থেমে গেছে সোনা চোরাচালান তদন্ত by নজরুল ইসলাম
বহুল
আলোচিত সোনা চোরাচালান মামলার তদন্ত নিয়ে চুপ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা
পুলিশ (ডিবি)। গত নভেম্বরে আলোচিত এই সোনা চোরাচালানের জন্য বাংলাদেশ
বিমানের পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যানের কথিত ধর্মপুত্রসহ প্রতিষ্ঠানটির চারজন
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং একজন মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা
হয়েছিল।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। জবানবন্দিতে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ৬৯ জনের নাম আসে। তাঁদের মধ্যে ৬৪ জন বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বাকিরা মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী। এরপর আট মাস পার হলেও এসব ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা নেই।
অথচ সে সময়ে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারোরই শাস্তি হয়নি। বরং একজন এরই মধ্যে জামিন পেয়ে বেরিয়ে গেছেন। এদিকে, জবানবন্দিতে নাম আসার বিষয়টিকে পুঁজি করে সংশ্লিষ্ট বিমানকর্মীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলেও বিমানে প্রচার রয়েছে।
ডিবির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না পাওয়ায় বাকিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তাই তদন্ত স্থবির হয়ে আছে।
যোগাযোগ করা হলে গতকাল শনিবার রাতে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নূরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি দরকার হয় না।
নূরুল হুদা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শৈথিল্য ও গাফিলতির কারণে অনেক সময় আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। আবার দুর্বল পুলিশি প্রতিবেদনের কারণেও আসামি জামিনে বেরিয়ে যায়। অথচ সোনা চোরাচালান মামলায় সাজা হলে চোরাচালান কমে আসতে পারে।
গত ১২ নভেম্বর শুল্ক গোয়েন্দারা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২ কেজি ৬০০ গ্রাম সোনাসহ বিমানের ক্রু মাজহারুল আবছারকে গ্রেপ্তার করে। মাজহারুল আবছার বিমানের ৬১ জন, সিভিল এভিয়েশনের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একজন মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ী জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দির ভিত্তিতে সোনা চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ নভেম্বর বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের ‘কথিত ধর্মপুত্র’ মাহমুদুল হক ওরফে পলাশ, চিফ অব প্ল্যানিং অ্যান্ড শিডিউলিং ক্যাপ্টেন আবু মো. আসলাম শহিদ, ফ্লাইট সেবা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক মো. এমদাদ হোসেন, ম্যানেজার সিকিউরিটি শিডিউলিং মো. তোজাম্মেল হোসেন এবং উত্তরার ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক মো. হারুন অর রশীদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তার ওই পাঁচজন সোনা চোরাচালানে বিমানের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৩ জন জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় হওয়া মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তিতে যেসব নাম এসেছে, তাঁদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঈদের আগে তিনি এ কথা বলেছিলেন। বর্তমানে শেখ নাজমুল আলম দেশের বাইরে আছেন।
গতকাল শনিবার যোগাযোগ করা হলে মামলার আরেক তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার শফিক আলম বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান সম্প্রতি বদলি হয়ে গেছেন। এই মামলার তদন্তভার অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে কি না, তিনি তা জানেন না।
মামলার তদন্ত ও আদালত সূত্র জানায়, কথিত ধর্মপুত্র মাহমুদুল হক ওরফে পলাশ আদালতকে জানান, ২০১০ সালে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের ধর্মপুত্র পরিচয় দিয়ে মাহমুদুল হক ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ পান। বিমানের চেয়ারম্যানকে তিনি বাবা ডাকতেন। বিমানের বিভিন্ন শাখায় তাঁর অবাধ যাতায়াত এবং তাঁর স্ত্রী কেবিন ক্রু নূরজাহানের মাধ্যমে অন্য ক্রুদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
বিমানে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন মাহমুদুল হক পলাশ। তিনি আদালতকে আরও বলেন, তাঁর পছন্দের ক্রুদের বাছাই করে বিভিন্ন ফ্লাইটে সোনার চালান আনা হতো। পাচারের ৩০ শতাংশ সোনার চালান ধরা পড়ে। আর বেশির ভাগ ভারতে পাচার হয়ে যায়।
বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক মো. এমদাদ হোসেন জবানবন্দিতে আদালতকে বলেন, পলাশ সোনা-মুদ্রা চোরাচালানের একটি চক্র গড়ে তুলেছিলেন। মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ আদালতকে বলেন, তাঁর মতো উত্তরার চারটি মানি এক্সচেঞ্জে পরিচালনকারী আরও ছয়জন সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
বিমানের ব্যবস্থাপক (শিডিউলিং) তোজাম্মেল হোসেন আদালতকে জানান, পলাশ সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত তা তিনি আগে জানতেন না। তিনি জবানবন্দিতে ক্যাপ্টেন শহীদসহ বিমানের কয়েকজন কর্মচারীর নাম উল্লেখ করে বলেন, তাঁরা সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তাঁদের মূলত নিয়ন্ত্রণ করেন মাহমুদুল হক পলাশ।
