জেনেভায় অগ্রগতি নেই, প্রভাব পড়ছে অবরুদ্ধ হোমসে
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সিরিয়ার দুই পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের শান্তি সম্মেলনের দুই দিন পার হয়ে গেছে। তবে এ পর্যন্ত তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে স্বীকার করেছেন জাতিসংঘ ও আরব লিগের মধ্যস্থতাকারী লাখদার ব্রাহিমি। জেনেভা আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় সিরিয়ার অবরুদ্ধ হোমস শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের বের করে আনা ও সেখানে ত্রাণসহায়তা পাঠানো নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জেনেভায় শান্তি আলোচনার দ্বিতীয় পর্ব গত সোমবার শুরু হলেও সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহীদের প্রতিনিধিরা মুখোমুখি বৈঠকে বসেন এক দিন পর মঙ্গলবার। শুরুতে সিরিয়ায় সহিংসতায় নিহত প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার মানুষের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে আলোচ্যসূচি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। বিদ্রোহীরা শুরুতেই প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করার পক্ষে তাঁদের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেন। অন্যদিকে সরকারি প্রতিনিধিরা শুরুতেই দেশে ‘সন্ত্রাসবাদ’ বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। তাঁরা প্রেসিডেন্ট বাশারের পদত্যাগের দাবিও নাকচ করেন।দুই পক্ষের বিরোধের এক পর্যায়ে জাতিসংঘ ও আরব লিগের বিশেষ দূত লাখদার ব্রাহিমি প্রস্তাব দেন, মঙ্গলবার সন্ত্রাসবাদ আর পরদিন বুধবার অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আলোচনা হোক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলোচ্যসূচি নিয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় মঙ্গলবার আলোচনা পণ্ড হয়।
পরে ব্রাহিমি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেনেভায় মঙ্গলবারের মুখোমুখি আলোচনায় আমরা তেমন অগ্রগতি করতে পারিনি।’ সরকার ও বিদ্রোহী পক্ষের মধ্যে আলোচ্যসূচি নিয়ে বিরোধের কারণে প্রথম দিনের মুখোমুখি আলোচনা পণ্ড হয়ে গেছে। জেনেভার প্রভাব পড়েছে হোমসেও। জেনেভায় মঙ্গলবার আলোচনা পণ্ড হওয়ার পর হোমসের গভর্নর তালাল বারাজি ঘোষণা দেন, ‘সরবরাহব্যবস্থা কঠিন হয়ে ওঠায়’ অবরুদ্ধ ব্যক্তিদের বের করে আনা ও ত্রাণ সরবরাহ এক দিনের জন্য বন্ধ রাখা হতে পারে। হোমসে প্রথম দফার তিন দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গতকাল বুধবার ছিল দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতির শেষ দিন। ইতিমধ্যে শহরটি থেকে এক হাজারের বেশি বেসামরিক ব্যক্তিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ। সাহায্য সংস্থা রেড ক্রিসেন্টের সিরিয়া শাখার প্রধান খালেদ এর্কসৌসি জানান, তাঁদের কর্মী বাহিনী কাজ বন্ধ রেখেছে। তিনি আশা করেন, আবারও ত্রাণ সরবরাহ ও লোকজনকে উদ্ধারের কাজ শুরু করতে পারবেন। বেসমারিক লোকজনকে বের করে আনা ও ত্রাণ পাঠানোর জন্য জাতিসংঘসহ সাহায্য সংস্থাগুলো সেখানে কাজ করছিল। ভেটো দেবে রাশিয়া: সিরিয়ার অবরুদ্ধ শহরগুলোতে ত্রাণ সরবরাহ করতে প্রবেশপথের ব্যবস্থার জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব তোলা হলে তাতে ভেটো দেবে রাশিয়া। মস্কো ইতিমধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে। রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী গেন্নাদি গাতিলভ বলেন, প্রস্তাবে যেভাবে ত্রাণসহায়তার জন্য প্রবেশপথের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা ভবিষ্যতে বাশারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের ভিত্তি তৈরি করবে। আল-জাজিরা, বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্স।
No comments