'ইরানে দুনিয়া-কাঁপানো ইসলামী বিপ্লবের গৌরবময় ৪০ বছর’-এক
ইরানের
ইসলামী বিপ্লব মানব ইতিহাসের এক নজিরবিহীন বিপ্লব। বহু বিশ্লেষকের মতে এ
বিপ্লব বিগত এক হাজার বছরের সেরা আদর্শিক বিপ্লব। এ মহাবিপ্লব খ্যাতনামা
বহু চিন্তাবিদ, রাষ্ট্র-বিজ্ঞানী, সমাজ-বিশেষজ্ঞ ও বিশ্বের বহু ঝানু
রাজনীতিবিদকে করেছিল স্তম্ভিত, হতবাক এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
কারণ, আধুনিক যুগে ধর্ম-ভিত্তিক রাষ্ট্র-ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন ঘটতে পারে-এটা সমাজ ও রাষ্ট্র-বিজ্ঞানীদের কাছে ছিল কল্পনাতীত বিষয়। পাশ্চাত্যে ধর্ম কেবলই ব্যক্তি-জীবনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। আর মুসলিম বিশ্বেও ধর্মকে জীবনের সব ক্ষেত্রে থেকে নির্বাসন দেয়ার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত বুদ্ধিজীবি মহলের এক বড় অংশ পশ্চিমাদের অনুগত বা তাদের সেবাদাস শাসক-গোষ্ঠীর সহায়তায়। কিন্তু এমন এক প্রেক্ষাপটে ইরানের ইসলামী বিপ্লব বদলে দেয় বিশ্ব-রাজনীতি ও সমাজ-ব্যবস্থার প্রচলিত সব হিসাব-নিকাশ।
১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারিতে বিজয়ী-হওয়া ইরানের ইসলামী বিপ্লব দেশটিতে অবসান ঘটায় মার্কিন কর্তৃত্বসহ তাবৎ পরাশক্তিগুলোর মোড়লিপনা। এ বিপ্লব ফিরিয়ে আনে ইরানি জাতির প্রকৃত স্বাধীনতা, সম্মান ও উন্নয়নের বিরতিহীন অগ্রযাত্রার সেই হারানো গৌরবের ধারা। কিন্তু এ বিপ্লবের ফলে দিশেহারা হয়ে পড়া মার্কিন পরাশক্তি ও তার মিত্ররা গত প্রায় চার দশক ধরে একের পর এক বিছিয়ে যাচ্ছে নানা ধরনের ভয়ানক ও কুটিল ষড়যন্ত্রের জটা-জাল যাতে নির্মূল বা অন্তত লাইনচ্যুত হয়ে দুর্বল হয় এই মহাবিপ্লব। এইসব ষড়যন্ত্র অনুযায়ী তারা কখনও পরোক্ষ যুদ্ধ, কখনও প্রত্যক্ষ সামরিক আগ্রাসন কিংবা কখনও কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধসহ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে। অবশ্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন ওইসব দাম্ভিক পরাশক্তির চাপিয়ে দেয়া নানা শত্রুতা সত্ত্বেও নতজানু হচ্ছে না ইসলামী ইরান, বরং খাঁটি ইসলামের অদম্য শক্তির বলে দিনকে দিন ভেতরে ও বাইরে এবং বিশ্ব-অঙ্গনে শক্তিশালী হচ্ছে ইসলামী বিপ্লবের দেশ ইরান।
ইরানের সার্বিক সমৃদ্ধি ও বিশ্বজোড়া ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে নিয়মিত হুমকি দেয়া অভ্যাস পরিণত হয়েছিল মার্কিন নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী জোট। কিন্তু শত হুমকি আর বাধা সত্ত্বেও বিশ্বগ্রাসী ও লুটেরা শক্তিগুলোর ঘুম হারাম করে দিয়ে ইরানের ইসলামী বিপ্লব তার গৌরবময় ৪০তম বিজয়-বার্ষিকীর প্রাক্কালেও মুক্তিকামী জাতিগুলোর জন্য আদর্শিক অনুপ্রেরণার প্রধান আলোক-সম্পাত-কেন্দ্র হিসেবে জ্বলজ্বল করছে। ইরানের ওপর হামলা চালানোর হুমকি দেয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে দাম্ভিক শক্তিগুলো। বরং সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তিতে অনন্য হয়ে-ওঠা ইসলামী ইরান এখন পশ্চিমা দাম্ভিক শক্তিগুলোকে প্রায়ই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। আগ্রাসন ও গোস্তাখির জন্য যে উচিত শিক্ষা এবং দাতভাঙ্গা জবাব অপেক্ষা করছে তা ভাবতেও শিউরে উঠছে দাম্ভিক শক্তির সমরনায়ক ও যুদ্ধবাজ নেতারা! ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনে ইসলামী ইরানের প্রবল শক্তি থাকার কথা স্বীকার করছে তার শত্রুরা এবং ইরানের এই প্রবল প্রভাব ও প্রতাপ উপেক্ষা করা যে সম্ভব নয় তাও উল্লেখ করছেন পশ্চিমা বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা।
প্রখ্যাত মার্কিন চিন্তাবিদ নোয়াম চমস্কি ইসলামী ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর প্রবল শত্রুতার কারণ তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন: 'যতদিন ইরান স্বাধীনচেতা থাকবে ও মার্কিন কর্তৃত্বকামীতার কাছে মাথা নোয়াবে না ততদিন মার্কিন সরকারের শত্রুতা অব্যাহত থাকবে। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান মার্কিন সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, দেশটি তার স্বাধীনতার বিষয়কে অগ্রাহ্য করে না।'
