আমার স্থায়িত্বকাল আল্লাহর হাতে
অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ
এডভোকেট বলেছেন, আমার স্থায়িত্বকাল আল্লাহর হাতে। কতদিন এ পদে দায়িত্ব পালন
করবো তা একমাত্র তিনিই জানেন। যে কয়েকদিন দায়িত্ব পালন করবো, আপনাদের
সহযোগিতা চাই।
দায়িত্ব
পালনকালে বঙ্গভবনের ভাবমূর্তি রক্ষা করবো। গতকাল বিকালে দাপ্তরিক কাজে
প্রথমবারের মতো বঙ্গভবনে গিয়ে কর্মকর্তা- কর্মচারীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন
অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট। ওদিকে মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে নিয়মিত অফিস করলেও
থাকবেন সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত স্পিকারের বাসভবনে। এরই অংশ হিসেবে
বঙ্গভবনে অফিস শুরু করেছেন। এদিন বঙ্গভবনে যাওয়ার পর অস্থায়ী প্রেসিডেন্টকে
তার সচিব, সামরিক সচিবসহ অন্য কর্মকর্তারা স্বাগত জানান। তারা
প্রেসিডেন্টকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন। এরপর তাকে বঙ্গভবনের পদস্থ
কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। পরিচয় পর্ব শেষে বঙ্গভবনের
গ্যালারি হলে জন বিভাগের পক্ষ থেকে অস্থায়ী প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানানো
হয়। ওই সময় কর্নেল জাকির বঙ্গভবনের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রেসিডেন্টকে ধারণা
দেন। অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে বলেন, মরহুম প্রেসিডেন্ট মো.
জিল্লুর রহমানের ইন্তেকালের ফলে আমাকে বঙ্গভবনে আসতে হয়েছে। এটি আমার জন্য
পীড়াদায়ক ও কষ্টদায়ক। উনার সঙ্গে আমার ৪৭ বছরের সম্পর্ক। একই জেলায় বাড়ি,
একই সঙ্গে রাজনীতি করেছি। এখানে এই দায়িত্বে আসবো, আমি কল্পনাও করিনি।
মরহুম প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও তার
পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। তিনি বলেন, এখনও আমাদের
দেশের অনেক লোক গরিব। তারা তাদের ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে পারে না। আমরা
বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। যদি
আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি, তাহলে দেশের মানুষ আশান্বিত হবে। আমি আমার
প্রাধিকারের বেশি নেবো না। যেটুকু না করলে নয়, তাই যেন করি। রাষ্ট্রের টাকা
যেন অপচয় না হয়। অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট বলেন, সমস্ত কিছুই আইন ও বিধি-বিধান
অনুযায়ী চলবে। যদি আমি আইনের বাইরে কিছু করি, আপনারা আমার ত্রুটি ধরিয়ে
দেবেন। আমি খুশি হবো, যদি কোন কর্মকর্তা আমার ভুল ধরিয়ে দেন, তাকে আমি
বন্ধু মনে করবো। বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিনে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট
কয়েকটি নথিতে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া, তার হাতে জুডিশিয়াল কমিশনের রিপোর্ট
তুলে দেয়া হয়। উল্লেখ্য, গত ১৪ই মার্চ সংবিধানের ৫৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন আবদুল হামিদ। ২০শে মার্চ দেশের ১৯তম
প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর সংবিধানের বিধান অনুযায়ী
অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন তিনি। এরপর থেকে তিনি সংসদ ভবনের
স্পিকারের কার্যালয় থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বঙ্গভবনে গেলেও
অফিস করার জন্য গতকালই তার প্রথম যাওয়া। স্পিকারের একান্ত সচিব মো. জয়নাল
আবেদীন মানবজমিনকে জানিয়েছেন, সংসদ ভবন এলাকায় স্পিকারের বাসায় থাকলেও
অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট এখন থেকে বঙ্গভবনে অফিস করবেন। গতকাল বেলা তিনটার পর
তিনি বাসভবন থেকে বের হন এবং সরাসরি বঙ্গভবনে যান। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি
জানিয়েছিলেন, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া স্পিকারের কার্যালয়েই আমি অফিস করবো।
শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানসহ বিশেষ কাজে বঙ্গভবনে অফিস
করবো।
No comments