সোনা উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মাহমুদুল হক ওরফে পলাশ ও বিমানের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কারাগারে আছেন। কারাবন্দী অন্যরা হলেন আবু মো. আসলাম শহিদ, মো. এমদাদ হোসেন ও মো. তোজাম্মেল হোসেন। তবে ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক মো. হারুন অর রশীদ সম্প্রতি জামিন পেয়ে বেরিয়ে গেছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। জবানবন্দিতে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ৬৯ জনের নাম আসে। তাঁদের মধ্যে ৬৪ জন বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বাকিরা মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী। এরপর আট মাস পার হলেও এসব ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা নেই।
অথচ সে সময়ে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারোরই শাস্তি হয়নি। বরং একজন এরই মধ্যে জামিন পেয়ে বেরিয়ে গেছেন। এদিকে, জবানবন্দিতে নাম আসার বিষয়টিকে পুঁজি করে সংশ্লিষ্ট বিমানকর্মীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলেও বিমানে প্রচার রয়েছে।
ডিবির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না পাওয়ায় বাকিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তাই তদন্ত স্থবির হয়ে আছে।
যোগাযোগ করা হলে গতকাল শনিবার রাতে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নূরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে তদন্তকারী কর্মকর্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি দরকার হয় না।
নূরুল হুদা আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শৈথিল্য ও গাফিলতির কারণে অনেক সময় আসামি ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। আবার দুর্বল পুলিশি প্রতিবেদনের কারণেও আসামি জামিনে বেরিয়ে যায়। অথচ সোনা চোরাচালান মামলায় সাজা হলে চোরাচালান কমে আসতে পারে।
গত ১২ নভেম্বর শুল্ক গোয়েন্দারা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২ কেজি ৬০০ গ্রাম সোনাসহ বিমানের ক্রু মাজহারুল আবছারকে গ্রেপ্তার করে। মাজহারুল আবছার বিমানের ৬১ জন, সিভিল এভিয়েশনের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও একজন মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ী জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দির ভিত্তিতে সোনা চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ নভেম্বর বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের ‘কথিত ধর্মপুত্র’ মাহমুদুল হক ওরফে পলাশ, চিফ অব প্ল্যানিং অ্যান্ড শিডিউলিং ক্যাপ্টেন আবু মো. আসলাম শহিদ, ফ্লাইট সেবা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক মো. এমদাদ হোসেন, ম্যানেজার সিকিউরিটি শিডিউলিং মো. তোজাম্মেল হোসেন এবং উত্তরার ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক মো. হারুন অর রশীদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে গ্রেপ্তার ওই পাঁচজন সোনা চোরাচালানে বিমানের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৩ জন জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় হওয়া মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তিতে যেসব নাম এসেছে, তাঁদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঈদের আগে তিনি এ কথা বলেছিলেন। বর্তমানে শেখ নাজমুল আলম দেশের বাইরে আছেন।
গতকাল শনিবার যোগাযোগ করা হলে মামলার আরেক তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার শফিক আলম বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান সম্প্রতি বদলি হয়ে গেছেন। এই মামলার তদন্তভার অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে কি না, তিনি তা জানেন না।
মামলার তদন্ত ও আদালত সূত্র জানায়, কথিত ধর্মপুত্র মাহমুদুল হক ওরফে পলাশ আদালতকে জানান, ২০১০ সালে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদের ধর্মপুত্র পরিচয় দিয়ে মাহমুদুল হক ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ পান। বিমানের চেয়ারম্যানকে তিনি বাবা ডাকতেন। বিমানের বিভিন্ন শাখায় তাঁর অবাধ যাতায়াত এবং তাঁর স্ত্রী কেবিন ক্রু নূরজাহানের মাধ্যমে অন্য ক্রুদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
বিমানে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন মাহমুদুল হক পলাশ। তিনি আদালতকে আরও বলেন, তাঁর পছন্দের ক্রুদের বাছাই করে বিভিন্ন ফ্লাইটে সোনার চালান আনা হতো। পাচারের ৩০ শতাংশ সোনার চালান ধরা পড়ে। আর বেশির ভাগ ভারতে পাচার হয়ে যায়।
বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক মো. এমদাদ হোসেন জবানবন্দিতে আদালতকে বলেন, পলাশ সোনা-মুদ্রা চোরাচালানের একটি চক্র গড়ে তুলেছিলেন। মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ আদালতকে বলেন, তাঁর মতো উত্তরার চারটি মানি এক্সচেঞ্জে পরিচালনকারী আরও ছয়জন সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
বিমানের ব্যবস্থাপক (শিডিউলিং) তোজাম্মেল হোসেন আদালতকে জানান, পলাশ সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত তা তিনি আগে জানতেন না। তিনি জবানবন্দিতে ক্যাপ্টেন শহীদসহ বিমানের কয়েকজন কর্মচারীর নাম উল্লেখ করে বলেন, তাঁরা সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তাঁদের মূলত নিয়ন্ত্রণ করেন মাহমুদুল হক পলাশ।
সোনা উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মাহমুদুল হক ওরফে পলাশ ও বিমানের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কারাগারে আছেন। কারাবন্দী অন্যরা হলেন আবু মো. আসলাম শহিদ, মো. এমদাদ হোসেন ও মো. তোজাম্মেল হোসেন। তবে ফারহান মানি এক্সচেঞ্জের মালিক মো. হারুন অর রশীদ সম্প্রতি জামিন পেয়ে বেরিয়ে গেছেন।
No comments