ভারতীয় গরু না আসায় খুশি খামারিরা by খালিদ সাইফুল্লাহ
ভারত থেকে গরু না আসার খবরে আশার আলো দেখছেন খামারিরা। তারা এটিকে গত তিন বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার সুযোগ হিসেবে মনে করছেন। তবে গরু না আসায় সঙ্কট সৃষ্টি হওয়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই মনে করছেন দেশী গরু দিয়েই সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে কারও মত বাজারে এর বিরূপপ্রভাব পড়বে। দাম বেড়ে যাবে সব ধরনের পশুর।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং গরু পাচার বন্ধে বিএসএফ সদস্যদের কঠোর হতে নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশে গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি কয়েকজন গরু ব্যবসায়ীকে গুলি করেও মেরেছে বিএসএফ। তবে কিছু মহিষ আসছে। এ ব্যাপারে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে। গরু আসা কমে যাওয়ায় দেশে গরুর গোশতের দাম এক লাফে ১০০ টাকা বেড়ে গেছে। এতে খুশি ভারত। সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এক অনুষ্ঠানে এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তবে তিনি খুশি হলেও সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধের পর এই প্রথমবারের মতো মুসলমানদের কোরবানির ঈদের আগমন ঘটছে। এতে বাংলাদেশে কোরবানির প্রধানতম পশু গরুর সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত ১৬ জুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে বর্তমানে দুই কোটি ৮১ লাখ ৮৯ হাজার গরু রয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় এক কোটি ৯ লাখ ৭৬টি এবং গাভী এক কোটি ৭২ লাখ ১৩ হাজার। মহিষ রয়েছে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার। এর মধ্যে ষাঁড় মহিষ দুই লাখ ৬৭ হাজার। ছাগল রয়েছে এক কোটি ৯২ লাখ ৮৮ হাজার। ভেড়া আছে ১৩ লাখ ৮৫ হাজার।
তবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাবে দেশে বর্তমানে গরু আছে দুই কোটি ৩৬ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ জবাই উপযোগী।
তাদের তথ্য মতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ৮৬ লাখ ২২ হাজার গবাদিপশু জবাই হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭২ লাখ গরু। কোরবানিতে কত জবাই হয় তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও এর অর্ধেক ধরলে ৩৬ লাখ গরুর চাহিদা তৈরি হতে পারে। সে হিসাবে কোরবানিতে ১০ লাখ গরুর ঘাটতি হতে পারে। এ কারণে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। চাহিদা মতো গরু পাওয়া নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ে পড়েছেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও জনমনে। এতে অনেকেই কোরবানি দিতে পারবেন কি না তা নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় দেশের গরু ব্যবসায়ী ও খামারিরা বেশ খুশি। তারা বলছেন, তিন বছর ধরে কোরবানিতে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। এবার যদি ভারত থেকে গরু না আসে তাহলে বেশি দামে বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ১০ বছর ধরে গরুর ব্যবসা করছি। গাবতলী হাটে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে জায়গা দাদন নিয়েছি। এলাকা থেকে দেশী গরু এনে বিক্রি করি। কিন্তু গত তিন বছরে অনেক আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। গত বছর চার লাখ এবং তার আগের বছর সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এবার যদি ভারত থেকে গরু না আসে তাহলে দেশী গরু একটু বেশি দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে। আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। তিনি জানান, বর্তমানে তিন মণ গোশত হবে এমন গরু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ হাজার টাকায়। কোরবানির সময় এ গরু ৬০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে। তবে গাবতলী, আশুলিয়া, কাঞ্চন, টঙ্গী হাট ঘুরে দেখা গেছে এখনই বিক্রেতারা কোরবানির সমান দাম হাঁকছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার কারণেও এবার গরুর দাম বেশ চড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝালকাঠির গরু ব্যবসায়ী মাহমুদ হাসান বলেন, ভারত প্রতি বছর প্রথমে গরু বন্ধ করে দেয়। পরে ঈদের দুই-তিন দিন আগে গরু ছেড়ে দেয়। ফলে দেশী গরু ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হন। এবারো তারা এমন করে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে ভারত থেকে গরু না এলে ভালো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে প্রচুর গরু রয়েছে। কোনো সঙ্কট হবে বলে মনে হয় না। কোরবানির হাটে গরুর দাম বাড়ে কেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখন গরুর খাবারের দাম বাড়ছে। তা ছাড়া গৃহস্থরা বেশি লাভের আশায় এসব গরুকে বছর ধরে বিশেষ যতœ নিয়ে বড় করে। এ কারণে তারাও একটু বেশি দামে বিক্রি করতে চায়। তাদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের বেশি দামে কেনা, ট্রাক ভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে বাজারেও দাম বেড়ে যায়। কিন্তু ভারত থেকে গরু এলে গৃহস্থরাও ক্ষতির শিকার হয়।
কুষ্টিয়া মিরপুরের গরু ব্যবসায়ী চান্নু মেম্বার ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। এলাকা থেকে দেশী গরু কিনে এনে সারা বছর গাবতলীর হাটে বিক্রি করেন। কোরবানির সময় তিনি আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু গত তিন বছরে তাকে ২০ লাখ টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। তিনি জানান, এখন পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছি। জানি না এবার কী হবে। চান্নু মিয়া বলেন, ভারতীয় গরু-মহিষ দেশে না আসাই ভালো। এতে করে দেশের টাকা দেশে থাকবে। এ ছাড়া গ্রামের অনেক গৃহস্থ গরু পালন করছে কোরবানি ঈদের সময় গরুর দাম বেশি পাওয়ার আশায়। কিন্তু ভারতের গরু দেশে প্রবেশ করলে এসব গৃহস্থকে চরম লোকসান গুনতে হবে।
তবে ভারত থেকে গরু না এলে সঙ্কট সৃষ্টি হবে বলে জানান গাবতলীর মহিষ ব্যবসায়ী সাদ আলী। তিনি বলেন, ভারত থেকে এখন খুবই কম গরু আসছে। তবে মহিষ আসছে ভালোই। গাবতলী হাটে যে মহিষ রয়েছে তার সবই ভারত থেকে আসা জানিয়ে তিনি বলেন, কোরবানির সময় গরু না এলে ব্যাপক সঙ্কট হবে। কারণ কোরবানিতে দেশে যত গরু লাগে তা বর্তমানে নেই।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং গরু পাচার বন্ধে বিএসএফ সদস্যদের কঠোর হতে নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশে গরু আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি কয়েকজন গরু ব্যবসায়ীকে গুলি করেও মেরেছে বিএসএফ। তবে কিছু মহিষ আসছে। এ ব্যাপারে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে। গরু আসা কমে যাওয়ায় দেশে গরুর গোশতের দাম এক লাফে ১০০ টাকা বেড়ে গেছে। এতে খুশি ভারত। সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এক অনুষ্ঠানে এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তবে তিনি খুশি হলেও সীমান্ত দিয়ে গরু আসা বন্ধের পর এই প্রথমবারের মতো মুসলমানদের কোরবানির ঈদের আগমন ঘটছে। এতে বাংলাদেশে কোরবানির প্রধানতম পশু গরুর সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত ১৬ জুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে বর্তমানে দুই কোটি ৮১ লাখ ৮৯ হাজার গরু রয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় এক কোটি ৯ লাখ ৭৬টি এবং গাভী এক কোটি ৭২ লাখ ১৩ হাজার। মহিষ রয়েছে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার। এর মধ্যে ষাঁড় মহিষ দুই লাখ ৬৭ হাজার। ছাগল রয়েছে এক কোটি ৯২ লাখ ৮৮ হাজার। ভেড়া আছে ১৩ লাখ ৮৫ হাজার।
তবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাবে দেশে বর্তমানে গরু আছে দুই কোটি ৩৬ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ জবাই উপযোগী।
