দেবযানীকে অব্যাহতি দিলেন মার্কিন আদালত
ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। কূটনৈতিক দায়মুক্তির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মার্কিন আদালত গত বুধবার দেবযানীকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। তবে মার্কিন কৌঁসুলিরা দেবযানীর বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা করার কথা বিবেচনা করছেন। এটা করার আইনি এখতিয়ার আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ম্যানহাটনের মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট জজ সিরা সেইন্ডলিন গত বুধবার দেবযানীকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে বলেন, কূটনৈতিক দায়মুক্তি থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে এই মামলা চলতে পারে না। একই সঙ্গে মামলার নিষ্পত্তিও ঘোষণা করেন আদালত। এর আগে দেবযানী গত ৯ জানুয়ারি কূটনৈতিক অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন। বিচারক গতকাল বলেন, দেবযানীর বিরুদ্ধে যখন মামলা দায়ের হয়, তার আগেই তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনে ভারতের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাই তিনি কূটনীতিক দায়মুক্তি পেয়েছেন। দেবযানী আপাতত অব্যাহতি পেলেও তাঁর বিরুদ্ধে আবারও মামলা করার কথা বিবেচনা করছেন মার্কিন কৌঁসুলিরা।
ম্যানহাটনে মার্কিন অ্যাটর্নি প্রিত ভারারের মুখপাত্র জেমস মার্গোলিন বলেন, আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কিন্তু দেবযানীর বিরুদ্ধে নতুন মামলা করতে কোনো বাধা নেই। যথাযথভাবে সেই মামলা করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, আদালতের সিদ্ধান্তের নথি দেখে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। নিউইয়র্কে ভারতীয় কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় গত ডিসেম্বরে দেবযানীর বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতি ও তাঁর গৃহকর্মীর বেতন সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দেবযানীকে গ্রেপ্তার করে নিউইয়র্ক পুলিশ তাঁকে হেনস্তা করে বলে অভিযোগ ওঠে। এর আগে দেবযানীর মার্কিন আইনজীবী আরসাক দাবি করেছিলেন, দেবযানীর বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতি ও গৃহকর্মীর বেতন নিয়ে আসলে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। আরসাকের দাবি ছিল, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে তাঁর মক্কেলের গৃহকর্মী সঙ্গীতা রিচার্ডের মাসিক বেতন উল্লেখ করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার মার্কিন ডলার, যা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। মূলত সঙ্গীতার বেতন এক হাজার ৫৬০ মার্কিন ডলার। সঙ্গীতা এই বেতনেই দেবযানীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ব্যাপক টানাপোড়েন শুরু হয়। এক পর্যায়ে দেবযানীকে বাঁচাতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশনে ভারতের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক হিসেবে নিয়োগ দেয় নয়াদিল্লি। পাল্টা জবাব হিসেবে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন একজন কূটনীতিককেও ফেরত পাঠায় ভারত সরকার। রয়টার্স।
No comments