হচ্ছে না। তিনি যেহেতু অসুস্থ তাই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী বিচারকার্যক্রম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরিচালনা করা যায় কি না- এ বিষয়ে তারা আদালতে আবেদন করবেন। প্রচলিত সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী এ সুযোগ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ সময় তিনি ভারতের লালু প্রসাদ যাদবের (বিহার রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী) মামলার বিচারকাজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। দুদক আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের কোনো যৌক্তিকতা নেই এবং তা বাড়াবাড়ি ও অবান্তর। তিনি বলেন, সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশের আইন-আদালত চলছে। তাই আদালতের কার্যক্রম যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলবে। বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের বিধানে এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন মানবজমিনকে বলেন, দুদকের আইনজীবী হয়তো নতুন কোনো চমক সৃষ্টি করার জন্য অনলাইন ভিডিওর মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার কথা বলেছেন। এটি নিতান্তই বেসামাল ও রাজনৈতিক বক্তব্য। তিনি বলেন, যেখানে কথায় কথায় আদালতে সমস্যা সৃষ্টি হয় সেখানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনা করা নেহায়েতই ছেলেমানুষি বক্তব্য। আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো বিধান নেই আর তা সম্ভবও না। খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, যদি এ পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালনা করতে হয় তাহলে প্রচলিত আইনের পরিবর্তন করতে হবে। আরো অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হবে। যেটি আমাদের দেশে সম্ভব নয়।
সাবেক আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমাদের দেশে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজের কোনো উদাহরণ এখন পর্যন্ত নেই। দেশের প্রচলিত আইনেও এ ধরনের কিছু বলা নেই। আর এ পদ্ধতিতে বিচারকাজের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দেশনা থাকলেও এটি আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা নয় যে, এভাবেই বিচারকাজ পরিচালনা করতে হবে। তবে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা সম্মত হলেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালিত হতে পারে। তার পরও নানা প্রশ্ন আছে। তিনি বলেন, দুদকের আইনজীবী হয়তো একটি প্রস্তাব করেছেন। এ পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালনা করতে হলে আগে বিচারিক আদালতে আবেদন করতে হবে। প্রশ্ন হলো বিচারিক আদালত আবেদন গ্রহণ করবে কি না? অনুমতি দেবেন কি না? ঢাকা শহরে বসে ভিডিও কনফারেন্সের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না? এমন তো না যে দূর অন্ত। তাই সবকিছুই নির্ভর করছে বিচারিক আদালতের ওপর। কাজেই বিষয়টি এত সহজ না যে বললেই হয়ে গেল। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, আমার জানামতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার নজির বা উদাহরণ আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত নেই। দেশের প্রচলিত আইনেও এ বিষয়ে কিছু বলা নেই। তাই এর বেশি কিছু এ বিষয়ে বলতে পারবো না।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান বলেন, আদালতের বাইরে তো আদালত বসতে পারে না। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার বিষয়ে দুদক আইনজীবী কথার কথা বলেছেন। আমাদের দেশে এটি করা যায় না। এ ধরনের কোনো নজিরও এখন পর্যন্ত নেই। তিনি বলেন, সরকার আদালত সেটআপ করতে পারে কিন্তু তা করতে হবে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনা করে। আব্দুর রেজাক খান বলেন, ভারতে (বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের মামলা) কীভাবে করেছে না করেছে সেটা তারা জানে। সেখানে কনসেন্ট থাকতে পারে, নাও থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো নজির নেই।