চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ-যুবলীগের লাগাম টানা যাচ্ছে না by ওমর ফারুক
চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমন গ্রুপের সংঘর্ষকালে |
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের ইমেজ সঙ্কটের আশঙ্কা
হঠাৎ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মকাণ্ডে
চট্টগ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের
অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেদের মধ্যে মারামারি ও পুলিশকে পেটানো, চট্টগ্রাম
প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের কারণে
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সদর
দফতরে (সিআরবি) কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও
যুবলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় বন্দুকযুদ্ধ, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ
কেন্দ্রে ঢুকে নগর ছাত্রলীগ নেতার প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক পরীক্ষার
প্রশ্নপত্রের ছবি তোলা এবং কলেজ শিক্ষক, ম্যাজিস্ট্রেটকে ও পুলিশকে
লাঞ্ছনা, নগরীর মুরাদপুর এলাকায় ফুটপাথ দখল নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগে সংঘর্ষের
কারণে ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠন দু’টির ইমেজ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
টেন্ডারবাজি, হল দখল, চাঁদাবাজি, ফুটপাথ দখল, খুন-অপহরণ, মারামারি এমন কিছু
নেই তারা করছে না। সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে এসব
কাজ করায় তাদের লাগাম টানা যাচ্ছে না।
প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা ও
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ ছাত্রলীগ-যুবলীগের এহেন কর্মকাণ্ডে সরকারি দল
আওয়ামী লীগ ইমেজ সঙ্কটে পড়তে পারে এ শঙ্কায় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের
কাছে সম্প্রতি গোপন প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্ম রুখতে
পরামর্শ দেয়া হয়।
সংগঠন দু’টির সাবেক একাধিক নেতা জানান, দলীয় স্বার্থকে বাদ দিয়ে নেতাকর্মীরা ব্যবসায়িক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ায় ব্যবসায়িক বিরোধ রাজনৈতিক বিরোধের আকার ধারণ করছে। এ ছাড়া নেতৃত্বে সঙ্কটের কারণেই ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন দু’টিতে অস্থিরতা ও টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু (সিক্সটি নাইন) এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বীর (বিজয়) পরে মধ্যে প্রায় সময় চলছে সংঘর্ষ, সঙ্ঘাত। এ ছাড়া উভয় দলের ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে চবির টেন্ডারবাণিজ্য।
সর্বশেষ গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিবদমান দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে হাটহাজারী থানার ওসি ইসমাইল হোসাইন ও তিন পুলিশ সদস্য এবং ২৬ ছাত্রলীগ ক্যাডারসহ ৩০ জন আহত হন। প্রায় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেটসহ টিয়ার শেল নিপে করে। সংঘর্ষের পর পুলিশ রাতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্্র করে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপের মধ্যে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে এমন এক সংঘর্ষে মারা যান তাপস নামে এক ছাত্র। চবিতে ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারী গ্রুপ তাপসকে তাদের কর্মী বলে দাবি করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের থামানো যাচ্ছে না। তারা বারবার প্রশাসনকে আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি। এখন থেকে ছাত্র নামধারী কোনো দুষ্কৃতকারীকে ছাড় দেয়া হবে না।
গত সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ৩১ অক্টোবর রাত ১টায় ছাত্রলীগের মেহেদী হাসান গ্রুপের কর্মী হৃদয়কে মারধর করে মুসলেম উদ্দিন গ্রুপের কর্মী হাবিব ও রুদ্র। এরপর উভয় গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা চলে। সর্বশেষ গতকাল ২ নভেম্বর বেলা ১টায় মেহেদী হাসান গ্রুপের তিনজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ চুয়েট বন্ধ ঘোষণা করে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতরে (সিআরবি) কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপের ক্যাডাররা সম্প্রতি কয়েক দফা পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। গত মঙ্গলবার পুলিশ ওই এলাকা থেকে ৪০ ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডারকে আটক করে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সিআরবি এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপে গুলিবিনিময়ের ঘটনায় দুইজন নিহত হয়। কেন্দ্্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত উপ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর এবং কেন্দ্্রীয় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারীরা প্রতিদিন সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এতে রক্ত ঝরছে উভয়পক্ষের কর্মীদের।
