ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা by মো. আবদুর রশিদ
৪ ফেব্রুয়ারি সারাবিশ্বে পালিত হচ্ছে মরণব্যাধি ক্যান্সার দিবস। কোষের অনিয়ন্ত্রিত এবং অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। WHO (২০১৪)-এর তথ্যমতে, সারাবিশ্বে ২০১২ সালে এ মরণব্যাধিতে মারা যায় ৮ দশমিক ২ মিলিয়ন লোক, ২০০৮ সালে যা ছিল ৭ দশমিক ৬ মিলিয়ন। WHO আরও বলছে, স্তন ক্যান্সারে প্রতি বছর সাড়ে ১০ কোটি মহিলা আক্রান্ত হচ্ছে, যাদের অধিকাংশের বসবাস তৃতীয় বিশ্বে। ৭০ শতাংশ মৃত্যু হয়ে থাকে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোয়। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ১৩ দশমিক ১ মিলিয়নে দাঁড়াবে।National Institute of Cancer Research and Hospital Bangladesh (NICRH)-এর মতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে দেড় লাখ মানুষ আর আক্রান্ত হচ্ছে দুই লাখ। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ লোক ক্যান্সারে ভুগছে। পুরুষের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সারে ৭৬ ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে ৪১ শতাংশ ভুগছে। আর মহিলাদের ৬৪ শতাংশ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। বিবিএসের তথ্যমতে, দেশে ক্যান্সার এখন মারাত্মক রোগগুলোর মাঝে ষষ্ঠ স্থানে আছে।
ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তবে বেশকিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে_ ধূমপান, মদপান, বয়স বৃদ্ধি, পারিবারিক ইতিহাস, অপুষ্টি, কায়িক পরিশ্রমের অভাব ও অতিরিক্ত ওজন, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি, কিছু রাসায়নিক পদার্থ, কতগুলো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া এবং কিছু হরমোন। গবেষকরা খাবার ও জীবনযাপন ধারার সঙ্গে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। যেমন ধূমপান বা মদপানের সঙ্গে ফুসফুস, মুখ ও কণ্ঠনালি, যকৃৎ বা লিভারের ক্যান্সারের যোগাযোগ আছে। তেমনই পান-সুপারি, জর্দা, মাংস, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ইত্যাদি খাবারের সঙ্গেও ক্যান্সারের যোগসূত্র আছে। যারা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম কম করেন, তাদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রবণতাটা বেশি। সারাবিশ্বে তামাক ব্যবহারের কারণে ক্যান্সারে মোট ২২ শতাংশের মৃত্যু হয়। তামাক ব্যবহারের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যু ঘটে ৭১ শতাংশ মানুষের।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে 'জাতীয় ক্যান্সার প্রতিরোধ কৌশল এবং পরিকল্পনা কার্যক্রম ২০০৯-২০১৫' গ্রহণ করেছে। এ কার্যক্রমের ভিত্তিতে ক্যান্সার চিকিৎসার অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে কেমোথেরাপির ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রাথমিকভাবে এ রোগ নির্ণয়করণে প্রশিক্ষণ প্রদান, রেডিওথেরাপির জন্য পর্যাপ্ত মেশিনের ব্যবস্থা করা, গ্রাম পর্যায়ে স্ক্রিনিং পদ্ধতি এবং ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। সরকার পরিচালিত ড্রাগ কোম্পানিEssential Drug Company Limited কর্তৃক ক্যান্সারের ওষুধ কম মূল্যে সহজলভ্য করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মূলত, এসব চেষ্টার মধ্যেই কার্যক্রম সীমাবদ্ধ আছে। আমাদের সংবিধানের ১৫(ক) এবং ১৮(১)-এ চিকিৎসাসেবা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে যাদের সেবা পাওয়ার কথা তারা পাচ্ছে না। স্বাস্থ্যনীতি ২০১১-এ ক্যান্সারকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এটা প্রতিরোধের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। বিশেষত, সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের সংখ্যা গ্রামাঞ্চলে বেশি থাকলেও স্থানীয় পর্যায়ে যথাযথ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা নেই। শুধু ঢাকা মেডিকেল ও National Institute of Cancer Research and Hospital Bangladesh (NICRH) ছাড়া আর অন্যান্য