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ রাজধানীর বকশিবাজারের কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে চলছে। বর্তমানে মামলাটি যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের পর্যায়ে রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এক আদেশে এ মামলার অসমাপ্ত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ২২শে এপ্রিল দিন ধার্য করেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। একই সঙ্গে ওই দিন পর্যন্ত এ মামলার আসামি খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিতকরণের আদেশ দেয়া হয়। অসুস্থতার কারণে এই মামলায় একাধিক ধার্য তারিখে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করা যায়নি বলে কারা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে দুদকের আইনজীবীরা জানান। গত ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে ৫ বছর ও অন্য আসমিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন একই আদালত। রায়ের পর থেকে খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। ৫ই এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন। অসুস্থতার কারণে তাকে আদালতে আনা হচ্ছে না। তিনি যেহেতু অসুস্থ তাই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী বিচারকার্যক্রম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরিচালনা করা যায় কি না- এ বিষয়ে তারা আদালতে আবেদন করবেন। প্রচলিত সাক্ষ্য আইন অনুযায়ী এ সুযোগ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ সময় তিনি ভারতের লালু প্রসাদ যাদবের (বিহার রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী) মামলার বিচারকাজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। দুদক আইনজীবীর বক্তব্যের বিরোধিতা করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান বলেন, এ ধরনের বক্তব্যের কোনো যৌক্তিকতা নেই এবং তা বাড়াবাড়ি ও অবান্তর। তিনি বলেন, সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশের আইন-আদালত চলছে। তাই আদালতের কার্যক্রম যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলবে। বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের বিধানে এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন মানবজমিনকে বলেন, দুদকের আইনজীবী হয়তো নতুন কোনো চমক সৃষ্টি করার জন্য অনলাইন ভিডিওর মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার কথা বলেছেন। এটি নিতান্তই বেসামাল ও রাজনৈতিক বক্তব্য। তিনি বলেন, যেখানে কথায় কথায় আদালতে সমস্যা সৃষ্টি হয় সেখানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনা করা নেহায়েতই ছেলেমানুষি বক্তব্য। আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো বিধান নেই আর তা সম্ভবও না। খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, যদি এ পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালনা করতে হয় তাহলে প্রচলিত আইনের পরিবর্তন করতে হবে। আরো অনেক কিছুই পরিবর্তন করতে হবে। যেটি আমাদের দেশে সম্ভব নয়।
সাবেক আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমাদের দেশে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজের কোনো উদাহরণ এখন পর্যন্ত নেই। দেশের প্রচলিত আইনেও এ ধরনের কিছু বলা নেই। আর এ পদ্ধতিতে বিচারকাজের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দেশনা থাকলেও এটি আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা নয় যে, এভাবেই বিচারকাজ পরিচালনা করতে হবে। তবে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা সম্মত হলেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালিত হতে পারে। তার পরও নানা প্রশ্ন আছে। তিনি বলেন, দুদকের আইনজীবী হয়তো একটি প্রস্তাব করেছেন। এ পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালনা করতে হলে আগে বিচারিক আদালতে আবেদন করতে হবে। প্রশ্ন হলো বিচারিক আদালত আবেদন গ্রহণ করবে কি না? অনুমতি দেবেন কি না? ঢাকা শহরে বসে ভিডিও কনফারেন্সের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না? এমন তো না যে দূর অন্ত। তাই সবকিছুই নির্ভর করছে বিচারিক আদালতের ওপর। কাজেই বিষয়টি এত সহজ না যে বললেই হয়ে গেল। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, আমার জানামতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার নজির বা উদাহরণ আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত নেই। দেশের প্রচলিত আইনেও এ বিষয়ে কিছু বলা নেই। তাই এর বেশি কিছু এ বিষয়ে বলতে পারবো না।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান বলেন, আদালতের বাইরে তো আদালত বসতে পারে না। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার বিষয়ে দুদক আইনজীবী কথার কথা বলেছেন। আমাদের দেশে এটি করা যায় না। এ ধরনের কোনো নজিরও এখন পর্যন্ত নেই। তিনি বলেন, সরকার আদালত সেটআপ করতে পারে কিন্তু তা করতে হবে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনা করে। আব্দুর রেজাক খান বলেন, ভারতে (বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের মামলা) কীভাবে করেছে না করেছে সেটা তারা জানে। সেখানে কনসেন্ট থাকতে পারে, নাও থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এ ধরনের কোনো নজির নেই।
No comments