গুম বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের আহ্বান
গুম
বন্ধের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের একটি
গ্রুপ। তারা বলেছে, বাংলাদেশে গুমের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধারা বন্ধ করতে
এখনই সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। এমন আহ্বান জানিয়েছে ইউএন ওয়ার্কিং গ্রুপ
অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপেয়ারেন্সেস। জেনেভা থেকে জাতিসংঘের
মানবাধিকারবিষয়ক অফিস অব দ্য হাইকমিশনার-এর ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে
তারা বলেছে, কয়েক বছরের তুলনায় বাংলাদেশে গুম বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন এখানে
কমপক্ষে ৪০ জন মানুষ নিখোঁজ আছে। এ সংখ্যা বাড়ছে। বেশকিছু গুম ও
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য র্যাবকে দায়ী করেছে নিরপেক্ষ সংবাদ
মাধ্যমগুলো। এর মধ্যে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন। বিবৃতিতে বলা
হয়, আইনপ্রয়োগকারী ও নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে কাউকে তুলে নিয়ে
যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গুম হলো একটি
জঘন্য অপরাধ ও মানবাধিকারের মর্যাদার বিরুদ্ধে এক অপরাধ। এর পক্ষে সাফাই
গাওয়ার কোনো যুক্তিই থাকতে পারে না। ওই বিবৃতিতে গত বছর তিনজনকে আলাদাভাবে
তুলে নেয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। বলা হয়, তাদেরকে রাজধানী ঢাকা থেকে তুলে
নেয়া হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ওই তিনজনই বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে
যুক্ত। এ সব ব্যক্তির সবারই পিতা বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে
যুদ্ধাপরাধী হিসেবে শাস্তি ভোগ করেছে। গুম ওইসব ব্যক্তি ও অন্যান্য গুম
হওয়া ব্যক্তিরা কে কোথায়, কি অবস্থায় আছেন তা অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের
কাছে জানতে চেয়েছে জাতিসংঘের ওই ওয়ার্কিং গ্রুপ। এক্ষেত্রে ১৯৯২ সালে
প্রণীত গুম থেকে সব ব্যক্তিকে রক্ষা করাবিষয়ক জাতিসংঘের ঘোষণা বাস্তবায়নে
সরকারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ওয়ার্কিং গ্রুপের এ আহ্বান
অনুমোদন দিয়েছে নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতাবিরোধী জাতিসংঘের স্পেশাল
র্যাপোর্টিউর নিলস মেলজার, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠনের স্বাধীনতার
অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিউর মাইনা কিয়াই, খেয়ালখুশি মতো
মৃত্যুদণ্ড, বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ডবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিউর মিসেস
অ্যাগনেস ক্যালামার্ড, বিচারক ও আইনজীবীর স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল
র্যাপোর্টিউর দিয়েগো গার্সিয়া সায়ান। উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের
নিরপেক্ষ ৫ জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে গঠিত হয় ইউএন ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড
অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপেয়ারেন্সেস। এর চেয়ারম্যান হলেন র্যাপোর্টিউর
মিসেস হোউরিস এসস্লামি (মরক্কো), ভাইস চেয়ার বার্নার্ড দুহাইমি (কানাডা),
সদস্য তাই-উং বাইক কোরিয়া), এরিয়েল দুলিটজকি (আর্জেন্টিনা) ও হেরিকাস
মিকাভিসিয়াস (লিথুয়ানিয়া)।
No comments