৬৬ সংবর্ধনার পর দায়িত্ব নিচ্ছেন মেয়র নাছির by একরামুল হক
২৯
এপ্রিল। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরের দিন। আওয়ামী লীগের
কেন্দ্রীয় এক নেতা একটি অতিকায় হাতি নিয়ে আসেন চট্টগ্রাম শহরে। সেই হাতি
শুঁড় তুলে অভিনন্দন জানায় নবনির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে। রাজকীয়
সংবর্ধনার সেই শুরু।
প্রথম আলোর হিসাব অনুযায়ী গত ৮৮ দিনে কমপক্ষে ৬৬টি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়েছে মেয়র নাছিরের জন্য। সংবর্ধনার অর্ধশতক পেরিয়ে আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি।
মেয়রের জন্য একের পর এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফছারুল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে আমজনতার আগ্রহ উপেক্ষা করা যায় না। আগের মেয়র যা করতে পারেননি নতুন মেয়র সেই প্রত্যাশা পূরণ করবেন বলেই আমজনতার প্রত্যাশা।’
মেয়র হিসেবে আ জ ম নাছির শপথ নেন গত ৬ মে। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে দায়িত্ব পেতে তাঁকে এত দিন অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, সিটি করপোরেশনের মেয়াদ হবে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত। ২০১০ সালের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর জয়ী মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রথম সভা হয় ওই বছরের ২৬ জুলাই। যার মেয়াদ গতকাল শনিবার শেষ হয়েছে।
দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার আগে আ জ ম নাছিরের একের পর এক সংবর্ধনা গ্রহণ নিয়ে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আলোচনা ও কৌতূহলের সৃষ্টি রয়েছে। তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া না–দেওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডাও কম হয়নি।
আওয়ামী লীগের নেতারাও বলছেন, এর আগে কোনো রাজনৈতিক নেতা বা বিশিষ্ট নাগরিকের জন্য এত বেশি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নজির নেই। দলীয় সংবর্ধনার বাইরে ব্যবসায়ী সংগঠন, আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্রীড়া সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, স্থানীয় ক্লাব, মহল্লা কমিটি, হকার্স সমিতি, সাংসদ, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ঠিকাদার সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
নাম না প্রকাশের শর্তে চট্টগ্রামের একজন শিক্ষাবিদ বলেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য চট্টগ্রামে মাত্র দুটি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এর একটি নগরের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অন্যটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয় ক্যাম্পাসে। ড. ইউনূস চট্টগ্রামের সন্তান।
সুশাসনের জন্য নাগরিক—সুজনের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অধ্যাপক সিকান্দার খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা মেয়রকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন, সেটা কেন দিচ্ছেন তা কেবল তাঁরাই জানেন। আর যিনি নিচ্ছেন তাঁকেও বুঝে নিতে হবে কেন তিনি নিচ্ছেন। নিশ্চয়ই এখানে প্রত্যাশা-প্রাপ্তির কিছু বিষয় থাকতে পারে। তবে এত বেশি সংবর্ধনার আয়োজন রাজনীতিতে নতুন মাত্রা সৃষ্টি হয়েছে।’
মেয়রের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মে এবং জুন মাসে প্রায় প্রতিদিনই সংবর্ধনা সভা হয়েছে। এমনকি কোনো কোনো দিন সর্বোচ্চ তিনটি সংবর্ধনা সভাতেও যোগ দিয়েছেন মেয়র।
বিপুল সংবর্ধনা নেওয়ার বিষয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, রাজনীতি ছাড়াও ক্রীড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে। আগের মেয়ররা রাজনীতির বাইরে এত বেশি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে কারণে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো তাঁকে সংবর্ধনা দিতেই পারে। কারণ তাঁর কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি।
প্রথা ভেঙে মেয়রকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির দেওয়া সংবর্ধনা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। গত ১৫ জুন আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে মেয়রের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে আইনজীবীদের একাংশ বিক্ষোভ করেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে জানান, সমিতি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কখনো সংবর্ধনা দেয়নি। এমনকি চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন, এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মোহাম্মদ মনজুর আলম এবং স্বাধীনতার আগে-পরে কোনো মন্ত্রীকেও সংবর্ধনা দেয়নি। তবে মন্ত্রী-মেয়রের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করতেন। এবার রেওয়াজ ভেঙে আ জ ম নাছিরকে সংবর্ধনা দেওয়ায় আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ।
