আবদুস ছালামের ভয়ঙ্কর খাদ by জাবেদ রহিম বিজন
কোনো
প্রলয় হয়নি। হয়নি ভূমিকম্প। কিন্তু চরম সর্বনাশ হয়েছে আলী মিয়ার। তার ভিটে
বাড়ি বিলীন হচ্ছে ভয়ঙ্কর এক খাদে। আর এই খাদ পরিকল্পিত। আলীর অভিযোগ
এলাকার প্রভাবশালী আবদুস ছালাম তার ভিটেবাড়ি গ্রাসে এই খাদ করেছেন। এই খাদে
ইতিমধ্যে বিলীন হয়েছে অনেক গাছপালা, দুটি ঘর। মাটি ফাটলের রেখা ভিটেবাড়ির
অনেক ভেতরে দৃশ্যমান। গোটা বাড়ি বিলীন হওয়া যে সময়ের ব্যাপার মাত্র, তা যে
কেউ বুঝতে পারবেন ওই বাড়িতে গেলে। প্রতিদিন এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করছেন এলাকার
শত শত মানুষ। করছেন আফসোস। আলী আর তার ভাইয়েরা ছুটছেন এর-ওর কাছে। সহায়তা
মিলছে না তাদের। আবদুস ছালামের ক্ষমতার কাছে অসহায় এই পরিবারটি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের তেলিনগরের এই ঘটনা হয়ে
উঠেছে যেন অমানবিকতার আরেক উদহারণ। আবদুস ছালাম সদর উপজেলার তালশহর পূর্ব
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তেলিনগর গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে মো.
আলী মিয়া গত ২৫শে মার্চ সদর মডেল থানায় আবদুস ছালামের বিরুদ্ধে জোর করে তার
জায়গা থেকে মাটি কেটে নেয়ার একটি অভিযোগ দেন। ২০ ফুট গভীর করে ওই জায়গা
থেকে ৩ লাখ টাকার মাটি কেটে নেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। আবদুস ছালাম
মাটি কেটে নেয়ার এই জায়গা তার নিজের বলেই দাবি করছেন। এমনকি আলী মিয়া ও তার
অন্য ভাইদের বসতবাড়ির মালিকানাও তার বলে দাবি করেন। তবে আলী মিয়া বলছেন,
যে জায়গা থেকে মাটি কেটে খাদ করা হয়েছে সেটি তাদের নিজের জায়গা। পৈত্রিক
ওয়ারিশ ও ক্রয়সূত্রে তারা এসব জায়গার মালিক। ১৯৯৮ সালের ২১শে জুন তিনি ও
তার অন্যান্য ভাইয়েরা আবদুস ছালামের মা রাবিয়া খাতুনের কাছ থেকে ক্রয় করেন ৫
শতক জায়গা। আবদুল ছালামের উপস্থিতিতেই ওই জায়গা ক্রয়ের দলিল রেজিস্ট্রি
হয়। জায়গার নামজারিও হয় তাদের নামে। জায়গা ক্রয়ের পর থেকেই ঘরবাড়ি নির্মাণ
করে তারা সেখানে বসবাস করছেন। এ বছরের এপ্রিলে আবদুল ছালাম তাদের নামজারী ও
জমা খারিজের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর কাছে আপিল
মোকদ্দমা করেন। তখনই তারা জানতে পারেন তাদের কাছে বিক্রির দু-বছর আগে ’৯৬
সালের ২৫শে এপ্রিল এই জায়গাটি রাবেয়া খাতুন তার ছেলে আবদুস ছালামের নামে
দলিল করে দিয়েছেন। এরপরই তারা রাবেয়া খাতুন ও তার ছেলে আবদুস ছালামের
বিরুদ্ধে সদর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারণার মামলা করেন।
অন্যদিকে আবদুস ছালাম আলী মিয়া ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে গত ২২শে এপ্রিল সদর
মডেল থানায় একটি মামলা করেন। যাতে তেলিনগর মৌজার ৭০৭২ দাগের ১৫ শতকের মধ্যে
৫.৫২ শতাংশ এবং সাবেক ২১২২ দাগের আন্দরে ২ শতক ৩৩ পয়েন্ট জায়গা বিক্রি করা
বাবদ ৯ লাখ টাকা তারা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
একটি রশিদপত্রও প্রমাণ হিসেবে পেশ করেন আবদুস ছালাম। এই মামলার অভিযোগে বলা হয় ৩ মাসের মধ্যে সাফ কবলা দলিল করে দেবেন বলে আলী মিয়া তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু তারা দলিল না করে দিয়ে এই টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করেন ছালাম। কিন্তু আলী মিয়া ও তার ভাইদের নামে করা রশিদপত্রটি ভুয়া বলে দাবি করেন আলী মিয়া। তিনি বলেন, একটি সাদা কাগজে আবদুস ছালাম স্ট্যাম্প লাগিয়ে এটি নিজেই তৈরি করেছেন। এতে তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। তার