ইসরায়েল আরব যুদ্ধ- গাজার ফাঁদ by শ্লোমো বেন-অ্যামি
ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে সুবিধাজনক অবস্থান নিয়েছে—এটা একরকম অসম যুদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্যে বিগত কয়েক বছরে যেসব দ্বন্দ্ব-সংঘাত দেখা যাচ্ছে, সেগুলোও এ তরিকার অন্তর্ভুক্ত। এসব যুদ্ধে জয় যেন সোনার হরিণ।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী যতই সফল হোক বা তার ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী যন্ত্রের ক্ষমতা যতই সুচারু হোক না কেন, ইসরায়েল চাইলেই হামাস থাকবে আর না চাইলে থাকবে না— গাজা ধ্বংস হয়ে গেলেও এ সমীকরণের কোনো ব্যত্যয় হবে না। এর বিকল্প হতে পারে এ রকম: জিহাদি নৈরাজ্যের খপ্পরে পড়ে গাজা ফিলিস্তিনের সোমালিয়ায় পরিণত হতে পারে। এরূপ আশঙ্কার কথা ভাবাও পীড়াদায়ক।
হামাসের নেতা খালেদ মেশাল যতই আস্ফালন করুন না কেন, এবারের হামলায় হামাস যে বড় রকম একটা ধাক্কা খেয়েছে, সেটা লুকানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তবে ইসরায়েল যতক্ষণ আন্তর্জাতিক মতামত উপেক্ষা করে গাজা দখল না করছে বা হামাসের কোমর ভেঙে দিচ্ছে, ততক্ষণ কিন্তু হামাস এই চলমান যুদ্ধে নিজেদের বিজয় দাবি করতেই পারে—হাজার হোক, ইসরায়েলের এই বিশাল সেনাবাহিনীর মুখে টিকে থাকাও একরকম জয়।
এরূপ অসম যুদ্ধে অধিক শক্তিশালী দেশগুলো কিছুটা বিপাকেই পড়ে যায়, তাদের আসলে লক্ষ্য কী, সেটাই তারা লোককে বুঝিয়ে উঠতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ইসরায়েল কিছু বেসামরিক ফিলিস্তিনির জীবনের বিনিময়ে ‘শান্তি’ অর্জন করতে চায়। তারা ভাবছে, এতে হয়তো আন্তর্জাতিক সমালোচনার রাশ টেনে ধরা যাবে। তার পরও এই ‘শান্তি’ কোনো কৌশলগত লক্ষ্য নয়, ইসরায়েল যেভাবে এর পেছনে ছুটছে, সেটাও সমর্থনযোগ্য নয়—প্রতি দুই বা তিন বছর পর পর যুদ্ধ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইসরায়েল যে শান্তি চায়, সেটা তারা অর্জন করে ফেললে ভবিষ্যতে গাজাবিষয়ক তাদের কী অবস্থান হবে। আর ফিলিস্তিনের সমস্যা নিয়েই বা তারা কী করতে চায়, যেখানে গাজা হচ্ছে এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ফলে, এসব অসম যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি হীনবল হয়ে পড়ছে। এগুলো হচ্ছে মূলত রাজনৈতিক যুদ্ধ, সামরিক পন্থায় এসব যুদ্ধ জয় করা যাবে না। আসলে হুমকির মাত্রা ও তার প্রতি ইসরায়েলের অসম (অধিক) প্রতিক্রিয়ার কারণে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি কৌশলগতভাবে মার খেয়ে যায়। এদিকে পশ্চিম তীরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও হামাসের লক্ষ্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। ফলে, ইসরায়েলের পক্ষে এখন আর এ দ্বন্দ্বের রাজনৈতিক তাৎপর্য এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আব্বাসের কূটনীতিতে হামাস এত দিন প্রতিপক্ষ হলেও তারা অনেকটা ব্রাত্যই ছিল। আর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাসংগ্রামে হামাসই এখন প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভাবছেন, পারমাণবিক শক্তিধর ইরানই হচ্ছে দেশটির প্রধান হুমকি, কিন্তু এটা ঠিক নয়। মূল সমস্যা রয়েছে দেশের ভেতরেই: ফিলিস্তিন সমস্যার কারণে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি হ্রাস। সময় সময় ইসরায়েল ফিলিস্তিনের সঙ্গে যে অসম যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে বা যেভাবে সে দেশটির ভূমি দখল করছে, তাতে ইসরায়েল রাষ্ট্রটির ন্যায্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, নিরীহ কর্মসূচি যেমন বর্জন, পরিহার ও অবরোধের নীতির প্রতি জনসমর্থন বাড়ছে—এগুলো অহিংস আন্দোলনের একধরনের স্বীকৃত পন্থায় পরিণত হচ্ছে। বিডিএসের (ক্যাম্পেইন ফর বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট অ্যান্ড স্যাংশন) বিরোধীরা এই আন্দোলনকে একপ্রকার রাজনৈতিক ছল হিসেবে দেখতে শুরু করেছেন, যে কারণে নাকি ইসরায়েল রাষ্ট্র ভেতর থেকে ধসে পড়বে।