প্রথম আলোর হিসাব অনুযায়ী গত ৮৮ দিনে কমপক্ষে ৬৬টি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়েছে মেয়র নাছিরের জন্য। সংবর্ধনার অর্ধশতক পেরিয়ে আজ রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি।
মেয়রের জন্য একের পর এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফছারুল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসলে আমজনতার আগ্রহ উপেক্ষা করা যায় না। আগের মেয়র যা করতে পারেননি নতুন মেয়র সেই প্রত্যাশা পূরণ করবেন বলেই আমজনতার প্রত্যাশা।’
মেয়র হিসেবে আ জ ম নাছির শপথ নেন গত ৬ মে। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে দায়িত্ব পেতে তাঁকে এত দিন অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, সিটি করপোরেশনের মেয়াদ হবে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত। ২০১০ সালের ১৭ জুন অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর জয়ী মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রথম সভা হয় ওই বছরের ২৬ জুলাই। যার মেয়াদ গতকাল শনিবার শেষ হয়েছে।
দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার আগে আ জ ম নাছিরের একের পর এক সংবর্ধনা গ্রহণ নিয়ে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আলোচনা ও কৌতূহলের সৃষ্টি রয়েছে। তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া না–দেওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডাও কম হয়নি।
আওয়ামী লীগের নেতারাও বলছেন, এর আগে কোনো রাজনৈতিক নেতা বা বিশিষ্ট নাগরিকের জন্য এত বেশি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নজির নেই। দলীয় সংবর্ধনার বাইরে ব্যবসায়ী সংগঠন, আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্রীড়া সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, স্থানীয় ক্লাব, মহল্লা কমিটি, হকার্স সমিতি, সাংসদ, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ঠিকাদার সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
নাম না প্রকাশের শর্তে চট্টগ্রামের একজন শিক্ষাবিদ বলেন, নোবেল পুরস্কার বিজয়ের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য চট্টগ্রামে মাত্র দুটি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এর একটি নগরের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অন্যটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয় ক্যাম্পাসে। ড. ইউনূস চট্টগ্রামের সন্তান।
সুশাসনের জন্য নাগরিক—সুজনের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অধ্যাপক সিকান্দার খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা মেয়রকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন, সেটা কেন দিচ্ছেন তা কেবল তাঁরাই জানেন। আর যিনি নিচ্ছেন তাঁকেও বুঝে নিতে হবে কেন তিনি নিচ্ছেন। নিশ্চয়ই এখানে প্রত্যাশা-প্রাপ্তির কিছু বিষয় থাকতে পারে। তবে এত বেশি সংবর্ধনার আয়োজন রাজনীতিতে নতুন মাত্রা সৃষ্টি হয়েছে।’
মেয়রের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মে এবং জুন মাসে প্রায় প্রতিদিনই সংবর্ধনা সভা হয়েছে। এমনকি কোনো কোনো দিন সর্বোচ্চ তিনটি সংবর্ধনা সভাতেও যোগ দিয়েছেন মেয়র।
বিপুল সংবর্ধনা নেওয়ার বিষয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, রাজনীতি ছাড়াও ক্রীড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে। আগের মেয়ররা রাজনীতির বাইরে এত বেশি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে কারণে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো তাঁকে সংবর্ধনা দিতেই পারে। কারণ তাঁর কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশি।
প্রথা ভেঙে মেয়রকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির দেওয়া সংবর্ধনা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। গত ১৫ জুন আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে মেয়রের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে আইনজীবীদের একাংশ বিক্ষোভ করেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে জানান, সমিতি কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কখনো সংবর্ধনা দেয়নি। এমনকি চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিন, এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মোহাম্মদ মনজুর আলম এবং স্বাধীনতার আগে-পরে কোনো মন্ত্রীকেও সংবর্ধনা দেয়নি। তবে মন্ত্রী-মেয়রের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করতেন। এবার রেওয়াজ ভেঙে আ জ ম নাছিরকে সংবর্ধনা দেওয়ায় আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ।
No comments