চমস্কি আরও বলেছেন: 'ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানই প্রথমবারের মত বিশ্বে সফল ইসলামী-রাজনৈতিক বিপ্লবের মডেল উপস্থাপন করেছে যাতে বিশ্বের মুসলিম ও নির্যাতিত জাতিগুলো এ বিপ্লবের সুফলগুলো থেকে লাভবান হয়।'
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রভাবে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের বহু দেশে জোরদার হয়েছে ইসলামী জাগরণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিশর, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, বাহরাইন, তিউনিশিয়াসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে ইসলামী জাগরণের যে জোয়ার দেখা দিয়েছিল তারও বড় প্রেরণার অন্যতম প্রধান বা বড় উৎস ছিল ইরানের ইসলামী বিপ্লব। মুসলিম জাতিগুলো বুঝতে পেরেছে যে একমাত্র খাঁটি ইসলামের দিকে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই এ অঞ্চলের সমস্যা ও সংকটগুলোর সুরাহা হতে পারে।
পশ্চিম এশিয়ার কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থান ও আরব বিশ্বের সম্পদের প্রতি সব সময়ই লোলুপ দৃষ্টি রেখেছে সাম্রাজ্যবাদী লুটেরা শক্তিগুলো। এই শক্তিগুলোর জোটে দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্ত হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদেরই নিত্য-নতুন ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার বা পুতুল হিসেবে ব্যবহৃত তাকফিরি-ওয়াহাবি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। কিন্তু এইসব গোষ্ঠীও চরম পরাজয়ের শিকার হয়েছে ইরাক ও সিরিয়ায়। আর তাদের এই পরাজয়ের পেছনে ছিল ইরানের আদর্শিক প্রভাব এবং দ্রুত ও মোক্ষম সামরিক সহায়তা।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের আগে বিশ্বকে দু'ভাগে বিভক্ত করে রেখেছিল সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো। কিন্তু ইসলামী বিপ্লবের সাফল্যের সুবাদে কর্তৃত্বকামী মেরুর মোকাবেলায় কর্তৃত্বাধীন মেরুতে জেগে ওঠে প্রতিরোধ শক্তি নামের এক নতুন মেরু।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ কোনো কোনো মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব ৪০ বছরে উপনীত হতে পারবে না এবং তার আগের গ্রীষ্মেই ইরানে দেখা দেবে সরকার-বিরোধী গণ-অভ্যুত্থান! মার্কিন যুদ্ধবাজ নেতা জন বোল্টন বলেছিলেন, তিনি ২০১৯ সালে ইরানের ইসলামী সরকারের পতনের পর তেহরানে ক্রিসমাস উৎস করবেন সরকার বিরোধী ইরানি মোনাফিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা এমকেও'র অনুচরদের নিয়ে! কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তাদের এ জাতীয় বক্তব্য যে অসুস্থ ব্যক্তির প্রলাপের মতই অলীক তা এখন বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে।
ইরানের বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি বলেছেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব দেখিয়ে দিয়েছে যে ইরানি জাতি তাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সৃষ্টিশীল ভূমিকার মাধ্যমে বিশাল সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে। অন্য কথায় মহান ইমাম খোমেনী (র.) ইরানি জাতিকে বিশাল জনসমুদ্রের আকারে সংঘবদ্ধ করে এমন এক আন্দোলনে নামান যে তারা শত শত বছরের রাজতান্ত্রিক তথা বংশানুক্রমিক রাষ্ট্র-ব্যবস্থা এবং বিজাতীয়দের হস্তক্ষেপ ও কর্তৃত্বের অবসান ঘটিয়ে মহাপরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হন।
ইরানি জাতি মার্কিন সরকারসহ পশ্চিমা শক্তিগুলোর অর্থনৈতিক যুদ্ধসহ নানা ধরনের প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র ও শত্রুতার মোকাবেলা অব্যাহত রাখায় ইরানের ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও দেশটির জনগণের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে এবং তারা শত্রুদের নানা অপকৌশল মোকাবেলার পথও খুঁজে পেয়েছেন বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
