খেলাপি ঋণ অর্ধ লক্ষ কোটি টাকা by মনজুর আহমেদ
ব্যাংক খাতে গত তিন মাসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও হার বেশ খানিকটা বেড়েছে। এ সময়ে খেলাপি ঋণ বাড়ে আট হাজার ২৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
এর ফলে চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ১৯ কোটি ৯১ লাখ টাকায়। এটি এ সময় পর্যন্ত মোট বিতরণ করা চার লাখ ২৮ হাজার ৬৯৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ঋণের ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এর আগে ২০১২ সালের গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ হয়েছিল ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এটি সেই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা মোট ঋণের স্থিতি চার লাখ ২৬ হাজার ১৫২ কোটি ৭৯ লাখ টাকার ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ ছিল।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পরিস্থিতিতে বড় ধরনের অবনতি হয়েছে। তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। এ সময় অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকেও খেলাপি ঋণ বেশ বেড়েছে। তবে হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঝড় শেষে সোনালী ব্যাংকের পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানো গেছে।
খেলাপি ঋণ ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি-সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের সঙ্গে আগের প্রতিবেদনের তুলনায় এসব তথ্য-উপাত্ত মিলেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন বিধান অনুসারে নিম্নমান পর্যায়ে শ্রেণীকৃত ঋণকে এখন খেলাপি বলা হচ্ছে না এই অর্থে যে, এতে গ্রাহকের নতুন ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অন্তরায় নেই। তবে এ পর্যায়ে ব্যাংককে ঠিকই প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও আগের মতো এই পর্যায়ের ঋণকে বিরূপভাবে শ্রেণীকৃত ঋণের মধ্যেই রাখছে, অশ্রেণীকৃত হিসাবে দেখাচ্ছে না। এই প্রতিবেদনে খেলাপি বলতে পুরো অশ্রেণীকৃত ঋণকেই বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৫১ হাজার ১৯ কোটি ৯১ লাখ টাকার বিরূপ শ্রেণীকৃত ঋণের মধ্যে নিম্নমানের ঋণ হচ্ছে নয় হাজার ৮২৯ কোটি এক লাখ টাকা।
রাষ্ট্র খাতের বাংকগুলোতে বড় বড় জালিয়াতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির খবর বেশ কিছুদিন ধরে সংবাদমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম হয়েছে। এর একটা অংশ গত তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে খেলাপি করতে হয়েছে। আবার নতুনভাবেও কিছু ঋণ খেলাপি হয়েছে।
এর বাইরে বলা হচ্ছে, দেশে শিল্প-বাণিজ্যের কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেমন রিয়েল এস্টেট খাত, জাহাজভাঙা শিল্প, আমদানি অর্থায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঋণ আদায় হচ্ছে না। এসব খাতে বড় অঙ্কের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ছে। আমদানি অর্থায়নের মধ্যে বিশেষত এলটিআরের সুবিধার বড় অংশও খেলাপি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিংয়ের নতুন বিধান করেছে। এই বিধান গত ডিসেম্বরের হিসাব থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এতে করেও কিছু ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান বাস্তবায়ন হওয়ায় দেশের ব্যাংক খাতের আরও একটি মানদণ্ড আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর শক্তি বৃদ্ধি পায়। কেননা নতুন নিয়মে ব্যাংকগুলোতে মুনাফা জমা রেখে অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে।
আর এই অতিরিক্ত প্রভিশনের ফলে বিপুল খেলাপি ঋণের পরও প্রভিশন ও স্থগিত সুদ আয়কে (খেলাপি চিহ্নিত করা ঋণের সুদ) সমন্বয় করা হলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বর্তমানের চেয়ে অর্ধেকের নিচে নেমে আসে। এই হিসাবে খেলাপি ঋণ দাঁড়াবে ২৩ হাজার ৪৩১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
কিন্তু, নতুনভাবে যেসব ঋণ খেলাপিতে পরিণত হলো, সে বিষয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে বলে মত প্রকাশ করছেন ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তুলনা: ২০১১ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২৫ হাজার ২৮৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ সময় পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল তিন লাখ ৮৫ হাজার ১২৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যদিও এ পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান বছরের তুলনা করা সঠিক হবে না। কেননা গত ডিসেম্বর মাস থেকে ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে নতুন ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বিধান আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে সাধারণভাবে দেখা গেছে, প্রতিবছরই প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বাড়ে। বছর শেষে ব্যাংকগুলোর দিক থেকে ঋণ আদায়ে যেমন তৎপরতা করা হয়, তেমনি গ্রাহকও তা পরিশোধে আগ্রহ দেখায়। যে কারণে মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের বৃদ্ধির প্রবণতা বরাবরের মতো।
