হারের ভয়ে প্রার্থী হতে চান না কংগ্রেস নেতারা!
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে দলের নেতারা অনেকটা শঙ্কায় রয়েছেন। দলের বড় বড় নেতা একের পর নির্বাচন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় এমন ধারণার পালে হাওয়া পাচ্ছে। কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী জি কে বসন গত মঙ্গলবার ঘোষণা দেন, তিনি আসছে লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তাঁর এই ঘোষণার আগে খবর বেরোয়, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মনীশ তিওয়ারি পাঞ্জাবের লুধিয়ানা আসনে নির্বাচনে দাঁড়াতে চান না। অবশ্য, ব্যক্তিগত কারণে তিনি নির্বাচন করতে অনাগ্রহী বলে সূত্র জানিয়েছে। মনীশ তিওয়ারি পাঞ্জাবের লুধিয়ানা ছেড়ে সাবেক রেলমন্ত্রী পবন বনসলের আসন চন্ডিগড় থেকে প্রার্থী হতে চাইছেন। লুধিয়ানায় কংগ্রেসের জয় নিয়ে শঙ্কা দুটি কারণে। প্রথমত, নতুন দল আম আদমি পার্টির (এএপি) টিকিট নিয়ে সেখানে এবার নির্বাচন করবেন দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কর্মী এইচ এস ফুলকা। দ্বিতীয়ত, শিরোমনি আকালি দলের (এসএডি) সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জোট। তামিলনাড়ু রাজ্যে ডিএমকের মতো মিত্রদের সঙ্গে কংগ্রেস জোট করতে না পারায় বসন নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। জোট না হওয়ায় তামিলনাড়ুতে কংগ্রেসের জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে। অবশ্য, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে বসন প্রচারণার দায়দায়িত্ব সামলানোকে অজুহাত হিসেবে খাড়া করেছেন। শুধু এই দুজন নন।
দলের প্রথম সারির আরও অনেক নেতা এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন না। গতকাল বুধবার কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক বসে। দলের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী চান, এবারের কঠিন নির্বাচনে দলের সব শীর্ষ নেতা এমনকি রাজ্যসভার সদস্যরাও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় একজোট হয়ে নির্বাচনে লড়ুন। রাহুল চাইলেও কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মনীশ তিওয়ারি, অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম, রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শচিন পাইলট, সাবেক পরিবেশমন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজন, পশ্চিমবঙ্গের মানস ভূঁইয়া, সাবেক প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যসহ অনেকেই নির্বাচনে লড়তে আগ্রহী নন। চিদাম্বরমের আগের ভোটের ফলাফলও ছিল বিতর্কিত। তিনি তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা আসন থেকে এবার ছেলে কার্তিককে দাঁড় করিয়ে নিজে রাজ্যসভায় আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। শচিন পাইলট আজমীর আসনে নিশ্চিন্ত নন। জয়ন্তী নটরাজনকে কোনো সমর্থন ছাড়াই তামিলনাড়ুতে লড়তে হবে। ভোটে দাঁড়িয়ে হারতে নারাজ তিনি। কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা এভাবে নির্বাচনী লড়াই থেকে পিছু হটায় ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৪ সাল কংগ্রেসের জন্য কঠিন একটা পরীক্ষা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিভিন্ন মতামত জরিপও এখন পর্যন্ত সেই আভাসই দিচ্ছে।
No comments