দখল-বেদখল নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে নগরীর নাসিরাবাদে। গত ৩১ অক্টোবর সংঘর্ষ চলাকালে শতাধিক ভাসমান দোকান ভাঙচুর করা হয়। নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজকেন্দ্্িরক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দু’টি বিবদমান গ্রুপ ফুটপাথের ওপর অবৈধ দোকান বসিয়ে সেখান থেকে ভাড়া আদায় করে বলে অভিযোগ আছে।
রোববার চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় দুগ্রুপের সংঘর্ষকালে গুলি ছুড়ছে (গোল চিহ্নিত) এক জন |
সংগঠন দু’টির সাবেক একাধিক নেতা জানান, দলীয় স্বার্থকে বাদ দিয়ে নেতাকর্মীরা ব্যবসায়িক স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ায় ব্যবসায়িক বিরোধ রাজনৈতিক বিরোধের আকার ধারণ করছে। এ ছাড়া নেতৃত্বে সঙ্কটের কারণেই ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন দু’টিতে অস্থিরতা ও টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু (সিক্সটি নাইন) এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বীর (বিজয়) পরে মধ্যে প্রায় সময় চলছে সংঘর্ষ, সঙ্ঘাত। এ ছাড়া উভয় দলের ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে চবির টেন্ডারবাণিজ্য।
সর্বশেষ গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিবদমান দুই গ্রুপ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে হাটহাজারী থানার ওসি ইসমাইল হোসাইন ও তিন পুলিশ সদস্য এবং ২৬ ছাত্রলীগ ক্যাডারসহ ৩০ জন আহত হন। প্রায় ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেটসহ টিয়ার শেল নিপে করে। সংঘর্ষের পর পুলিশ রাতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্্র করে ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপের মধ্যে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে এমন এক সংঘর্ষে মারা যান তাপস নামে এক ছাত্র। চবিতে ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুসারী গ্রুপ তাপসকে তাদের কর্মী বলে দাবি করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের থামানো যাচ্ছে না। তারা বারবার প্রশাসনকে আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি। এখন থেকে ছাত্র নামধারী কোনো দুষ্কৃতকারীকে ছাড় দেয়া হবে না।
গত সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ৩১ অক্টোবর রাত ১টায় ছাত্রলীগের মেহেদী হাসান গ্রুপের কর্মী হৃদয়কে মারধর করে মুসলেম উদ্দিন গ্রুপের কর্মী হাবিব ও রুদ্র। এরপর উভয় গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা চলে। সর্বশেষ গতকাল ২ নভেম্বর বেলা ১টায় মেহেদী হাসান গ্রুপের তিনজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ চুয়েট বন্ধ ঘোষণা করে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় সদর দফতরে (সিআরবি) কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপের ক্যাডাররা সম্প্রতি কয়েক দফা পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। গত মঙ্গলবার পুলিশ ওই এলাকা থেকে ৪০ ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডারকে আটক করে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সিআরবি এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপে গুলিবিনিময়ের ঘটনায় দুইজন নিহত হয়। কেন্দ্্রীয় যুবলীগের বহিষ্কৃত উপ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর এবং কেন্দ্্রীয় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা সাইফুল আলম লিমনের অনুসারীরা প্রতিদিন সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এতে রক্ত ঝরছে উভয়পক্ষের কর্মীদের।
দখল-বেদখল নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে নগরীর নাসিরাবাদে। গত ৩১ অক্টোবর সংঘর্ষ চলাকালে শতাধিক ভাসমান দোকান ভাঙচুর করা হয়। নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজকেন্দ্্িরক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দু’টি বিবদমান গ্রুপ ফুটপাথের ওপর অবৈধ দোকান বসিয়ে সেখান থেকে ভাড়া আদায় করে বলে অভিযোগ আছে।
No comments