তুলনায় দেখা যায়, ডিসেম্বরের তুলনায় মার্চে রাষ্ট্র খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক, বেসরকারি, বিদেশি ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংক—সব ক্ষেত্রেই খেলাপি ঋণের হার ও পরিমাণ দুটিই বেড়েছে।
রাষ্ট্রমালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংক: বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, ডিসেম্বরের তুলনায় মার্চে এসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার বাণিজ্যিক ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে দুই হাজার ৮৮৮ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।
গত তিন মাসে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে এক হাজার ৪৬৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ব্যাংকটিতে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ হয়েছে দুই হাজার ৪৬৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ২৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। একই সময়ে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯২৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৯১ কোটি ৮২ লাখ টাকা বা ২৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ হয়েছে চার হাজার ৫৯৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
তবে তিন মাসে সোনালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমেছে ২৯৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা বা প্রায় ১ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ হয়েছে ১১ হাজার ৭৪৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৩৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
অন্যান্য ব্যাংক: তিন মাসে দেশীয় বেসরকারি ৩০ ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে চার হাজার ৮৪৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণের ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
তিন মাসের ব্যবধানে বিদেশি নয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২১৩ কোটি তিন লাখ টাকা বা তাদের মোট বিতরণ করা ঋণের ১ দশমিক ০৭ শতাংশ।
রাষ্ট্র খাতের চার বিশেষায়িত ব্যাংকে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৪৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের দশমিক ৪০ শতাংশ।
এর ফলে চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ১৯ কোটি ৯১ লাখ টাকায়। এটি এ সময় পর্যন্ত মোট বিতরণ করা চার লাখ ২৮ হাজার ৬৯৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা ঋণের ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এর আগে ২০১২ সালের গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ হয়েছিল ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এটি সেই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা মোট ঋণের স্থিতি চার লাখ ২৬ হাজার ১৫২ কোটি ৭৯ লাখ টাকার ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ ছিল।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পরিস্থিতিতে বড় ধরনের অবনতি হয়েছে। তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। এ সময় অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকেও খেলাপি ঋণ বেশ বেড়েছে। তবে হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঝড় শেষে সোনালী ব্যাংকের পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানো গেছে।
খেলাপি ঋণ ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি-সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের সঙ্গে আগের প্রতিবেদনের তুলনায় এসব তথ্য-উপাত্ত মিলেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন বিধান অনুসারে নিম্নমান পর্যায়ে শ্রেণীকৃত ঋণকে এখন খেলাপি বলা হচ্ছে না এই অর্থে যে, এতে গ্রাহকের নতুন ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অন্তরায় নেই। তবে এ পর্যায়ে ব্যাংককে ঠিকই প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও আগের মতো এই পর্যায়ের ঋণকে বিরূপভাবে শ্রেণীকৃত ঋণের মধ্যেই রাখছে, অশ্রেণীকৃত হিসাবে দেখাচ্ছে না। এই প্রতিবেদনে খেলাপি বলতে পুরো অশ্রেণীকৃত ঋণকেই বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৫১ হাজার ১৯ কোটি ৯১ লাখ টাকার বিরূপ শ্রেণীকৃত ঋণের মধ্যে নিম্নমানের ঋণ হচ্ছে নয় হাজার ৮২৯ কোটি এক লাখ টাকা।
রাষ্ট্র খাতের বাংকগুলোতে বড় বড় জালিয়াতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির খবর বেশ কিছুদিন ধরে সংবাদমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম হয়েছে। এর একটা অংশ গত তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে খেলাপি করতে হয়েছে। আবার নতুনভাবেও কিছু ঋণ খেলাপি হয়েছে।
