চট্টগ্রামে ৪০৫টি ইটভাটার ৩৫৫টিই অবৈধ by ইব্রাহিম খলিল
চট্টগ্রামের
১৫ উপজেলায় ৪০৫টি ইটভাটার ৩৫৫টিই অবৈধ। এসব ইটভাটার জেলা প্রশাসনের কোনো
লাইসেন্স নেই। পরিবেশ সংক্রান্ত লাইসেন্স আছে ৫০টির। আবার সব কটি ইটভাটায়
গড়ে তোলা হয়েছে সংরক্ষিত বন এলাকায়।
পরিবেশ অধিপ্তরের হিসাবে ইটভাটার এই তথ্য পাওয়া গেলেও হিসেবে নেই এমন আরো ১১৫টি ইটভাটার তথ্য রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও বনবিভাগে। যেগুলোতে কোনো রকম বৈধতা ছাড়াই দিনের পর দিন লাখ লাখ ইট প্রস্তুত করা হচ্ছে।
প্রতি বছর এসব ইটভাটায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগ অভিযান চালালেও এ বছর মৌসুমের প্রায় শেষের দিকে এসেও অভিযানের কোনো প্রস্তুতি নেই বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।
অভিযান চালানোর সময় হয়ে উঠছে না বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক।
আর বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া অভিযানের কোনো সুযোগ নেই তাদের। অভিযানের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েও পাচ্ছেন না তারা।
এ সুবাধে নির্বিঘ্নে ইট তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইটভাটার মালিকরা। এতে ধ্বংস হচ্ছে কৃষিজমি-পাহাড়। উজাড় হচ্ছে বন। ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ ও জলবায়ু। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয় বসতির সাধারণ মানুষ। যার ক্ষতি অপূরণীয়।
অথচ ২০১৩ সালের ৫৯নং আইনে ইট প্রস্তুত, ইটভাটা স্থাপন ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত্র আইনের ৪নং ধারায় লাইসেন্স ছাড়া ইট তৈরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার জেলা প্রশাসকের থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া, কোনো ব্যক্তি ইটভাটায় ইট প্রস্তুত করতে পারবে না।
এ আইনে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া ইট উৎপাদন করলে অনধিক এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে; যা চট্টগ্রামের ইটভাটা মালিকদের কাছে উপেক্ষিত। অবহেলিত প্রশাসনের কাছেও।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, অবহেলিত বা উপেক্ষা নয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এরপর উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সরকারি দপ্তরের নানা উদ্যোগ বাস্তবায়নের ব্যস্ততায় এ বছর ইটভাটার দিকে নজর দেয়া এখনো সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ৫২০টির মতো ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে ৪৭০টি ইটভাটার লাইসেন্স নেই। লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালনায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। লাইসেন্স নেয়া কোনো ইটভাটা সংরক্ষিত বনেও বসাতে পারত না। কৃষি জমি, পাহাড় কেটে ইট তৈরির সুযোগও পেত না।
কারণ, পরিবেশ সম্মত জিগজ্যাগ কিলন, হাইব্রিড হফম্যান কিলন, ভার্টিক্যাল শ্যাফট ব্রিকস কিলন, টানেল কিলন বা অনুরূপ উন্নততর কোনো প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন ছাড়া অন্য কোনো ইটভাটায় লাইসেন্স দেয়া হতো না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, চট্টগ্রামে ৪০৫ ইটভাটার মধ্যে পরিবেশ ছাড়পত্র নিয়েছিলেন ২৬২টি ইটভাটার মালিক। ১৪৩টি ভাটার মালিক ছাড়পত্র নেননি। এরমধ্যে ৮০-১২০ ফুট উচ্চতার চিমনি রয়েছে ২৮৩টি ইটভাটার। এ ধরনের চিমনিধারী ইটভাটাগুলো আধুনিক প্রযুক্তিসম্মত নয় বিধায় পরিবেশ আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবেশ আইনে অনুমোদিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজ্যাগ চিমনি রয়েছে ১১৯টির। উন্নতমানের অত্যাধুনিক হাইব্রিড হফম্যান কিলনধারী ভাটা রয়েছে মাত্র একটি ও অটো টানেল কিলন ভাটা রয়েছে দুটি। পরিবেশ আইনের ৪ উপধারায় এসব ইটভাটাকে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, পরিবেশসম্মত আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ১২২টি। ২৮৩টি ইটভাটা পরিবেশসম্মত নয়। ২০১৪ সালের ৩০শে জুনের পর ৮০-১২০ ফুট উচ্চতার চিমনিধারী ইটভাটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবানুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে ইটভাটা রয়েছে ৪৫টি। এরমধ্যে বৈধ মাত্র একটি। ফটিকছড়িতে ৫৬টির মধ্যে বৈধ মাত্র দুটি। সাতকানিয়ায় ৬২টির মধ্যে বৈধ ১২টি। হাটহাজারীতে ৬০টির মধ্যে বৈধ ১০টি। রাঙ্গুনিয়ায় ৭২টির মধ্যে বৈধ মাত্র একটি। চন্দনাইশে ৩০টির মধ্যে বৈধ তিনটি। লোহাগাড়ায় ২৫টির মধ্যে বৈধ কোনো ইটভাটা নেই। আনোয়ারায় চারটির মধ্যে বৈধ একটি। বাঁশখালীতে চারটির মধ্যে সবকটিই অবৈধ। সন্দ্বীপে তিনটির মধ্যে একটি বৈধ। মিরসরাইয়ে ১৪টির মধ্যে বৈধ ১০টি। সীতাকুণ্ডে চারটির সবগুলোই অবৈধ। বোয়ালখালীতে আটটির মধ্যে সাতটি অবৈধ। পটিয়ায় ৫টির মধ্যে বৈধ একটি। কর্ণফুলী উপজেলায় ১২টির মধ্যে ৭টি বৈধ।
কিন্তু বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে, রাঙ্গুনিয়ায় ৭২টি নয় ১৪২টি ইটভাটা রয়েছে। হাটহাজারীতে ৬০টি নয়, ৯৭টি, সাতকানিয়ায় ৬২টি নয়, ৮০টি ইটভাটা রয়েছে। সবমিলিয়ে ৫২০টি ইটভাটার মধ্যে ৪৭০টিই অবৈধ। আর সংরক্ষিত বন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে সবগুলো ইটভাটা। যেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টন বনের কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট।
পরিবেশ অধিপ্তরের হিসাবে ইটভাটার এই তথ্য পাওয়া গেলেও হিসেবে নেই এমন আরো ১১৫টি ইটভাটার তথ্য রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও বনবিভাগে। যেগুলোতে কোনো রকম বৈধতা ছাড়াই দিনের পর দিন লাখ লাখ ইট প্রস্তুত করা হচ্ছে।
প্রতি বছর এসব ইটভাটায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগ অভিযান চালালেও এ বছর মৌসুমের প্রায় শেষের দিকে এসেও অভিযানের কোনো প্রস্তুতি নেই বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।
অভিযান চালানোর সময় হয়ে উঠছে না বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক।
আর বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া অভিযানের কোনো সুযোগ নেই তাদের। অভিযানের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েও পাচ্ছেন না তারা।
এ সুবাধে নির্বিঘ্নে ইট তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ইটভাটার মালিকরা। এতে ধ্বংস হচ্ছে কৃষিজমি-পাহাড়। উজাড় হচ্ছে বন। ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ ও জলবায়ু। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয় বসতির সাধারণ মানুষ। যার ক্ষতি অপূরণীয়।
অথচ ২০১৩ সালের ৫৯নং আইনে ইট প্রস্তুত, ইটভাটা স্থাপন ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত্র আইনের ৪নং ধারায় লাইসেন্স ছাড়া ইট তৈরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার জেলা প্রশাসকের থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া, কোনো ব্যক্তি ইটভাটায় ইট প্রস্তুত করতে পারবে না।
