পুলিশের গাফিলতি- ওসি ক্লোজড, দুই এসআই বরখাস্ত
সিলেট
মেট্রোপলিটন পুলিশের বর্তমান কমিশনার কামরুল আহসান তখন রেলওয়ে পুলিশের
ডিআইজি। সেই সময় সিলেট রেলওয়ে পুলিশের ওসি ছিলেন আলমগীর হোসেন। কামরুল
আহসান রেলওয়ে পুলিশ থেকে আসেন সিলেটের পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব নিয়ে।
কিছুদিন পরই আলমগীর হোসেন দায়িত্ব পান সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ
থানার ওসি (তদন্ত) হিসেবে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পদোন্নতি পাওয়ার কথা
ছিল। পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে শাহপরান থানায় তার নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রায়
চূড়ান্তই ছিল। হঠাৎই সব যেন ওলটপালট হয়ে গেল। শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন
হত্যার ঘটনা ধামাচাপা ও আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার পথ করে দেয়ার অভিযোগে তাকে
ক্লোজ করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গতকাল সন্ধ্যায় তার
সঙ্গে সাসপেন্ড হয়েছেন এসআই আমিনুল ইসলাম ও জাকির হোসেন। এর আগে গত
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসানের হাতে জমা পড়ে ৪২২
পৃষ্ঠার এ তদন্ত প্রতিবেদন। ৮ দিনের তদন্ত শেষে প্রতিবেদনটি তৈরি করে
অতিরিক্ত কমিশনার রুকন উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটি।
তদন্ত কমিটি রাজন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের গাফিলতি, হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়া ও আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের প্রমাণ পেয়েছে। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডের পর রাজনের বাবা গাড়িচালক শেখ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আলমের সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও পুলিশের দালাল হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের আপস-রফার চেষ্টার বিষয়ও। পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি প্রতিবেদনে বেশ কজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের শাস্তির সুপারিশ করেছে। বিষয়টি সিলেট সফরে আসা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নজরে নিয়ে আসা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে যেসব পুলিশ সদস্যের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিবেদনের একটি কপি সঙ্গে নিয়ে সিলেট ছেড়ে যাওয়ার পূর্বমুহূর্তে গতকাল দুপুর সোয়া ১২টায় ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন আশ্বাস দেন। মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, পুলিশের বেশি গাফিলতি দেখলে তিনি নিজেই বিষয়টির মনিটরিং করবেন।
এদিকে, শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যার ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলেও পুলিশ খোলাসা করেনি প্রতিবেদনের সারকথা। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে দিনভর এমন কানাঘুষা থাকলেও মেট্রোপলিটন পুলিশ কিন্তু চুপই থাকে। নিজেদের ব্যর্থতা ও অনিয়মের ‘ঢোল’ তারা ‘পেটাতে’ চাননি। তবে নিজেরা নিজেরা তারা দিনভর ব্যস্তই ছিলেন হত্যার ঘটনা নিয়ে। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টা মেট্রো পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে তার কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন কমিশনার কামরুল আহসান।
এসএমপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশের সঙ্গে লিয়াজোঁ তৈরিতে টুকের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন এবং সরকারি একটি সংবাদ সংস্থায় কর্মরত স্থানীয় প্রতিনিধির জনৈক ব্যক্তির মকসুদ আহমদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদন তৈরিতে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ১৫০ জনের অডিও বক্তব্য এবং ৫০ জনের লিখিত বক্তব্য নিয়েছে। তদন্ত কমিটি মনে করেছে এরা রাজন হত্যার ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল- কেউবা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।
পুলিশের তদন্তে আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ না মিললেও অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। যার দায় চেপেছে নিচু স্তরের পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর। ঘটনার দিন রাজনের লাশ উদ্ধার হওয়ার সংবাদ পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। যাদের মধ্যে ছিলেন পুলিশের ডিসি, এডিসি, এসি সবাই। তারা দেখেছেন-শুনেছেন, তদন্তের তত্ত্বাবধান করেছেন। তবে দায় ছুঁতে পারেনি তাদের কাউকেই। তাদের দায়মুক্ত রেখেই সব দায় চেপেছে যারা হত্যার ঘটনায় দৌড়ঝাঁপ করেছেন তাদের ওপরই।
সিলেট মেট্রো পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রধান রুকন উদ্দিন গতকাল দুপুরে তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে মানবজমিনকে বলেন, ‘বিন্দু পরিমাণ আপস করিনি। দাড়ি-কমা বাদ দেইনি। অ্যাকশন হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ই জুলাই সিলেট নগরীর কুমারগাঁও এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে ভ্যান চুরির অপবাদে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় স্থানীয় বাদে আলী গ্রামের বাসিন্দা গাড়িচালক শেখ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আলমের ছেলে সামিউল আলম রাজনকে। পরে তার লাশ একটি মাইক্রোবাসে তুলে গুম করার চেষ্টাকালে জনতা হত্যাকারীদের দুজনকে আটক করে। এ ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে দেশব্যপী ঝড় ওঠে। এরই মধ্যে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে জালালাবাদ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহায়তায় অপর এক আসামি সৌদি আরবে পালিয়ে গেলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। গত ১৪ই জুলাই মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রুকন উদ্দিনকে প্রধান করে গড়ে দেয়া তিন সদস্যের কমিটির তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও পরে আরও পাঁচ দিন সময় বাড়ানো হয়। গত বৃহস্পতিবার ছিল প্রতিবেদন দাখিলের শেষদিন।
