লোকসভায় মরিচের গুঁড়া, মারামারি

মরিচের গুঁড়ায় অসুস্থ এক পার্লামেন্ট সদস্যকে
হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: এএফপি
তেলেঙ্গানা বিল নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের লোকসভা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পৃথক তেলেঙ্গানা বিলের বিরোধী পার্লামেন্ট সদস্য রাজা গোপাল অধিবেশন চলাকালে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়েছেন। তেলেঙ্গনাবিরোধীরা অন্যদের সঙ্গে মারপিট করেছেন, সেক্রেটারি জেনারেলের টেবিলের কাচ ভেঙেছেন এবং স্পিকারের মাইক উপড়ে দিয়েছেন। মরিচের গুঁড়ায় লোকসভার সদস্য ও সাংবাদিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। দফায় দফায় গোলমালের কারণে স্পিকার মীরা কুমার অধিশেন মুলতুবি করতে বাধ্য হন। ঘটনার পর তিনি কংগ্রেস, তেলেগু দেশম এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মোট ১৮ জন পার্লামেন্ট সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন। পার্লামেন্টে দিনভর চলা এই গোলমালের মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধে দাবি করেন, তিনি তেলেঙ্গানা বিল উত্থাপন করেছেন। এই দাবিকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। কারণ, সভার কার্যতালিকায় তেলেঙ্গানা বিলের উল্লেখ ছিল না। গত বুধবার রাতে কংগ্রেস আচমকা তেলেঙ্গানা বিলটি বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে পেশ করার সিদ্ধান্ত দেয়।
কংগ্রেসের কাছে খবর ছিল, বিল উত্থাপনে বাধা দিতে তেলেঙ্গানাবিরোধী পার্লামেন্ট সদস্যরা সহিংসতার আশ্রয় নিতে পারেন। এমনকি রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটাতেও বিরোধীরা প্রস্তুত বলে সরকারের কাছে খবর ছিল। সরকার তাই আগেই পার্লামেন্ট ভবন চত্বরে চারটি অ্যাম্বুলেন্স মজুত রাখে। ছিল কয়েক গণ্ডা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, মজুত রাখা হয় গাদা গাদা কম্বল। স্পিকারকে গোয়েন্দারা খবর দিয়েছিল, কেউ কেউ গ্যালারি থেকে সভাকক্ষে ঝাঁপও দিতে পারেন। ফলে এই প্রথম লোকসভার গ্যালারি খালি রাখা হয়। কংগ্রেসের কৌশল ছিল, দিনের কার্যতালিকায় তেলেঙ্গানা বিলের উল্লেখ রাখা হবে না। আলাদা একটি কাগজে তেলেঙ্গানা বিল পেশের উল্লেখ করা হবে এবং সভার শুরুতেই সেটি পেশ করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্ধে। গতকাল বেলা ১১টায় বসার এক মিনিটের মধ্যেই অধিবেশন মুলতবি হয়ে যায়। দুপুর ১২টায় ওয়েলে পার্লামেন্ট সদস্যদের ভিড়। স্পিকার আসার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় তাণ্ডব। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সভা মুলতবি হয়ে যায়। লোকসভায় দিনভর গোলমালের জন্য বিরোধীরা সরকারকেই দায়ী করছে। বিজেপির লালকৃষ্ণ আদভানি, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়া, তৃণমূল কংগ্রেসের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জনতা দলের (সংযুক্ত) শারদ যাদব কংগ্রেসকেই দোষী মনে করছেন। সবাই বলছেন, কংগ্রেস নিজের দলকেই সামলাতে পারল না। এতবার নতুন রাজ্য গঠিত হয়েছে, এমন অবস্থা কখনো হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.