পুলিশের হয়রানি- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে বসার হুমকি
দলীয়
কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে থাকতে না দিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে
অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, আমি উঠে যাওয়ার জন্য এখানে বসিনি। দেশে
শান্তি ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ না নেয়া পর্যন্ত কেউ আমাকে এখান থেকে উঠাতে
পারবে না। আর যদি উঠিয়ে দেয়া হয় তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে
বসবো। সেখান থেকে যদি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয় তখন দেখবো কি করা যায়।
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ফুটপাতে বসে থাকতে কেন অনুমতি লাগবে। আমি তো
কোন মিছিল-মিটিং করছি না। এদিকে সোমবার গভীর রাতে আবারও সাদা পোশাকের পুলিশ
এসে অবস্থানস্থলের আংশিক সরঞ্জাম নিয়ে যায়। এ সময় অবস্থানরতদের সঙ্গে
পুলিশের বাগবিতণ্ডা হয় বলে নেতারা জানিয়েছেন। অপরদিকে গতকাল দুপুরে
অবস্থানস্থলে গিয়ে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন সাবেক
প্রেসিডেন্ট ও বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী। দেশের চলমান
সঙ্কট সমাধানে প্রধান দু’দলের দুই নেত্রীকে উদ্যোগ নিতে গত ২৮শে জানুয়ারি
থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি মতিঝিলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে
অবস্থান করছেন। এর আগে পুলিশ বাধা না দিলেও এখন প্রতি রাতেই পুলিশ গিয়ে
অবস্থান গুটিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করেছে বলে গতকাল অভিযোগ করেছেন দলীয়
নেতাকর্মীরা। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে
পুলিশ গিয়ে অনুমতি নেই এ অভিযোগে অবস্থানস্থল গুটিয়ে নিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে
অবস্থান নিতে বলেন। ধরে নিয়ে যায় লাল মিয়া নামে দলীয় এক কর্মীকে। এ সময়
কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর রাত ১টার কাদের সিদ্দিকী
ঘুমিয়ে পড়লে আবারও পুলিশ আসে অবস্থানস্থলে। তারা দলীয় নেতাকর্মীদের সবকিছু
খুলে ফেলতে বলে। নেতাকর্মীরা অপারগতা জানালে নিজেরাই মঞ্চের কিছু অংশ খুলে
নিয়ে যায়। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী
বলেন, পুলিশ যদি আমাদের লাঠিচার্জও করে তবুও আমরা সংঘাতে জড়াবো না। তারা
নিজেরাই লাঠি ফিরিয়ে নেবে। আমাদের এ কর্মসূচি তাদের পরিবারের জন্যও। এর আগে
গত রোববার রাতে গণসংগীতের মঞ্চ তুলে নিয়ে গেলে গতকাল সকালে আবারও একটি
নতুন মঞ্চ বসায় অবস্থানকারীরা। সেখানে দেশাত্মবোধক গান গাওয়া হচ্ছে।
পুলিশের হয়রানির ব্যাপারে গতকাল কাদের সিদ্দিকী বলেন, এখানে কারোর বিরুদ্ধে
কোন বক্তব্য দেয়া হচ্ছে না। আমি নিজেও আজ পর্যন্ত কোন বক্তব্য দিইনি। এক
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাকে কিছু করতে হবে না। সময়মতো জনগণই সবকিছু
করবে। তিনি বলেন, এ কর্মসূচির প্রতি সাধারণ মানুষের জোরালো সমর্থন রয়েছে।
রিকশাওয়ালারাও এ আন্দোলনকে সহযোগিতা করছেন। কারণ তারাও দেশের এ অবস্থা থেকে
মুক্তি চায়। দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ না নিলে আমাকে ৭ মাসও অবস্থান
করতে হতে পারে। তবে যদি এখান থেকে উঠিয়ে দেয়া হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর
কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বসবো। আর সেখান থেকে যদি ধাক্কা দিয়ে উঠিয়ে দেয়
পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, অনেকে এখানে আসতে পারছেন না। এর
অর্থ এই নয় যে, এ কমসূচির ব্যাপারে তাদের দ্বিমত রয়েছে। দেশের সব মানুষেরই এ
কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা রয়েছে। এদিকে গতকাল দুপুর ২টার দিকে বিকল্প
ধারার প্রেসিডেন্ট ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী অবস্থানস্থলে
গিয়ে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে দেখা করে আসেন। অবস্থান কর্মসূচিতে রয়েছেন কৃষক
শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক
শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, আইন সম্পাদক এডভোকেট মাহবুব হাসান রানা, যুবনেতা
হাবিবুন নবী সোহেল, ছাত্রনেতা রিফাতুল ইসলাম দীপ, কাওসার জামান খান প্রমুখ।
দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সারা দিনই সেখানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ
আসছেন কাদের সিদ্দিকীর এ অবস্থানের প্রতি সংহতি জানাতে।
No comments