‘বহিষ্কৃত চিন্ময়ের দায় নেবে না ইসকন’

চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে অনেক আগেই ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি ইসকন বাংলাদেশের কেউ নন। তাই তার কোনো বক্তব্য বা কার্যক্রমের দায় ইসকন নেবে না। গতকাল রাজধানীর স্বামীবাগে ইসকন বাংলাদেশের আশ্রমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়েছেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাশ ব্রহ্মচারী।

লিখিত বক্তব্যে চারু চন্দ্র দাশ বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইসকন বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার ছড়ানোর এক ধারাবাহিক প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষত চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এ অপচেষ্টা চরমে পৌঁছেছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা এবং চলমান আন্দোলনের সঙ্গে ইসকন বাংলাদেশের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। এই মিথ্যাচার এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সড়ক দুর্ঘটনার মতো বিষয়গুলোকেও ইসকনের চক্রান্ত বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। চারু চন্দ্র দাশ  বলেন, গত ৩রা অক্টোবর আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মাধ্যমে ইসকন’র পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয় যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ইসকন বাংলাদেশের মুখপাত্র নন। তাই তার বক্তব্য সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত। ইসকন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে সুনাম ক্ষুণ্নের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, ধর্মীয় সহনশীলতা বজায় রাখা ও দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যেকোনো প্রকার উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা এবং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান চারু চন্দ্র দাশ।

ইসকন বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটি ও শিশু সুরক্ষা দলের সদস্য হৃষীকেশ গৌরাঙ্গ দাশ বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের বিরুদ্ধে কয়েকটি শিশু অভিযোগ করেছিল যে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ ও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। এটা জানার পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চিন্ময়কে চিঠি দেয়া হয়। তখন তদন্তের স্বার্থে তিন মাসের জন্য তাকে সংগঠন ও পুণ্ডরীক ধামের পদ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। তবে তিনি তা মানেননি। সংগঠনের নির্দেশনাও শোনেননি। এ কারণে তাকে ইসকন বাংলাদেশ থেকে স্থায়ীভাবে গত জুলাইয়ে বহিষ্কার করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা ও রাজ্যের বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ইসকন একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন, ভারত থেকে পরিচালিত নয়। কোনো ব্যক্তি কী বললেন, সেটা তাদের বিষয়।  আগামী রোববার ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের সঙ্গে ইসকন বাংলাদেশের একটি বৈঠক রয়েছে। তাতে সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। বলেন, ইসকন বাংলাদেশ একটি অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় সংগঠন, যা সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং মানবকল্যাণে নিবেদিত। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসকন বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ জ্যোতিশ্বর গৌর দাশ ব্রহ্মচারী, কার্যনির্বাহী সদস্য বিমলা প্রসাদ দাশ ও চিন্ময় গদাধর দাশ ব্রহ্মচারী প্রমুখ। 

mzamin

No comments

Powered by Blogger.