ফিলিস্তিনের মূল ধারার নেতা মাহমুদ আব্বাস ১৯৬৭ সালের সীমান্তরেখা গ্রহণ করার কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর উত্তরে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া হবে স্বভাবতই এ রকম: ইহুদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যেখানে ইহুদিরাই হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু এই অশেষ শান্তি–প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যদি দুই রাষ্ট্র তত্ত্বের মীমাংসা না হয়, তাহলে ইসরায়েল কীভাবে চিরদিনের তরে এই গৃহযুদ্ধাবস্থা থেকে রেহাই পাবে?
এই গাজা ট্র্যাজেডি থেকে বেরিয়ে আসার একটি পথই আছে, যা বহু ভুক্তভোগীর জন্য হয়তো ন্যায়বিচারও নিশ্চিত করতে পারে। বিবদমান পক্ষ ও মধ্যস্থতাকারীদের চেষ্টা করতে হবে এই চলমান মহা ডামাডোলকে শান্তি আলোচনায় পরিণত করার।
এর মানে হচ্ছে, একটি মহাপরিকল্পনা করে গাজার অবকাঠামো ও সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আর তা করতে গিয়ে গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে হবে এবং গাজার সঙ্গে দুনিয়ার যোগাযোগ উন্মুক্ত করতে হবে। এর জন্য হামাসের অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের উপস্থিতিতে গাজার বেসামরিকীকরণ ঘটাতে হবে, আর আব্বাসের পৌরহিত্যে গাজার সঙ্গে ইসরায়েল ও মিসরের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একই সঙ্গে দুই রাষ্ট্র তত্ত্বের মীমাংসার লক্ষ্যে আলোচনা আবারও শুরু করতে হবে। সে লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন লাগবে। তথাকথিত মধ্যপ্রাচ্য চতুষ্টয়ের দেশগুলোরও সমর্থন লাগবে। তাদের কাজ হবে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে যেকোনো উপায়ে এ লক্ষ্যে কাজ করতে বাধ্য করা।
ইসরায়েলের হাতে কোনো বিশ্বাসযোগ্য কৌশল নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ধার্যকৃত ভূমির ওপরই তাকে বসবাস করতে হবে, সে লক্ষ্যেই দেশটিকে কিছু প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দেখাতে হবে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এই প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব কোনো কাজে আসে না। উদাহরণস্বরূপ, ইসরায়েল যেসব আরব রাষ্ট্রের দ্বারে দ্বারে গেছে, তারা ফিলিস্তিনি ইস্যুটাকে কৌশলীভাবে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় ব্যাপারে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইসরায়েল সৌদি আরব ও মিসরের সঙ্গে কোনো মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ হলে সেটা হবে ক্ষণস্থায়ী ও দৈবাৎ একটি ব্যাপার।
ইসরায়েলের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, তার সামরিক ও কূটনৈতিক কৌশল সুস্পষ্টভাবে রাজনৈতিক লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে। ফিলিস্তিনি সংকট সমাধানহীন থাকলে তা ইসরায়েলের নৈতিক অবস্থান ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে, ইসরায়েল যদি একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় কৌশল প্রণয়ন করতে চায়, তাহলে তাকে এ বিষয়টি ধর্তব্যের মধ্যে আনতে হবে।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন। স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