অন্য ভাইয়েরা লেখাপড়া না জানলেও সেখানে তাদের সবার স্বাক্ষর রয়েছে। এই রশিদপত্র ভুয়া বলে আদালতকে অবহিত করলে আদালত এর বিশেষজ্ঞ মতামত জানতে চেয়েছেন বলে জানান আলী। সরজমিন ওই গ্রামে গেলে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান শত শত মানুষ। তাদের অনেকেই জানান দীর্ঘদিন ধরেই আবদুস ছালাম আর আলী মিয়ার মধ্যে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছে। ২০০৮ সাল থেকে তেলিনগর মৌজার বিভিন্ন দাগে জায়গার মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা-মোকদ্দমা শুরু হয় এ দু-পক্ষের। এর মধ্যেই ন্যায্য বিচার পেতে এলাকার চেয়ারম্যান আর সর্দার-মাতব্বরদের কাছে ছুটে যান আলী মিয়া। কিন্তু প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ সাড়া দেননি তার আবেদনে। বিষয়টি মীমাংসায় হার মানেন সবাই। বাড়ি ভাঙন এখন দিশাহারা করে তুলেছে তাদের। আবদুস ছালাম বলেন, এই সম্পত্তি তার বাবা ও মায়ের নামে কেনা। নিজের জায়গাতেই আমি পুকুর করেছি। নিজ বাড়িতে বসে কথা বলার সময় প্রভাবশালী অনেকেই যে তার ঘনিষ্ঠ সেটাও জানাতে থাকেন। প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে তার বড় সাইজের একটি ছবি এনে দেখান। লেমিন্যাটিং করে রাখা একজনের ভিজিটিং কার্ড এনেও দেখান। থানার ওসি সব জানে বলেও জানান। তালশহর পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক ওছমান বলেন, এখানে একটা ঘটনা আছে- এটা সত্য।
একটি রশিদপত্রও প্রমাণ হিসেবে পেশ করেন আবদুস ছালাম। এই মামলার অভিযোগে বলা হয় ৩ মাসের মধ্যে সাফ কবলা দলিল করে দেবেন বলে আলী মিয়া তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু তারা দলিল না করে দিয়ে এই টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করেন ছালাম। কিন্তু আলী মিয়া ও তার ভাইদের নামে করা রশিদপত্রটি ভুয়া বলে দাবি করেন আলী মিয়া। তিনি বলেন, একটি সাদা কাগজে আবদুস ছালাম স্ট্যাম্প লাগিয়ে এটি নিজেই তৈরি করেছেন। এতে তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। তার অন্য ভাইয়েরা লেখাপড়া না জানলেও সেখানে তাদের সবার স্বাক্ষর রয়েছে। এই রশিদপত্র ভুয়া বলে আদালতকে অবহিত করলে আদালত এর বিশেষজ্ঞ মতামত জানতে চেয়েছেন বলে জানান আলী। সরজমিন ওই গ্রামে গেলে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান শত শত মানুষ। তাদের অনেকেই জানান দীর্ঘদিন ধরেই আবদুস ছালাম আর আলী মিয়ার মধ্যে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছে। ২০০৮ সাল থেকে তেলিনগর মৌজার বিভিন্ন দাগে জায়গার মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা-মোকদ্দমা শুরু হয় এ দু-পক্ষের। এর মধ্যেই ন্যায্য বিচার পেতে এলাকার চেয়ারম্যান আর সর্দার-মাতব্বরদের কাছে ছুটে যান আলী মিয়া। কিন্তু প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ সাড়া দেননি তার আবেদনে। বিষয়টি মীমাংসায় হার মানেন সবাই। বাড়ি ভাঙন এখন দিশাহারা করে তুলেছে তাদের। আবদুস ছালাম বলেন, এই সম্পত্তি তার বাবা ও মায়ের নামে কেনা। নিজের জায়গাতেই আমি পুকুর করেছি। নিজ বাড়িতে বসে কথা বলার সময় প্রভাবশালী অনেকেই যে তার ঘনিষ্ঠ সেটাও জানাতে থাকেন। প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে তার বড় সাইজের একটি ছবি এনে দেখান। লেমিন্যাটিং করে রাখা একজনের ভিজিটিং কার্ড এনেও দেখান। থানার ওসি সব জানে বলেও জানান। তালশহর পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক ওছমান বলেন, এখানে একটা ঘটনা আছে- এটা সত্য।
No comments