এর বাইরে বলা হচ্ছে, দেশে শিল্প-বাণিজ্যের কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেমন রিয়েল এস্টেট খাত, জাহাজভাঙা শিল্প, আমদানি অর্থায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঋণ আদায় হচ্ছে না। এসব খাতে বড় অঙ্কের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ছে। আমদানি অর্থায়নের মধ্যে বিশেষত এলটিআরের সুবিধার বড় অংশও খেলাপি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিংয়ের নতুন বিধান করেছে। এই বিধান গত ডিসেম্বরের হিসাব থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এতে করেও কিছু ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধান বাস্তবায়ন হওয়ায় দেশের ব্যাংক খাতের আরও একটি মানদণ্ড আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর শক্তি বৃদ্ধি পায়। কেননা নতুন নিয়মে ব্যাংকগুলোতে মুনাফা জমা রেখে অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে।
আর এই অতিরিক্ত প্রভিশনের ফলে বিপুল খেলাপি ঋণের পরও প্রভিশন ও স্থগিত সুদ আয়কে (খেলাপি চিহ্নিত করা ঋণের সুদ) সমন্বয় করা হলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বর্তমানের চেয়ে অর্ধেকের নিচে নেমে আসে। এই হিসাবে খেলাপি ঋণ দাঁড়াবে ২৩ হাজার ৪৩১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
কিন্তু, নতুনভাবে যেসব ঋণ খেলাপিতে পরিণত হলো, সে বিষয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে বলে মত প্রকাশ করছেন ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তুলনা: ২০১১ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২৫ হাজার ২৮৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ সময় পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল তিন লাখ ৮৫ হাজার ১২৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যদিও এ পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান বছরের তুলনা করা সঠিক হবে না। কেননা গত ডিসেম্বর মাস থেকে ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে নতুন ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বিধান আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে সাধারণভাবে দেখা গেছে, প্রতিবছরই প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বাড়ে। বছর শেষে ব্যাংকগুলোর দিক থেকে ঋণ আদায়ে যেমন তৎপরতা করা হয়, তেমনি গ্রাহকও তা পরিশোধে আগ্রহ দেখায়। যে কারণে মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের বৃদ্ধির প্রবণতা বরাবরের মতো।
তুলনায় দেখা যায়, ডিসেম্বরের তুলনায় মার্চে রাষ্ট্র খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক, বেসরকারি, বিদেশি ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংক—সব ক্ষেত্রেই খেলাপি ঋণের হার ও পরিমাণ দুটিই বেড়েছে।
রাষ্ট্রমালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংক: বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, ডিসেম্বরের তুলনায় মার্চে এসে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার বাণিজ্যিক ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে দুই হাজার ৮৮৮ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ।
গত তিন মাসে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে এক হাজার ৪৬৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা মোট বিতরণ করা ঋণের ১৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ব্যাংকটিতে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ হয়েছে দুই হাজার ৪৬৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ২৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। একই সময়ে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯২৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৯১ কোটি ৮২ লাখ টাকা বা ২৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৬০ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণ হয়েছে চার হাজার ৫৯৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
তবে তিন মাসে সোনালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমেছে ২৯৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা বা প্রায় ১ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ হয়েছে ১১ হাজার ৭৪৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বা বিতরণ করা ঋণের ৩৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
অন্যান্য ব্যাংক: তিন মাসে দেশীয় বেসরকারি ৩০ ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে চার হাজার ৮৪৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণের ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
তিন মাসের ব্যবধানে বিদেশি নয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২১৩ কোটি তিন লাখ টাকা বা তাদের মোট বিতরণ করা ঋণের ১ দশমিক ০৭ শতাংশ।
রাষ্ট্র খাতের চার বিশেষায়িত ব্যাংকে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৪৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের দশমিক ৪০ শতাংশ।
No comments