শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের অঙ্গীকার
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল শুক্রবার প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তাঁর দেশের গভীর সম্পর্ক গড়ার আগ্রহের কথা ঘোষণা করেছেন। দ্বীপ দেশটির ওপর প্রভাব বিস্তারে আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবেই মোদি এ ইচ্ছার কথা জানালেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত বরাবরই ক্ষুদ্র প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা তার নিজের প্রভাববলয়ের মধ্যে রয়েছে বলে বিবেচনা করে থাকে। তবে শ্রীলঙ্কার সাবেক লৌহমানব প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের আমলে দেশটিকে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে দেখেছে ভারত। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর নরেন্দ্র মোদি দ্বিতীয়বারের মতো শ্রীলঙ্কা সফর করছেন। শ্রীলঙ্কার সমর্থন ফিরে পাওয়ার চেষ্টা ও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে চীনের উদ্যোগকে টেক্কা দেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে তাঁর এ সফরকে। শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় বৌদ্ধধর্মীয় এক সম্মেলনে গতকাল মোদি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার একটা বড় সুযোগ পেয়েছি আমরা। এটা এমন এক সুযোগ, যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের অংশীদারত্বে এক বড় অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব।’ মোদি এমন এক সময় এ মন্তব্য করলেন, যখন চীন তার একটি ডুবোজাহাজ শ্রীলঙ্কার এক বন্দরে নোঙর করার অনুরোধ জানিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
সম্মেলনে মোদি দুই দেশের মধ্যকার অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি রক্ষার অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এই সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ও উন্নয়ন সহযোগিতা গভীরতর করতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গতিশীল করার চেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।’ শ্রীলঙ্কায় সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের সময়কালে চীনের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প বিস্তৃত হয়। তিনি অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন লাভে বেইজিংয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিলেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ক্ষমতায় এসে চীনের অর্থায়নে পরিচালিত আগের প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা ও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি গত বৃহস্পতিবার দুই দিনের সফরে শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় পৌঁছান। সে সময় শ্রীলঙ্কার একজন শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, তাঁর দেশের একটি বন্দরে চীনা ডুবোজাহাজ ভেড়ানোর অনুমতি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে কলম্বো বন্দরে চীনের দুটি ডুবোজাহাজ ভিড়লে ক্ষুব্ধ হয়েছিল ভারত।
No comments