অশান্ত বাড্ডা ১০ বছরে ১৪ খুন by আল-আমিন
রাজনৈতিক
বিরোধ, এলাকায় আধিপত্য, ডিশ ব্যবসা, ঝুট ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও গরুর হাটের
ইজারা- এ ধরনের ইস্যুতে বছরের পর বছর রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ঝরছে রক্ত।
কোনোক্রমেই থামছে না খুনোখুনি, সংঘর্ষ। এসব ঘটনায় জেরে গত ১০ বছরে বাড্ডা
এলাকায় ১৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এই ১০ জনের মধ্যে রয়েছেন- রাজনৈতিক দলের
নেতা-কর্মী, ডিস ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও গরুর হাটের ইজারাদার। এলাকায় নিজস্ব
আধিপত্য রাখার জন্য গড়ে উঠেছে একাধিক গ্রুপ। এইসব গ্রুপ নিয়ন্ত্রণে একাধিক
চক্র গড়ে উঠেছে। ২০১৮ সালের এই ৫ মাসে বাড্ডা এলাকায় ৩ জনকে গুলি করে হত্যা
করা হয়। এসব ঘটনায় স্থানীয় বাড্ডা এলাকা বসবাসরত সাধারণ মানুষের মধ্যে
আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছে, যারা এইসব অপকর্ম করছে
তাদের এবং নাটের গুরুদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলে বাড্ডা এলাকায় এই
অপকর্ম থামবে। ডিশ ব্যবসার জেরে গত বুধবার রাতে বাড্ডার আলাতুন্নেসা
স্কুলের জাগরণী ক্লাবের মধ্যে খুন হন ডিশ ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক ওরফে ডিশ
বাবু। এই এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরজমিন ও অনুসন্ধানে এসব তথ্য
জানা গেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) দেবদাস ভট্টাচার্য গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানান, বাড্ডা এলাকায় যতো ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং সস্ত্রাসীদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। বাড্ডা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা যাতে ঠিক থাকে সেজন্য ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাড্ডা এলাকায় বেশির ভাগ খুনাখুনির ঘটনা ঘটছে আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, খাল ভরাট, বালুমহাল দখল, অন্যের জমিতে মাছের ঘের নির্মাণ করে দখলে রাখা, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ আরও অনেক ঘটনার কারণে এই খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে। এলাকায় আধিপত্য রাখার জন্য একাধিক গ্রুপ গড়ে উঠেছে। এইসব গ্রুপের মধ্যে রয়েছে ভাগ্নে ফারুক গ্রুপ মেহেদী গ্রুপ, রায়হান গ্রুপ, ডালিম গ্রুপ, রবিন গ্রুপ, জাহাঙ্গীর গ্রুপ ও আলমগীর গ্রুপ। প্রত্যেকটি গ্রুপের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী রথী-মহারথীদের আশীর্বাদ রয়েছে। সূত্র জানায়, দুর্বৃত্তরা প্রত্যেকটি ঘটনায় গুলি করে প্রতিপক্ষের লোকজনকে হত্যা করেছে। এ কারণে ওই এলাকায় সস্ত্রাসীরা অবৈধভাবে অস্ত্রের মজুত করেছে। তারা সেইসব অবৈধ অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মী এবং যারা চাঁদা দিতে অস্বীকার করছে তাদের তারা গুলি করে হত্যা করছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার টিম এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য মাঠে নেমেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৯ সালের মধ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী নাজিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০১২ সালের ২৯শে ডিসেম্বর দক্ষিণ বাড্ডায় দিনদুপুরে গুলি ও বোমা ছুড়ে হত্যা করা হয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মামুনূর রশীদ মামুনকে। ২০১৩ সালের ৩০শে নভেম্বরে বাড্ডার হোসেন মার্কেটের পিছনে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা দুই নির্মাণ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনার দুই দিন পর মনির নামে সন্দেহভাজন একজন আসামি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩রা মে বাড্ডা জাগরণী ক্লাবের ভিতর বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন রাহিনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালের ১৩ই আগস্ট রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানির পাম্পের একটি কক্ষে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন বাড্ডার ছয় নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা, ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ মানিক, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামা এবং যুবলীগ নেতা আবদুস সালাম।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৮ই জানুয়ারি আনন্দনগরে দুই গ্রুপের গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আমির হোসেন (৩৫) এক যুবক মারা যায়। ২০১৫ সালের ১৬ই জানুয়ারি বাড্ডায় দুলাল হোসেন নামের এক পুলিশ সোর্সকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৮ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি দিনে দুপুরে মেরুল বাড্ডার মাছের আড়তে ঢুকে রবিন গ্রুপের নির্দেশনায় আবুল বাশার নামে আরেক সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০১৮ সালের ২২শে এপ্রিল বাড্ডার বেরাইদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের জাহাঙ্গীর আলমের ছোটভাই কামরুজ্জামান দুখু প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন। চলতি বছরের ৯ই মে জাগরণী ক্লাবের ভেতর ঢুকে সস্ত্রাসীরা ডিশ ব্যবসায়ী বাবুকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও এর আগের ৩ বছরে সাইদুর, মাসুম, আলাউল ইসলাম ওরফে আলা, রুবেল ও তাইজুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ওসমান গনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাড্ডা থানার এক আওয়ামী লীগের নেতা জানান, এলাকায় বিভিন্ন গ্রুপের পেছনে একজন প্রভাবশালী হাত রয়েছে। পুরো বাড্ডা এলাকায় আধিপত্য রাখতে তারা ওইসব গ্রুপকে নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকের কাছে অবৈধ অস্ত্রের মজুত রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা বাড্ডা জাগরণী সংসদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জানান, আমরা এলাকায় বসবাস করি। এলাকায় শান্তি বিরাজ করুক- এটা চাই। বাড্ডায় এলাকায় গত ১৫ বছরে নানা কারণে অশান্তি বিরাজ করছে। এতে এলাকার লোকজন আতঙ্কে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এলাকায় অবৈধ অস্ত্র যাদের কাছে রয়েছে তাদের চিহ্নিত করার জন্য মাঠে কাজ করছে গোয়েন্দারা। এছাড়াও গ্রুপ ভিত্তিক কারা এলাকায় অপকর্ম করছে তাদের ধরতে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
