তেহরানের ডায়েরি ‘এখানে ইভ টিজিং নেই’ by সিরাজুল ইসলাম
ঢাকার
সঙ্গে তেহরান শহরের তেমন কোন তুলনা চলে না। অনেক কিছুতেই অমিল। এখানকার
সমাজ-সংস্কৃতি এবং সামাজিক নিরাপত্তা ঢাকার থেকে সম্পূর্ণ রকমের ভিন্ন। বলা
হয়- তেহরান হচ্ছে ধনী মানুষের শহর। সত্যিই তাই। তেহরানের পথে-ঘাটে;
অফিস-আদালতে কিংবা দোকান-পাটে তার ছাপচিহ্ন সুস্পষ্ট। সব জায়গায় বেশ
আভিজাত্যের ভাব। সবকিছুই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন; অনেকটা সাজানো গোছানো
পরিপাটি। এ শহরের মানুষের দামি খাবার দাবারের প্রতি যতটা ঝোঁক তার চেয়ে
অনেক বেশি আকর্ষণ রুচিশীল কেনাকাটায়; সাজ-সজ্জায় অনেক বেশি মনোনিবেশ তাদের।
তার ছাপ পড়ে নগরীর রাস্তা-ঘাটে, পার্কে-সব জায়গায়। কেউ শহরের রাস্তা-ঘাট,
ফুটপাত নোংরা করবে না। ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য রাস্তার পাশে পার্কে
দোকানের সামনে সব জায়গায় ছোট ছোট ডাস্টবিন রাখা আছে। মজার বিষয় হচ্ছে- সেসব
ডাস্টবিনে ময়লা জমিয়ে রাখা হয় না এবং তা থেকে কোন দুর্গন্ধও ছড়ায় না।
তেহরান নিয়ে অনেক কিছুই বলা যায়। তবে আজকে এখানকার সামাজিক নিরাপত্তা নিয়েই
মূল কথাটা বলতে চাই। আসলে রাজধানী তেহরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে অবাকই
হতে হয়। এখানে নেই কোন মারামারি, নেই চুরি-ছিনতাই, নেই
গোলাগুলি-অস্ত্রবাজি। প্রতিদিনের পত্রিকায় কিংবা টেলিভিশনের খবরে
খুন-হত্যাকাণ্ডের খবর ‘মাস্ট আইটেম’ হিসেবে থাকে না যা অনেক বড় উন্নত দেশেও
কল্পনা করা যায় না। এখানে মানুষ অনেক বেশি নিরাপদে পথ চলে। সে নিরাপত্তা
দিনে-রাতে একই রকম। রাতের আঁধার নামার সঙ্গে সঙ্গে এখানে ভয় নেমে আসে না।
নিশ্চিন্তে পথ চলা যায় একাকী। ভাবতেও হয় না- ‘কেউ জানতে চাইবে কাছে কী
আছে!’
বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে- এই নিরাপত্তা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য সমান। একজন নারী কিংবা তরুণী যদি একাকী রাতের বেলায় পথে হেঁটে যায় তাকেও আলাদা করে ভাবতে হয় না নিরাপত্তার কথা। পথ চলতে গেলে ডাকাত-ছিনতাইকারীর সামনে পড়ার ভয় নেই। কোন উটকো মাস্তান বা রাস্তার ছেলেরা ‘ইভ টিজ’ করবে না। কেউ পথ আগলে দাঁড়াবে না, কেউ অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি বা শিস দেবে না। এ এক অন্যরকম সমাজ; সামাজিক নিরাপত্তাই যার বড় বৈশিষ্ট্য। সামাজিক এ নিরাপত্তা আসলে ইরানকে নিয়ে গেছে অন্যরকম উচ্চতায়। যেখানে আমেরিকা, বৃটেন কিংবা কানাডার মতো উন্নত ও ধনী দেশে সামান্য সময় বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতে খুন, ডাকাতি, রাহাজানি, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হয় অবলীলায়; সেখানে ইরানে এগুলো কল্পনাই করা যায় না। বিশ্বের বহু দেশ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন ইরানে এমন ধরনের নিরাপত্তা একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার। এ নিরাপত্তার কারণ হতে পারে- দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ধর্মীয় চেতনা এবং উন্নত সভ্যতা।
শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে মহল্লার ভেতরের রাস্তাগুলোর কোথাও বাতি বন্ধ থাকে না। বিদ্যৃতের এই সার্বক্ষণিক উপস্থিতি এখানকার নিরাপত্তাকে করেছে আরো সুসংহত। কখনো তেমন বিদ্যুতও যায় না। হঠাৎ যদি কখনও বিদ্যুৎ যায় তাহলে তা খুবই স্বল্প সময়ের জন্য। হয়তো কোন মেইনটেইন্যান্সের কাজ হচ্ছে; কিছুক্ষণের মধ্যে আবার বিদ্যুৎ হাজির হবে। বিদ্যুতের লোডশেডিং কী জিনিস জানে না ইরানের লোকজন। জানবে কেন? ইরান নিজেই তো এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করে।
বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে- এই নিরাপত্তা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্য সমান। একজন নারী কিংবা তরুণী যদি একাকী রাতের বেলায় পথে হেঁটে যায় তাকেও আলাদা করে ভাবতে হয় না নিরাপত্তার কথা। পথ চলতে গেলে ডাকাত-ছিনতাইকারীর সামনে পড়ার ভয় নেই। কোন উটকো মাস্তান বা রাস্তার ছেলেরা ‘ইভ টিজ’ করবে না। কেউ পথ আগলে দাঁড়াবে না, কেউ অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি বা শিস দেবে না। এ এক অন্যরকম সমাজ; সামাজিক নিরাপত্তাই যার বড় বৈশিষ্ট্য। সামাজিক এ নিরাপত্তা আসলে ইরানকে নিয়ে গেছে অন্যরকম উচ্চতায়। যেখানে আমেরিকা, বৃটেন কিংবা কানাডার মতো উন্নত ও ধনী দেশে সামান্য সময় বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতে খুন, ডাকাতি, রাহাজানি, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হয় অবলীলায়; সেখানে ইরানে এগুলো কল্পনাই করা যায় না। বিশ্বের বহু দেশ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন ইরানে এমন ধরনের নিরাপত্তা একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার। এ নিরাপত্তার কারণ হতে পারে- দীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ধর্মীয় চেতনা এবং উন্নত সভ্যতা।
শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে মহল্লার ভেতরের রাস্তাগুলোর কোথাও বাতি বন্ধ থাকে না। বিদ্যৃতের এই সার্বক্ষণিক উপস্থিতি এখানকার নিরাপত্তাকে করেছে আরো সুসংহত। কখনো তেমন বিদ্যুতও যায় না। হঠাৎ যদি কখনও বিদ্যুৎ যায় তাহলে তা খুবই স্বল্প সময়ের জন্য। হয়তো কোন মেইনটেইন্যান্সের কাজ হচ্ছে; কিছুক্ষণের মধ্যে আবার বিদ্যুৎ হাজির হবে। বিদ্যুতের লোডশেডিং কী জিনিস জানে না ইরানের লোকজন। জানবে কেন? ইরান নিজেই তো এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করে।
No comments