এ আইনে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া ইট উৎপাদন করলে অনধিক এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে; যা চট্টগ্রামের ইটভাটা মালিকদের কাছে উপেক্ষিত। অবহেলিত প্রশাসনের কাছেও।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, অবহেলিত বা উপেক্ষা নয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এরপর উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সরকারি দপ্তরের নানা উদ্যোগ বাস্তবায়নের ব্যস্ততায় এ বছর ইটভাটার দিকে নজর দেয়া এখনো সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ৫২০টির মতো ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে ৪৭০টি ইটভাটার লাইসেন্স নেই। লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালনায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। লাইসেন্স নেয়া কোনো ইটভাটা সংরক্ষিত বনেও বসাতে পারত না। কৃষি জমি, পাহাড় কেটে ইট তৈরির সুযোগও পেত না।
কারণ, পরিবেশ সম্মত জিগজ্যাগ কিলন, হাইব্রিড হফম্যান কিলন, ভার্টিক্যাল শ্যাফট ব্রিকস কিলন, টানেল কিলন বা অনুরূপ উন্নততর কোনো প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন ছাড়া অন্য কোনো ইটভাটায় লাইসেন্স দেয়া হতো না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, চট্টগ্রামে ৪০৫ ইটভাটার মধ্যে পরিবেশ ছাড়পত্র নিয়েছিলেন ২৬২টি ইটভাটার মালিক। ১৪৩টি ভাটার মালিক ছাড়পত্র নেননি। এরমধ্যে ৮০-১২০ ফুট উচ্চতার চিমনি রয়েছে ২৮৩টি ইটভাটার। এ ধরনের চিমনিধারী ইটভাটাগুলো আধুনিক প্রযুক্তিসম্মত নয় বিধায় পরিবেশ আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবেশ আইনে অনুমোদিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজ্যাগ চিমনি রয়েছে ১১৯টির। উন্নতমানের অত্যাধুনিক হাইব্রিড হফম্যান কিলনধারী ভাটা রয়েছে মাত্র একটি ও অটো টানেল কিলন ভাটা রয়েছে দুটি। পরিবেশ আইনের ৪ উপধারায় এসব ইটভাটাকে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, পরিবেশসম্মত আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা রয়েছে ১২২টি। ২৮৩টি ইটভাটা পরিবেশসম্মত নয়। ২০১৪ সালের ৩০শে জুনের পর ৮০-১২০ ফুট উচ্চতার চিমনিধারী ইটভাটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবানুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে ইটভাটা রয়েছে ৪৫টি। এরমধ্যে বৈধ মাত্র একটি। ফটিকছড়িতে ৫৬টির মধ্যে বৈধ মাত্র দুটি। সাতকানিয়ায় ৬২টির মধ্যে বৈধ ১২টি। হাটহাজারীতে ৬০টির মধ্যে বৈধ ১০টি। রাঙ্গুনিয়ায় ৭২টির মধ্যে বৈধ মাত্র একটি। চন্দনাইশে ৩০টির মধ্যে বৈধ তিনটি। লোহাগাড়ায় ২৫টির মধ্যে বৈধ কোনো ইটভাটা নেই। আনোয়ারায় চারটির মধ্যে বৈধ একটি। বাঁশখালীতে চারটির মধ্যে সবকটিই অবৈধ। সন্দ্বীপে তিনটির মধ্যে একটি বৈধ। মিরসরাইয়ে ১৪টির মধ্যে বৈধ ১০টি। সীতাকুণ্ডে চারটির সবগুলোই অবৈধ। বোয়ালখালীতে আটটির মধ্যে সাতটি অবৈধ। পটিয়ায় ৫টির মধ্যে বৈধ একটি। কর্ণফুলী উপজেলায় ১২টির মধ্যে ৭টি বৈধ।
কিন্তু বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে, রাঙ্গুনিয়ায় ৭২টি নয় ১৪২টি ইটভাটা রয়েছে। হাটহাজারীতে ৬০টি নয়, ৯৭টি, সাতকানিয়ায় ৬২টি নয়, ৮০টি ইটভাটা রয়েছে। সবমিলিয়ে ৫২০টি ইটভাটার মধ্যে ৪৭০টিই অবৈধ। আর সংরক্ষিত বন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে সবগুলো ইটভাটা। যেখানে প্রতিদিন লাখ লাখ টন বনের কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট।
No comments