বিষয়টি জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) দেবদাস ভট্টাচার্য গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানান, বাড্ডা এলাকায় যতো ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী এবং সস্ত্রাসীদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। বাড্ডা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা যাতে ঠিক থাকে সেজন্য ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাড্ডা এলাকায় বেশির ভাগ খুনাখুনির ঘটনা ঘটছে আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, খাল ভরাট, বালুমহাল দখল, অন্যের জমিতে মাছের ঘের নির্মাণ করে দখলে রাখা, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণসহ আরও অনেক ঘটনার কারণে এই খুনোখুনির ঘটনা ঘটছে। এলাকায় আধিপত্য রাখার জন্য একাধিক গ্রুপ গড়ে উঠেছে। এইসব গ্রুপের মধ্যে রয়েছে ভাগ্নে ফারুক গ্রুপ মেহেদী গ্রুপ, রায়হান গ্রুপ, ডালিম গ্রুপ, রবিন গ্রুপ, জাহাঙ্গীর গ্রুপ ও আলমগীর গ্রুপ। প্রত্যেকটি গ্রুপের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী রথী-মহারথীদের আশীর্বাদ রয়েছে। সূত্র জানায়, দুর্বৃত্তরা প্রত্যেকটি ঘটনায় গুলি করে প্রতিপক্ষের লোকজনকে হত্যা করেছে। এ কারণে ওই এলাকায় সস্ত্রাসীরা অবৈধভাবে অস্ত্রের মজুত করেছে। তারা সেইসব অবৈধ অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মী এবং যারা চাঁদা দিতে অস্বীকার করছে তাদের তারা গুলি করে হত্যা করছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার টিম এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য মাঠে নেমেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৯ সালের মধ্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী নাজিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০১২ সালের ২৯শে ডিসেম্বর দক্ষিণ বাড্ডায় দিনদুপুরে গুলি ও বোমা ছুড়ে হত্যা করা হয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মামুনূর রশীদ মামুনকে। ২০১৩ সালের ৩০শে নভেম্বরে বাড্ডার হোসেন মার্কেটের পিছনে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা দুই নির্মাণ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনার দুই দিন পর মনির নামে সন্দেহভাজন একজন আসামি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩রা মে বাড্ডা জাগরণী ক্লাবের ভিতর বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন রাহিনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালের ১৩ই আগস্ট রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানির পাম্পের একটি কক্ষে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন বাড্ডার ছয় নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা, ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ মানিক, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামা এবং যুবলীগ নেতা আবদুস সালাম।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৮ই জানুয়ারি আনন্দনগরে দুই গ্রুপের গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আমির হোসেন (৩৫) এক যুবক মারা যায়। ২০১৫ সালের ১৬ই জানুয়ারি বাড্ডায় দুলাল হোসেন নামের এক পুলিশ সোর্সকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৮ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি দিনে দুপুরে মেরুল বাড্ডার মাছের আড়তে ঢুকে রবিন গ্রুপের নির্দেশনায় আবুল বাশার নামে আরেক সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০১৮ সালের ২২শে এপ্রিল বাড্ডার বেরাইদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের জাহাঙ্গীর আলমের ছোটভাই কামরুজ্জামান দুখু প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন। চলতি বছরের ৯ই মে জাগরণী ক্লাবের ভেতর ঢুকে সস্ত্রাসীরা ডিশ ব্যবসায়ী বাবুকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও এর আগের ৩ বছরে সাইদুর, মাসুম, আলাউল ইসলাম ওরফে আলা, রুবেল ও তাইজুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ওসমান গনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাড্ডা থানার এক আওয়ামী লীগের নেতা জানান, এলাকায় বিভিন্ন গ্রুপের পেছনে একজন প্রভাবশালী হাত রয়েছে। পুরো বাড্ডা এলাকায় আধিপত্য রাখতে তারা ওইসব গ্রুপকে নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকের কাছে অবৈধ অস্ত্রের মজুত রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা বাড্ডা জাগরণী সংসদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জানান, আমরা এলাকায় বসবাস করি। এলাকায় শান্তি বিরাজ করুক- এটা চাই। বাড্ডায় এলাকায় গত ১৫ বছরে নানা কারণে অশান্তি বিরাজ করছে। এতে এলাকার লোকজন আতঙ্কে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এলাকায় অবৈধ অস্ত্র যাদের কাছে রয়েছে তাদের চিহ্নিত করার জন্য মাঠে কাজ করছে গোয়েন্দারা। এছাড়াও গ্রুপ ভিত্তিক কারা এলাকায় অপকর্ম করছে তাদের ধরতে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
No comments