শ্লোমো বেন-অ্যামি: ইসরায়েলের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী যতই সফল হোক বা তার ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী যন্ত্রের ক্ষমতা যতই সুচারু হোক না কেন, ইসরায়েল চাইলেই হামাস থাকবে আর না চাইলে থাকবে না— গাজা ধ্বংস হয়ে গেলেও এ সমীকরণের কোনো ব্যত্যয় হবে না। এর বিকল্প হতে পারে এ রকম: জিহাদি নৈরাজ্যের খপ্পরে পড়ে গাজা ফিলিস্তিনের সোমালিয়ায় পরিণত হতে পারে। এরূপ আশঙ্কার কথা ভাবাও পীড়াদায়ক।
হামাসের নেতা খালেদ মেশাল যতই আস্ফালন করুন না কেন, এবারের হামলায় হামাস যে বড় রকম একটা ধাক্কা খেয়েছে, সেটা লুকানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তবে ইসরায়েল যতক্ষণ আন্তর্জাতিক মতামত উপেক্ষা করে গাজা দখল না করছে বা হামাসের কোমর ভেঙে দিচ্ছে, ততক্ষণ কিন্তু হামাস এই চলমান যুদ্ধে নিজেদের বিজয় দাবি করতেই পারে—হাজার হোক, ইসরায়েলের এই বিশাল সেনাবাহিনীর মুখে টিকে থাকাও একরকম জয়।
এরূপ অসম যুদ্ধে অধিক শক্তিশালী দেশগুলো কিছুটা বিপাকেই পড়ে যায়, তাদের আসলে লক্ষ্য কী, সেটাই তারা লোককে বুঝিয়ে উঠতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ইসরায়েল কিছু বেসামরিক ফিলিস্তিনির জীবনের বিনিময়ে ‘শান্তি’ অর্জন করতে চায়। তারা ভাবছে, এতে হয়তো আন্তর্জাতিক সমালোচনার রাশ টেনে ধরা যাবে। তার পরও এই ‘শান্তি’ কোনো কৌশলগত লক্ষ্য নয়, ইসরায়েল যেভাবে এর পেছনে ছুটছে, সেটাও সমর্থনযোগ্য নয়—প্রতি দুই বা তিন বছর পর পর যুদ্ধ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইসরায়েল যে শান্তি চায়, সেটা তারা অর্জন করে ফেললে ভবিষ্যতে গাজাবিষয়ক তাদের কী অবস্থান হবে। আর ফিলিস্তিনের সমস্যা নিয়েই বা তারা কী করতে চায়, যেখানে গাজা হচ্ছে এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ফলে, এসব অসম যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি হীনবল হয়ে পড়ছে। এগুলো হচ্ছে মূলত রাজনৈতিক যুদ্ধ, সামরিক পন্থায় এসব যুদ্ধ জয় করা যাবে না। আসলে হুমকির মাত্রা ও তার প্রতি ইসরায়েলের অসম (অধিক) প্রতিক্রিয়ার কারণে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি কৌশলগতভাবে মার খেয়ে যায়। এদিকে পশ্চিম তীরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও হামাসের লক্ষ্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। ফলে, ইসরায়েলের পক্ষে এখন আর এ দ্বন্দ্বের রাজনৈতিক তাৎপর্য এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আব্বাসের কূটনীতিতে হামাস এত দিন প্রতিপক্ষ হলেও তারা অনেকটা ব্রাত্যই ছিল। আর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাসংগ্রামে হামাসই এখন প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভাবছেন, পারমাণবিক শক্তিধর ইরানই হচ্ছে দেশটির প্রধান হুমকি, কিন্তু এটা ঠিক নয়। মূল সমস্যা রয়েছে দেশের ভেতরেই: ফিলিস্তিন সমস্যার কারণে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি হ্রাস। সময় সময় ইসরায়েল ফিলিস্তিনের সঙ্গে যে অসম যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে বা যেভাবে সে দেশটির ভূমি দখল করছে, তাতে ইসরায়েল রাষ্ট্রটির ন্যায্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, নিরীহ কর্মসূচি যেমন বর্জন, পরিহার ও অবরোধের নীতির প্রতি জনসমর্থন বাড়ছে—এগুলো অহিংস আন্দোলনের একধরনের স্বীকৃত পন্থায় পরিণত হচ্ছে। বিডিএসের (ক্যাম্পেইন ফর বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট অ্যান্ড স্যাংশন) বিরোধীরা এই আন্দোলনকে একপ্রকার রাজনৈতিক ছল হিসেবে দেখতে শুরু করেছেন, যে কারণে নাকি ইসরায়েল রাষ্ট্র ভেতর থেকে ধসে পড়বে।
