গাজার ঈদে রক্ত আর লাশ
ইসরায়েলের একতরফা বর্বর হামলায়
ফিলিস্তিনের গাজা এখন ধ্বংসস্তূপ। গাজার বাতাসে লাশের গন্ধ। ট্যাংকের গোলা,
বোমার আগুনে জ্বলছে গাজা। বন্দুকের গুলি, শিশুর কান্না আর রক্তের মধ্যেই
গাজায় আজ উদযাপিত হচ্ছে ঈদ।
ঈদে খাবার নেই গাজার শিশুদের। নেই নতুন পোশাক। হাতে নেই মা, বাবার কিনে দেওয়া খেলনা। তারা নিজেদের জীবন বাঁচাতে ছুটছে। গোলা বা বোমার আঘাত থেকে সন্তানকে বাঁচাতে ছুটছেন মা। পুরুষ, নারী, বৃদ্ধ সবাই ছুটছেন। যে করেই হোক বাঁচতে হবে তাঁদের।
আল জাজিরা ও বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদ সামনে রেখে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় অবিলম্বে ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল রোববার মধ্যরাতে জাতিসংঘ ওই বিবৃতি দেয়।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গাজায় শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে গতকাল স্থানীয় সময় মধ্যরাত পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। তবে সাময়িক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হামাস রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে—এই অজুহাতে গতকাল সকাল থেকে গাজায় আবার বিমান, স্থল ও নৌ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এর মধ্যে জাতিসংঘ আবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
গত ১৯ দিনে গাজায় ইসরায়েলের প্রায় একতরফা বর্বর হামলায় এক হাজার ৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। এ ছাড়া হামাসের ছোড়া রকেট হামলায় ইসরায়েলের ৪৬ জন নিহত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার সূত্রপাত ৮ জুলাই। ইসরায়েলি তিন কিশোরকে সম্প্রতি অপহরণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই হামলা শুরু হয়। হামাসই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করে ইসরায়েল। তবে হামাস তা অস্বীকার করেছে। পরে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে একইভাবে হত্যা ও অপহরণের পর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। এরপর গাজা থেকে রকেট ছোড়া হচ্ছে—এমন দাবি তুলে ‘অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ’ শুরু করে ইসরায়েল।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইহুদিদের জন্য ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের শুরু। এর পর থেকে নিয়মিত রক্ত ঝরলেও আজও তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনের স্বাধীন সত্তা মেনে নিতে রাজি নয় ইসরায়েল।
No comments