ঋণশোধে কন্যাদান
নাম সানিদা; বয়স ৫ বছর। সোয়াত উপত্যকায় বসবাসরত এই কন্যাশিশুর বাবা তাকে বিয়ে দিতে চান এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে যাকে সে কখনোই দেখেনি। যদিও এটি কোনো বিয়ে নয়। এটা হল ‘ঋণশোধ’, ‘ক্ষতিপূরণ’। কয়েক মাস আগে সানিদার বাবা ‘আলি আহমদ’ অন্য একটি উপত্যকার এক মেয়ের সঙ্গে পালিয়ে যান। ওই মেয়ের পরিবার প্রতিশোধ নিতে চাইলে তাদের খুশি করার জন্য তিনি তার মেয়ে ও ভাইঝিকে বিয়ে দেয়ার ওয়াদা করেন। উপত্যকায় প্রচলিত এ ঐতিহ্যকে ‘সাওয়ারা’ বলে। সরকারি তথ্য মতে এ প্রথা সোয়াত উপত্যকায় ক্রমশ বাড়ছে।
২০১৩-তে এ ধরনের ঘটনা রেকর্ড করা হয় ১২টি যেখানে ২০১২ সালে ছিল ১টি। সানিদার মা আপত্তি জানালেও কিছু করার ছিল না কারণ এ বিয়ে আয়োজন করা হয়েছে ‘জিগরার’ মাধ্যমে। জিগরা হল একটি বৈঠক যেখানে স্থানীয় বয়স্করা যে কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেন। সানিদা ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। পুলিশ সানিদার বাবা ও জিগরা সদস্যদের আটক করে। কিন্তু সবার ভাগ্য সানিদার মতো না। ‘সাওয়ারার ঘটনা প্রায়শই ঘটে এখানে। কিন্তু কেউ পুলিশকে জানায় না। কারণ মেয়েদের/মেয়েলি ব্যাপারগুলোতে আমরা পুলিশের কাছে যাই না।’ বলছিলেন সানিদার মামা। সানিদার বাবা তার অন্য মেয়ে ‘স্বপনা’কে একইভাবে বিয়ে দিয়েছিল। সিনিয়ন পুলিশ অফিসার নাবিদ খান জানান, স্থানীয়রা এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দিতে চায় না। প্রত্যক্ষদর্শীদের মাঝে তীব্র অনিচ্ছা দেখা যায়। বর্তমান আধুনিক সভ্যতায় এসেও এ ধরনের বর্বরতা খুবই দুঃখজনক।
No comments