তদন্ত কমিটি রাজন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের গাফিলতি, হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়া ও আসামিদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের প্রমাণ পেয়েছে। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডের পর রাজনের বাবা গাড়িচালক শেখ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আলমের সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও পুলিশের দালাল হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের আপস-রফার চেষ্টার বিষয়ও। পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি প্রতিবেদনে বেশ কজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের শাস্তির সুপারিশ করেছে। বিষয়টি সিলেট সফরে আসা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নজরে নিয়ে আসা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে যেসব পুলিশ সদস্যের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিবেদনের একটি কপি সঙ্গে নিয়ে সিলেট ছেড়ে যাওয়ার পূর্বমুহূর্তে গতকাল দুপুর সোয়া ১২টায় ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন আশ্বাস দেন। মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, পুলিশের বেশি গাফিলতি দেখলে তিনি নিজেই বিষয়টির মনিটরিং করবেন।
এদিকে, শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যার ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলেও পুলিশ খোলাসা করেনি প্রতিবেদনের সারকথা। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে দিনভর এমন কানাঘুষা থাকলেও মেট্রোপলিটন পুলিশ কিন্তু চুপই থাকে। নিজেদের ব্যর্থতা ও অনিয়মের ‘ঢোল’ তারা ‘পেটাতে’ চাননি। তবে নিজেরা নিজেরা তারা দিনভর ব্যস্তই ছিলেন হত্যার ঘটনা নিয়ে। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টা মেট্রো পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে তার কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন কমিশনার কামরুল আহসান।
এসএমপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশের সঙ্গে লিয়াজোঁ তৈরিতে টুকের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন এবং সরকারি একটি সংবাদ সংস্থায় কর্মরত স্থানীয় প্রতিনিধির জনৈক ব্যক্তির মকসুদ আহমদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদন তৈরিতে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ১৫০ জনের অডিও বক্তব্য এবং ৫০ জনের লিখিত বক্তব্য নিয়েছে। তদন্ত কমিটি মনে করেছে এরা রাজন হত্যার ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল- কেউবা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।
পুলিশের তদন্তে আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ না মিললেও অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। যার দায় চেপেছে নিচু স্তরের পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর। ঘটনার দিন রাজনের লাশ উদ্ধার হওয়ার সংবাদ পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। যাদের মধ্যে ছিলেন পুলিশের ডিসি, এডিসি, এসি সবাই। তারা দেখেছেন-শুনেছেন, তদন্তের তত্ত্বাবধান করেছেন। তবে দায় ছুঁতে পারেনি তাদের কাউকেই। তাদের দায়মুক্ত রেখেই সব দায় চেপেছে যারা হত্যার ঘটনায় দৌড়ঝাঁপ করেছেন তাদের ওপরই।
সিলেট মেট্রো পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রধান রুকন উদ্দিন গতকাল দুপুরে তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে মানবজমিনকে বলেন, ‘বিন্দু পরিমাণ আপস করিনি। দাড়ি-কমা বাদ দেইনি। অ্যাকশন হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ই জুলাই সিলেট নগরীর কুমারগাঁও এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে ভ্যান চুরির অপবাদে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় স্থানীয় বাদে আলী গ্রামের বাসিন্দা গাড়িচালক শেখ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আলমের ছেলে সামিউল আলম রাজনকে। পরে তার লাশ একটি মাইক্রোবাসে তুলে গুম করার চেষ্টাকালে জনতা হত্যাকারীদের দুজনকে আটক করে। এ ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে দেশব্যপী ঝড় ওঠে। এরই মধ্যে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে জালালাবাদ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ সহায়তায় অপর এক আসামি সৌদি আরবে পালিয়ে গেলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। গত ১৪ই জুলাই মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রুকন উদ্দিনকে প্রধান করে গড়ে দেয়া তিন সদস্যের কমিটির তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও পরে আরও পাঁচ দিন সময় বাড়ানো হয়। গত বৃহস্পতিবার ছিল প্রতিবেদন দাখিলের শেষদিন।
No comments