‘আমাকে বাঁচতে দিন আর মাইরেন না’ by মরিয়ম চম্পা
ওয়ার্ড
১০১, বেড নং ১০। ওয়ার্ডে ঢুকতেই চোখে পড়ে সোহেলকে ঘিরে বসে আছে ১০-১২ জন
বন্ধু। পাশেই করুণ চাহনি আর এক বুক হতাশা নিয়ে আহত ছেলের দিকে তাকিয়ে আছেন
সোহেলের বিধবা মা। হামলায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে
কাতরাচ্ছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি
বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র এপিএম সোহেল। একইসঙ্গে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন
বলে দাবি করেছেন সোহেল ও তার মা। দুপুর ১২.১০ মিনিটে ঢামেকের জরুরি বিভাগের
সামনে জামতলায় সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হয়ে কথা বলতে গিয়ে কান্নায়
ভেঙ্গে পরেন সোহেল। কান্না জড়িত কণ্ঠে সোহেল বলেন, বাবা মৃত মো. নাজির হক
মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন তার মা জমিলা বেগম। ৪ ভাই ১ বোনের মধ্যে
সোহেল ৪র্থ। অন্যের ক্ষেতে কাজ করে চলে তাদের সংসার। মায়ের স্বপ্ন পূরণে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে ভর্তি হয়ে টিউশনি করে কোনোমতে
লেখাপড়া চলে তার। কিন্তু কোটা আন্দোলনে জড়িত থাকার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের
ক্যাম্পাসের সামনে ২৩শে মে নির্মম ভাবে তাকে আহত করে একদল সন্ত্রাসী।
সোহেল তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, আমি যে বেডে শুয়ে আছি। সেই বেডের কয়েক বেড পরই দুইজন আসামিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আসামির নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক পুলিশের ২জন সদস্য। এই কয়দিন বিছানা থেকে উঠতে পারি নাই তেমন। পিঠের দাগগুলো কালো হয়ে আছে। প্রচণ্ড ব্যথা। ওরা মারার সময় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছিলাম। হাতেও ব্যথা। লিখতে কষ্ট হচ্ছে যদিও। ডান পায়ের হাঁটুতে ওরা অনেকগুলো আঘাত করেছিল। পা সোজা/বাঁকা করতে গেলেই হাঁটুর জয়েন্টে টান পড়ে। আমাকে চারপাশে কয়েকজন ধরে রেখেছিল। একজন সেলফি তুলতেছিল এই বলে যে “ভাইয়ের চেহারা খুব সুন্দর, আয় মাইরের আগে সেলফি তুলি।”
নিজে খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি, তাই অন্যের কষ্ট আমার কাছে লাগত। আমি নিজ থেকে খুঁজে খুঁজে আমার মত যারা তাদের টিউশনি, কোচিং,পার্ট টাইম জব ম্যানেজ করে দিতাম। বিনিময়ে কোনদিন ১কাপ চাও খাই নি। অথচ আমাকে মারার পরেও প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে আমাকে নাকি আরো মারবে। মাইর নাকি কম হয়ে গেছে। কোটা আন্দোলনের জন্য দ্বিতীয়বার মারল আমাকে। প্রথমবার থাপ্পড়, লাথি। আর দ্বিতীয়বারতো দেখতেই পাচ্ছেন। ঠোঁটের বাইরে ৮-৯টা সেলাই। ঠোঁটের ভিতরে ২টা সেলাই। আর সারা শরীরে ব্যথাতো আছেই। পিঠের মাইরের দাগগুলো এখনো স্পষ্ট। কোটা অ্যান্দোলনে সমর্থন দিয়ে আমি আমার প্রথম সেমিস্টার ফাইনালটাও মিস করি। আমার পরিবারের সবাই কাঁদছে। আপনারা যারা রাজনীতি করেন, যারা করেন না, যারা আমার বন্ধু, যারা আমার ভাল চান, যারা আমার খারাপ চান, সবার কাছে করজোড়ে মিনতি আমাকে বাঁচতে দিন। আমাকে আর মাইরেন না। আমার বিধবা মায়ের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে দেন। আমার আব্বা নাই। আমিই আমার পরিবারের সব। প্লিজ, আমাকে বাঁচতে দিন। আমাদের নিরাপত্তা দিন। আমরা বাংলাদেশের সন্তান। আমরাও বাঁচতে চাই। বিধবা মায়ের মুখে হাঁসি ফোটাতে চাই। ভাইয়ের কান্না দেখতে চাই না।
সোহেল মানবজমিনকে বলেন, ২৩শে মে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পরপরই ৩-৪ জন ছেলে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ওখানে নিয়ে যায়। সিসি ক্যামেরা থাকায় ফুজি গলির ভেতরে আমাকে নিয়ে যায় এবং মারধর করে। তারা সকলেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট গ্রুপের কর্মী। আমি কোটা আন্দোলন তো আমার জন্য করি নাই। কোটা আন্দোলনটা সবার ছিল। তাহলে ওরা আমাকে মারলো কেন এভাবে। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। এই যে দেখছেন আমার মা ভাই তারা অন্যের জমিতে কাজ করে। আমরা খুব কষ্ট করে এতদূর পর্যন্ত আসছি। আমাদের পরিবারে আমার মতো কেউ নাই যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমার বাবা নাই। আমি একটা এতিম ছেলে। আমাকে মারলো কেন। আমি এর বিচার চাই। সোহেলের মা জমিলা বেগম বলেন, আমার ছেলে সবার ভালোর জন্য আন্দোলনে গেছে। তার পরেও আমার ছেলেটাকে কিসের জন্য মারলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাইছি।
