বিপুল সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মুক্ত হওয়ার প্রত্যাশা
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ভারত সফর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক বিপুল সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, ‘দীর্ঘ ৫০ বছর পর এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি আমূল বদলে দেবে।’ মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা হয়ে শি জিনপিং ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার ভারতে আসছেন। উপমহাদেশে এই সফরের উল্লেখযোগ্য দিক, তিনি এবার পাকিস্তানে যাচ্ছেন না। এ সিদ্ধান্তের একটা কারণ যদি হয় ভারতকে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া, অন্য কারণ অবশ্যই পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ টালমাটাল অবস্থা। শি জিনপিং প্রথমেই দিল্লি আসছেন না। ভারতে তাঁর প্রথম গন্তব্য গুজরাটের আহমেদাবাদ। যেদিন তিনি এই শহরে আসছেন, ঘটনাচক্রে সেদিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। জন্মদিনের উপহারের মতোই শোনাতে পারে আহমেদাবাদ ও মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে দুটি শিল্প এলাকা স্থাপনে তাঁর ঘোষণার কথা। এই শিল্প এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। চীন এ দেশের অবকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহী। বিশেষ করে বুলেট ট্রেন, রেলপথ, রাস্তা ও বন্দরে। ভারতের মূল আগ্রহ অবশ্য শুধু চীনা বিনিয়োগে নয়।
ভারত চায় চীন সারা বিশ্বে যা কিছু রপ্তানি করে থাকে, তার একটা বড় অংশ এ দেশে তৈরি করুক। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো দুই দেশের বাণিজ্যে ভারসাম্য আনা। ভারত-চীন বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২০১৩-১৪ সালে প্রায় ছয় হাজার ৬০০ কোটি ডলার হলেও এর সিংহভাগই চীনের অনুকূলে। চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সে দেশের ২০টির বেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারেরা আসছেন। ভারতীয় কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তাঁরা প্রায় ৬৫ কোটি ডলারের কেনাবেচায় চুক্তিবদ্ধ হবেন। সব ধরনের সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তারে বন্ধুতা প্রথম অনুঘটক। সে জন্য চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ মেটানো জরুরি। সে জন্য শি জিনপিংয়ের এ সফরের সময়ই সীমান্ত বিরোধ মেটাতে ভারত বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শ্যাম শরণের নাম ঘোষণা করতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সম্প্রতি তাঁর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাইওয়ান ও তিব্বত নিয়ে চীন যেমন সংবেদনশীল এবং ভারত যেমন তার মর্যাদা দেয়, তেমনই অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে ভারতের সংবেদনশীলতাকে মর্যাদা দিতে হবে চীনকে। প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচলের একটি বড় অংশ তার নিজের বলে দাবি করে চীন।
No comments