পাথরখেকোদের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া
ক্ষমতাসীন
রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় যাঁরা নানা ধরনের অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত রয়েছেন
বলে অভিযোগ পাওয়া যায়, সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক লিয়াকত আলী তাঁদের একজন। তাঁর নানা অপকর্মের একটা হচ্ছে
জৈন্তাপুরের শ্রীপুর পাথর কোয়ারির পাথর লুট করা। তাঁর এক বড়সড় বাহিনী আছে,
যারা ওই এলাকায় ‘লিয়াকত বাহিনী’ নামে পরিচিত। গত ৩ ডিসেম্বর শ্রীপুর পাথর
কোয়ারির দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হলে এই লিয়াকত বাহিনীর
৭৭ জন সদস্যের বিরুদ্ধে যে হত্যা মামলা করা হয়, তার প্রধান আসামি লিয়াকত
আলী। এই ‘পাথরখেকো’ সন্ত্রাসী চক্রের সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার সিলেটের আদালত
চত্বরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন, কারণ সাংবাদিকেরা তাঁদের ছবি
তুলতে গিয়েছিলেন। যমুনা টেলিভিশনের সিলেট ব্যুরোর চিত্রসাংবাদিক নিরানন্দ
পাল ও দৈনিক যুগান্তর-এর ফটোসাংবাদিক মামুন হাসানের ওপর হামলার প্রতিবাদ
জানিয়েছে সিলেটের টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন ইলেকট্রনিক মিডিয়া
জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (ইমজা)।
তারা জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদের বিরুদ্ধে
‘সাংগঠনিক ব্যবস্থা’ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা
প্রকাশ করে মানববন্ধন করেছে সিলেটের বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন। ‘সাংগঠনিক
ব্যবস্থা’ নেওয়ার দাবিটা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রতি। সাংবাদিকদের ওপর
হামলা চালানোর আগেই তো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের দেখা উচিত ছিল সন্ত্রাসী
বাহিনী পোষেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে কোয়ারির পাথর তোলার মতো অবৈধ
কাজে লিপ্ত রয়েছেন এবং ওই অবৈধ তৎপরতার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে
লিপ্ত হয়ে খুনোখুনির নেতৃত্ব দিতে পারেন—এমন একজন ব্যক্তি আওয়ামী লীগের
একটি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদে কীভাবে থাকেন? কেন্দ্রীয় আওয়ামী
লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দীন সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা
জানিয়েছেন, কিন্তু লিয়াকত আলী ও ফয়েজ আহমদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক
ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা মনে করি, লিয়াকত আলী-ফয়েজ আহমদদের মতো
ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক দলে স্থান দেওয়া উচিত নয়। ক্ষমতাসীন দলের জন্য
এটা বেশি প্রযোজ্য; কারণ, এঁদের অন্যায়-অপকর্মের জন্য দল ও সরকারের
ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
No comments