ঢাকা মেডিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ বলেন, তারা চেষ্টা করছে আমাদের আন্দোলনে যারা আছে তাদেরকে যেকোন সময় হেনস্থা করা। এবং তারা সবসময় সুযোগে আছে কখন আমাদেরকে হত্যা করবে। এবং আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করবে। আমরা দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। তাছাড়া ভবিষ্যতে আর কোনো কর্মীর উপর হামলা হলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
সোহেল তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেন, আমি যে বেডে শুয়ে আছি। সেই বেডের কয়েক বেড পরই দুইজন আসামিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আসামির নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক পুলিশের ২জন সদস্য। এই কয়দিন বিছানা থেকে উঠতে পারি নাই তেমন। পিঠের দাগগুলো কালো হয়ে আছে। প্রচণ্ড ব্যথা। ওরা মারার সময় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছিলাম। হাতেও ব্যথা। লিখতে কষ্ট হচ্ছে যদিও। ডান পায়ের হাঁটুতে ওরা অনেকগুলো আঘাত করেছিল। পা সোজা/বাঁকা করতে গেলেই হাঁটুর জয়েন্টে টান পড়ে। আমাকে চারপাশে কয়েকজন ধরে রেখেছিল। একজন সেলফি তুলতেছিল এই বলে যে “ভাইয়ের চেহারা খুব সুন্দর, আয় মাইরের আগে সেলফি তুলি।”
নিজে খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি, তাই অন্যের কষ্ট আমার কাছে লাগত। আমি নিজ থেকে খুঁজে খুঁজে আমার মত যারা তাদের টিউশনি, কোচিং,পার্ট টাইম জব ম্যানেজ করে দিতাম। বিনিময়ে কোনদিন ১কাপ চাও খাই নি। অথচ আমাকে মারার পরেও প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে আমাকে নাকি আরো মারবে। মাইর নাকি কম হয়ে গেছে। কোটা আন্দোলনের জন্য দ্বিতীয়বার মারল আমাকে। প্রথমবার থাপ্পড়, লাথি। আর দ্বিতীয়বারতো দেখতেই পাচ্ছেন। ঠোঁটের বাইরে ৮-৯টা সেলাই। ঠোঁটের ভিতরে ২টা সেলাই। আর সারা শরীরে ব্যথাতো আছেই। পিঠের মাইরের দাগগুলো এখনো স্পষ্ট। কোটা অ্যান্দোলনে সমর্থন দিয়ে আমি আমার প্রথম সেমিস্টার ফাইনালটাও মিস করি। আমার পরিবারের সবাই কাঁদছে। আপনারা যারা রাজনীতি করেন, যারা করেন না, যারা আমার বন্ধু, যারা আমার ভাল চান, যারা আমার খারাপ চান, সবার কাছে করজোড়ে মিনতি আমাকে বাঁচতে দিন। আমাকে আর মাইরেন না। আমার বিধবা মায়ের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে দেন। আমার আব্বা নাই। আমিই আমার পরিবারের সব। প্লিজ, আমাকে বাঁচতে দিন। আমাদের নিরাপত্তা দিন। আমরা বাংলাদেশের সন্তান। আমরাও বাঁচতে চাই। বিধবা মায়ের মুখে হাঁসি ফোটাতে চাই। ভাইয়ের কান্না দেখতে চাই না।
সোহেল মানবজমিনকে বলেন, ২৩শে মে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পরপরই ৩-৪ জন ছেলে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ওখানে নিয়ে যায়। সিসি ক্যামেরা থাকায় ফুজি গলির ভেতরে আমাকে নিয়ে যায় এবং মারধর করে। তারা সকলেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট গ্রুপের কর্মী। আমি কোটা আন্দোলন তো আমার জন্য করি নাই। কোটা আন্দোলনটা সবার ছিল। তাহলে ওরা আমাকে মারলো কেন এভাবে। আমি খুব গরিব ঘরের সন্তান। এই যে দেখছেন আমার মা ভাই তারা অন্যের জমিতে কাজ করে। আমরা খুব কষ্ট করে এতদূর পর্যন্ত আসছি। আমাদের পরিবারে আমার মতো কেউ নাই যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমার বাবা নাই। আমি একটা এতিম ছেলে। আমাকে মারলো কেন। আমি এর বিচার চাই। সোহেলের মা জমিলা বেগম বলেন, আমার ছেলে সবার ভালোর জন্য আন্দোলনে গেছে। তার পরেও আমার ছেলেটাকে কিসের জন্য মারলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাইছি।
ঢাকা মেডিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ বলেন, তারা চেষ্টা করছে আমাদের আন্দোলনে যারা আছে তাদেরকে যেকোন সময় হেনস্থা করা। এবং তারা সবসময় সুযোগে আছে কখন আমাদেরকে হত্যা করবে। এবং আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করবে। আমরা দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। তাছাড়া ভবিষ্যতে আর কোনো কর্মীর উপর হামলা হলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
No comments