অকৃত্রিম এক ভালবাসার গল্প
মৃত্যুপথযাত্রী
৯৩ বছর বয়সী প্রিয়তমা লরা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন। তার জন্য
অশ্রুপূর্ণ চোখে ‘ইয়্যু’ল নেভার নো’ গানটি গাইছেন ৯২ বছর বয়সী প্রেমিক
হাওয়ার্ড। এ দম্পতির নাতনি এরিন সোলারি তাদের এ ভালবাসাময় মুহূর্ত
ক্যামেরায় ধারণ করে পোস্ট করেছেন নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। ১২ই
সেপ্টেম্বরের পর এখন পর্যন্ত ৩৬ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে আবেগপূর্ণ
ভিডিওটি। এ খবর দিয়েছে ডেইলি মেইল। অনেকের ধারণা, বয়স যত বাড়ে, রোমান্স তত
ধূসর হয়ে যায়। কিন্তু হৃদয়বিদারক ওই ভিডিওটিতে মরণাপন্ন প্রেয়সির জন্য
বৃদ্ধ পুরুষটির গান গাওয়ার দৃশ্য দেখার পর অনেকেই ধারণা পাল্টাতে চাইবেন।
ভাববেন, আমৃত্যুই টিকে থাকে ভালবাসা। ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ভিডিওতে দেখা
যায়, হাওয়ার্ডকে উদ্দেশ্য করে লরা বলেন, ‘ভালবাসি তোমাকে। সবসময় বেসেছি।’
অন্ধ লরা জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাচ্ছেন হাসপাতালে। শয্যাশয়ী স্ত্রীর ওই কথা
শুনে রোজমেরি ক্লুনির গাওয়া ১৯৪০ সালের রোমান্টিক গানটি গেয়ে উঠেন
হাওয়ার্ড। স্নেহার্দ গলায় গাইছিলেন হাওয়ার্ড, ‘ইয়্যু’ল নেভার নো জাস্ট হাউ
মাচ আই মিস ইয়্যু। ইয়্যু’ল নেভার নো জাস্ট হাউ মাচ আই কেয়ার’। এরপর এ
আবেগপূর্ণ দৃশ্য ধারণরত নাতনিকে লরা বলেন, ‘সে (হাওয়ার্ড) খুব মিষ্টি না?’
হাওয়ার্ড তখনও গান গেয়ে যাচ্ছেন আর প্রেয়সীর গালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
গর্বিত লরা এরপর ছোট্ট তরুণীর মতো উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, সে আমাকে
পছন্দ করে! নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে এরিন সবাইকে
জানিয়েছেন ৭৩ বছর ধরে একত্রে থাকা তার দাদা-দাদির দাম্পত্য জীবনের
বিস্তারিত। এরিন জানান, তার দাদু হাওয়ার্ড ‘ইয়্যু’ল নেভার নো’ গানটিই বেছে
নিয়েছিলেন দাদির জন্য। কারণ, হাওয়ার্ড যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াইয়ের
জন্য গিয়েছিলেন, তখন এ গানটিতেই প্রিয়তমকে খুঁজে ফিরতেন লরা। মাঝেমাঝে
পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তারা দুজন একত্রে গানটি গাইতেন। পরস্পরের
উদ্দেশে এ গানটি বহুবার গেয়েছেন তারা। এরিন লিখেছেন, লরা ও হাওয়ার্ডের
বিয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ দুজন পরস্পরের প্রতি নতুন করে অঙ্গীকার
করেন। পুরো পরিবারের জন্য সেদিনও একত্রে গানটি গেয়েছিলেন তারা। এখন লরা
খুবই দুর্বল। কিন্তু এরপরও স্বামীর কানে কানে গানটি গেয়েছেন তিনি।
হাসপাতালের ওই ভিডিওটি শুরুর দিকে লরা বলছিলেন, লাখোবার বা তারও বেশিবার।
এরপরই হাওয়ার্ড তার হাত কোলে নিয়ে গানটি গাইতে থাকেন। নিজের শ্রবণশক্তি
বলতে গেলে হারিয়েই ফেলেছেন হাওয়ার্ড। ভিডিওতে দেখা যায়, প্রেমিকার উদ্দেশে
গানটি গাওয়ার সময় এক হাতে তার হাত ধরে ছিলেন হাওয়ার্ড, অপর হাতে নিজের
অশ্রু মুছছিলেন। অশ্রুসজল চোখেই গানটি শেষ করেন তিনি। একেবারে শেষে
প্রেমিকার ঠোঁটে চুমু দিতে দেখা যায় তাকে। লরাও তাকে ধন্যবাদ জানান গানটি
গাওয়ার জন্য। এরপর বিছানায় লরার পাশে বসতে হাওয়ার্ডকে সাহায্য করেন
পরিবারের এক সদস্য।
এরিন জানান, তার দাদিমা লরা মাকুলার ডিজেনারেশন রোগে ভুগছেন। ছায়া আর আলো ছাড়া কিছুই দেখতে পান না তিনি। কিন্তু এরপরও হাওয়ার্ডের গান গাওয়ার সময় তার দিকে সরাসরি তাকিয়ে থাকতে একটুও কষ্ট হয়নি তার। হয়তো আর বেশি দিন বাঁচবেন না লরা। হাওয়ার্ডও যে খুব বেশি দিন বাঁচবেন, তা-ও নয়। কিন্তু এরিন জানিয়েছেন, আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়েছেন তার দাদিমা। এখন বাসায় গিয়ে জীবনের বাকি কটা দিন কাটাতে পারবেন তিনি। এখনও বেঁচে আছে এ দম্পতি।
এরিন জানান, তার দাদিমা লরা মাকুলার ডিজেনারেশন রোগে ভুগছেন। ছায়া আর আলো ছাড়া কিছুই দেখতে পান না তিনি। কিন্তু এরপরও হাওয়ার্ডের গান গাওয়ার সময় তার দিকে সরাসরি তাকিয়ে থাকতে একটুও কষ্ট হয়নি তার। হয়তো আর বেশি দিন বাঁচবেন না লরা। হাওয়ার্ডও যে খুব বেশি দিন বাঁচবেন, তা-ও নয়। কিন্তু এরিন জানিয়েছেন, আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়েছেন তার দাদিমা। এখন বাসায় গিয়ে জীবনের বাকি কটা দিন কাটাতে পারবেন তিনি। এখনও বেঁচে আছে এ দম্পতি।
No comments