তাদের তথ্য মতে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ৮৬ লাখ ২২ হাজার গবাদিপশু জবাই হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭২ লাখ গরু। কোরবানিতে কত জবাই হয় তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও এর অর্ধেক ধরলে ৩৬ লাখ গরুর চাহিদা তৈরি হতে পারে। সে হিসাবে কোরবানিতে ১০ লাখ গরুর ঘাটতি হতে পারে। এ কারণে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। চাহিদা মতো গরু পাওয়া নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ে পড়েছেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও জনমনে। এতে অনেকেই কোরবানি দিতে পারবেন কি না তা নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় দেশের গরু ব্যবসায়ী ও খামারিরা বেশ খুশি। তারা বলছেন, তিন বছর ধরে কোরবানিতে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। এবার যদি ভারত থেকে গরু না আসে তাহলে বেশি দামে বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ১০ বছর ধরে গরুর ব্যবসা করছি। গাবতলী হাটে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়ে জায়গা দাদন নিয়েছি। এলাকা থেকে দেশী গরু এনে বিক্রি করি। কিন্তু গত তিন বছরে অনেক আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। গত বছর চার লাখ এবং তার আগের বছর সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এবার যদি ভারত থেকে গরু না আসে তাহলে দেশী গরু একটু বেশি দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে। আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। তিনি জানান, বর্তমানে তিন মণ গোশত হবে এমন গরু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ হাজার টাকায়। কোরবানির সময় এ গরু ৬০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে। তবে গাবতলী, আশুলিয়া, কাঞ্চন, টঙ্গী হাট ঘুরে দেখা গেছে এখনই বিক্রেতারা কোরবানির সমান দাম হাঁকছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার কারণেও এবার গরুর দাম বেশ চড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঝালকাঠির গরু ব্যবসায়ী মাহমুদ হাসান বলেন, ভারত প্রতি বছর প্রথমে গরু বন্ধ করে দেয়। পরে ঈদের দুই-তিন দিন আগে গরু ছেড়ে দেয়। ফলে দেশী গরু ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হন। এবারো তারা এমন করে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে ভারত থেকে গরু না এলে ভালো হয় জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে প্রচুর গরু রয়েছে। কোনো সঙ্কট হবে বলে মনে হয় না। কোরবানির হাটে গরুর দাম বাড়ে কেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখন গরুর খাবারের দাম বাড়ছে। তা ছাড়া গৃহস্থরা বেশি লাভের আশায় এসব গরুকে বছর ধরে বিশেষ যতœ নিয়ে বড় করে। এ কারণে তারাও একটু বেশি দামে বিক্রি করতে চায়। তাদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের বেশি দামে কেনা, ট্রাক ভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে বাজারেও দাম বেড়ে যায়। কিন্তু ভারত থেকে গরু এলে গৃহস্থরাও ক্ষতির শিকার হয়।
কুষ্টিয়া মিরপুরের গরু ব্যবসায়ী চান্নু মেম্বার ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। এলাকা থেকে দেশী গরু কিনে এনে সারা বছর গাবতলীর হাটে বিক্রি করেন। কোরবানির সময় তিনি আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু গত তিন বছরে তাকে ২০ লাখ টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। তিনি জানান, এখন পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছি। জানি না এবার কী হবে। চান্নু মিয়া বলেন, ভারতীয় গরু-মহিষ দেশে না আসাই ভালো। এতে করে দেশের টাকা দেশে থাকবে। এ ছাড়া গ্রামের অনেক গৃহস্থ গরু পালন করছে কোরবানি ঈদের সময় গরুর দাম বেশি পাওয়ার আশায়। কিন্তু ভারতের গরু দেশে প্রবেশ করলে এসব গৃহস্থকে চরম লোকসান গুনতে হবে।
তবে ভারত থেকে গরু না এলে সঙ্কট সৃষ্টি হবে বলে জানান গাবতলীর মহিষ ব্যবসায়ী সাদ আলী। তিনি বলেন, ভারত থেকে এখন খুবই কম গরু আসছে। তবে মহিষ আসছে ভালোই। গাবতলী হাটে যে মহিষ রয়েছে তার সবই ভারত থেকে আসা জানিয়ে তিনি বলেন, কোরবানির সময় গরু না এলে ব্যাপক সঙ্কট হবে। কারণ কোরবানিতে দেশে যত গরু লাগে তা বর্তমানে নেই।
No comments