জায়গায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। এখনও অধিকাংশ রোগীকে উন্নতমানের চিকিৎসা গ্রহণ করার জন্য পাশের দেশ ভারত যেতে হয়। তবে যাদের সামর্থ্য আছে তাদের অধিকাংশ সিঙ্গাপুর, ইংল্যান্ড, আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশে যায়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সারের প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব। এ জন্য দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে স্থানীয় পর্যায়ে এ ব্যাপারে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে। সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তবে বেশকিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে_ ধূমপান, মদপান, বয়স বৃদ্ধি, পারিবারিক ইতিহাস, অপুষ্টি, কায়িক পরিশ্রমের অভাব ও অতিরিক্ত ওজন, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি, কিছু রাসায়নিক পদার্থ, কতগুলো ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া এবং কিছু হরমোন। গবেষকরা খাবার ও জীবনযাপন ধারার সঙ্গে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। যেমন ধূমপান বা মদপানের সঙ্গে ফুসফুস, মুখ ও কণ্ঠনালি, যকৃৎ বা লিভারের ক্যান্সারের যোগাযোগ আছে। তেমনই পান-সুপারি, জর্দা, মাংস, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ইত্যাদি খাবারের সঙ্গেও ক্যান্সারের যোগসূত্র আছে। যারা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম কম করেন, তাদের মধ্যে ক্যান্সারের প্রবণতাটা বেশি। সারাবিশ্বে তামাক ব্যবহারের কারণে ক্যান্সারে মোট ২২ শতাংশের মৃত্যু হয়। তামাক ব্যবহারের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যু ঘটে ৭১ শতাংশ মানুষের।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে 'জাতীয় ক্যান্সার প্রতিরোধ কৌশল এবং পরিকল্পনা কার্যক্রম ২০০৯-২০১৫' গ্রহণ করেছে। এ কার্যক্রমের ভিত্তিতে ক্যান্সার চিকিৎসার অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে কেমোথেরাপির ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রাথমিকভাবে এ রোগ নির্ণয়করণে প্রশিক্ষণ প্রদান, রেডিওথেরাপির জন্য পর্যাপ্ত মেশিনের ব্যবস্থা করা, গ্রাম পর্যায়ে স্ক্রিনিং পদ্ধতি এবং ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। সরকার পরিচালিত ড্রাগ কোম্পানিEssential Drug Company Limited কর্তৃক ক্যান্সারের ওষুধ কম মূল্যে সহজলভ্য করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মূলত, এসব চেষ্টার মধ্যেই কার্যক্রম সীমাবদ্ধ আছে। আমাদের সংবিধানের ১৫(ক) এবং ১৮(১)-এ চিকিৎসাসেবা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধনকে অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে যাদের সেবা পাওয়ার কথা তারা পাচ্ছে না। স্বাস্থ্যনীতি ২০১১-এ ক্যান্সারকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এটা প্রতিরোধের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। বিশেষত, সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের সংখ্যা গ্রামাঞ্চলে বেশি থাকলেও স্থানীয় পর্যায়ে যথাযথ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা নেই। শুধু ঢাকা মেডিকেল ও National Institute of Cancer Research and Hospital Bangladesh (NICRH) ছাড়া আর অন্যান্য জায়গায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। এখনও অধিকাংশ রোগীকে উন্নতমানের চিকিৎসা গ্রহণ করার জন্য পাশের দেশ ভারত যেতে হয়। তবে যাদের সামর্থ্য আছে তাদের অধিকাংশ সিঙ্গাপুর, ইংল্যান্ড, আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশে যায়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকরণ ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যান্সারের প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব। এ জন্য দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে স্থানীয় পর্যায়ে এ ব্যাপারে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে। সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
No comments