কারণ, আধুনিক যুগে ধর্ম-ভিত্তিক রাষ্ট্র-ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন ঘটতে পারে-এটা সমাজ ও রাষ্ট্র-বিজ্ঞানীদের কাছে ছিল কল্পনাতীত বিষয়। পাশ্চাত্যে ধর্ম কেবলই ব্যক্তি-জীবনে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। আর মুসলিম বিশ্বেও ধর্মকে জীবনের সব ক্ষেত্রে থেকে নির্বাসন দেয়ার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত বুদ্ধিজীবি মহলের এক বড় অংশ পশ্চিমাদের অনুগত বা তাদের সেবাদাস শাসক-গোষ্ঠীর সহায়তায়। কিন্তু এমন এক প্রেক্ষাপটে ইরানের ইসলামী বিপ্লব বদলে দেয় বিশ্ব-রাজনীতি ও সমাজ-ব্যবস্থার প্রচলিত সব হিসাব-নিকাশ।
১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারিতে বিজয়ী-হওয়া ইরানের ইসলামী বিপ্লব দেশটিতে অবসান ঘটায় মার্কিন কর্তৃত্বসহ তাবৎ পরাশক্তিগুলোর মোড়লিপনা। এ বিপ্লব ফিরিয়ে আনে ইরানি জাতির প্রকৃত স্বাধীনতা, সম্মান ও উন্নয়নের বিরতিহীন অগ্রযাত্রার সেই হারানো গৌরবের ধারা। কিন্তু এ বিপ্লবের ফলে দিশেহারা হয়ে পড়া মার্কিন পরাশক্তি ও তার মিত্ররা গত প্রায় চার দশক ধরে একের পর এক বিছিয়ে যাচ্ছে নানা ধরনের ভয়ানক ও কুটিল ষড়যন্ত্রের জটা-জাল যাতে নির্মূল বা অন্তত লাইনচ্যুত হয়ে দুর্বল হয় এই মহাবিপ্লব। এইসব ষড়যন্ত্র অনুযায়ী তারা কখনও পরোক্ষ যুদ্ধ, কখনও প্রত্যক্ষ সামরিক আগ্রাসন কিংবা কখনও কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধসহ নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং এখনও করে যাচ্ছে। অবশ্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন ওইসব দাম্ভিক পরাশক্তির চাপিয়ে দেয়া নানা শত্রুতা সত্ত্বেও নতজানু হচ্ছে না ইসলামী ইরান, বরং খাঁটি ইসলামের অদম্য শক্তির বলে দিনকে দিন ভেতরে ও বাইরে এবং বিশ্ব-অঙ্গনে শক্তিশালী হচ্ছে ইসলামী বিপ্লবের দেশ ইরান।
ইরানের সার্বিক সমৃদ্ধি ও বিশ্বজোড়া ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে নিয়মিত হুমকি দেয়া অভ্যাস পরিণত হয়েছিল মার্কিন নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী জোট। কিন্তু শত হুমকি আর বাধা সত্ত্বেও বিশ্বগ্রাসী ও লুটেরা শক্তিগুলোর ঘুম হারাম করে দিয়ে ইরানের ইসলামী বিপ্লব তার গৌরবময় ৪০তম বিজয়-বার্ষিকীর প্রাক্কালেও মুক্তিকামী জাতিগুলোর জন্য আদর্শিক অনুপ্রেরণার প্রধান আলোক-সম্পাত-কেন্দ্র হিসেবে জ্বলজ্বল করছে। ইরানের ওপর হামলা চালানোর হুমকি দেয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে দাম্ভিক শক্তিগুলো। বরং সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তিতে অনন্য হয়ে-ওঠা ইসলামী ইরান এখন পশ্চিমা দাম্ভিক শক্তিগুলোকে প্রায়ই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। আগ্রাসন ও গোস্তাখির জন্য যে উচিত শিক্ষা এবং দাতভাঙ্গা জবাব অপেক্ষা করছে তা ভাবতেও শিউরে উঠছে দাম্ভিক শক্তির সমরনায়ক ও যুদ্ধবাজ নেতারা! ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনে ইসলামী ইরানের প্রবল শক্তি থাকার কথা স্বীকার করছে তার শত্রুরা এবং ইরানের এই প্রবল প্রভাব ও প্রতাপ উপেক্ষা করা যে সম্ভব নয় তাও উল্লেখ করছেন পশ্চিমা বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা।
প্রখ্যাত মার্কিন চিন্তাবিদ নোয়াম চমস্কি ইসলামী ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর প্রবল শত্রুতার কারণ তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন: 'যতদিন ইরান স্বাধীনচেতা থাকবে ও মার্কিন কর্তৃত্বকামীতার কাছে মাথা নোয়াবে না ততদিন মার্কিন সরকারের শত্রুতা অব্যাহত থাকবে। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান মার্কিন সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, দেশটি তার স্বাধীনতার বিষয়কে অগ্রাহ্য করে না।'