ফিলিস্তিনের মূল ধারার নেতা মাহমুদ আব্বাস ১৯৬৭ সালের সীমান্তরেখা গ্রহণ করার কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর উত্তরে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া হবে স্বভাবতই এ রকম: ইহুদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যেখানে ইহুদিরাই হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু এই অশেষ শান্তি–প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যদি দুই রাষ্ট্র তত্ত্বের মীমাংসা না হয়, তাহলে ইসরায়েল কীভাবে চিরদিনের তরে এই গৃহযুদ্ধাবস্থা থেকে রেহাই পাবে?
এই গাজা ট্র্যাজেডি থেকে বেরিয়ে আসার একটি পথই আছে, যা বহু ভুক্তভোগীর জন্য হয়তো ন্যায়বিচারও নিশ্চিত করতে পারে। বিবদমান পক্ষ ও মধ্যস্থতাকারীদের চেষ্টা করতে হবে এই চলমান মহা ডামাডোলকে শান্তি আলোচনায় পরিণত করার।
এর মানে হচ্ছে, একটি মহাপরিকল্পনা করে গাজার অবকাঠামো ও সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আর তা করতে গিয়ে গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে হবে এবং গাজার সঙ্গে দুনিয়ার যোগাযোগ উন্মুক্ত করতে হবে। এর জন্য হামাসের অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের উপস্থিতিতে গাজার বেসামরিকীকরণ ঘটাতে হবে, আর আব্বাসের পৌরহিত্যে গাজার সঙ্গে ইসরায়েল ও মিসরের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একই সঙ্গে দুই রাষ্ট্র তত্ত্বের মীমাংসার লক্ষ্যে আলোচনা আবারও শুরু করতে হবে। সে লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন লাগবে। তথাকথিত মধ্যপ্রাচ্য চতুষ্টয়ের দেশগুলোরও সমর্থন লাগবে। তাদের কাজ হবে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে যেকোনো উপায়ে এ লক্ষ্যে কাজ করতে বাধ্য করা।
ইসরায়েলের হাতে কোনো বিশ্বাসযোগ্য কৌশল নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ধার্যকৃত ভূমির ওপরই তাকে বসবাস করতে হবে, সে লক্ষ্যেই দেশটিকে কিছু প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব দেখাতে হবে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এই প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব কোনো কাজে আসে না। উদাহরণস্বরূপ, ইসরায়েল যেসব আরব রাষ্ট্রের দ্বারে দ্বারে গেছে, তারা ফিলিস্তিনি ইস্যুটাকে কৌশলীভাবে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় ব্যাপারে পরিণত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইসরায়েল সৌদি আরব ও মিসরের সঙ্গে কোনো মৈত্রী বন্ধনে আবদ্ধ হলে সেটা হবে ক্ষণস্থায়ী ও দৈবাৎ একটি ব্যাপার।
ইসরায়েলের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, তার সামরিক ও কূটনৈতিক কৌশল সুস্পষ্টভাবে রাজনৈতিক লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হতে হবে। ফিলিস্তিনি সংকট সমাধানহীন থাকলে তা ইসরায়েলের নৈতিক অবস্থান ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে, ইসরায়েল যদি একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় কৌশল প্রণয়ন করতে চায়, তাহলে তাকে এ বিষয়টি ধর্তব্যের মধ্যে আনতে হবে।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ: প্রতীক বর্ধন। স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
শ্লোমো বেন-অ্যামি: ইসরায়েলের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
No comments