চমস্কি আরও বলেছেন: 'ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানই প্রথমবারের মত বিশ্বে সফল ইসলামী-রাজনৈতিক বিপ্লবের মডেল উপস্থাপন করেছে যাতে বিশ্বের মুসলিম ও নির্যাতিত জাতিগুলো এ বিপ্লবের সুফলগুলো থেকে লাভবান হয়।'
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রভাবে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বের বহু দেশে জোরদার হয়েছে ইসলামী জাগরণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিশর, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, বাহরাইন, তিউনিশিয়াসহ বিশ্বের নানা অঞ্চলে ইসলামী জাগরণের যে জোয়ার দেখা দিয়েছিল তারও বড় প্রেরণার অন্যতম প্রধান বা বড় উৎস ছিল ইরানের ইসলামী বিপ্লব। মুসলিম জাতিগুলো বুঝতে পেরেছে যে একমাত্র খাঁটি ইসলামের দিকে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমেই এ অঞ্চলের সমস্যা ও সংকটগুলোর সুরাহা হতে পারে।
পশ্চিম এশিয়ার কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থান ও আরব বিশ্বের সম্পদের প্রতি সব সময়ই লোলুপ দৃষ্টি রেখেছে সাম্রাজ্যবাদী লুটেরা শক্তিগুলো। এই শক্তিগুলোর জোটে দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্ত হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদেরই নিত্য-নতুন ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার বা পুতুল হিসেবে ব্যবহৃত তাকফিরি-ওয়াহাবি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। কিন্তু এইসব গোষ্ঠীও চরম পরাজয়ের শিকার হয়েছে ইরাক ও সিরিয়ায়। আর তাদের এই পরাজয়ের পেছনে ছিল ইরানের আদর্শিক প্রভাব এবং দ্রুত ও মোক্ষম সামরিক সহায়তা।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের আগে বিশ্বকে দু'ভাগে বিভক্ত করে রেখেছিল সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো। কিন্তু ইসলামী বিপ্লবের সাফল্যের সুবাদে কর্তৃত্বকামী মেরুর মোকাবেলায় কর্তৃত্বাধীন মেরুতে জেগে ওঠে প্রতিরোধ শক্তি নামের এক নতুন মেরু।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পসহ কোনো কোনো মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব ৪০ বছরে উপনীত হতে পারবে না এবং তার আগের গ্রীষ্মেই ইরানে দেখা দেবে সরকার-বিরোধী গণ-অভ্যুত্থান! মার্কিন যুদ্ধবাজ নেতা জন বোল্টন বলেছিলেন, তিনি ২০১৯ সালে ইরানের ইসলামী সরকারের পতনের পর তেহরানে ক্রিসমাস উৎস করবেন সরকার বিরোধী ইরানি মোনাফিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা এমকেও'র অনুচরদের নিয়ে! কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তাদের এ জাতীয় বক্তব্য যে অসুস্থ ব্যক্তির প্রলাপের মতই অলীক তা এখন বিশ্ববাসীর কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে।
ইরানের বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ি বলেছেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব দেখিয়ে দিয়েছে যে ইরানি জাতি তাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সৃষ্টিশীল ভূমিকার মাধ্যমে বিশাল সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে। অন্য কথায় মহান ইমাম খোমেনী (র.) ইরানি জাতিকে বিশাল জনসমুদ্রের আকারে সংঘবদ্ধ করে এমন এক আন্দোলনে নামান যে তারা শত শত বছরের রাজতান্ত্রিক তথা বংশানুক্রমিক রাষ্ট্র-ব্যবস্থা এবং বিজাতীয়দের হস্তক্ষেপ ও কর্তৃত্বের অবসান ঘটিয়ে মহাপরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হন।
ইরানি জাতি মার্কিন সরকারসহ পশ্চিমা শক্তিগুলোর অর্থনৈতিক যুদ্ধসহ নানা ধরনের প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র ও শত্রুতার মোকাবেলা অব্যাহত রাখায় ইরানের ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও দেশটির জনগণের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে এবং তারা শত্রুদের নানা অপকৌশল মোকাবেলার পথও খুঁজে পেয়েছেন বলে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
No comments